Ajker Patrika

দীর্ঘস্থায়ী কোভিড বাড়াতে পারে আত্মহত্যার ঝুঁকি 

দীর্ঘস্থায়ী কোভিড বাড়াতে পারে আত্মহত্যার ঝুঁকি 

কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর দীর্ঘ সময় ধরে এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে থাকলে তা আরও একাধিক জটিল রোগের জন্ম দিতে পারে। প্রায় ২ শতাধিক লক্ষণ রয়েছে যা এই সময়ে দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ক্লান্তি, অবধারণগত দুর্বলতা, ব্যথা, জ্বর এবং হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। এমনকি এসব লক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হলে বাড়তে পারে আত্মহত্যার ঝুঁকিও। 
 
কোভিডের সঙ্গে আত্মহত্যার সরাসরি কোনো সংযোগ রয়েছে কিনা এই বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রামাণ্য তথ্য–উপাত্ত নেই। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ এবং ব্রিটেনের একটি তথ্য সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকেই গবেষকেরা কোভিডের সঙ্গে অবসাদ এবং আত্মহত্যা প্রবণতার সম্ভাব্য যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হেলথ সিস্টেমের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও মানসিক ব্যাধি এবং আত্মঘাতী আচরণ নিয়ে কাজ করা লিও শের বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত যে—দীর্ঘ সময় ধরে কোভিডের সঙ্গে সংযোগ মানুষের আত্মহত্যার চিন্তা, চেষ্টা, পরিকল্পনা এবং আত্মহত্যার ঝুঁকির সঙ্গে জড়িত। তবে এই বিষয়ে আমাদের কাছে মহামারীকালীন কোনো তথ্য এখনো নেই।’ 
 
তবে বর্তমানে যে বিষয়টি সামনে এসেছে তা হলো—করোনাভাইরাস কী মানুষের মস্তিষ্কের জৈবিক কার্যক্রমকে বদলে দেয়, যার ফলে মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার আশঙ্কা এবং ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়? কিংবা করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কী নষ্ট করে দেয় যার ফলে মানুষ আর নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে সচেতন থাকতে পারে না? 
 
এই বিষয়ে লিও শের বলেন, শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগাতার ব্যথা আত্মহত্যার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ এবং এই লাগাতার ব্যথা মানসিক অবসাদের অন্যতম কারণ যা পেইন ডিসঅর্ডার নামে পরিচিত। তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ সময় কোভিড আক্রান্ত থাকলেই মানুষের মধ্যে পেইন ডিসঅর্ডারের আশঙ্কা তৈরি হয়। এবং এ জন্যই আমাদের এই বিষয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।’ 

শের লিওর বক্তব্যের পক্ষে প্রমাণও পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলভিত্তিক স্বাস্থ্য গবেষণায় প্রতিষ্ঠান ট্রুভেটা দ্বারা পরিচালিত এক গবেষণার তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দীর্ঘ কোভিড আক্রান্ত রোগীরা প্রথমবার কোভিড শনাক্ত হওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে মতো অবসাদরোধী ওষুধের ব্যবস্থাপত্র নেওয়ার হার স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছিল। 

গবেষকদের আশঙ্কা, দীর্ঘ সময় কোভিড আক্রান্ত থাকারা ভয়াবহভাবে আত্মহত্যার ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন। তবে এই বিষয়ে, আগামী দিনে পরিচালিত গবেষণাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত