সরকারি কলেজে শিক্ষকতা শেষে জাতীয় রাজনীতিতে যুক্ত হন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ১৯৯০ সালে যোগ দেন বিএনপিতে। ২০১১ সাল থেকে দলের মহাসচিবের দায়িত্বে আছেন। দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি; ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীনের সঙ্গে সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল হাসান ও উপসম্পাদক সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
কামরুল হাসান ও সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী
আজকের পত্রিকা: জাতীয় সনদ তৈরির কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে বিএনপি কী দেখতে চায়?
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: সংস্কার প্রস্তাব যা এসেছে, তার মধ্যে যেগুলোতে আমরা একমত হব, সেগুলোর সমন্বয়ে সংস্কারের একটি সনদ তৈরি হবে। যে বিষয়গুলোয় মতৈক্য হবে না, সেগুলো জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। সেগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে আসবে। জাতীয় সংসদে যাবে। শেষ পর্যন্ত সবকিছু সংসদে অনুমোদিত হতে হবে।
কোন বিষয়গুলোয় আমরা একমত হচ্ছি, তা ঠিক এ মুহূর্তে আমরা বলতে পারব না। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা একমত হয়েছি।
আজকের পত্রিকা: এই সনদ কার্যকর করার বিষয়ে বিএনপি কী ভূমিকা নেবে?
মির্জা ফখরুল: যে বিষয়গুলোয় একমত হওয়া যাবে, সেগুলো এই সরকার করে ফেলবে। সেগুলো আগামী সংসদে পাস হতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আইন পরিষদে নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষের সদস্যরা কী প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ আছে। দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে সদস্য নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে...
মির্জা ফখরুল: আমরা আনুপাতিক হারে সংসদে সদস্য (নিম্নকক্ষ) নির্বাচনের বিষয়ে একমত নই। উচ্চকক্ষে সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হবেন, তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: আনুপাতিক পদ্ধতিতে আপনারা কী কী অসুবিধা দেখছেন?
মির্জা ফখরুল: আমরা বলেছি, সংসদে আলোচনার মাধ্যমে এটা করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব সংস্কার কমিশন থেকে আছে। বিএনপি ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের যে ৩১ দফা দিয়েছে, তাতে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠনের কথা বলেছে। তাহলে এনসিসি গঠনে বিএনপির আপত্তি কেন?
মির্জা ফখরুল: এটা আমরা একদম না করে দিইনি। বলেছি, পরে সংসদে আলোচনা করে এটা করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি ২০১৬ সালে ‘ভিশন-২০৩০’ দিয়েছে। এতে বলা হয়, ‘এক দিনের গণতন্ত্রে’ সংসদীয় সরকারের আবরণে প্রধানমন্ত্রীর একক নির্বাহী ক্ষমতার মধ্যে একটি স্বৈরাচারী একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্ম হয়। এখন নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো এবং মেয়াদ সীমিত করার প্রস্তাব আছে। এতে কি ভারসাম্য আসবে?
মির্জা ফখরুল: গণতন্ত্র একটি সংস্কৃতি। এটা চর্চার বিষয়। চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়। মূল সমস্যা হলো, যেটা আমরা সবাই মিলে একমত হয়েছি, সেটাও চর্চা করিনি। যেমন কেয়ারটেকার সরকারব্যবস্থা। এটা প্রথমে আমরা মানতে চাইনি। যখন আমরা মেনেছি, এটা সংবিধানে যুক্ত করেছি। এই ব্যবস্থার অধীনে তিনটি নির্বাচন হয়েছে। সবাই বলছে, তিনটিই চমৎকার নির্বাচন হয়েছে। এই ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা গেলে নির্বাচনের ব্যবস্থাটা পাকা হয়ে যেত।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকারে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা একেকজন পণ্ডিত মানুষ। কিন্তু জনগণের অংশগ্রহণ, জনগণকে সঙ্গে নেওয়া, এটা তো চর্চা করতে হবে। আজ যেটা গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো রাজনীতিকদের দৃঢ় অঙ্গীকার থাকা। এখন তাঁদের ছাত্রদের দলকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য যদি আলাদা করে নিয়মের বাইরে গিয়ে যদি কিছু করতে যান, মানুষ তা গ্রহণ করবে কি না, সে সিদ্ধান্তও নিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: রাষ্ট্রপতির বর্তমান এখতিয়ারের সঙ্গে আর কী কী যুক্ত হওয়া দরকার বলে বিএনপি মনে করে?
মির্জা ফখরুল: আমরা সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, রাষ্ট্রপতির কী কী ক্ষমতা থাকা উচিত, আর প্রধানমন্ত্রীর কী কী ক্ষমতা থাকা দরকার। এগুলো এখনই বলতে পারব না। তবে এ ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্য থাকা উচিত। আর মন্ত্রিসভা ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যেও ভারসাম্য থাকা উচিত।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের নেতারা বলেন, বিএনপিকে ‘মাইনাস’ করার চেষ্টা সরকারের ভেতর থেকে আছে...
মির্জা ফখরুল: বর্তমান বিশ্বে বিরাজনীতিকরণের একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশে শুরু হয়েছে এক-এগারো (১১ জানুয়ারি ২০০৭) থেকে। ‘মাইনাস টু’ থিওরির কথা এসেছে। আমাদের অনেকে মনে করেন, এই চেষ্টা এখনো চলছে। এখন একটি মহল—যারা চায় না বিএনপি ক্ষমতায় আসুক, সরকার চালাক, নেতৃত্বের ভূমিকা নিক, তাদের মধ্যে এমন প্রবণতা আছে।
আজকের পত্রিকা: সরকার আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলছে। আপনারা কি মনে করেন, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হবে?
মির্জা ফখরুল: নির্বাচন কী করে হবে? সরকার তো কোনো রোডম্যাপই দেয়নি! সরকার ধোঁয়াটে অবস্থা তৈরি করে রেখেছে। ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত তো কোনো তারিখ ঘোষণা করা হলো না। পরিষ্কার করে বলতে হবে, আমরা এই এই কাজগুলো করে এভাবে নির্বাচন করতে চাই। তা না হলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন—এমন একটি প্রচার আছে...
মির্জা ফখরুল: এটা যারা করে, তারা আসলে গণতন্ত্রে সেভাবে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রে মূলকথা হলো, আপনি জনগণের মতামতের ভিত্তিতে ঠিক করবেন, কী করবেন। নির্বাচন না হলে কী লাভ হবে? আপনি কি এমন একটি শাসনব্যবস্থা চালাবেন, যা নির্বাচিত নয়! এ সরকার নির্বাচিত নয়। এ কারণে অনেক কিছু হচ্ছে না। সাধারণ মানুষ কোথাও বিচার পাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: কয়েকটি দলের আচরণে আপনাদের কি মনে হচ্ছে, নির্বাচনে তাদের আগ্রহ কম...
মির্জা ফখরুল: তাঁরা হয়তো মনে করছেন, নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হলেও তাঁরা জিততে পারবেন না। ভাবছেন, নির্বাচন দেরি হলে তাঁদের হয়তো একটু সুবিধা হবে। আসলে নির্বাচনে যত দেরি হবে, দেশ ও জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিদেশি বিনিয়োগ ততক্ষণ আসবে না, যতক্ষণ না এখানে নির্বাচিত সরকার আসে।
আজকের পত্রিকা: স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার কথা বলছে কয়েকটি দল। বিএনপি চায় সংসদ নির্বাচন। আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অসুবিধা কোথায়?
মির্জা ফখরুল: কোনোমতেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে নয়। মূল সংকট দেখা দিয়েছে সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ অবাধ সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন না হওয়ায়। স্থানীয় সরকার ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এ সমস্যার সমাধান হবে না।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি কি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে?
উত্তর: আমরা সব সময় প্রস্তুত। আজকে নির্বাচন দিন, আমরা কালকেই বেরিয়ে পড়ব।
আজকের পত্রিকা: নারী ইস্যুটি দেখুন, একটি কুশপুত্তলিকা পেটানোসহ নানা কিছু ঘটছে। আপনারা কিছু বলছেন না...।
মির্জা ফখরুল: অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে কমিশন গঠন করেছেন (নারী বিষয়ে), সেটা গঠনের সময় বাংলাদেশের যে সংস্কৃতি, এখানকার মানুষের চিন্তাভাবনা বিবেচনায় নেননি। সরকারের উচিত ছিল, ওই কমিশনে প্রগতিশীল কিছু ইসলামি স্কলারকে রাখা। তাহলে বিষয়গুলো এভাবে আসত না।
আজকের পত্রিকা: মিয়ানমারের সঙ্গে যে করিডর, সেটা নিয়ে ‘নীতিগত সম্মতির’ কথা সরকার বলছে...
মির্জা ফখরুল: এটা তো আবার অস্বীকারও করেছে। একটা ধোঁয়াটে অবস্থা—এত রাখঢাক! কেন? এটার সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রশ্ন জড়িত। এতে রাখঢাকের কিছু নেই। যেহেতু সংসদ নেই, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলুন। শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস পালন করবেন কি না, তা আলাপ করতে সব দলকে ডাকলেন; সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে ভারতের প্রচার প্রসঙ্গে কথা বলতে ডাকলেন, করিডরের ব্যাপারে ডাকবেন না কেন! মিয়ানমার, রাখাইন ও রোহিঙ্গা আমাদের জাতীয় ইস্যু। সবাইকে ডাকুন, পরামর্শ করুন। তবে সংসদ ছাড়া এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না।
আজকের পত্রিকা: আওয়ামী লীগের রাজনীতির ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কী?
মির্জা ফখরুল: পরিষ্কারভাবে বলেছি, আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিস্ট দল। তারা একটি গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। এ জন্য তাদের বিচার করতে হবে। আর যদি আদালত মনে করে, দল হিসেবেও তাদের বিচার করা দরকার, তাহলে তা করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা...
মির্জা ফখরুল: এটা মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে। আদালত সিদ্ধান্ত নেবে। এটা আমি কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার!
আজকের পত্রিকা: জুলাই আন্দোলনে যেসব তরুণ সক্রিয় ছিলেন, রাজনীতির মাঠে তাঁদের কেমন দেখছেন?
মির্জা ফখরুল: ঢাকাতে তরুণেরা যথেষ্ট সক্রিয় আছে। ঢাকার বাইরে সেভাবে চোখে পড়েনি।
আজকের পত্রিকা: এর বাইরে দেশের সাধারণ তরুণদের কথা যদি বলেন...
মির্জা ফখরুল: তরুণদের কোনো সুনির্দিষ্ট মতাদর্শে আনতে না পারার কারণে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এর বহিঃপ্রকাশ ঘটছে রাজপথে। কোনো কিছু হলেই ওরা মারামারি করছে। কলেজে কলেজে মারামারি হচ্ছে। দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ছে। এগুলো বোধ হয় খুব ইতিবাচক কিছু হচ্ছে না। তরুণদের যদি একটি বিপ্লবী দল থাকত, তাহলে হয়তো কিছু কাজ হতো। কিন্তু এখন তো বিপ্লবী দল বলে কিছু নেই। একটি দল আছে, যে দলটি এখনো রাজনৈতিক দল হিসেবে তৈরি হতে পারেনি।
আজকের পত্রিকা: বিএনপিতে বড় কোনো পরিবর্তন আসছে?
মির্জা ফখরুল: আসছে তো! আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) নিজেই তো তরুণ।
আজকের পত্রিকা: ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফিরবেন কবে, কেন ফিরছেন না?
উত্তর: অবশ্যই ফিরবেন। মামলা আছে কয়েকটা। শেষ হলেই চলে আসবেন।
আজকের পত্রিকা: তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান নাকি রাজনীতিতে আসবেন, এমন আওয়াজ আছে...
মির্জা ফখরুল: এটা আওয়াজেই আছে। আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। মিডিয়া গসিপ করছে।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচনের পর বিএনপি জাতীয় সরকার গঠনের কথা বলছে। তাহলে কি বিএনপি এবার এককভাবে নির্বাচনে যাবে?
মির্জা ফখরুল: হ্যাঁ, সিদ্ধান্ত তো তাই আছে এককভাবে নির্বাচন করার। নির্বাচনের আগে সিদ্ধান্ত নেব, জোট করব কি করব না।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারপরের নির্বাচন কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করবেন?
মির্জা ফখরুল: এটা তো এবারই সংবিধানেই এসে যাচ্ছে। এটা সব দলেরই দাবি।
আজকের পত্রিকা: একটি সাধারণ অভিযোগ, বিএনপির লোকেরা বিভিন্ন জায়গায় নিজেরা নিজেরা মারামারি করছে, প্রাধান্য বিস্তারের জন্য...
মির্জা ফখরুল: বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ঘটছে। বহু আগে থেকেই এ দেশে মারামারি গণতন্ত্রের অংশ। ট্রাম্প হেরে যাওয়ার পর ক্যাপিটল হিল আক্রান্ত হয়নি? এতে কি সেখানে গণতন্ত্র শেষ হয়ে গেছে?
আজকের পত্রিকা: আপনার দলের লোকদের বিরুদ্ধে দখল-চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠছে...
মির্জা ফখরুল: তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এগুলো মুহূর্তের মধ্যে দূর করে ফেলতে পারবেন, এটা সম্ভব নয়। তবে দলের পক্ষ থেকে সমন্বিত চেষ্টা আছে। আমরা প্রায় তিন হাজার লোককে বহিষ্কার করেছি দল থেকে।
আজকের পত্রিকা: জাতীয় সরকার হলে সংসদে বিরোধী দলের মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি নিশ্চিত করার যে ব্যাপার থাকে, সেটা কে পালন করবেন?
মির্জা ফখরুল: তখন বিরোধী দল তৈরি হবে। সবাই যে জাতীয় সরকারে আসবে, তা তো নয়। আর আমরা সবাইকে নিয়েই যে জাতীয় সরকার গঠন করব, তা-ও তো বলছি না।
আজকের পত্রিকা: মুহাম্মদ ইউনূসের আন্তর্জাতিক পরিচিতি আছে। আগামী নির্বাচনের পর বিএনপি কি তাঁকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আওতায় কোনো ভূমিকায় দেখতে চায়?
মির্জা ফখরুল: এটা এখনই বলা যাবে না, কে কী করতে চাইবেন, বা দল কী চাইবে। এটা নির্ভর করবে তখনকার রাজনৈতিক মেরুকরণের ওপর।
আজকের পত্রিকা: বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয় ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ, যেখানে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের কাউন্সিল আয়োজনের কোনো পরিকল্পনা কি আছে?
মির্জা ফখরুল: নির্বাচন সামনে রেখে কাউন্সিল করলে অনেক ইস্যু সামনে চলে আসে। তাই এ মুহূর্তে কাউন্সিলের সম্ভাবনা কম। তবে প্রয়োজন হলে কাউন্সিল করব।
আজকের পত্রিকা: অন্তর্বর্তী সরকারে বিএনপির প্রভাব আছে, এতে নির্বাচন প্রভাবিত হতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে...
মির্জা ফখরুল: এটা একেবারেই ভুল কথা; বরং উল্টোটা আছে। আমলাদের বেশির ভাগই আমাদের কাজ করছে না।
আজকের পত্রিকা: জুলাই আন্দোলন বিএনপি কীভাবে দেখে?
মির্জা ফখরুল: একাত্তর হলো আমাদের ‘বটমলাইন’—আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন, আমাদের পরিচিতি, স্বাতন্ত্র্য। আর চব্বিশে ছাত্রদের যে আন্দোলন, তা স্বতঃস্ফূর্ত তাৎক্ষণিক একটি বিষয়। ১৫ বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য যে নিরন্তর লড়াই করেছি আমরা, তার সঙ্গে ছাত্রদের আন্দোলন একটি স্ফুলিঙ্গের ভূমিকা রেখেছে। এটাকেও খাটো করে দেখার কোনো উপায় নেই।
আজকের পত্রিকা: তাহলে এই স্ফুলিঙ্গ বিএনপির ১৫ বছরের আন্দোলনে হলো না কেন?
মির্জা ফখরুল: কখন কোথায় স্ফুলিঙ্গ হবে, এটা বলা মুশকিল। এই ভূখণ্ডেই আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে দীর্ঘ ১২ বছর। কিন্তু যেদিন আসাদ মারা গেছেন, সেদিনই তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর পতন হয়েছে। (এইচ এম) এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলেছে ৯ বছর। কিন্তু যেদিন ডা. মিলন মারা গেলেন, সেদিন এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন ছড়িয়ে গেল।
আজকের পত্রিকা: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে। ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে কীভাবে দেখেন?
মির্জা ফখরুল: আমার ধারণা ছিল, ভারত রাষ্ট্র হিসেবে অনেক বড়, সুপারপাওয়ারের কাছাকাছি। সে অনুযায়ী তাদের কূটনৈতিক চর্চা বাস্তবসম্মত হবে, টেকসই হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সেই প্রত্যাশিত কূটনৈতিক চর্চা কখনোই করেনি। এই যে ‘সোনালি সম্পর্ক’ বা ‘স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক,’ সেটা ছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে। এটা ভারতের দিক থেকে একটি ভুল ছিল। একটি দলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে গিয়ে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে তাদের পুরোপুরি বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এখন ভারতের জায়গা আর নেই।
সেই সম্পর্ক ভারতকে আবার তৈরি করতে হবে। এটা করতে হবে বিভিন্ন উপায়ে; যেমন তিস্তা ও অন্যান্য নদীর পানির হিস্যা দিতে হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার বন্ধ করতে হবে। আরেকটি বড় ইস্যু আছে, তা হচ্ছে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে ফেরত দিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: ভারতের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ কেমন?
মির্জা ফখরুল: আমরা সব দেশের সঙ্গে কাজকর্মের সম্পর্ক রক্ষা করি। ভারতের সঙ্গে সেটা আমাদের হচ্ছে না। আমরা আশা করি, বিএনপির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করার উদ্যোগ ভারত নেবে।
আজকের পত্রিকা: জুলাই অভ্যুত্থানের পর ভারতের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছে?
মির্জা ফখরুল: না, আমাদের সঙ্গে সে ধরনের যোগাযোগ হয়নি। তবে আমাদের ইফতার পার্টিতে তাঁরা এসেছেন।
আজকের পত্রিকা: যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়? আঞ্চলিক রাজনীতিতে দেশটির ভূমিকাকে আপনারা কীভাবে দেখেন?
মির্জা ফখরুল: যুক্তরাষ্ট্র একটি পরাশক্তি। তারা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রাধান্য বিস্তারের জন্য উদ্গ্রীব। ভারতের সঙ্গে জোরালো সম্পর্ক আছে তাদের। সরকারিভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কও খারাপ নয়। তবে সম্পর্কের দিক থেকে ততটুকুই গ্রহণযোগ্য, যতটুকু বাংলাদেশের স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত।
আজকের পত্রিকা: চীনের সঙ্গে সম্পর্ক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। চীন বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কী?
মির্জা ফখরুল: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রথম চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন, ১৯৭৫ সালে। তারপর থেকে চমৎকার সম্পর্ক ছিল। মাঝখানে একটু ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। এখন সম্পর্ক খুবই ভালো।
আজকের পত্রিকা: সাধারণ মানুষের ধারণা, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি খুব কৌশলে এগোচ্ছে, এটা কি ঠিক?
মির্জা ফখরুল: বিএনপি তো ‘ঘর পোড়া গরু, সিঁদুরে মেঘ দেখে ভয় পায়’। এত বড় অভ্যুত্থানের পর আমাদের একটি ভুলে যদি পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে চলে যায়, তাহলে দায়দায়িত্ব বিএনপিকে নিতে হবে।
জনগণকে এটা মনে রাখতে হবে, জনপ্রিয়তামুখী রাজনীতি ভিন্ন বিষয়। বিএনপি একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল। অতীতে কয়েকবার ক্ষমতায় ছিল। আবার ক্ষমতায় আসার আশা করে। সম্ভবত আবার ক্ষমতায় আসবে। এ কারণে বিএনপিকে প্রতিটি পা ফেলতে হয় হিসাব করে। আমরা ইচ্ছা করলেই কাল হরতাল ডাকতে পারি, ঢাকা শহর অচল করে দিতে পারি। কিন্তু সেটা আমরা কেন করব? আমরা মনে করি, এখন ধৈর্য ধরে এ সরকারকে সফল হতে দিতে হবে। দেশকে শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ।
মির্জা ফখরুল: আপনাদেরও ধন্যবাদ।
আজকের পত্রিকা: জাতীয় সনদ তৈরির কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে বিএনপি কী দেখতে চায়?
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: সংস্কার প্রস্তাব যা এসেছে, তার মধ্যে যেগুলোতে আমরা একমত হব, সেগুলোর সমন্বয়ে সংস্কারের একটি সনদ তৈরি হবে। যে বিষয়গুলোয় মতৈক্য হবে না, সেগুলো জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। সেগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে আসবে। জাতীয় সংসদে যাবে। শেষ পর্যন্ত সবকিছু সংসদে অনুমোদিত হতে হবে।
কোন বিষয়গুলোয় আমরা একমত হচ্ছি, তা ঠিক এ মুহূর্তে আমরা বলতে পারব না। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা একমত হয়েছি।
আজকের পত্রিকা: এই সনদ কার্যকর করার বিষয়ে বিএনপি কী ভূমিকা নেবে?
মির্জা ফখরুল: যে বিষয়গুলোয় একমত হওয়া যাবে, সেগুলো এই সরকার করে ফেলবে। সেগুলো আগামী সংসদে পাস হতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আইন পরিষদে নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষের সদস্যরা কী প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ আছে। দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে সদস্য নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে...
মির্জা ফখরুল: আমরা আনুপাতিক হারে সংসদে সদস্য (নিম্নকক্ষ) নির্বাচনের বিষয়ে একমত নই। উচ্চকক্ষে সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হবেন, তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: আনুপাতিক পদ্ধতিতে আপনারা কী কী অসুবিধা দেখছেন?
মির্জা ফখরুল: আমরা বলেছি, সংসদে আলোচনার মাধ্যমে এটা করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব সংস্কার কমিশন থেকে আছে। বিএনপি ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের যে ৩১ দফা দিয়েছে, তাতে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠনের কথা বলেছে। তাহলে এনসিসি গঠনে বিএনপির আপত্তি কেন?
মির্জা ফখরুল: এটা আমরা একদম না করে দিইনি। বলেছি, পরে সংসদে আলোচনা করে এটা করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি ২০১৬ সালে ‘ভিশন-২০৩০’ দিয়েছে। এতে বলা হয়, ‘এক দিনের গণতন্ত্রে’ সংসদীয় সরকারের আবরণে প্রধানমন্ত্রীর একক নির্বাহী ক্ষমতার মধ্যে একটি স্বৈরাচারী একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্ম হয়। এখন নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো এবং মেয়াদ সীমিত করার প্রস্তাব আছে। এতে কি ভারসাম্য আসবে?
মির্জা ফখরুল: গণতন্ত্র একটি সংস্কৃতি। এটা চর্চার বিষয়। চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়। মূল সমস্যা হলো, যেটা আমরা সবাই মিলে একমত হয়েছি, সেটাও চর্চা করিনি। যেমন কেয়ারটেকার সরকারব্যবস্থা। এটা প্রথমে আমরা মানতে চাইনি। যখন আমরা মেনেছি, এটা সংবিধানে যুক্ত করেছি। এই ব্যবস্থার অধীনে তিনটি নির্বাচন হয়েছে। সবাই বলছে, তিনটিই চমৎকার নির্বাচন হয়েছে। এই ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা গেলে নির্বাচনের ব্যবস্থাটা পাকা হয়ে যেত।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকারে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা একেকজন পণ্ডিত মানুষ। কিন্তু জনগণের অংশগ্রহণ, জনগণকে সঙ্গে নেওয়া, এটা তো চর্চা করতে হবে। আজ যেটা গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো রাজনীতিকদের দৃঢ় অঙ্গীকার থাকা। এখন তাঁদের ছাত্রদের দলকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য যদি আলাদা করে নিয়মের বাইরে গিয়ে যদি কিছু করতে যান, মানুষ তা গ্রহণ করবে কি না, সে সিদ্ধান্তও নিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: রাষ্ট্রপতির বর্তমান এখতিয়ারের সঙ্গে আর কী কী যুক্ত হওয়া দরকার বলে বিএনপি মনে করে?
মির্জা ফখরুল: আমরা সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, রাষ্ট্রপতির কী কী ক্ষমতা থাকা উচিত, আর প্রধানমন্ত্রীর কী কী ক্ষমতা থাকা দরকার। এগুলো এখনই বলতে পারব না। তবে এ ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্য থাকা উচিত। আর মন্ত্রিসভা ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যেও ভারসাম্য থাকা উচিত।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের নেতারা বলেন, বিএনপিকে ‘মাইনাস’ করার চেষ্টা সরকারের ভেতর থেকে আছে...
মির্জা ফখরুল: বর্তমান বিশ্বে বিরাজনীতিকরণের একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশে শুরু হয়েছে এক-এগারো (১১ জানুয়ারি ২০০৭) থেকে। ‘মাইনাস টু’ থিওরির কথা এসেছে। আমাদের অনেকে মনে করেন, এই চেষ্টা এখনো চলছে। এখন একটি মহল—যারা চায় না বিএনপি ক্ষমতায় আসুক, সরকার চালাক, নেতৃত্বের ভূমিকা নিক, তাদের মধ্যে এমন প্রবণতা আছে।
আজকের পত্রিকা: সরকার আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলছে। আপনারা কি মনে করেন, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হবে?
মির্জা ফখরুল: নির্বাচন কী করে হবে? সরকার তো কোনো রোডম্যাপই দেয়নি! সরকার ধোঁয়াটে অবস্থা তৈরি করে রেখেছে। ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত তো কোনো তারিখ ঘোষণা করা হলো না। পরিষ্কার করে বলতে হবে, আমরা এই এই কাজগুলো করে এভাবে নির্বাচন করতে চাই। তা না হলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন—এমন একটি প্রচার আছে...
মির্জা ফখরুল: এটা যারা করে, তারা আসলে গণতন্ত্রে সেভাবে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রে মূলকথা হলো, আপনি জনগণের মতামতের ভিত্তিতে ঠিক করবেন, কী করবেন। নির্বাচন না হলে কী লাভ হবে? আপনি কি এমন একটি শাসনব্যবস্থা চালাবেন, যা নির্বাচিত নয়! এ সরকার নির্বাচিত নয়। এ কারণে অনেক কিছু হচ্ছে না। সাধারণ মানুষ কোথাও বিচার পাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: কয়েকটি দলের আচরণে আপনাদের কি মনে হচ্ছে, নির্বাচনে তাদের আগ্রহ কম...
মির্জা ফখরুল: তাঁরা হয়তো মনে করছেন, নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হলেও তাঁরা জিততে পারবেন না। ভাবছেন, নির্বাচন দেরি হলে তাঁদের হয়তো একটু সুবিধা হবে। আসলে নির্বাচনে যত দেরি হবে, দেশ ও জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিদেশি বিনিয়োগ ততক্ষণ আসবে না, যতক্ষণ না এখানে নির্বাচিত সরকার আসে।
আজকের পত্রিকা: স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার কথা বলছে কয়েকটি দল। বিএনপি চায় সংসদ নির্বাচন। আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অসুবিধা কোথায়?
মির্জা ফখরুল: কোনোমতেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে নয়। মূল সংকট দেখা দিয়েছে সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ অবাধ সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন না হওয়ায়। স্থানীয় সরকার ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এ সমস্যার সমাধান হবে না।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি কি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে?
উত্তর: আমরা সব সময় প্রস্তুত। আজকে নির্বাচন দিন, আমরা কালকেই বেরিয়ে পড়ব।
আজকের পত্রিকা: নারী ইস্যুটি দেখুন, একটি কুশপুত্তলিকা পেটানোসহ নানা কিছু ঘটছে। আপনারা কিছু বলছেন না...।
মির্জা ফখরুল: অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে কমিশন গঠন করেছেন (নারী বিষয়ে), সেটা গঠনের সময় বাংলাদেশের যে সংস্কৃতি, এখানকার মানুষের চিন্তাভাবনা বিবেচনায় নেননি। সরকারের উচিত ছিল, ওই কমিশনে প্রগতিশীল কিছু ইসলামি স্কলারকে রাখা। তাহলে বিষয়গুলো এভাবে আসত না।
আজকের পত্রিকা: মিয়ানমারের সঙ্গে যে করিডর, সেটা নিয়ে ‘নীতিগত সম্মতির’ কথা সরকার বলছে...
মির্জা ফখরুল: এটা তো আবার অস্বীকারও করেছে। একটা ধোঁয়াটে অবস্থা—এত রাখঢাক! কেন? এটার সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রশ্ন জড়িত। এতে রাখঢাকের কিছু নেই। যেহেতু সংসদ নেই, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলুন। শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস পালন করবেন কি না, তা আলাপ করতে সব দলকে ডাকলেন; সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে ভারতের প্রচার প্রসঙ্গে কথা বলতে ডাকলেন, করিডরের ব্যাপারে ডাকবেন না কেন! মিয়ানমার, রাখাইন ও রোহিঙ্গা আমাদের জাতীয় ইস্যু। সবাইকে ডাকুন, পরামর্শ করুন। তবে সংসদ ছাড়া এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না।
আজকের পত্রিকা: আওয়ামী লীগের রাজনীতির ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কী?
মির্জা ফখরুল: পরিষ্কারভাবে বলেছি, আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিস্ট দল। তারা একটি গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। এ জন্য তাদের বিচার করতে হবে। আর যদি আদালত মনে করে, দল হিসেবেও তাদের বিচার করা দরকার, তাহলে তা করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা...
মির্জা ফখরুল: এটা মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে। আদালত সিদ্ধান্ত নেবে। এটা আমি কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার!
আজকের পত্রিকা: জুলাই আন্দোলনে যেসব তরুণ সক্রিয় ছিলেন, রাজনীতির মাঠে তাঁদের কেমন দেখছেন?
মির্জা ফখরুল: ঢাকাতে তরুণেরা যথেষ্ট সক্রিয় আছে। ঢাকার বাইরে সেভাবে চোখে পড়েনি।
আজকের পত্রিকা: এর বাইরে দেশের সাধারণ তরুণদের কথা যদি বলেন...
মির্জা ফখরুল: তরুণদের কোনো সুনির্দিষ্ট মতাদর্শে আনতে না পারার কারণে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এর বহিঃপ্রকাশ ঘটছে রাজপথে। কোনো কিছু হলেই ওরা মারামারি করছে। কলেজে কলেজে মারামারি হচ্ছে। দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ছে। এগুলো বোধ হয় খুব ইতিবাচক কিছু হচ্ছে না। তরুণদের যদি একটি বিপ্লবী দল থাকত, তাহলে হয়তো কিছু কাজ হতো। কিন্তু এখন তো বিপ্লবী দল বলে কিছু নেই। একটি দল আছে, যে দলটি এখনো রাজনৈতিক দল হিসেবে তৈরি হতে পারেনি।
আজকের পত্রিকা: বিএনপিতে বড় কোনো পরিবর্তন আসছে?
মির্জা ফখরুল: আসছে তো! আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) নিজেই তো তরুণ।
আজকের পত্রিকা: ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফিরবেন কবে, কেন ফিরছেন না?
উত্তর: অবশ্যই ফিরবেন। মামলা আছে কয়েকটা। শেষ হলেই চলে আসবেন।
আজকের পত্রিকা: তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান নাকি রাজনীতিতে আসবেন, এমন আওয়াজ আছে...
মির্জা ফখরুল: এটা আওয়াজেই আছে। আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। মিডিয়া গসিপ করছে।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচনের পর বিএনপি জাতীয় সরকার গঠনের কথা বলছে। তাহলে কি বিএনপি এবার এককভাবে নির্বাচনে যাবে?
মির্জা ফখরুল: হ্যাঁ, সিদ্ধান্ত তো তাই আছে এককভাবে নির্বাচন করার। নির্বাচনের আগে সিদ্ধান্ত নেব, জোট করব কি করব না।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারপরের নির্বাচন কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করবেন?
মির্জা ফখরুল: এটা তো এবারই সংবিধানেই এসে যাচ্ছে। এটা সব দলেরই দাবি।
আজকের পত্রিকা: একটি সাধারণ অভিযোগ, বিএনপির লোকেরা বিভিন্ন জায়গায় নিজেরা নিজেরা মারামারি করছে, প্রাধান্য বিস্তারের জন্য...
মির্জা ফখরুল: বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ঘটছে। বহু আগে থেকেই এ দেশে মারামারি গণতন্ত্রের অংশ। ট্রাম্প হেরে যাওয়ার পর ক্যাপিটল হিল আক্রান্ত হয়নি? এতে কি সেখানে গণতন্ত্র শেষ হয়ে গেছে?
আজকের পত্রিকা: আপনার দলের লোকদের বিরুদ্ধে দখল-চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠছে...
মির্জা ফখরুল: তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এগুলো মুহূর্তের মধ্যে দূর করে ফেলতে পারবেন, এটা সম্ভব নয়। তবে দলের পক্ষ থেকে সমন্বিত চেষ্টা আছে। আমরা প্রায় তিন হাজার লোককে বহিষ্কার করেছি দল থেকে।
আজকের পত্রিকা: জাতীয় সরকার হলে সংসদে বিরোধী দলের মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি নিশ্চিত করার যে ব্যাপার থাকে, সেটা কে পালন করবেন?
মির্জা ফখরুল: তখন বিরোধী দল তৈরি হবে। সবাই যে জাতীয় সরকারে আসবে, তা তো নয়। আর আমরা সবাইকে নিয়েই যে জাতীয় সরকার গঠন করব, তা-ও তো বলছি না।
আজকের পত্রিকা: মুহাম্মদ ইউনূসের আন্তর্জাতিক পরিচিতি আছে। আগামী নির্বাচনের পর বিএনপি কি তাঁকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আওতায় কোনো ভূমিকায় দেখতে চায়?
মির্জা ফখরুল: এটা এখনই বলা যাবে না, কে কী করতে চাইবেন, বা দল কী চাইবে। এটা নির্ভর করবে তখনকার রাজনৈতিক মেরুকরণের ওপর।
আজকের পত্রিকা: বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয় ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ, যেখানে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের কাউন্সিল আয়োজনের কোনো পরিকল্পনা কি আছে?
মির্জা ফখরুল: নির্বাচন সামনে রেখে কাউন্সিল করলে অনেক ইস্যু সামনে চলে আসে। তাই এ মুহূর্তে কাউন্সিলের সম্ভাবনা কম। তবে প্রয়োজন হলে কাউন্সিল করব।
আজকের পত্রিকা: অন্তর্বর্তী সরকারে বিএনপির প্রভাব আছে, এতে নির্বাচন প্রভাবিত হতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে...
মির্জা ফখরুল: এটা একেবারেই ভুল কথা; বরং উল্টোটা আছে। আমলাদের বেশির ভাগই আমাদের কাজ করছে না।
আজকের পত্রিকা: জুলাই আন্দোলন বিএনপি কীভাবে দেখে?
মির্জা ফখরুল: একাত্তর হলো আমাদের ‘বটমলাইন’—আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন, আমাদের পরিচিতি, স্বাতন্ত্র্য। আর চব্বিশে ছাত্রদের যে আন্দোলন, তা স্বতঃস্ফূর্ত তাৎক্ষণিক একটি বিষয়। ১৫ বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য যে নিরন্তর লড়াই করেছি আমরা, তার সঙ্গে ছাত্রদের আন্দোলন একটি স্ফুলিঙ্গের ভূমিকা রেখেছে। এটাকেও খাটো করে দেখার কোনো উপায় নেই।
আজকের পত্রিকা: তাহলে এই স্ফুলিঙ্গ বিএনপির ১৫ বছরের আন্দোলনে হলো না কেন?
মির্জা ফখরুল: কখন কোথায় স্ফুলিঙ্গ হবে, এটা বলা মুশকিল। এই ভূখণ্ডেই আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে দীর্ঘ ১২ বছর। কিন্তু যেদিন আসাদ মারা গেছেন, সেদিনই তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর পতন হয়েছে। (এইচ এম) এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলেছে ৯ বছর। কিন্তু যেদিন ডা. মিলন মারা গেলেন, সেদিন এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন ছড়িয়ে গেল।
আজকের পত্রিকা: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে। ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে কীভাবে দেখেন?
মির্জা ফখরুল: আমার ধারণা ছিল, ভারত রাষ্ট্র হিসেবে অনেক বড়, সুপারপাওয়ারের কাছাকাছি। সে অনুযায়ী তাদের কূটনৈতিক চর্চা বাস্তবসম্মত হবে, টেকসই হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সেই প্রত্যাশিত কূটনৈতিক চর্চা কখনোই করেনি। এই যে ‘সোনালি সম্পর্ক’ বা ‘স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক,’ সেটা ছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে। এটা ভারতের দিক থেকে একটি ভুল ছিল। একটি দলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে গিয়ে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে তাদের পুরোপুরি বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এখন ভারতের জায়গা আর নেই।
সেই সম্পর্ক ভারতকে আবার তৈরি করতে হবে। এটা করতে হবে বিভিন্ন উপায়ে; যেমন তিস্তা ও অন্যান্য নদীর পানির হিস্যা দিতে হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার বন্ধ করতে হবে। আরেকটি বড় ইস্যু আছে, তা হচ্ছে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে ফেরত দিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: ভারতের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ কেমন?
মির্জা ফখরুল: আমরা সব দেশের সঙ্গে কাজকর্মের সম্পর্ক রক্ষা করি। ভারতের সঙ্গে সেটা আমাদের হচ্ছে না। আমরা আশা করি, বিএনপির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করার উদ্যোগ ভারত নেবে।
আজকের পত্রিকা: জুলাই অভ্যুত্থানের পর ভারতের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছে?
মির্জা ফখরুল: না, আমাদের সঙ্গে সে ধরনের যোগাযোগ হয়নি। তবে আমাদের ইফতার পার্টিতে তাঁরা এসেছেন।
আজকের পত্রিকা: যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়? আঞ্চলিক রাজনীতিতে দেশটির ভূমিকাকে আপনারা কীভাবে দেখেন?
মির্জা ফখরুল: যুক্তরাষ্ট্র একটি পরাশক্তি। তারা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রাধান্য বিস্তারের জন্য উদ্গ্রীব। ভারতের সঙ্গে জোরালো সম্পর্ক আছে তাদের। সরকারিভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কও খারাপ নয়। তবে সম্পর্কের দিক থেকে ততটুকুই গ্রহণযোগ্য, যতটুকু বাংলাদেশের স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত।
আজকের পত্রিকা: চীনের সঙ্গে সম্পর্ক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। চীন বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কী?
মির্জা ফখরুল: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রথম চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন, ১৯৭৫ সালে। তারপর থেকে চমৎকার সম্পর্ক ছিল। মাঝখানে একটু ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। এখন সম্পর্ক খুবই ভালো।
আজকের পত্রিকা: সাধারণ মানুষের ধারণা, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি খুব কৌশলে এগোচ্ছে, এটা কি ঠিক?
মির্জা ফখরুল: বিএনপি তো ‘ঘর পোড়া গরু, সিঁদুরে মেঘ দেখে ভয় পায়’। এত বড় অভ্যুত্থানের পর আমাদের একটি ভুলে যদি পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে চলে যায়, তাহলে দায়দায়িত্ব বিএনপিকে নিতে হবে।
জনগণকে এটা মনে রাখতে হবে, জনপ্রিয়তামুখী রাজনীতি ভিন্ন বিষয়। বিএনপি একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল। অতীতে কয়েকবার ক্ষমতায় ছিল। আবার ক্ষমতায় আসার আশা করে। সম্ভবত আবার ক্ষমতায় আসবে। এ কারণে বিএনপিকে প্রতিটি পা ফেলতে হয় হিসাব করে। আমরা ইচ্ছা করলেই কাল হরতাল ডাকতে পারি, ঢাকা শহর অচল করে দিতে পারি। কিন্তু সেটা আমরা কেন করব? আমরা মনে করি, এখন ধৈর্য ধরে এ সরকারকে সফল হতে দিতে হবে। দেশকে শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ।
মির্জা ফখরুল: আপনাদেরও ধন্যবাদ।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ঢাকার উদ্দেশে লন্ডন ছেড়েছেন। স্থানীয় সময় আজ সোমবার দুপুরে হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে বিদায় জানান তারেক রহমানসহ পরিবারের সদস্যরা। সেখান তাঁকে বিদায় জানাতে আসা দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘ভাইয়ার খেয়াল রেখো।’
৬ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে নতুন দল জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আত্মপ্রকাশ করে নতুন রাজনৈতিক দলটি।
৭ ঘণ্টা আগেচার মাস পর দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার পথে যাত্রা করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে আছেন দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান।
৭ ঘণ্টা আগেনারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রস্তাবনার সমালোচনা করতে গিয়ে ‘বিভিন্ন’ সমাবেশ থেকে নারীদের প্রতি প্রকাশ্যে যে শ্লেষাত্মক ও অমর্যাদাকর বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
৮ ঘণ্টা আগে