Ajker Patrika

পয়লা বৈশাখের সঙ্গে যাদের সংঘাত, তারা সাম্প্রদায়িক: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৩, ১৪: ০৫
পয়লা বৈশাখের সঙ্গে যাদের সংঘাত, তারা সাম্প্রদায়িক: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পয়লা বৈশাখের সঙ্গে সংঘাত যাদের, তারা সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে। এই অশুভ অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। 

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাঙালির জাতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যের অংশ এই পয়লা বৈশাখ। বিলম্বে হলেও আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত দিন সেটা আজ স্বীকৃতি পাচ্ছে। সেটি বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য, বাঙালিদের জন্য সুখবর।’ 

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের কারণে কয়েক বছর আমরা পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন করতে পারি নাই। বাংলার শেষ মোগল সম্রাট বীর বাহাদুর শাহ জাফর পার্কে মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্‌যাপন করছি। পুরোনো ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে এখান থেকে শোভাযাত্রা বের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাঙালির অতীত ইতিহাসের ঐতিহ্য যা কিছু আছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার সঙ্গে এখনো যুক্ত আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। এই দিবসগুলো আমাদের অস্তিত্বের ঠিকানা। এই অনুষ্ঠান কে পালন করল, আর কে করল না, তা নিয়ে আমাদের তাকানোর সময় নেই। যে চেতনায় আমরা বিশ্বাস করি, যে চেতনা আমাদের ইতিহাসের অংশ, আমরা যা বিশ্বাস করি তা আমরা উদ্‌যাপন করব।’ যত দিন এ দেশে আওয়ামী লীগ থাকবে, তত দিন পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন করবে বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকের এই দিন আত্মপরিচয় অনুসন্ধানের দিন। অন্যদিকে এই দিন অসাম্প্রদায়িকতার মর্মবাণী প্রচার করার দিন। এবারের পয়লা বৈশাখ আমাদের জন্য শুভ বার্তা বয়ে এনেছে। বহুদিন পর বাঙালির চিরচেনা পরিবেশ পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন হচ্ছে। সারা বাংলায় নবজাগরণের ঢেউ জেগেছে। বাঙালি সংস্কৃতির উৎসবমুখর দিনটিকে আপামর বাঙালি তাঁদের হৃদয়ের ভালোবাসা, চেতনা সবকিছু উজাড় করে উদ্‌যাপন করছে। মনে রাখতে হবে, নববর্ষ হচ্ছে আমাদের দিন। আমাদের আসল আবেগের, হৃদয়ের, চেতনার, ইতিহাসের, ঐতিহ্যের, অস্তিত্বের ঠিকানা হচ্ছে পয়লা বৈশাখ।’ 

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এবার নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে পয়লা বৈশাখ। আমরা যখন অর্থনৈতিক সংকট, বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের সংকট, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি—এসব সমস্যায় আক্রান্ত, তখন পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপিত হচ্ছে। এর পরে ঈদের উৎসব। দুটি উৎসবে গ্রাম-শহরে বাণিজ্যিক লেনদেন, বেচাকেনার কারণে আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের অর্থনীতিতে যে সংগ্রাম চলছে, অর্থনীতিকে যে সম্ভাবনার রূপ দিচ্ছে, এই বাণিজ্যিক লেনদেন আমাদের অর্থনৈতিক সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিচ্ছে। এ দুই উৎসবে বাণিজ্যিক লেনদেন অর্থনৈতিক সংকটে প্রাণসঞ্চার করবে। নতুন ধারা যোগ করবে।’ 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের চেতনার বাংলাদেশ, যে চেতনা ধর্মনিরপেক্ষতা, যে চেতনা অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা। আমরা যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি, তাঁদের প্রধানতম শত্রু হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। আজকে বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ বাংলাদেশে ডালপালা ছড়িয়েছে। আজকের দিনে শপথ নিতে হবে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার অশুভ বিষবৃক্ষ উৎপাটন করব। এখানে কোনো আপস নেই। পয়লা বৈশাখের সঙ্গে যাদের সংঘাত, তারা সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে। এই অশুভ অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। অনেকে পয়লা বৈশাখ পালন করে না, তাদের আদর্শ সাম্প্রদায়িকতা। তাদের চেতনা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা। এই সব অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করব, পরাজিত করব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এগিয়ে যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত