Ajker Patrika

জাতীয় পার্টিকে আপসের মূল্য দিতে হচ্ছে রংপুরেই

শিপুল ইসলাম, রংপুর
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯: ১২
জাতীয় পার্টিকে আপসের মূল্য দিতে হচ্ছে রংপুরেই

রংপুরকে একসময় জাতীয় পার্টির (জাপা) দুর্গ বলা হতো। কিন্তু গত দেড় দশকে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, স্বজনপ্রীতি আর আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপসের কারণে এখন চরম মূল্য দিতে হচ্ছে দলটিকে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুর্গ ফেরত পেতে বেশ তৎপর হয়েছে জাতীয় পার্টি। তবে তৃণমূলের নেতারা বলছেন, রংপুরে জাতীয় পার্টিকে আবার আগের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে।

রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াছির বলেন, ‘রংপুর বিভাগের সব জেলা, উপজেলার কমিটিগুলোকে সক্রিয় করতে নির্দেশ দিয়েছেন দলের চেয়ারম্যান। সে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করা যাচ্ছে, জাতীয় পার্টির ঘাঁটি রংপুর পুনরুদ্ধার করতে পারব।’

তবে দলের কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনেক প্রতিবন্ধকতা দেখছি। দলের আসল লোকগুলো নেই। নির্বাচন করতে গেলে তো প্রার্থী লাগবে। ফাইন্যান্সিয়ালি সাউন্ড থাকতে হবে। নির্বাচনে মিনিমাম খরচ করার সামর্থ্য থাকতে হবে। পাশাপাশি দলের সাপোর্ট লাগবে। তিনটার সমন্বয় হলে একজন প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার আশা থাকে। সে ক্ষেত্রে ফিট ক্যান্ডিডেটের (যোগ্য প্রার্থী) অভাব খুবই মারাত্মকভাবে আমরা ফিল করছি।’

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে সুযোগ দিতে আওয়ামী লীগ ২৬টি আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেয়। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলীয় নেতারা ভোটে ছিলেন। ক্ষমতার মোহে জাতীয় পার্টির এমন আসন ভাগাভাগির কারণে লাঙ্গলবিমুখ হয়ে পড়েন রংপুরের মানুষ। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বিভক্ত হয়ে পড়েন নেতা-কর্মীরাও। তার ফল হাতেনাতে পাওয়া যায় ভোটের মাঠে। ব্যাপক ব্যবধানে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হন। ছয়টি আসনের পাঁচটিতেই পরাজিত হন লাঙ্গলের প্রার্থীরা। তিনজন জামানত হারান। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বদলে গেছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। সেই সঙ্গে বদলে যাচ্ছে দলগুলোর হিসাবনিকাশও। এমন অবস্থায় জাপা নতুন উদ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে চাইলেও বেশ বেগ পেতে হবে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও মহানগর জাতীয় পার্টি জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করার জন্য জোটে নিয়েছিল। তারা সফলও হয়েছে। বৃহত্তর রংপুরে একসময় ২২টি আসন জাতীয় পার্টির ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৪টি আসন ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ আসার পর ভোটারবিহীন নির্বাচনে তাদের ইচ্ছেমতো প্রার্থী দিয়ে আমাদের জনপ্রিয় আসনগুলোকে তাদের করে নিয়েছিল। তারপরও আমি মনে করি, আমরা রংপুরে সুসংগঠিত। সম্প্রতি আমাদের যৌথ সভা হয়েছে। সেখানে হারানো আসনগুলো পুনরুদ্ধার ও বৃহত্তর রংপুরকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী মাস থেকে কর্মসূচিগুলো শুরু করব।’

জাপার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, রংপুর সদর ছাড়া জেলার অন্য পাঁচটি আসনে দীর্ঘদিন রাজনীতি না থাকার কারণে এবং আগে যাঁরা প্রার্থী ছিলেন, তাঁদের অনুপস্থিতিতে মাঠের কর্মী কমে গেছে। দলকে ভালো অবস্থানে নিতে হলে নিষ্ক্রিয় নেতা-কর্মীদের আবার সক্রিয় করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনা দরকার। ভবিষ্যতে নির্বাচনে যাঁরা জাতীয় পার্টির প্রার্থী হবেন, তাঁদের আর্থিক সক্ষমতাও থাকতে হবে। সভা-সমাবেশ করে দলকে উজ্জীবিত করতে অর্থসহায়তাও দরকার।

রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলাম, যেটা আমরা বলতে পারতাম না। চেয়ারম্যানকে জিম্মি করত। চেয়ারম্যানের সঙ্গে যাঁরা অন্য আছেন, তাঁরা সরকারের লেজুড়বৃত্তিক ছিলেন। কোনো সিদ্ধান্ত নিতে গেলে তাঁরা সেটাকে বাইপাস করতেন। পুরো জাতি একটা পক্ষে, কিন্তু জাতীয় পার্টি দালালি করেছে। এটা তো মেনে নেওয়া যায় না। সেন্ট্রাল যেহেতু নির্দেশ দেয়, সেহেতু ওটা আমাদের মেনে নিতে হয়েছে। ৫ তারিখের পর আমরা মনে করছি, আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। জাতীয় পার্টি, লাঙ্গলের যে ঐতিহ্য, তা ফিরিয়ে আনার জন্য তৎপর হয়েছি। আমরা দলকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করছি।’

আর জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘রুট লেভেল (তৃণমূল) পর্যন্ত যে প্ল্যাটফর্ম আছে, সেগুলো সক্রিয় করার চেষ্টা করছি। রংপুর জেলার ছয়টি আসন ও বিভাগের ৫৬টি আসন অর্গানাইজ করার চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির প্রতি মানুষ একেবারে মুখ ফিরিয়ে নেননি। এখনো ফেয়ার (স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ) নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এখানে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন। ছয়টি আসনের অন্তত তিনটি জাতীয় পার্টি পাবে। তবে সাংগঠনিক ভিত্তিগুলোর প্রতিটিকে সক্রিয় করতে হবে। একদম ওয়ার্ড লেভেল থেকে শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে জাতীয় পার্টিকে আবার জাগ্রত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বেশ সময় লাগবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জোটের যেকোনো দলের প্রতীকে ভোট চায় এনডিএম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলে রাজনৈতিক দলগুলোর জোটের যেকোনো দলের প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ চায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)। আজ রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের বরাবর দলটির চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। এনডিএমের দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি সিইসির কার্যালয়ে এই চিঠি জমা দেন।

চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনী জোট করলেও প্রার্থীকে নিজ দলের মার্কায় নির্বাচন করতে হবে, যা পূর্বে জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছাধীন বিষয় ছিল। এই সংশোধনীর বিষয়ে এনডিএম তীব্র আপত্তি এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মাত্র দেড় মাস আগে এ রকম একটি বিধান চালুকে আমরা দুরভিসন্ধিমূলক বলে মনে করছি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নির্বাচনী জোট খুবই স্বতঃসিদ্ধ একটি প্রক্রিয়া এবং সাধারণত জোটের নেতৃত্বদানকারী দলের মার্কায় নির্বাচন করার মাধ্যমেই সেই জোটের শক্তিমত্তা প্রকাশ পায়। কোনো আইনের মাধ্যমে এই গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার এখতিয়ার কারও নেই। একটি রাজনৈতিক দল জোটবদ্ধভাবে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে পারলে কেন জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার জন্য নিজস্ব মার্কায় নির্বাচন করতে আইনগতভাবে বাধ্য থাকবে তার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা নাই।

চিঠিতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নেওয়ার সময় এই শর্ত ছিল না যে, নিজস্ব মার্কায় নির্বাচন করতে বাধ্য থাকবে বরং এটা ইচ্ছাধীন বিষয় ছিল। নির্বাচনের মাত্র সাড়ে তিন মাস আগে এ ধরনের বিধান চালুর অর্থ হলো পর্যাপ্ত সময় না দিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী কৌশল এবং প্রস্তুতিতে বাধা সৃষ্টি করা। আমরা জোটবদ্ধ নির্বাচন করলে রাজনৈতিক দলগুলো যাতে জোটের যেকোনো দলের প্রতীকে নির্বাচন করার স্বাধীনতা লাভ করে—এ-সংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২-এর পূর্বের বিধান বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি।

এর আগে বিএনপির দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে জোটের ভোটে দলগুলো ইচ্ছেমতো প্রতীক ব্যবহার করার একই দাবি জানায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চারদিকে ষড়যন্ত্র চলছে, ঠেকাতে দরকার স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন: দুদু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক সমাবেশে শামসুজ্জামান দুদু। ছবি: সংগৃহীত
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক সমাবেশে শামসুজ্জামান দুদু। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, চারদিকে ষড়যন্ত্র চলছে। অদৃশ্য শক্তির সঙ্গে কিছু ধান্দাবাজও সক্রিয়। তাদের ঠেকাতে হলে একটি যোগ্য, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দরকার। এই নির্বাচনে দেশপ্রেমিক দলকে নির্বাচিত করতে হবে—যারা পরীক্ষিত, যারা মুক্তিসংগ্রামে অংশ নিয়েছিল, যারা স্বাধীনতার ঘোষণা করেছে এবং স্বাধীনতার পক্ষে লড়েছে।

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতনের পর পার্শ্ববর্তী দেশ ও বিভিন্ন মহল থেকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা বিপন্ন বলে একধরনের মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়েছে। সেই অপপ্রচার তারা বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে লাগাতারভাবে চালিয়ে গেছে। কিন্তু এখন আর তা করছে না। কারণ, সারা বিশ্ব জানে—বাংলার মানুষ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও মুসলমান—সবাই হাজার বছরের সংস্কৃতি ধারণ করে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে।’

ছাত্রদলের সাবেক এ সভাপতি বলেন, ‘সবার রাজনৈতিক অধিকার আছে, আমরা তা অস্বীকার করি না। কিন্তু যারা গণহত্যা করেছে, তাদের আগে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। দেশের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তারা আগে সেই টাকা দেশে ফেরত আনুক। তারপরে দেশের জনগণ ভেবে দেখবে, তারা নির্বাচন করতে পারবে কি না।’

শামসুজ্জামান আরও বলেন, ‘এই দেশ গণমানুষের দেশ, গরিব মানুষের, কৃষক-শ্রমিকের দেশ। আগে তাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে। বর্তমানে এমন কোনো দ্রব্য নেই, যার দাম বাড়েনি, মানুষের আয় ক্রমশ কমে যাচ্ছে। চাকরির সুযোগ নেই বললেই চলে। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই—কর্মসংস্থান করুন, নাহলে দেশ সঠিকভাবে চালানো কঠিন হবে।’

দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, সাবেক এমপি লিংকন, জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আগামীকাল সব জেলায় মিছিল করবে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া দলগুলো

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আটটি দল
আটটি দল

আগামীকাল সোমবার দেশের সব জেলা শহরে বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ করবে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া আটটি দল। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ পাঁচ দাবিতে এটি তাদের চতুর্থ পর্বের আন্দোলন।

১৯ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন দলগুলোর নেতারা। এ ছাড়া আজ রোববার কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে পুনরায় গণমাধ্যমকে এক বিজ্ঞপ্তি পাঠায় দলগুলো।

যুগপৎ আন্দোলনের পাঁচটি দাবির মধ্যে রয়েছে—জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের ওপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে অথবা উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

এর আগে একই দাবিতে তিন পর্বের কর্মসূচি পালন করেছে দলগুলো।

যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া দলগুলো হলো—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি ( জাগপা) এবং নতুন যুক্ত হওয়া বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাস্তায় আন্দোলন নয়, এখন জনগণের কাছে যেতে হবে: আমীর খসরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আজ রোববার গণঅধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: ফোকাস বাংলা
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আজ রোববার গণঅধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: ফোকাস বাংলা

সংঘাতের পথে না গিয়ে সহনশীলতা ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিয়ে আগামীর রাজনীতির পথ তৈরির তাগিদ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘এখন রাস্তায় আন্দোলন নয়, এখন জনগণের কাছে আমাদের যেতে হবে। আমরা সাংঘর্ষিক রাজনীতির দিকে যেতে পারব না। আমরা প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির দিকে যেতে পারব না।’

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণঅধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের সহনশীল হতে হবে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রাখতে হবে। দ্বিমত পোষণ করেও তার মতকে শ্রদ্ধা জানাতে হবে। আমাদের এই চর্চাগুলো আনতে হবে। আরেকজনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করব; তারপরও তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তো আমাদের অসুবিধা নেই। আমাদের এই সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করে যদি রাজনীতি করে যাই, তাহলে আবার সেই পুরোনো কালচারে আমাদের ফিরে যেতে হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দলগুলোর একসঙ্গে বসার চর্চা কোনো সময় ছিল না। কেউ কারও চেহারা দেখত না। আজকে কিন্তু আমরা এখানে বসেছি সবাই। আমরা বসে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কথা বলছি। আমরা এখানে বসে আগামী নির্বাচনকে কীভাবে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করে দেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনব, সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই চলছি যার যার অবস্থান থেকে।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে ১৪ মাস আমরা অতিক্রম করছি। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসেনি। আমরা যুদ্ধ করেছি একটি নির্বাচিত সরকারের জন্য। সেটা এখনো আমরা পাইনি। এ জন্য আজ আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই জাতীয় সনদে সই করেছি। এখন আমাদের বাকি কাজ যেটা আছে—আগামী নির্বাচনে সবার ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা।’

আলোচনা সভায় গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা অটুট রাখতে ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরও এক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ভেঙে গেলে সেটাই ফ্যাসিবাদ প্রত্যাবর্তনের পথ খুলে দেবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বিজয় অর্জন করেছি। সেই ঐক্যের ফলে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। স্বৈরাচার পালাতে বাধ্য হয়েছে। এই ঐক্যই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। এটি নষ্ট হলে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা থেমে যাবে।’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে সবাইকে এক থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঠেকাতে সব দরজা বন্ধ করে দিতে হবে।

জুলাই সনদকে ‘জাতীয় ঐক্যের প্রতীক’ হিসেবে অভিহিত করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য আমরা সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এটি বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচিত জাতীয় সংসদই হবে উপযুক্ত ফোরাম।’

এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘তাদের (এনসিপি) অনেক প্রস্তাব আমরা সমর্থন করি। তবে এসব প্রস্তাব যেন বাস্তবসম্মত হয় এবং ভবিষ্যতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত