শিক্ষা বাজেট ২০২৫-২৬
মোশাররফ তানসেন
শিক্ষা শুধু একটি মৌলিক অধিকার নয়, এটি ব্যক্তি ও জাতির ক্ষমতায়নের সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো একটি তরুণ ও জনবহুল দেশে, যেখানে জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ ২৫ বছরের নিচে, সেখানে শিক্ষায় বিনিয়োগ কেবল মানবিক দায়িত্ব নয়, এটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে ৯৫,৬৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা আগের বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি। এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। কিন্তু বরাদ্দ বাড়ার পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে—এই অর্থের ব্যবহারে কি কোনো গুণগত পরিবর্তন এসেছে?
বাজেট কাঠামোর মধ্যে কি দৃষ্টিভঙ্গির কোনো রূপান্তর ঘটেছে?
বিশ্বের উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা অনুসরণ করে ইউনেসকো যেখানে জাতীয় বাজেটের ২০ এবং জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষায় ব্যয় করার সুপারিশ করেছে, সেখানে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে রয়েছে। এবারের বাজেটে শিক্ষায় বরাদ্দ জাতীয় বাজেটের ১২ দশমিক ১ এবং জিডিপির মাত্র ২ দশমিক ১ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, শুধু বরাদ্দ বাড়লেই উন্নয়নের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হওয়া যায় না—প্রয়োজন পরিকল্পিত ও দৃষ্টিভঙ্গিনির্ভর ব্যয়।
বরাদ্দের বাস্তব ব্যবহার ও কাঠামোগত চ্যালেঞ্জ
শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়লেও প্রতিবছর বাজেটের ১৫-২০ শতাংশ অর্থ অব্যবহৃত থেকে যায়। এই অব্যবহৃত অর্থ ব্যবহারে প্রধান বাধা হলো পরিকল্পনার অভাব, প্রশাসনিক জটিলতা, দক্ষ জনবল ও স্থানীয় পর্যায়ে যথাযথ কাঠামোর অভাব। প্রকল্প গ্রহণের পর অনুমোদন, বাজেট ছাড়, সরবরাহ ক্রয় এবং বাস্তবায়নপ্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি উপজেলা ও বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা ও কর্মীর ঘাটতি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাঘাত ঘটায়।
ফলে অনেক সময় দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ থাকলেও ভবন হয় না, শিক্ষক পদ সৃষ্টি হলেও নিয়োগ হয় না, পাঠ্যবই মুদ্রণের টাকা থাকলেও সঠিক সময়ে বই পৌঁছায় না। প্রযুক্তি কেনা হলেও ব্যবহারের পরিবেশ সৃষ্টি হয় না। এ সমস্যা কাটাতে স্থানীয় শিক্ষা অফিস ও প্রধান শিক্ষকদের জন্য বাজেট ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ, পর্যাপ্ত কারিগরি সহায়তা এবং একটি শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি।
তিন ধারায় বিভক্ত শিক্ষাব্যবস্থা
বাংলাদেশের শিক্ষা এখনো তিনটি ভিন্ন ধারায় বিভক্ত—বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম ও মাদ্রাসা। এর বাইরে ব্যক্তি সাহায্যে চলে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা, যেখানে কোনো রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ নেই। এই বিভাজন শুধু শিক্ষার পদ্ধতিগত পার্থক্য নয়, এটি ভবিষ্যতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করছে। ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক কারিকুলাম ও সুযোগ-সুবিধা পায়, যা তাদের গ্লোবাল মার্কেটে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখে। অন্যদিকে মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা ধর্মীয় শিক্ষা
পেলেও আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতার ঘাটতিতে চাকরির বাজারে পিছিয়ে পড়ে। বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও, তাদের জন্য মানসম্পন্ন অবকাঠামো ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক অনেক সময়ই অনুপস্থিত।
এই বিভাজন দূর করতে হলে দরকার একটি একীভূত জাতীয় শিক্ষানীতি ও কারিকুলাম, যা সব শিক্ষার্থীকে সমান সুযোগ দেবে। এর মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ঐক্যবদ্ধ সমাজ গঠনের ভিত্তি তৈরি হবে। দুঃখজনকভাবে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এ বিভাজন দূরীকরণের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বরাদ্দ বা কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হয়নি।
জলবায়ু সহনশীল শিক্ষা: বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন
বাংলাদেশ একটি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। উপকূলীয় অঞ্চল, চর, হাওর, পাহাড় ও নদীভাঙনপ্রবণ এলাকার শিশুরা প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। দুর্যোগে বিদ্যালয় ধ্বংস হয়, পাঠদান বন্ধ হয় এবং শিক্ষার ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। অথচ বাজেটে এই শিশুদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো বরাদ্দ বা কার্যকর কৌশল নেই।
জলবায়ু সহনশীল শিক্ষা মানে শুধু টেকসই অবকাঠামো নয়; এটি প্রযুক্তিনির্ভর বিকল্প শিক্ষা, নৌ-বিদ্যালয়, মোবাইল স্কুল এবং দুর্যোগ-প্রস্তুতির পরিকল্পনাকে অন্তর্ভুক্ত করে। শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য, পুনর্বাসন এবং ঝুঁকি হ্রাসের দিকগুলো বাজেট পরিকল্পনার অংশ হওয়া উচিত। তাই এখন সময়, জলবায়ু সহনশীল শিক্ষায় পরিকল্পিত ও ধারাবাহিক বিনিয়োগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার।
গুণগত শিক্ষার জন্য কী প্রয়োজন?
শিক্ষায় গুণগত মানের চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভর্তির হার যতই বাড়ুক, শিক্ষার্থীরা কী শিখছে এবং শেখা জীবনে কতটা প্রযোজ্য হচ্ছে, সেটিই মূল প্রশ্ন। গুণগত শিক্ষার জন্য প্রয়োজন অন্তত তিনটি প্রধান পদক্ষেপ:
১. শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও পেশাগত উন্নয়ন: দক্ষ ও প্রেরণাদায়ী শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন
সম্ভব নয়। এই বাজেটে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন এবং পেশাগত সহায়তার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকা উচিত ছিল।
২. আধুনিক পাঠ্যক্রম ও শিক্ষাসামগ্রী: বর্তমান পাঠ্যবই অনেকাংশে পুরোনো ও শিশুর চিন্তাশক্তি বিকাশে অপ্রতুল। একটি সময়োপযোগী, অংশগ্রহণমূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর পাঠ্যক্রম তৈরি করা দরকার।
৩. নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ: প্রান্তিক ও বৈষম্যের শিকার শিক্ষার্থীদের জন্য এমন শ্রেণিকক্ষ দরকার, যেখানে তারা নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
বাজেট হোক একটি ভবিষ্যৎমুখী বিনিয়োগ
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি একটি স্বাগতযোগ্য পদক্ষেপ; কিন্তু এটি তখনই অর্থবহ হবে যখন সেই অর্থ পরিকল্পিত, দক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে ব্যয় হবে। এখনই সময় কাঠামোগত দুর্বলতা দূর করা, প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা এবং একটি একীভূত জাতীয় শিক্ষানীতির ভিত্তি গড়ে তোলা। যেন এই বাজেট কেবল সংখ্যার খেলা না হয়ে একটি দূরদর্শী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার রূপরেখা হয়ে ওঠে।
শিক্ষা শুধু একটি মৌলিক অধিকার নয়, এটি ব্যক্তি ও জাতির ক্ষমতায়নের সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো একটি তরুণ ও জনবহুল দেশে, যেখানে জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ ২৫ বছরের নিচে, সেখানে শিক্ষায় বিনিয়োগ কেবল মানবিক দায়িত্ব নয়, এটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে ৯৫,৬৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা আগের বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি। এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। কিন্তু বরাদ্দ বাড়ার পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে—এই অর্থের ব্যবহারে কি কোনো গুণগত পরিবর্তন এসেছে?
বাজেট কাঠামোর মধ্যে কি দৃষ্টিভঙ্গির কোনো রূপান্তর ঘটেছে?
বিশ্বের উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা অনুসরণ করে ইউনেসকো যেখানে জাতীয় বাজেটের ২০ এবং জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষায় ব্যয় করার সুপারিশ করেছে, সেখানে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে রয়েছে। এবারের বাজেটে শিক্ষায় বরাদ্দ জাতীয় বাজেটের ১২ দশমিক ১ এবং জিডিপির মাত্র ২ দশমিক ১ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, শুধু বরাদ্দ বাড়লেই উন্নয়নের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হওয়া যায় না—প্রয়োজন পরিকল্পিত ও দৃষ্টিভঙ্গিনির্ভর ব্যয়।
বরাদ্দের বাস্তব ব্যবহার ও কাঠামোগত চ্যালেঞ্জ
শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়লেও প্রতিবছর বাজেটের ১৫-২০ শতাংশ অর্থ অব্যবহৃত থেকে যায়। এই অব্যবহৃত অর্থ ব্যবহারে প্রধান বাধা হলো পরিকল্পনার অভাব, প্রশাসনিক জটিলতা, দক্ষ জনবল ও স্থানীয় পর্যায়ে যথাযথ কাঠামোর অভাব। প্রকল্প গ্রহণের পর অনুমোদন, বাজেট ছাড়, সরবরাহ ক্রয় এবং বাস্তবায়নপ্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি উপজেলা ও বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা ও কর্মীর ঘাটতি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাঘাত ঘটায়।
ফলে অনেক সময় দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ থাকলেও ভবন হয় না, শিক্ষক পদ সৃষ্টি হলেও নিয়োগ হয় না, পাঠ্যবই মুদ্রণের টাকা থাকলেও সঠিক সময়ে বই পৌঁছায় না। প্রযুক্তি কেনা হলেও ব্যবহারের পরিবেশ সৃষ্টি হয় না। এ সমস্যা কাটাতে স্থানীয় শিক্ষা অফিস ও প্রধান শিক্ষকদের জন্য বাজেট ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ, পর্যাপ্ত কারিগরি সহায়তা এবং একটি শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি।
তিন ধারায় বিভক্ত শিক্ষাব্যবস্থা
বাংলাদেশের শিক্ষা এখনো তিনটি ভিন্ন ধারায় বিভক্ত—বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম ও মাদ্রাসা। এর বাইরে ব্যক্তি সাহায্যে চলে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা, যেখানে কোনো রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ নেই। এই বিভাজন শুধু শিক্ষার পদ্ধতিগত পার্থক্য নয়, এটি ভবিষ্যতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করছে। ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক কারিকুলাম ও সুযোগ-সুবিধা পায়, যা তাদের গ্লোবাল মার্কেটে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখে। অন্যদিকে মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা ধর্মীয় শিক্ষা
পেলেও আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতার ঘাটতিতে চাকরির বাজারে পিছিয়ে পড়ে। বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও, তাদের জন্য মানসম্পন্ন অবকাঠামো ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক অনেক সময়ই অনুপস্থিত।
এই বিভাজন দূর করতে হলে দরকার একটি একীভূত জাতীয় শিক্ষানীতি ও কারিকুলাম, যা সব শিক্ষার্থীকে সমান সুযোগ দেবে। এর মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ঐক্যবদ্ধ সমাজ গঠনের ভিত্তি তৈরি হবে। দুঃখজনকভাবে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এ বিভাজন দূরীকরণের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বরাদ্দ বা কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হয়নি।
জলবায়ু সহনশীল শিক্ষা: বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন
বাংলাদেশ একটি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। উপকূলীয় অঞ্চল, চর, হাওর, পাহাড় ও নদীভাঙনপ্রবণ এলাকার শিশুরা প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। দুর্যোগে বিদ্যালয় ধ্বংস হয়, পাঠদান বন্ধ হয় এবং শিক্ষার ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। অথচ বাজেটে এই শিশুদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো বরাদ্দ বা কার্যকর কৌশল নেই।
জলবায়ু সহনশীল শিক্ষা মানে শুধু টেকসই অবকাঠামো নয়; এটি প্রযুক্তিনির্ভর বিকল্প শিক্ষা, নৌ-বিদ্যালয়, মোবাইল স্কুল এবং দুর্যোগ-প্রস্তুতির পরিকল্পনাকে অন্তর্ভুক্ত করে। শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য, পুনর্বাসন এবং ঝুঁকি হ্রাসের দিকগুলো বাজেট পরিকল্পনার অংশ হওয়া উচিত। তাই এখন সময়, জলবায়ু সহনশীল শিক্ষায় পরিকল্পিত ও ধারাবাহিক বিনিয়োগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার।
গুণগত শিক্ষার জন্য কী প্রয়োজন?
শিক্ষায় গুণগত মানের চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভর্তির হার যতই বাড়ুক, শিক্ষার্থীরা কী শিখছে এবং শেখা জীবনে কতটা প্রযোজ্য হচ্ছে, সেটিই মূল প্রশ্ন। গুণগত শিক্ষার জন্য প্রয়োজন অন্তত তিনটি প্রধান পদক্ষেপ:
১. শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও পেশাগত উন্নয়ন: দক্ষ ও প্রেরণাদায়ী শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন
সম্ভব নয়। এই বাজেটে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন এবং পেশাগত সহায়তার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকা উচিত ছিল।
২. আধুনিক পাঠ্যক্রম ও শিক্ষাসামগ্রী: বর্তমান পাঠ্যবই অনেকাংশে পুরোনো ও শিশুর চিন্তাশক্তি বিকাশে অপ্রতুল। একটি সময়োপযোগী, অংশগ্রহণমূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর পাঠ্যক্রম তৈরি করা দরকার।
৩. নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ: প্রান্তিক ও বৈষম্যের শিকার শিক্ষার্থীদের জন্য এমন শ্রেণিকক্ষ দরকার, যেখানে তারা নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
বাজেট হোক একটি ভবিষ্যৎমুখী বিনিয়োগ
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি একটি স্বাগতযোগ্য পদক্ষেপ; কিন্তু এটি তখনই অর্থবহ হবে যখন সেই অর্থ পরিকল্পিত, দক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে ব্যয় হবে। এখনই সময় কাঠামোগত দুর্বলতা দূর করা, প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা এবং একটি একীভূত জাতীয় শিক্ষানীতির ভিত্তি গড়ে তোলা। যেন এই বাজেট কেবল সংখ্যার খেলা না হয়ে একটি দূরদর্শী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার রূপরেখা হয়ে ওঠে।
দুটো ঘটনা ঘটল পরপর। গোপালগঞ্জ আর চকরিয়ায়। প্রথম ঘটনায় দুঃখজনকভাবে ঝরে পড়েছে পাঁচটি প্রাণ। এই প্রাণহানি এড়ানো যেত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দ্বিতীয় ঘটনাটিতে দেখা যাচ্ছে, কক্সবাজারে এনসিপির একজন নেতার বক্তৃতার সূত্র ধরে বিএনপি মহলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
১৯ ঘণ্টা আগে২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছিল উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার অধিকাংশ দেশ, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কিছু বড় অর্থনীতির দেশ এবং আফ্রিকার কিছু দেশের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন আধিপত্য বিস্তার করেছিল ইউরোপের প্রায় পুরো অঞ্চল, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিস্তৃত অংশ এবং দক্ষিণ আমেরিকার কিছু দেশের সঙ্গে।
১৯ ঘণ্টা আগেনির্বাচন হওয়া এবং না-হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা আছে, সংশয়ও আছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে নির্বাচন হবে বলে আশা করা হলেও এটা নিশ্চিত নয়। এখানে ‘যদি’,‘কিন্তু’ আছে। নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ-উৎসাহ বিএনপির।
১৯ ঘণ্টা আগেমনজিল মোরসেদ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী। তিনি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) প্রেসিডেন্ট। জনস্বার্থে এ পর্যন্ত তিনি ২২৫টির বেশি মামলা করে মানবাধিকার ও পরিবেশ সংরক্ষণে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
২ দিন আগে