স্বপ্না রেজা
অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়ার অনেক কায়দাকানুন আছে এই দেশে, যা আইনকে তোয়াক্কা করে না, গ্রাহ্য করা তো দূরের কথা। নিঃসন্দেহে এই কায়দাকানুন তৈরি করে স্বার্থান্বেষী ও সুবিধাবাদী বিশেষ মহল, যারা কেবল নিজেদের সুবিধা, স্বার্থ উদ্ধারে তৎপর থেকেছে, থাকছে। যদি প্রশ্ন তোলা হয়, বাংলাদেশের এই স্বার্থান্বেষী মহল বা চক্রের অন্যতম সদস্য বা গোষ্ঠী কারা, এমন প্রশ্নের উত্তরও একটি শিশু কালবিলম্ব না করে দিতে সমর্থ হবে। যে পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে শিশুরা বেড়ে ওঠে, জগৎ চিনছে, সেখানে এমন প্রশ্নের জবাব দেওয়া তার জন্য খুব কঠিন কিছু নয়। পাঠক, বুঝতে পারছেন প্রশ্নের উত্তর কী হতে পারে? বয়স ও অভিজ্ঞতায় শিশুর চেয়ে অন্তত পাঠকেরা যথেষ্ট এগিয়ে। তবু বলি উত্তর, আদর্শচ্যুত রাজনৈতিক দলগুলোই হলো এ দেশের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম।
রাজনৈতিক আগ্রাসন এতটাই প্রবল যে, যেকোনো ঘটনা ও পরিস্থিতিকে চোখ বন্ধ করে নিমেষে রাজনীতিকরণ করা হয়। রাজনীতির দোষারোপের সংস্কৃতি যেন রাষ্ট্রের অন্যতম সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। সমাজে সংঘটিত হত্যা, ছিনতাই, লুটতরাজ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে রাজনৈতিকভাবে এক দল অন্য দলকে দোষী সাব্যস্ত করতে মরিয়া হয়। ক্ষমতাসীনেরা অরাজনৈতিক হলে তারাও রাজনৈতিক দলের ওপর দোষ চাপাতে অভ্যস্ত হয়। অন্যসব কাজ ছাড়া এই দোষারোপের কাজই যেন সবার মূল কাজ হয়ে পড়ে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, রাজনীতিকরণ থেকে বাদ যায় না ধর্ষণের মতো ভয়ংকর অপরাধের বিষয়ও। সাম্প্রতিক সময়ে মুরাদনগরের ঘটনা তারই এক দৃষ্টান্ত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন নারীর বিবস্ত্র শরীরের ভিডিও ক্লিপ, যেখানে দেখা গেছে কয়েকজন পুরুষ তাঁকে জোর করে বিবস্ত্র করছে এবং ধস্তাধস্তি চলছে। এমন ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হতে দেখে অনেকেই শিউরে উঠেছে, এ-ও কি সম্ভব! পরক্ষণেই জানা গেছে, ঘটনাটি মুরাদনগরের এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন নারীকে বিবস্ত্র করে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। নারীর বিবস্ত্র শরীর এবং তাঁকে হেনস্তা করার ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সূত্র ধরে কিছু রাজনৈতিক দোষারোপের পোস্ট ভাইরাল হতে দেখা গেল। যেমন, কিছু পোস্টে বলা হলো ধর্ষক ছাত্রদলের। এমন পোস্টের বিরোধিতায় তৎক্ষণাৎ কিছু পোস্ট ভাইরাল হলো। যেমন, ধর্ষক আওয়ামী লীগের। পাল্টাপাল্টি ব্যাখ্যা, যুক্তি ও প্রমাণ তোলা হলো। এমন আচরণে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, দোষ আসলে ধর্ষকের নয়, রাজনৈতিক দলেরই। আবার কোনো কোনো পোস্টে লেখা হলো, ওই নারীর সঙ্গে ধর্ষকের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এখানেও একধরনের গল্প তৈরি করা হলো। যে গল্পে ধর্মীয় রাজনীতির গন্ধ বা আভাস পাওয়া যায়। একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রবীণ সদস্য দুঃখ করে বললেন, যদি এমন ঘটনায় একজন মুসলিম নারী হিন্দুধর্মের কোনো পুরুষ দ্বারা বিবস্ত্র ও ধর্ষণের শিকার হতেন, তাহলে ধারণা করে বলা যায়, এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হতো। ছাই করা হতো। কথাটা তিনি অবশ্য তাঁর অভিজ্ঞতার আলোকে বলেছেন।
যাহোক, ধর্ষণের মতো অপরাধকে রাজনীতিকরণ করা হলে রাজনীতিতে এটা কতটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বা রাজনীতি কখনো রাজনৈতিক অপরাধ ছাড়া অন্য কোনো সামাজিক অপরাধকে চূড়ান্ত শাস্তি দিয়েছে, ভয়ংকর অপরাধকে নিবৃত্ত বা নির্মূল করেছে, প্রচণ্ড সোচ্চার হয়েছে প্রতিবাদে—এমন দৃষ্টান্ত কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই। তবে রাজনীতিতে অপরাধ ও অপরাধী বানানোর ইতিহাস রয়েছে প্রচুর এবং ভয়ংকর, ভয়াবহ সব ইতিহাস। অনেক জঘন্য ও নিকৃষ্ট অপরাধ করেও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় অনেক অপরাধী বিচারবহির্ভূত থেকে গেছে, থেকে যাচ্ছে আজও।
আবার দেখা যায়, রাজনৈতিক প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসায় অনেক নারী সম্ভ্রমহানি ও ধর্ষণের শিকার হন। অনেক ক্ষেত্রে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। রাজনীতিতে প্রতিশোধ নেওয়ার কমন ও সহজ উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করাটা। আবার সমাজকে অস্থিতিশীল করবার পাঁয়তারা হিসেবেও নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করা হয়। এই কাজটার পেছনে একটা শ্রেণির মানুষ সক্রিয় থাকে, যারা সম্ভবত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে মেনে নিতে পারে না।
যে দেশে ধর্ষণের শিকার হয় সাত মাসের বা আড়াই বছরের কন্যাশিশু, সেই দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি কেন দ্রুত কার্যকর হয় না, এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজলে স্বার্থান্বেষী মহলের সবার প্রকৃত চেহারা উন্মোচিত হবে। প্রচলিত রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত বিচারব্যবস্থার বিদ্যমান দুর্দশা দৃশ্যমান হয়ে উঠবে। সর্বত্র রাজনীতির মরণ ছোবল। আর এই ছোবলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও তাঁর মানমর্যাদা। একজন দরিদ্র প্রবীণ নারী বলছিলেন, নারীরা পুরুষকে বিবস্ত্র করে তাকে হেনস্তা করলে এই সমাজ ও রাষ্ট্রের টনক নড়ত!
ধর্ষণ একটা জঘন্যতম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যে পুরুষ নারীকে ধর্ষণ করে, সম্ভ্রমহানি করে, তার একটাই পরিচয়—সে ধর্ষক এবং রাষ্ট্রের একজন ভয়ংকর অপরাধী। তাকে রাজনৈতিক দলের লেবাস দিয়ে মূল ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টাকেও অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা দরকার। ধর্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক কচলাকচলির খেলা বন্ধ করার উপায় হলো অপরাধীকে দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ায় এনে শাস্তি কার্যকর করা। সেই সঙ্গে বাদীকে কোনোভাবেই মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হতে সুযোগ না দেওয়া। মুরাদনগরে ক্ষতিগ্রস্ত নারীকে যেভাবে, যতভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, তাতে সেই নারীর সম্মান সমুন্নত তো হয়ইনি, বরং তাঁকে অপদস্ত, বিব্রত করা হয়েছে। ফলে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বর্বরতার শিকার হচ্ছেন, এমন কথা বলাটা অযৌক্তিক হয় না।
যতদূর জানা গেছে, মুরাদনগরের ধর্ষণের শিকার নারী স্থানীয় সাংবাদিক, সংগঠনের লোকজনের কৌতূহল ও প্রশ্নবাণে ঘরছাড়া হয়ে সন্তানসহ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ বিষয়টিকে অন্যভাবে নিচ্ছেন। কোথায় তিনি, তাঁর বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্যোগ ও অগ্রগতি কী, এসব স্বচ্ছতার সঙ্গে উপস্থাপিত হওয়া দরকার। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান যদি ধর্ষণ ও ধর্ষকের বিরুদ্ধে ঐকমত্যে না পৌঁছায়, আপসহীন না হয়, আর রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকে, তাহলে ধর্ষণের মতো ঘটনা কখনোই কমবে না, বাড়বে।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়ার অনেক কায়দাকানুন আছে এই দেশে, যা আইনকে তোয়াক্কা করে না, গ্রাহ্য করা তো দূরের কথা। নিঃসন্দেহে এই কায়দাকানুন তৈরি করে স্বার্থান্বেষী ও সুবিধাবাদী বিশেষ মহল, যারা কেবল নিজেদের সুবিধা, স্বার্থ উদ্ধারে তৎপর থেকেছে, থাকছে। যদি প্রশ্ন তোলা হয়, বাংলাদেশের এই স্বার্থান্বেষী মহল বা চক্রের অন্যতম সদস্য বা গোষ্ঠী কারা, এমন প্রশ্নের উত্তরও একটি শিশু কালবিলম্ব না করে দিতে সমর্থ হবে। যে পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে শিশুরা বেড়ে ওঠে, জগৎ চিনছে, সেখানে এমন প্রশ্নের জবাব দেওয়া তার জন্য খুব কঠিন কিছু নয়। পাঠক, বুঝতে পারছেন প্রশ্নের উত্তর কী হতে পারে? বয়স ও অভিজ্ঞতায় শিশুর চেয়ে অন্তত পাঠকেরা যথেষ্ট এগিয়ে। তবু বলি উত্তর, আদর্শচ্যুত রাজনৈতিক দলগুলোই হলো এ দেশের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম।
রাজনৈতিক আগ্রাসন এতটাই প্রবল যে, যেকোনো ঘটনা ও পরিস্থিতিকে চোখ বন্ধ করে নিমেষে রাজনীতিকরণ করা হয়। রাজনীতির দোষারোপের সংস্কৃতি যেন রাষ্ট্রের অন্যতম সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। সমাজে সংঘটিত হত্যা, ছিনতাই, লুটতরাজ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে রাজনৈতিকভাবে এক দল অন্য দলকে দোষী সাব্যস্ত করতে মরিয়া হয়। ক্ষমতাসীনেরা অরাজনৈতিক হলে তারাও রাজনৈতিক দলের ওপর দোষ চাপাতে অভ্যস্ত হয়। অন্যসব কাজ ছাড়া এই দোষারোপের কাজই যেন সবার মূল কাজ হয়ে পড়ে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, রাজনীতিকরণ থেকে বাদ যায় না ধর্ষণের মতো ভয়ংকর অপরাধের বিষয়ও। সাম্প্রতিক সময়ে মুরাদনগরের ঘটনা তারই এক দৃষ্টান্ত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন নারীর বিবস্ত্র শরীরের ভিডিও ক্লিপ, যেখানে দেখা গেছে কয়েকজন পুরুষ তাঁকে জোর করে বিবস্ত্র করছে এবং ধস্তাধস্তি চলছে। এমন ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হতে দেখে অনেকেই শিউরে উঠেছে, এ-ও কি সম্ভব! পরক্ষণেই জানা গেছে, ঘটনাটি মুরাদনগরের এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন নারীকে বিবস্ত্র করে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। নারীর বিবস্ত্র শরীর এবং তাঁকে হেনস্তা করার ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সূত্র ধরে কিছু রাজনৈতিক দোষারোপের পোস্ট ভাইরাল হতে দেখা গেল। যেমন, কিছু পোস্টে বলা হলো ধর্ষক ছাত্রদলের। এমন পোস্টের বিরোধিতায় তৎক্ষণাৎ কিছু পোস্ট ভাইরাল হলো। যেমন, ধর্ষক আওয়ামী লীগের। পাল্টাপাল্টি ব্যাখ্যা, যুক্তি ও প্রমাণ তোলা হলো। এমন আচরণে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, দোষ আসলে ধর্ষকের নয়, রাজনৈতিক দলেরই। আবার কোনো কোনো পোস্টে লেখা হলো, ওই নারীর সঙ্গে ধর্ষকের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এখানেও একধরনের গল্প তৈরি করা হলো। যে গল্পে ধর্মীয় রাজনীতির গন্ধ বা আভাস পাওয়া যায়। একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রবীণ সদস্য দুঃখ করে বললেন, যদি এমন ঘটনায় একজন মুসলিম নারী হিন্দুধর্মের কোনো পুরুষ দ্বারা বিবস্ত্র ও ধর্ষণের শিকার হতেন, তাহলে ধারণা করে বলা যায়, এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হতো। ছাই করা হতো। কথাটা তিনি অবশ্য তাঁর অভিজ্ঞতার আলোকে বলেছেন।
যাহোক, ধর্ষণের মতো অপরাধকে রাজনীতিকরণ করা হলে রাজনীতিতে এটা কতটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বা রাজনীতি কখনো রাজনৈতিক অপরাধ ছাড়া অন্য কোনো সামাজিক অপরাধকে চূড়ান্ত শাস্তি দিয়েছে, ভয়ংকর অপরাধকে নিবৃত্ত বা নির্মূল করেছে, প্রচণ্ড সোচ্চার হয়েছে প্রতিবাদে—এমন দৃষ্টান্ত কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই। তবে রাজনীতিতে অপরাধ ও অপরাধী বানানোর ইতিহাস রয়েছে প্রচুর এবং ভয়ংকর, ভয়াবহ সব ইতিহাস। অনেক জঘন্য ও নিকৃষ্ট অপরাধ করেও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় অনেক অপরাধী বিচারবহির্ভূত থেকে গেছে, থেকে যাচ্ছে আজও।
আবার দেখা যায়, রাজনৈতিক প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসায় অনেক নারী সম্ভ্রমহানি ও ধর্ষণের শিকার হন। অনেক ক্ষেত্রে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। রাজনীতিতে প্রতিশোধ নেওয়ার কমন ও সহজ উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করাটা। আবার সমাজকে অস্থিতিশীল করবার পাঁয়তারা হিসেবেও নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করা হয়। এই কাজটার পেছনে একটা শ্রেণির মানুষ সক্রিয় থাকে, যারা সম্ভবত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে মেনে নিতে পারে না।
যে দেশে ধর্ষণের শিকার হয় সাত মাসের বা আড়াই বছরের কন্যাশিশু, সেই দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি কেন দ্রুত কার্যকর হয় না, এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজলে স্বার্থান্বেষী মহলের সবার প্রকৃত চেহারা উন্মোচিত হবে। প্রচলিত রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত বিচারব্যবস্থার বিদ্যমান দুর্দশা দৃশ্যমান হয়ে উঠবে। সর্বত্র রাজনীতির মরণ ছোবল। আর এই ছোবলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও তাঁর মানমর্যাদা। একজন দরিদ্র প্রবীণ নারী বলছিলেন, নারীরা পুরুষকে বিবস্ত্র করে তাকে হেনস্তা করলে এই সমাজ ও রাষ্ট্রের টনক নড়ত!
ধর্ষণ একটা জঘন্যতম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যে পুরুষ নারীকে ধর্ষণ করে, সম্ভ্রমহানি করে, তার একটাই পরিচয়—সে ধর্ষক এবং রাষ্ট্রের একজন ভয়ংকর অপরাধী। তাকে রাজনৈতিক দলের লেবাস দিয়ে মূল ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টাকেও অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা দরকার। ধর্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক কচলাকচলির খেলা বন্ধ করার উপায় হলো অপরাধীকে দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ায় এনে শাস্তি কার্যকর করা। সেই সঙ্গে বাদীকে কোনোভাবেই মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হতে সুযোগ না দেওয়া। মুরাদনগরে ক্ষতিগ্রস্ত নারীকে যেভাবে, যতভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, তাতে সেই নারীর সম্মান সমুন্নত তো হয়ইনি, বরং তাঁকে অপদস্ত, বিব্রত করা হয়েছে। ফলে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বর্বরতার শিকার হচ্ছেন, এমন কথা বলাটা অযৌক্তিক হয় না।
যতদূর জানা গেছে, মুরাদনগরের ধর্ষণের শিকার নারী স্থানীয় সাংবাদিক, সংগঠনের লোকজনের কৌতূহল ও প্রশ্নবাণে ঘরছাড়া হয়ে সন্তানসহ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ বিষয়টিকে অন্যভাবে নিচ্ছেন। কোথায় তিনি, তাঁর বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্যোগ ও অগ্রগতি কী, এসব স্বচ্ছতার সঙ্গে উপস্থাপিত হওয়া দরকার। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান যদি ধর্ষণ ও ধর্ষকের বিরুদ্ধে ঐকমত্যে না পৌঁছায়, আপসহীন না হয়, আর রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকে, তাহলে ধর্ষণের মতো ঘটনা কখনোই কমবে না, বাড়বে।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
সাতচল্লিশের দেশভাগকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িকতা ক্রমাগত তীব্র হলো। রক্তপাত ঘটল। পরে যখন স্বাধীন হলো ভারতবর্ষ, তখন একটির জায়গায় দুটি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ঘটল। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতার সমস্যার সমাধান হলো না; না পাকিস্তানে, না ভারতে। পাকিস্তানের সব ধর্মাবলম্বীকে বলা হলো রাজনৈতিকভাবে নিজ নিজ ধর্মমত ভুলে
৬ ঘণ্টা আগেআয়মান সোবহ, ওমর মিলাদ এবং আসাদ আসাদ আমরা গাজার তিনটি অলাভজনক বিশ্ববিদ্যালয়—আল-আকসা ইউনিভার্সিটি, আল-আজহার ইউনিভার্সিটি-গাজা এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজার সভাপতি।
৬ ঘণ্টা আগেকেউ যদি আপনাকে ৮০ টাকার খুব ভালো চাল রেখে ৮৫ টাকায় পোকা আর পাথরভর্তি চাল নিতে জোর করে, আপনি কি সেই চাল কিনবেন? নিশ্চয়ই না। কিন্তু সেই ব্যক্তি নাছোড়বান্দা, আপনাকে তার কাছ থেকেই পোকা-পাথরমিশ্রিত চাল বেশি দামে নিতে হবে, নয়তো আপনার ‘ক্ষতি’ হবে! ভাবছেন, তুচ্ছ একটা ব্যাপারে কেউ কাউকে হুমকি দিতে পারে?
৭ ঘণ্টা আগেজোসেফ গোয়েবলস ছিলেন হিটলারের নাৎসি জার্মানির তথ্য ও প্রচারবিষয়ক মন্ত্রী। তিনি ছিলেন মিথ্যাকে ‘সত্য’ বানানোর এক ভয়ংকর কৌশলের রূপকার। গোয়েবলস বিশ্বাস করতেন, ‘একটি বড় মিথ্যাকে বারবার বললে মানুষ একসময় সেটিকে সত্য বলে মেনে নেয়।’ তাঁর এই নীতি দিয়েই নাৎসি জার্মানি কোটি মানুষের চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করেছিল...
১ দিন আগে