Ajker Patrika

অবস্থান পরিবর্তন করে দ্বিকক্ষের পক্ষে এবি পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অবস্থান পরিবর্তন করে দ্বিকক্ষের পক্ষে এবি পার্টি

বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার জন্য উপযুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি—জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে এমন মতামত দিয়েছিল আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। তবে কমিশনের সঙ্গে প্রথম দিনের সংলাপের পর দলটি তাদের এই অবস্থান থেকে সরে এসেছে। একই সঙ্গে উচ্চকক্ষের মনোনয়নে অপব্যবহার বন্ধে রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরিতে কাজ করবে দলটি।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে এসব কথা জানান দলটির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু। বেলা ৩টায় শুরু হওয়া এই সংলাপ প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে। কমিশনের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১০৮টিতে একমত পোষণ করে মতামত দিয়েছিল এবি পার্টি। এ ছাড়া ৩২টি প্রস্তাবে দ্বিমত ও বাকি ২৬টিতে আংশিকভাবে একমত ছিল দলটি। কমিশনের সঙ্গে প্রথম ধাপের সংলাপ শেষে সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে আরও কমপক্ষে ১০টি প্রস্তাবে একমত হয়েছে এবি পার্টি। যা লিখিত আকারে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন মুজিবুর রহমান মঞ্জু।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দেওয়া প্রস্তাবে দ্বিকক্ষ আইনসভায় আপত্তি জানিয়ে এবি পার্টি বলেছিল, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিবেচনায় দ্বিকক্ষের উপযোগী পরিবেশ এখনো প্রস্তুত হয়নি। একই সঙ্গে দলটি আশঙ্কা করেছিল, এর মাধ্যমে পুনর্বাসনকেন্দ্রসহ দলীয় প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয় বলে জানান মঞ্জু। তিনি বলেন, ‘উনারা বলেছিলেন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা হবে। আমাদের উদ্বেগ ছিল উচ্চকক্ষের মনোনয়নে অপপ্রয়োগ হতে পারে। সে জায়গায় উনারা (কমিশন) আমাদের অনুরোধ করেছেন, উদ্বেগের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার জন্য। আমরাও চেষ্টা করব, একই সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও লেখক-বুদ্ধিজীবীরা যাতে উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরে, যাতে উচ্চকক্ষে আত্মীয়-স্বজন বা অন্য কারও পুনর্বাসন না হয়। উচ্চকক্ষের মনোনয়নে কেউ যাতে অপপ্রয়োগ করতে না পারে, সে জন্য আমরা সচেতনতা তৈরি করব।’ উচ্চকক্ষের সংখ্যানুপাতিক ভোটের ভিত্তিতে মনোনয়নের পক্ষে মত দিয়েছে এবি পার্টি, এমনটাও জানান মঞ্জু।

রাষ্ট্রপতি পদে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব থেকেও সরে এসেছে এবি পার্টি। মঞ্জু বলেন, তারা বলেছেন, ইলেকটোরাল কলেজ যদি শুধু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য থাকে, তাহলে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু এই ইলেকটোরাল কলেজের সদস্যরা যদি আলাদা কোনো স্ট্যাটাস বজায় রেখে সমাজে বা রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে চান, তাহলে সেটা একটি নতুন জটিলতা তৈরি করবে। বিষয়টি কমিশন নোট করেছে।

বাংলাদেশকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে এবি পার্টি আপত্তি জানিয়েছে বলে জানান দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক। প্রাদেশিক সরকারব্যবস্থা বাংলাদেশে হবে না বলে বৈঠকে এবি পার্টিকে কমিশন আশ্বস্ত করেছে। দলটি সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে মূলনীতিতে বহুত্ববাদের পরিবর্তে বহুতত্ত্ববাদ কিংবা ইংরেজিতে প্লুরালিজম রাখার প্রস্তাব করেছে।

জাতীয় সংবিধান কাউন্সিলের (এনসিসি) বিষয়ে মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এনসিসির ব্যাপারে তাদের একটি আপত্তি ছিল প্রধান বিচারপতিকে যুক্ত করার বিষয়ে। পরে কমিশন ব্যাখ্যা দিয়েছে যে কোনো ধরনের দ্বিমত হলে প্রধান বিচারপতি যাতে ভালো ভূমিকা রাখতে পারেন। সেই জায়গায় তারা একমত হয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাস্তবায়ন নির্বাচনের আগে হওয়া উচিত বলে মনে করে এবি পার্টি। মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গণপরিষদ একটি বিকল্প হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বড় দুটি দলের দ্বিমত রয়েছে। এখানে অধ্যাদেশ বা গণভোটের সুযোগ আছে। কিন্তু সংবিধানের বিধানের কারণে অধ্যাদেশের সুযোগ নেই। সে ক্ষেত্রে ডকট্রিন অব নেসেসিটির অধীনে প্রধান বিচারপতির মতামত নেওয়া যেতে পারে অথবা গণভোট হতে পারে। তবে তারা মনে করে, বাস্তবায়ন নির্বাচনের আগেই হওয়া উচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গলাধাক্কার পর ছোট্ট মেয়েটিকে লাঠি দিয়ে পেটালেন কফিশপের কর্মচারী

বিশ্বব্যাংকে সিরিয়ার ঋণ পরিশোধ করে দিচ্ছে সৌদি আরব

মাত্র তিনজনের জন্য লাখ লাখ মানুষ মরছে, কাদের কথা বললেন ট্রাম্প

‘চরিত্র হননের চেষ্টা’: গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর দুদককে পাল্টা আক্রমণ টিউলিপের

জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচার: আলোচিত টিকটকার জান্নাতের স্বামী তোহা কারাগারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত