Ajker Patrika

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পক্ষে অস্ট্রেলিয়ার এমপিদের অবস্থানে তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৭
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পক্ষে অস্ট্রেলিয়ার এমপিদের অবস্থানে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ শনিবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই কৃতজ্ঞতা জানান।

ওই পোস্টে তারেক রহমান বলেন, ‘অনেক বাংলাদেশি (আমিও তাদের একজন) অস্ট্রেলিয়ার সেই সংসদ সদস্যদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই, যাঁরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুষ্ঠু নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে স্পষ্ট ও বিবেকবান অবস্থান প্রকাশ করেছেন। তাঁদের এই বিবেচনাপ্রসূত বক্তব্য বিশ্বজনীন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি গভীর অঙ্গীকারের প্রতিফলন এবং বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের প্রতি আন্তরিক দায়িত্ববোধের প্রকাশ।’

তারেক রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশজুড়ে অনেক নাগরিক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং এমন একটি নির্বাচনী পরিবেশের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, যেখানে প্রত্যেকে ভয় বা বাধা ছাড়াই নিজের মতামত জানাতে পারে। এই উদ্বেগ এসেছে সাধারণ মানুষের মাঝ থেকে—যাঁরা কেবল স্থিতিশীলতা, ন্যায়বিচার এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যৎ বেছে নেওয়ার সুযোগ চান।

তিনি আরও বলেন, এমন সংবেদনশীল মুহূর্তে, সব নির্বাচনী অংশগ্রহণকারীর নিরাপত্তা, মর্যাদা ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করার যে আহ্বান অস্ট্রেলীয় এমপিরা জানিয়েছেন, তা দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে গভীরভাবে সংগতিপূর্ণ। তাঁদের বার্তা সেই সত্যকে স্বীকৃতি দেয়, যা কয়েক মাস ধরে লাখো মানুষ উচ্চারণ করে আসছেন—গণতন্ত্র তখনই সবচেয়ে শক্তিশালী হয়, যখন তা অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্বচ্ছ এবং সহিংসতা বা ভয়ভীতি থেকে মুক্ত থাকে।

তারেক রহমান বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এসব উদ্বেগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরছেন। অস্ট্রেলিয়ার সমাজে তাঁদের অবদান এবং মাতৃভূমির প্রতি তাঁদের অটুট টান দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে। দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে উৎসারিত তাঁদের এই প্রচেষ্টা নিশ্চিত করছে। এতে বাংলাদেশের মানুষের চ্যালেঞ্জ ও প্রত্যাশা বৈশ্বিক পর্যায়ে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হচ্ছে।

তারেক রহমান বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে দৃঢ় বন্ধন বজায় রেখে চলেছে। বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানো অস্ট্রেলীয় প্রতিনিধিদের প্রতি আমরা আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের সমর্থন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—গণতন্ত্রের প্রতি বৈশ্বিক অঙ্গীকার একটি যৌথ দায়িত্ব। দেশগুলো যখন একে অপরের পাশে দাঁড়ায়, তখন আমরা শান্তি, ন্যায় এবং অগ্রগতির পথে আরও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যেতে পারি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনর্বহাল করবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সালাহউদ্দিন আহমদ। ফাইল ছবি
সালাহউদ্দিন আহমদ। ফাইল ছবি

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনর্বহাল করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘সম্মিলিত খতমে নবুয়ত পরিষদ’-এর উদ্যোগে আয়োজিত খতমে নবুয়ত মহাসম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সম্মেলনে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যেটা সংযোজন করেছিলেন—মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস–সংবিধানের প্রস্তাবনায় ছিল এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ছিল, অনুচ্ছেদ ৮-এর মধ্যে। সেটা তুলে দেওয়া হয়েছে আপনারা জানেন। ইনশা আল্লাহ আমরা সেটা পুনর্বহাল করব।’

বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন কর্মী। আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে প্রথমবারের মতো ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করেছিলেন।’

সালাহউদ্দীন আহমদ আরও বলেন, ‘রাসুল (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা সারা বিশ্বের রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন। আমরা মুসলমান।...রাসুল (সা.) বলে গিয়েছেন, “আমিই সর্বশেষ নবী। আমার পরে কোনো নবী আসবে না। ” যদি এরপরও কেউ নিজেকে নবী ঘোষণা করে বা দাবি করে, তাহলে তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই ঘোষণার মধ্যে নাই।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের দেয়; এ দেশের জনগণ যদি মহব্বত করে আমাদের দায়িত্ব দেয়; যদি আপনারা সবাই সহযোগিতা করেন, তাহলে আপনাদের আজকের এই যে দাবিদাওয়া, এসব দাবিদাওয়ার পক্ষে আমরা। এসব দাবি নিয়ে সংসদে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কানুনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ইনশা আল্লাহ। এ জন্য সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

ধর্মীয় এ মহাসম্মেলনে বক্তারা কাদিয়ানিদের (আহমদিয়া মুসলিম হিসেবে পরিচিত) রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবি তোলেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা। পাকিস্তানের কয়েকজন ইসলামি চিন্তাবিদ, রাজনীতিকসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি আলেম সম্মেলনে যোগ দেন। এদের মধ্যে ছিলেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের সদস্য ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা ইলিয়াস গুম্মান, পাকিস্তানের বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা হানিফ জলন্ধরী। বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ আলেম ও ইসলামি দলের নেতাদের মধ্যে ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রয়োজনে আবার ৫ আগস্টের আবির্ভাব হবে: তাহের

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
চৌদ্দগ্রামের গুনবতী হাইস্কুল মাঠে জামায়াতের জনসভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চৌদ্দগ্রামের গুনবতী হাইস্কুল মাঠে জামায়াতের জনসভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রয়োজনে আবার ৫ আগস্টের আবির্ভাব হবে। তবুও মানুষ আর স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের গুনবতী হাইস্কুল মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘প্রয়োজন হলে আবারও বিপ্লবের ডাক দেওয়া হবে। আবার ৫ আগস্টের আবির্ভাব হবে। বাংলার মানুষ আর স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেবে না।

যতই ষড়যন্ত্র হোক বাংলাদেশের যুবকদের মধ্যে যে চেতনা রয়েছে, পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, ভালোকে গ্রহণ করার যে মানসিকতার সৃষ্টি হয়েছে, এই শুভ বুদ্ধির যে উদয় হয়েছে, কোনো ষড়যন্ত্রই তা দমিয়ে দিতে পারবে না।’

তাহের বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যখন ছিলেন তখন বিএনপি ছিল বড় ও জনপ্রিয় দল, বেগম খালেদা জিয়া যখন দায়িত্বে ছিলেন তখনো বিএনপি জনপ্রিয় দল, তবে এখন বড় দল কিন্তু জনপ্রিয় নয়। এখন বাংলাদেশ সবচেয়ে জনপ্রিয় দল জামায়াতে ইসলামী।’

বিএনপির উদ্দেশে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘সংস্কারকে প্রত্যাখ্যান করা মানে আবারও ১৫ বছরের অন্ধকারে ফিরে যাওয়া এবং ভোট ডাকাতি করে, ভোটবিহীন নির্বাচন করে আবার ফ্যাসিবাদের জন্য দরজা-জানালা খোলা রাখা। এটি শহীদদের সঙ্গে বেইমানি এবং রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। বাংলাদেশকে আর পেছনে নেওয়া যাবে না।’

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে নতুন ৪ কোটি ভোটার; চাঁদাবাজের পুরোনো রেকর্ড যাদের আছে, দুর্নীতিতে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়াদের জনগণ আর ভোট দেবে না।’

জামায়াত নেতা আরও বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এলে হত্যা বা লুটপাটের রাজনীতি আর হবে না। সব দলেরই স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার অধিকার নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সব ধর্মের মানুষই নিরাপদে ও শান্তিতে বসবাস করবে।

এ সময় উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি মু. বেলাল হোসাইন, সাবেক আমির সাহাব উদ্দিন, পৌর আমির মাওলানা ইব্রাহীম, গুনবতী ইউনিয়নের আমির ইউসুফ মেম্বার, স্থানীয় জামায়াত নেতা মেশকাত উদ্দিন সেলিম, আইয়ুব আলী ফরায়েজী ও জেলা-উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জামায়াতের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জামায়াতের

রাজশাহীতে মহানগর দায়রা জজ আবদুর রহমানের বাসায় হত্যাকাণ্ডে গভীর শোক, উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। পাশাপাশি তিনি বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

আজ শনিবার (১৫ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, এ ধরনের বর্বর হত্যাকাণ্ড কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। একটি নিরপরাধ শিশুকে হত্যা করা এবং একজন মায়ের ওপর সন্ত্রাসী হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা এ জঘন্য হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে নিহত তাওসিফের শোকাহত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে দোয়া করছি, মহান রব তাদেরকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন। আহত তাসমিন নাহার লুসীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’

গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন, প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার ও আইনের মাধ্যমে দ্রুত ও নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এ ঘটনা যেন কোনোভাবেই গাফিলতি বা ধামাচাপা না থাকে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি এ দাবি জানাচ্ছি এবং বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আলুর দাম ও গণভোট—দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ: আখতার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। ফাইল ছবি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। ফাইল ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, দুটো বড় রাজনৈতিক দল কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম আর গণভোটকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। একটি দল কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম চাওয়ার কথা বলে জনগণের প্রত্যাশিত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার যে সংস্কার, সেটাকে গৌণ করে ফেলছে। আরেকটি দল ‘আলু না গণভোট’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে আলুর যে ন্যায্য দাম, অর্থাৎ কৃষিপণের ন্যায্য দাম কৃষকেরা যে পাচ্ছেন না, সেটাকে গৌণ করে ফেলছে। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় কৃষিপণের ন্যায্য দাম এবং সংস্কারের জন্য গণভোট দুইটাই একই সঙ্গে সমান্তরালে গুরুত্বপূর্ণ।

রাজধানীর ফার্মগেটে আজ শনিবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে ‘তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা: জাতীয় অর্থনীতির নতুন শক্তি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় কৃষি দিবস উপলক্ষে এনসিপির কৃষিবিদ উইং এই সেমিনারের আয়োজন করে।

আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এই বাংলাদেশ রাষ্ট্রযন্ত্রকে যদি সংস্কার করতে না পারি, তাহলে আমরা কৃষকের ন্যায্য মূল্য অর্জন করতে পারব না। যদি এই বাংলাদেশটা এক ব্যক্তির কাছে, একটা দলের কবজায় থেকে যায় এবং পুরোনো সমস্ত কলকবজা, পুরোনো ব্যবস্থাপনায় টিকে থাকে, তাহলে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি সম্ভব না। কৃষকের মুক্তি সম্ভব না। কৃষকের মুক্তির জন্যই, এ দেশের জনতার মুক্তির জন্যই, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সংস্কার অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা সংস্কারকে এবং কৃষকের চাহিদাকে, ন্যায্যতাকে পরস্পর বিপরীতমুখী অবস্থান থেকে দেখতে পারি না।’

আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগীরা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘যে উন্নয়নের কথা বলা হয়েছিল, সেটা গুটিকয়েক আওয়ামী নেতার উন্নয়ন ব্যতিরেকে জনগণের জন্য অভিশাপে পরিণত হয়েছিল। সেই ফ্যাসিবাদী আমলের বাংলাদেশ সামনের দিনে আমরা আর প্রত্যাশা করি না। আমরা সামনের দিনে এমন এক বাংলাদেশ প্রত্যাশা করি, যেই বাংলাদেশের রাজনীতি মারামারি-কাটাকাটি-হট্টগোলের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হবে না।’

জুলাই জাতীয় সনদের বিষয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘জুলাই সনদ নিয়ে অনেকগুলো দল যে ধোঁয়াশার জায়গা তৈরি করেছে, সেটাকে আমরা সন্দেহের চোখে দেখি। আমরা ঐকমত্য কমিশনে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ ও গণভোটের মধ্য দিয়ে সংবিধানের মৌলিক সংস্কারগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মোটাদাগে একমত হয়েছি। কিন্তু ইদানীং একটি দলের নেতারা চূড়ান্তভাবে গণভোটের রায়কে প্রত্যাখ্যান করার মতামত ব্যক্ত করছেন। তাঁরা গণভোটে “না” ভোট দেওয়ার জন্য ক্যাম্পেইন করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সেটাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাঁরা সে ক্যাম্পেইন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু তারপরও এখনো পর্যন্ত তারা বাংলাদেশের জনগণের রায়কে শ্রদ্ধা দেখাবেন, সে ধরনের কোনো মতিগতি আমরা সেই রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রত্যক্ষ করছি না।’

আখতার বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) যে আদেশ জারি করা হয়েছে, অনেকগুলো জায়গাতে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে, সংস্কারকে ভাগ করে ফেলা হয়েছে সরকারের মর্জিমতো। এবং সংস্কারের বিষয়বস্তুগুলোকে রাজনৈতিক দলের আওতাধীন করে ফেলা হয়েছে, তাদের মতিগতির ওপরে, তাদের অভিরুচির ওপরে। এমন অস্পষ্ট অবস্থায় রেখে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে জুলাই সনদের মধ্য দিয়ে পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব কি না—সে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’

জুলাই সনদের অস্পষ্টতা দূর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো যেন জনগণের রায় মেনে নিয়ে এই বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে জনগণের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সে রাস্তায় সকলে মিলে হাঁটবে, কোনো বিঘ্ন তৈরি করবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত