Ajker Patrika

ইসির চিঠির জবাবে শাপলা প্রতীক চেয়ে ৭টি নমুনা পাঠাল এনসিপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ১০
ইসিকে পাঠানো নমুনা। ছবি: সংগৃহীত
ইসিকে পাঠানো নমুনা। ছবি: সংগৃহীত

দলীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবারও চিঠি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ই-মেইলের মাধ্যমে এ চিঠি পাঠানো হয়। কমিশনের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠানো চিঠিতে শাপলার সাতটি নমুনাচিত্রও যুক্ত করা হয়েছে।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পাঠানো চিঠির জবাবে এনসিপির দলীয় অবস্থান অবহিত করা হলো।

চিঠিতে বলা হয়, গত ২২ জুন এনসিপি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন দাখিল করে এবং দলের অনুকূলে ‘শাপলা’ প্রতীক সংরক্ষণের জন্য আবেদন জানায়। পরে এনসিপি গত ৩ আগস্ট কমিশনের কাছে চিঠির মাধ্যমে পার্টির অনুকূলে প্রতীক সংরক্ষণের ক্রম হিসেবে ১. শাপলা ২. সাদা শাপলা ও ৩. লাল শাপলা পছন্দ করে। এ ছাড়া ওই চিঠিতে শাপলাকে প্রতীক হিসেবে দৃশ্যমান করার ক্ষেত্রে শাপলার ভিন্ন ভিন্ন ভার্সন বা আংশিক ‘ডিসটর্টেট’ ভার্সন গ্রহণ করার ক্ষেত্রে এনসিপি সব সময় আলোচনায় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানানো হয়।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এনসিপির পরবর্তী বৈঠকগুলোতে প্রতীক হিসেবে শাপলাকে দৃশ্যমান করার ক্ষেত্রে জাতীয় প্রতীকে দৃশ্যমান শাপলার পরিবর্তে ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ভার্সনে আঁকা শাপলার নমুনা ছবি নির্বাচন কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হয়।

চিঠিতে শাপলার সাতটি নমুনাচিত্র যুক্ত করে বলা হয়, এ পত্রে উপস্থাপিত নমুনার বাইরেও শাপলার আংশিক ভিন্নতর কোনো নমুনার ব্যাপারে আলোচনা করতেও এনসিপি প্রস্তুত রয়েছে।

এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর এনসিপি নির্বাচন কমিশনের কাছে বিধিমালা সংশোধন করে শাপলা প্রতীক তালিকাভুক্ত করে বরাদ্দ দিতে দরখাস্ত করে।

চিঠিতে বলা হয়, এনসিপির ৩ আগস্ট ও ২৪ সেপ্টেম্বরের দরখাস্তের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন অদ্যাবধি কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। অর্থাৎ উক্ত দরখাস্ত দুটি অনিষ্পন্ন অবস্থায় রেখে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে এনসিপি বরাবর ৩০ সেপ্টেম্বর চিঠি প্রেরণ করা বিধিসম্মত হয়নি বলে এনসিপি মনে করে।

এনসিপি মনে করে, গণমানুষের সঙ্গে শাপলা প্রতীককেন্দ্রিক তার গভীর সংযোগ সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। শাপলা এনসিপির শুভাকাঙ্ক্ষী, সমর্থক, কর্মী ও নেতাদের দেশের জনগণের সঙ্গে চমৎকার বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। দেশের মানুষের ভালোবাসাকে উপেক্ষা করার শক্তি এনসিপির নেই। ফলে শাপলা ছাড়া নির্বাচন কমিশনের পাঠানো ৩০ সেপ্টেম্বরের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বেঁধে দেওয়া তালিকা থেকে অন্য কোনো প্রতীক পছন্দ করা এনসিপির জন্য সম্ভব নয়।

ইসিকে পাঠানো নমুনা। ছবি: সংগৃহীত
ইসিকে পাঠানো নমুনা। ছবি: সংগৃহীত

চিঠিতে জানানো হয়, ইতিপূর্বে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবীসহ সারা দেশের ১০১ জন বিজ্ঞ আইনজীবী শাপলাকে প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিতে কোনো আইনি বাধা নেই বলে বিবৃতি দিয়েছেন। সম্প্রতি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ঠিকানা টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন যে, শাপলা প্রতীক এনসিপিকে না দেওয়াটা আইনের জটিলতা বলে তিনি মনে করেন না। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের অনেক প্রথিতযশা আইনজীবী নির্বাচন কমিশন এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দিতে পারে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। অধিকন্তু নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে এনসিপির অনুকূলে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া নিয়ে তাঁর দলের ইতিবাচক অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।

চিঠিতে বলা হয়, দেশের মানুষ মনে করে, শাপলাকে প্রতীক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করা এবং এনসিপিকে শাপলা বরাদ্দ না দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কোনো আইনি ভিত্তি দ্বারা গঠিত নয়, বরং এনসিপির প্রতি বিরূপ মনোভাব ও স্বেচ্ছাচারী দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ। নির্বাচন কমিশন প্রতীক ইস্যুতে এনসিপির সঙ্গে অন্যায্য আচরণ করছে বলে প্রতীয়মান হয়, যা স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটের বাইরে গিয়ে নির্বাচন কমিশন দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় কতটুকু অবদান রাখতে পারবে, সে বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এনসিপির নিবন্ধনপ্রক্রিয়ায় প্রয়োজনের চেয়ে নির্বাচন কমিশন উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনেক বিলম্ব করছে বলে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন এনসিপিকে তার প্রার্থিত শাপলা প্রতীক বরাদ্দ না দিয়ে বিষয়টি নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত, আইনবহির্ভূত, বৈষম্যমূলক ও স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছে। এর মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশন এনসিপির নির্বাচনী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়া থেকে বঞ্চিত করছে। নির্বাচন কমিশনের এরূপ বৈরী আচরণ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে কমিশনের সদিচ্ছা ও সক্ষমতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।

সার্বিক বিবেচনায় এনসিপি আশা করে, নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার বিধি ৯(১) সংশোধন করে জাতীয় নাগরিক পার্টির অনুকূলে শাপলা, সাদা শাপলা ও লাল শাপলা থেকে যেকোনো একটি প্রতীক বরাদ্দ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

অব্যাহতি চাওয়ার পর মাউশি মহাপরিচালক আজাদ খানকে ওএসডি

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভারতের হারে বাংলাদেশের বিদায়, হামজার হতাশা

এবার দলগুলো পেল চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও স্বাক্ষরের আমন্ত্রণপত্র

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত