গোলটেবিল বৈঠক
অনলাইন ডেস্ক
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। এই অগ্রযাত্রায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বড় অবদান রাখছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বাদ দিলে উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করছেন।
এর পরও নানা সংকটের মধ্য দিয়ে চলতে হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। নীতির বৈরিতা থেকে শুরু করে ইনকাম ট্যাক্স আরোপ, ভালো মানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সংকটেও ভুগতে হয় তাদের। এই সংকটের একটা বড় অংশের সমাধান হতে পারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করলে। কিন্তু দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর তিন দশকের বেশি সময় পেরোলেও তা চালু করা যায়নি।
তাই পিএইচডি প্রোগ্রাম দ্রুততম সময়ে চালুর জন্য সরকারের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা। রাজধানীর বনশ্রীতে আজকের পত্রিকার প্রধান কার্যালয়ে গতকাল সোমবার এক গোলটেবিল বৈঠকে তাঁরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের পর্যবেক্ষণ ও মতামত তুলে ধরেন। ‘উচ্চশিক্ষায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা, বর্তমান অবস্থা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিলের আয়োজন করে আজকের পত্রিকা।
বৈঠকে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সুযোগ দিতে হবে। সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ দিতে হবে। চাকরির বাজারে তারা কীভাবে ভূমিকা রাখছে, তা দেখতে হবে।
পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করার আলোচনায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন সবুর খান। পিএইচডি পলিসি (নীতিমালা) হয়ে গেছে; কিন্তু জারি করা হচ্ছে না—এই তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর ক্ষেত্রে অনেকে দু-একজন বা দু-একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংগতি তুলে ধরেন। কিন্তু দু-একজনকে দিয়ে পুরো জাতিকে বিবেচনা করা ঠিক নয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকসংকটের কথা তুলে ধরেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া। তিনি বলেন, মানসম্মত শিক্ষক পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। যাঁরা বিদেশে পিএইচডি করছেন, তাঁরা দেশে আসতে চান না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সুযোগ আছে। বেসরকারিতেও এটা থাকা উচিত।
তবে সরকারি-বেসরকারিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভাগ করাটা বোকামি বলে মন্তব্য করেন আবুল কাশেম মিয়া। বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বাধীনতা দিতে হবে।
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কড়া ভাষায় কথা বলে, আর সরকারিগুলোকে নরম ভাষায় কথা বলে। সাধারণত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মধ্যম ক্যাটাগরির (মানের) শিক্ষার্থী পায়। তাদের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়। সে জন্য যে শিক্ষক দরকার, তা পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষক উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে হবে। পিএইচডি প্রোগ্রাম থাকতে হবে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পার্থক্য যেন আপন ভাই ও সৎভাইয়ের মতো। এ মন্তব্য করে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আশিক মোসাদ্দিক বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে, তা নয়। র্যাঙ্কিংয়ে কোনো কোনো দিক থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে গেছে।
ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১১৫টি। এগুলোর মধ্যে ১০৬টিতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ৩ লাখ ৪১ হাজার ৫৮ শিক্ষার্থী। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:২১, যা সন্তোষজনক মনে করে ইউজিসি। তবে শিক্ষকদের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে মনে করেন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘আমি সেকেন্ড (বিশ্ববিদ্যালয়ে) হয়েও স্বপ্ন দেখিনি শিক্ষক হব। কিন্তু এখন মধ্যম মানের মেধাবীরাও শিক্ষক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।’
তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি চালুর বিষয়ে কিছুটা ভিন্ন কথা বলেন হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কেউ মনে করেন, এটি করা উচিত। আবার কেউ বলবেন, আরেকটু ভাবা উচিত। পিএইচডি নিয়ে ব্যাড এক্সাম্পল (খারাপ উদাহরণ) সৃষ্টি হয়েছে।’ তাঁর মতে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম না থাকলেও গবেষণার সুযোগ রয়েছে। কোন বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় কত বিনিয়োগ করছে, সেটা দেখা উচিত বলে মতপ্রকাশ করেন তিনি।
শিক্ষক-সংকটের কথা জানিয়ে উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌর গোবিন্দ গোস্বামী বলেন, ‘আমরা লেকচারারকে দিয়ে ফোর্থ ইয়ারের ক্লাস নিচ্ছি। কারণ, আমাদের হাত-পা বাঁধা। আমাদের টিচার নেই।’
এসব সংকট সত্ত্বেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেভাবে স্কিল ডেভেলপমেন্টে এগিয়ে যাচ্ছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সে ধারায় যেতে পারেনি বলে মনে করেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার অধ্যাপক মো. শামসুল হুদা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর কর আরোপের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বৈষম্যমূলক সরকারের সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যাক্স বসানো হয়েছিল। ইনকাম যার নাই, সে কেন ট্যাক্স দেবে? আমাদের প্রফিট হওয়ার সুযোগ কোথায়?’
অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শামসুল আলম লিটন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় দখল দেখেছি। ভবিষ্যতে আমরা যেন রাজনৈতিক চাপে না পড়ি।’ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিএইচডিধারীর আধিক্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশ ও প্রশাসনে পিএইচডির উৎপাত দেখি। এত পিএইচডি দিয়ে আমরা কী করব?’
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা অনুদান বাড়ানোর ওপর জোর দেন ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. আসাদ উল্লাহ আল-হোসেন। তিনি বলেন, যে অনুদান দেওয়া হয়, তা পর্যাপ্ত নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবহেলা করা হচ্ছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেসরকারি থেকে শিক্ষার্থী নিচ্ছে না।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এম এম হামিদুর রহমান তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে বলেন, ‘আমরা দেশে এবং সারা বিশ্বে ভালো অবস্থানে আছি। আমাদের ২২০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। আর তিনজন বিদেশি শিক্ষক রয়েছেন।’
বৈঠকে স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য দেন আজকের পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল হাসান। বৈঠক সঞ্চালনা করেন আজকের পত্রিকার উপসম্পাদক সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। এই অগ্রযাত্রায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বড় অবদান রাখছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বাদ দিলে উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করছেন।
এর পরও নানা সংকটের মধ্য দিয়ে চলতে হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। নীতির বৈরিতা থেকে শুরু করে ইনকাম ট্যাক্স আরোপ, ভালো মানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সংকটেও ভুগতে হয় তাদের। এই সংকটের একটা বড় অংশের সমাধান হতে পারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করলে। কিন্তু দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর তিন দশকের বেশি সময় পেরোলেও তা চালু করা যায়নি।
তাই পিএইচডি প্রোগ্রাম দ্রুততম সময়ে চালুর জন্য সরকারের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা। রাজধানীর বনশ্রীতে আজকের পত্রিকার প্রধান কার্যালয়ে গতকাল সোমবার এক গোলটেবিল বৈঠকে তাঁরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের পর্যবেক্ষণ ও মতামত তুলে ধরেন। ‘উচ্চশিক্ষায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা, বর্তমান অবস্থা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিলের আয়োজন করে আজকের পত্রিকা।
বৈঠকে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সুযোগ দিতে হবে। সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ দিতে হবে। চাকরির বাজারে তারা কীভাবে ভূমিকা রাখছে, তা দেখতে হবে।
পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করার আলোচনায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন সবুর খান। পিএইচডি পলিসি (নীতিমালা) হয়ে গেছে; কিন্তু জারি করা হচ্ছে না—এই তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর ক্ষেত্রে অনেকে দু-একজন বা দু-একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংগতি তুলে ধরেন। কিন্তু দু-একজনকে দিয়ে পুরো জাতিকে বিবেচনা করা ঠিক নয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকসংকটের কথা তুলে ধরেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া। তিনি বলেন, মানসম্মত শিক্ষক পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। যাঁরা বিদেশে পিএইচডি করছেন, তাঁরা দেশে আসতে চান না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সুযোগ আছে। বেসরকারিতেও এটা থাকা উচিত।
তবে সরকারি-বেসরকারিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভাগ করাটা বোকামি বলে মন্তব্য করেন আবুল কাশেম মিয়া। বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বাধীনতা দিতে হবে।
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কড়া ভাষায় কথা বলে, আর সরকারিগুলোকে নরম ভাষায় কথা বলে। সাধারণত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মধ্যম ক্যাটাগরির (মানের) শিক্ষার্থী পায়। তাদের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়। সে জন্য যে শিক্ষক দরকার, তা পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষক উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে হবে। পিএইচডি প্রোগ্রাম থাকতে হবে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পার্থক্য যেন আপন ভাই ও সৎভাইয়ের মতো। এ মন্তব্য করে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আশিক মোসাদ্দিক বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে, তা নয়। র্যাঙ্কিংয়ে কোনো কোনো দিক থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে গেছে।
ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১১৫টি। এগুলোর মধ্যে ১০৬টিতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ৩ লাখ ৪১ হাজার ৫৮ শিক্ষার্থী। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:২১, যা সন্তোষজনক মনে করে ইউজিসি। তবে শিক্ষকদের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে মনে করেন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘আমি সেকেন্ড (বিশ্ববিদ্যালয়ে) হয়েও স্বপ্ন দেখিনি শিক্ষক হব। কিন্তু এখন মধ্যম মানের মেধাবীরাও শিক্ষক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।’
তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি চালুর বিষয়ে কিছুটা ভিন্ন কথা বলেন হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কেউ মনে করেন, এটি করা উচিত। আবার কেউ বলবেন, আরেকটু ভাবা উচিত। পিএইচডি নিয়ে ব্যাড এক্সাম্পল (খারাপ উদাহরণ) সৃষ্টি হয়েছে।’ তাঁর মতে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম না থাকলেও গবেষণার সুযোগ রয়েছে। কোন বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় কত বিনিয়োগ করছে, সেটা দেখা উচিত বলে মতপ্রকাশ করেন তিনি।
শিক্ষক-সংকটের কথা জানিয়ে উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌর গোবিন্দ গোস্বামী বলেন, ‘আমরা লেকচারারকে দিয়ে ফোর্থ ইয়ারের ক্লাস নিচ্ছি। কারণ, আমাদের হাত-পা বাঁধা। আমাদের টিচার নেই।’
এসব সংকট সত্ত্বেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেভাবে স্কিল ডেভেলপমেন্টে এগিয়ে যাচ্ছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সে ধারায় যেতে পারেনি বলে মনে করেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার অধ্যাপক মো. শামসুল হুদা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর কর আরোপের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বৈষম্যমূলক সরকারের সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যাক্স বসানো হয়েছিল। ইনকাম যার নাই, সে কেন ট্যাক্স দেবে? আমাদের প্রফিট হওয়ার সুযোগ কোথায়?’
অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শামসুল আলম লিটন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় দখল দেখেছি। ভবিষ্যতে আমরা যেন রাজনৈতিক চাপে না পড়ি।’ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিএইচডিধারীর আধিক্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশ ও প্রশাসনে পিএইচডির উৎপাত দেখি। এত পিএইচডি দিয়ে আমরা কী করব?’
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা অনুদান বাড়ানোর ওপর জোর দেন ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. আসাদ উল্লাহ আল-হোসেন। তিনি বলেন, যে অনুদান দেওয়া হয়, তা পর্যাপ্ত নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবহেলা করা হচ্ছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেসরকারি থেকে শিক্ষার্থী নিচ্ছে না।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এম এম হামিদুর রহমান তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে বলেন, ‘আমরা দেশে এবং সারা বিশ্বে ভালো অবস্থানে আছি। আমাদের ২২০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। আর তিনজন বিদেশি শিক্ষক রয়েছেন।’
বৈঠকে স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য দেন আজকের পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল হাসান। বৈঠক সঞ্চালনা করেন আজকের পত্রিকার উপসম্পাদক সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
উচ্চশিক্ষার প্রসারে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে দেশে ১০৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বনশ্রীতে আজকের পত্রিকার
৫ দিন আগে