Ajker Patrika

‘শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠনের দাবিতে ছাত্র ফেডারেশনের ১৫ দফা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ মে ২০২৫, ০০: ২৬
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধি ও কার্যকর সংস্কারের’-এর দাবিতে শিক্ষা সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধি ও কার্যকর সংস্কারের’-এর দাবিতে শিক্ষা সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিক্ষাব্যবস্থার যথাযথ সংস্কারের লক্ষ্যে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। এ ছাড়াও স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের নবম গ্রেডে উন্নীত, বিসিএস ট্রেনিং বিশ্ববিদ্যালয় চালুসহ ১৫ দফা প্রস্তাবনা করেছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধি ও কার্যকর সংস্কারের’-এর দাবিতে শিক্ষা সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। সংলাপে এসব দাবি জানানো হয়।

সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেন, ‘স্বাধীনতার পর ৫৪ বছরেও আমরা সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারি নাই। রাষ্ট্র সবার শিক্ষার দায়িত্ব নিতে বারবার অস্বীকার করেছে। অভ্যুত্থানের পর আমরা আশা করেছিলাম শিক্ষা খাতে সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হবে। কিন্তু আমরা দেখলাম অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষা খাতে সংস্কারের কোনো উদ্যোগই গ্রহণ করে নাই। আমরা অবিলম্বে শিক্ষা খাতের প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য কমিশন গঠনের দাবি জানাই।’

মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেন, ‘সংস্কারের মধ্য দিয়ে জাতীয় সক্ষমতা বিকাশের উপযোগী একটি শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ণ করে তাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দের দাবি জানাই। আমরা যে খসড়া প্রস্তাবনা হাজির করেছি, তার ওপর রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন ও সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের মতামত নিয়ে তা সম্পূর্ণ করে আমরা ২৭ মে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি আকারে প্রদান করব এবং তা বাস্তবায়নের জন্য ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করব।’

সংলাপে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য ছিল শিক্ষা খাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া। আমাদের একটা গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা দরকার, তার জন্য সংস্কার দরকার। আমাদের সব শিশুরা যাতে ছাত্র হয়ে উঠে তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হলে আমাদের যেমন বাজেট বরাদ্দ দরকার, ঠিক তেমনি সবাই মিলে সেই গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থার আদল তৈরি করা দরকার। ক্ষমতার কুক্ষিগতকরণ আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও তার বাইরে নয়। সে জায়গা থেকে আমরা কীভাবে বের হতে পারি, সে বিষয়ে সবাইকে ঐকমত্যে আসা দরকার।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, ‘শিক্ষা একটা রাজনৈতিক প্রকল্প, তাই আমাদের শিক্ষানীতির পলিটিক্যাল অ্যাজেন্ডা নির্ধারণ করতে হবে। আমরা স্বাধীনতার ৫৪ বছরে একটা অভিন্ন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে পারি নাই। শিক্ষাকে ব্যবসায় পরিণত করা হয়েছে। যার যেমন আয়-ব্যয় সে সে রকম শিক্ষা পাচ্ছে। আমাদের এ পদ্ধতি বদলাতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধি ও কার্যকর সংস্কারের’-এর দাবিতে শিক্ষা সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধি ও কার্যকর সংস্কারের’-এর দাবিতে শিক্ষা সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। ছবি: আজকের পত্রিকা

লেখক ও শিক্ষক সফিক ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো দরকার; কিন্তু তা কোন কোন খাতে খরচ হচ্ছে তার দিকেও আমাদের নজর রাখা দরকার। জিডিপির যে ১.৭ শতাংশ বরাদ্দ আছে তারও বড় একটা অংশ অবকাঠামোগত উন্নয়নেই খরচ হয়ে যায়। আর কার্যত বাংলাদেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুটি, দুটিকে সমন্বিত করে শিক্ষাকে একটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসতে হবে।’

শিক্ষা সংলাপের শুরুতেই জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শিক্ষা সংলাপে ছাত্র ফেডারেশনের প্রস্তাবনা পাঠ করেন কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক ফাতেমা রহমান বীথি।

সংলাপে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিচার্স ফেলো সামীও শীশ, আমাদের পাঠশালার প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন, শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক হাসনাত কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি আবু রায়হান খান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত