Ajker Patrika

গণ-অভ্যুত্থানের দাবি বাজেটে উপেক্ষিত: নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৫, ২০: ১৩
রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাজেট বিষয়ে দলীয় প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাজেট বিষয়ে দলীয় প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের মানুষ আশা করেছিল, অর্থনৈতিক রূপান্তর ঘটবে এবং একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের ভিশন বাজেটে প্রতিফলিত হবে। কিন্তু ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সে প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাজেট বিষয়ে দলীয় প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে আমাদের প্রত্যাশা ছিল, বাজেটে ধনী-গরিবের আয় বৈষম্য হ্রাসে কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাবে। কিন্তু করকাঠামো ও রাজস্ব ব্যবস্থায় কোনো আমূল পরিবর্তন হয়নি। যেসব করদাতা বরাবরই কর দেন, তাঁদের ওপর আগের মতোই চাপ থাকছে। কর ফাঁকিরোধে কার্যকর উদ্যোগও নেই, ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর চাপ বহাল থাকবে।’

তিনি বলেন, জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল কর্মসংস্থানের দাবিতে, অথচ বাজেটে বেকারত্ব নিরসনে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই। গত এক বছরে ২৬ লাখ নতুন বেকার সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাজেটে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মতো কোনো সাহসী পদক্ষেপ দেখা যায়নি; বরং আগের মতো ব্যাংক =নির্ভর অর্থনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দেও তেমন কোনো নতুনত্ব নেই। ‘শিক্ষায় বরাদ্দ কমপক্ষে জিডিপির ২ শতাংশ হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তা হয়েছে মাত্র ১.৭ শতাংশ। স্বাস্থ্য খাতে বা অন্যান্য মৌলিক খাতেও বাজেট বৃদ্ধির কোনো প্রতিফলন নেই।’

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। নাহিদ বলেন, ‘অর্থনীতির এমন ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে বাজেট কমানো নিন্দনীয়।’

তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেটে তেমন কোনো দৃশ্যমান ইনসেনটিভ নেই, যেটি তাদের কার্যকরভাবে সহায়তা করতে পারে। অথচ এই খাত অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখে।

সরকার সমস্যাগুলো শনাক্ত করতে পারলেও বাস্তবভিত্তিক সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। বাজেটে আয়বৈষম্য কমানোর কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না থাকায় ধনী–গরিবের ফারাক আরও বাড়বে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত নয়। এতে সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হন।’

তবে তিনি জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখাকে সাধুবাদ জানান এবং এ অর্থ যথাযথ ও স্বচ্ছভাবে ব্যবহারের আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিনসহ অন্য নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত