Ajker Patrika

গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে নির্বাচনের কথা বলতেই হবে: মান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আলোচনা সভায় কথা বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা
আলোচনা সভায় কথা বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে নির্বাচনের কথা বলতেই হবে। আমরা নির্বাচনের দীর্ঘস্থায়ীর কথা বলতে চাই না। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তার মানে চলতেই থাকবে। জনদুর্ভোগ কমাতে আপনারা চোর, লুটপাট, দুর্নীতিবাজকে ভোট দেবেন নাকি কাকে দেবেন সেটা আপনারাই নির্বাচন করবেন।’

আজ বুধবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণশক্তির মতবিনিময় সভা: জনদুর্ভোগ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন’—শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না এ মন্তব্য করেন। সকাল ১১ থেকে শুরু হয়ে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মান্না বলেন, ‘আমাদের জনদুর্ভোগ আমরাই করি। নির্বাচিত সরকারের প্রতি বিশ্বাস করতে পারি না। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতে হলে নির্বাচনের কথা বলতেই হবে। জনপ্রতিনিধি বাছাই প্রক্রিয়ায় আপনারাই করবেন। চোর, বাটপার, দুর্নীতিবাজকে ভোট দেবেন নাকি কাকে দেবেন সেটা আপনারাই নির্ধারণ করবেন। কিন্তু নির্বাচনে ভোটাধিকারের কথা না বললে সেনাবাহিনী ক্ষমতায় আসবে। দেশে সেনাবাহিনী ক্ষমতায় এসে ভালো কিছু হয়েছে? সেটা জিয়াউর রহমান, ইয়াহিয়া বা যাদের কথাই বলেন।’

তিনি বলেন, ‘রাজনীতি হচ্ছে সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। রাজনীতিকে গুণগতভাবে উন্নত করতে হবে। রাজনীতি হচ্ছে মানুষের প্রতিদিনের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন। ক্ষমতার উৎস জনগণের কথা বলি, অথচ তারা ভোট দিতে পারে না। আওয়ামী আমলের গভীর রাতের নির্বাচন তো নির্বাচনই না।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘আমরা এ কিংবা বি কে বসানোর লড়াই করছি জন্য না। আপনি যদি প্রচারণা করে (ক্যাম্পেইন) করে বোঝাতে সক্ষম হন যে, ওমুককে ভোট দিলে নানা জটিলতার সৃষ্টি হবে, তাহলে সেটি জনগণ মনে করলে ভোট দেবে না। যার কোয়ালিটি নেই, সে গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবে।’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘শোনা যাচ্ছিল ইউনূস সরকার পাঁচ বছরের থাকার কথা। প্রশ্ন আসে, তিনি নির্বাচন ছাড়ায় পাঁচ বছর থাকবেন? নাকি তাঁর কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করবে তিনি কত দিন থাকবেন। ইউনূসের সময়ে প্রচুর পরিমাণ রেমিট্যান্স বেড়েছে এটা সত্য। তবে শুধু রেমিট্যান্সেই দেশের উন্নয়ন হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়া করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে এখন কথা হচ্ছে। করিডর কাকে দেবেন, কীভাবে দেবেন এগুলো বলার অধিকার সবারই আছে। নোবেল পুরস্কার পেলেই তিনি ভালো মানুষ এমন না, বরং তাঁর কাজের মাধ্যমটাও দেখতে হবে।’

স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচন হতে হবে প্রভাব ও ত্রুটিমুক্ত। এমন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করতে হবে যিনি জনদুর্ভোগ কমাতে পারেন, কিন্তু আমরা তা করতে ব্যর্থ হয়। নির্বাচন বা অন্যান্য বিষয় নিয়ে যারাই আন্দোলন করছে তারা কি সবাই আওয়ামী দোসর নাকি?’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবাইকে যেমন রাজাকার বলত, ঠিক একই পথে এরাও হাঁটছে। এভাবে কাউকে দোষারোপ করা যাবে না। ফ্যাসিবাদ যাতে না আসতে পারে, সেইভাবে সংস্কার করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা দরকার। আপনি নির্বাচিত সরকারের কাছে কথা বলতে পারবেন, কিন্তু যাদের নির্বাচনের দরকার পড়বে না, তারা আপনার সঙ্গে দেখাই করবে না। কারণ তাদের তো ভোট লাগে না।’ এ সময় ক্ষমতা কুক্ষিগত না হয়ে বিকেন্দ্রীকরণের কথাও বলেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন—নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার, গণমুক্তি জোটের মহাসচিব মো. আকতার হোসেন, হেজবুত তওহীদের গণমাধ্যম ও যোগাযোগ সম্পাদক শারমিন সুলতানা চৈতি, যুগ্ম নারী বিষয়ক সম্পাদক আয়েশা সিদ্দিকা, ওমর ফারুক ও আলাউদ্দিন কামরুল প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত ১৬ বছর সাংবাদিকেরা সঠিক সংবাদ প্রচার করতে পারত না, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বাড়ি থাকতে পারত না। সেই ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্টের পর উত্তরণ করতে পেরেছি আমরা।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশের মানুষ রাজনৈতিক সংস্কৃতি, কালো টাকার রাজনীতি, দুর্নীতিসহ নানা বিষয়ে সংস্কার করতে চেয়েছিল। এগুলো নিয়ে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা নির্বাচন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে যারা ক্ষমতায় আসবে তা আওয়ামী লীগ সরকারের চেয়ে কোনো অংশে কম হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ভিসায় ছয় দেশ

এর জবাব দেশে দিইনি, জাপানে দিলে বিপদ হবে: পদত্যাগ প্রশ্নে ড. ইউনূস

চারটি গুলির পর নিরস্ত্র মেজর সিনহার গলায় পাড়া দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়: অ্যাটর্নি জেনারেল

‘বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতলেও পাকিস্তানের কোনো লাভ হবে না’

বাজে হারের পরও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত