Ajker Patrika

জুলাই সনদের খসড়ার সঙ্গে ‘মোটামুটি’ একমত বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ২০: ৪৫
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই সনদের খসড়ার সঙ্গে বিএনপি মোটামুটি একমত বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘কিন্তু ওখানে কিছু বাক্য, শব্দ, গঠনপ্রণালি ইত্যাদি নিয়ে কারও কোনো মতামত রয়েছে কি না, সে জন্য সব রাজনৈতিক দলের কাছে দিয়েছে। আমাদের সংশোধনী থাকবে ভাষাগত ও বাক্যগত। অঙ্গীকারের বিষয়ে আমরা একমত।’

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের সংলাপের আসরের বিরতির পরে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন।

বিএনপির সংশোধনী আগামীকাল বুধবার জমা দেওয়া হবে জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘দুই বছরের ভেতরে এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা একমত। যে সমস্ত প্রতিশ্রুতির জন্য আইনকানুন ও সংবিধান চেঞ্জ করার জন্য ওখানে বলা হয়েছে, সেটা তো বলারও প্রয়োজন নাই। সেটার জন্যই তো এই প্রতিশ্রুতি। সেটার জন্যই তো এ কমিশনে আসা।’

সংস্কার কমিশনের ৭০০-এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা এর মধ্যে ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে একমত হয়েছি। অন্যগুলোর বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছি।’

তিনি বলেন, সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জনগণই সার্বভৌম। সার্বভৌম জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার প্রয়োগ হয় ভোটের মাধ্যমে। ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সার্বভৌম পার্লামেন্টে যান। দেশে একমাত্র সংসদই সার্বভৌম। সেখানেই জনগণের জন্য জনগণ আইন প্রণয়ন করে। জনগণ সেই আইনের দ্বারা শাসিত হয়। তাহলে জনগণ যাদের সার্বভৌম ক্ষমতা দিয়ে সার্বভৌম পার্লামেন্টে পাঠাল, আইনটা তো ওখানেই প্রণীত হবে। সেই আইন প্রণয়ন নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন থাকা ঠিক নয়। আমরা যদি জনগণের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করি, রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের—এটি স্বীকার করি এবং সার্বভৌম ক্ষমতার প্রতিনিধিত্ব সার্বভৌম পার্লামেন্টে হয়—স্বীকার করলে আইনটা তো ওখানেই প্রণীত হতে হবে।’

নির্বাচন কমিশন বাদে অন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগবিধি সংবিধানে যুক্ত না করার অবস্থান প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।’

তিনি বলেন, কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের মধ্যে রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘যত বেশি কিছু সংবিধানে যুক্ত করা হবে, তত বেশি সংশোধন জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হোক।’

সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি—আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের সরাসরি মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।’

ন্যায়পাল নিয়োগ নিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘যেহেতু এখন পর্যন্ত ন্যায়পাল কোনো দিন ফাংশন করেনি, তাই আমরা প্রথমে চাই, সেটি প্রতিষ্ঠিত হোক। এরপর তার আইন যুগোপযোগী করে, দায়িত্ব ও ক্ষমতা স্পষ্ট করে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হোক।’ তিনি বলেন, ন্যায়পালকে শুধু তদন্তের ক্ষমতা না দিয়ে তার প্রতিবেদনের বাস্তব প্রয়োগের জন্য আইন তৈরি করতে হবে। না হলে এই প্রতিষ্ঠান অর্থবহ হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত