অবৈধ অভিবাসন দমনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে কারও কাছ থেকে একেবারে সমর্থন পাচ্ছেন না, এমন নয়। তাঁর সমর্থকদের অনেকেই শ্বেতাঙ্গ, মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত আমেরিকান। কেন তাঁরা অবৈধ অভিবাসীদের বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছেন? কারণটি আর কিছুই নয়, তারা বিশ্বাস করেন যে অবৈধ অভিবাসীরা সরকারনির্ধারিত ন্যূনতম মজুরির চেয়েও কম মজুরিতে কাজ করে থাকেন। ফলে অনেক দক্ষ মানুষই কাজ পাচ্ছেন না। তাঁদের কাজগুলো নিয়ে নিচ্ছেন অবৈধ অভিবাসীরা।
জাহীদ রেজা নূর
ঈদের দিনই বুঝি, আগুন লাগল লস অ্যাঞ্জেলেসে। আগুন মানে আক্ষরিক অর্থে আগুন নয়, অবৈধভাবে বসবাসকারী সাধারণ মানুষকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার শুরু করলে সাধারণ মানুষই দাঁড়িয়ে গেল পুলিশের বিরুদ্ধে। ইচ্ছে হলেই যে কাউকে যেকোনো জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করে নেওয়ার যে খেলা শুরু করেছিল সরকার, তার বিরুদ্ধেই এই প্রতিবাদ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুবই খাপ্পা হয়েছেন দেশের জনগণের ওপর। বিশেষ করে লস অ্যাঞ্জেলেসের নাগরিকদের ওপর। কেন তারা পুলিশি তৎপরতায় বাদ সাধছেন, সেটাই ট্রাম্পের রাগের কারণ। ট্রাম্প বুঝতেই চাইছেন না, এত দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে চলছিল, তা অস্বীকার করে হঠাৎ অভিবাসী প্রশ্নে প্রচলিত আইনের খোলনলচে পাল্টে দেওয়ার যে খেলা শুরু করেছেন তিনি, তা ধোপে টিকবে না। গায়ের জোরেই তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিতে চাইছেন অসংখ্য মানুষকে। বৈধ নয়, যাদের ব্যাপারে মামলা চলছে, তাদেরও দেশ থেকে বের করে দিতে পারলে বুঝি খুশি হন তিনি। ফলে, ট্রাম্পের ব্যাপারে অসন্তোষ বাড়ছে তাঁর নিজের দেশেই। যুক্তরাষ্ট্র যে অভিবাসীদের দিয়েই গড়ে তোলা দেশ, সেটা বেমালুম ভুলে গেলে কি চলবে? ট্রাম্প তো এ কথাও মনে রাখেন না, এই ভূখণ্ডের মূল অধিবাসীদের কীভাবে কচুকাটা করেছিল বাইরে থেকে আসা শ্বেতাঙ্গরা। তাদের ভূমিতেই এখন শ্বেতাঙ্গদের শাসন। যদি যুক্তির কথা বলতে হয়, তাহলে শ্বেতাঙ্গরাও তো এখানে অভিবাসী, এ সত্য কি এড়ানো যাবে?
লস অ্যাঞ্জেলেসই কেবল নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্রই বৈধ-অবৈধ প্রশ্নটি নিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। শর্তসাপেক্ষ গ্রিন কার্ডধারীরাও পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে যাঁরা লুকিয়ে এই দেশে প্রবেশ করেন, যাঁরা রাজনৈতিক আশ্রয় চান, তাঁদের অনেককেই এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে ক্ষমতায় আসার ছয় মাসের মধ্যেই ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তার সংকটে পড়ে গেছেন তিনি।
নিউইয়র্ক শহরে সাধারণভাবে চলাচল করতে গেলে এই ভয়াবহতা খুব একটা চোখে পড়ে না। মনে হয়, জীবনযাত্রা বুঝি স্বাভাবিকই আছে। কিন্তু যাঁরা এখনো এ দেশে অবৈধভাবে থাকছেন কিংবা যাঁদের অভিবাসন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে, তাঁরা জানেন, পুলিশ বাহিনীর অভিবাসনবিরোধী তৎপরতা চলছে জোরেশোরে, যেকোনো সময় তাঁরা এদের হাতে আটক হতে পারেন। বৈধ কাগজপত্র সঙ্গে না থাকলে বৈধ নাগরিকও পুলিশি হাঙ্গামায় পড়তে পারেন।
ধরপাকড়ের জন্য এক নতুন তরিকা বের করেছে পুলিশ। এখন ‘আইস’ (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) একটি আতঙ্কের নাম। নিউইয়র্কে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ অবৈধ নাগরিককে গ্রেপ্তারের টার্গেট দেওয়া হয়েছে আইসকে। আইসের সদস্যরা এখন অবৈধ অভিবাসীদের ধরার জন্য ঘাপটি মেরে থাকছেন আদালতে। বিভিন্ন মামলায় যখন তাঁরা হাজিরা দিতে আদালতে যান, তখন আইস সদস্যরা তাঁদের গ্রেপ্তার করেন।
কিছুদিন আগে নিউইয়র্কের ব্রংকস থেকে এক স্কুলছাত্রকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে বেশ হুলুস্থুল হয়েছে। ছেলেটি আদালতে এসেছিল অ্যাসাইলাম-সংক্রান্ত একটি মামলায় হাজিরা দিতে। নিউইয়র্ক সিটি সরকার শিক্ষার্থীটিকে মুক্ত করে দেওয়ার জন্য আইসের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। ডিলান নামে ২০ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থীকে আটক করার সময় কোনো আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেওয়া হয়নি। নিউইয়র্ক শহরের মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেছেন, ‘নিউইয়র্ক সিটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বৈচিত্র্যময় অভিবাসীদের নিয়েই গড়ে উঠেছে। আমরা সেই বৈচিত্র্যময় অভিবাসীদের বলছি, আমরা আপনাদের পাশেই আছি, আপনারা স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার রাখেন।’
সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যাপার হলো, আইস যদি এভাবে আদালত থেকে অবৈধ অধিবাসীদের গ্রেপ্তার করতে থাকে, তাহলে আইনি পথে বৈধ হওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। আদালত থেকে গ্রেপ্তার করার খবর যখন রটে গেছে, তখন অনেকেই এখন লুকিয়ে পড়বেন। এত দিন সবাই জানত, আদালতে অভিবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে চলা মামলায় জয়ী হলে বৈধভাবে এ দেশে থাকা যাবে, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, আদালত থেকেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অভিবাসন আইন মেনে চলা এসব মানুষকে গ্রেপ্তার করা একেবারেই অন্যায় ও অনৈতিক ব্যাপার। কিন্তু বর্তমানের ট্রাম্প সরকার অভিবাসন নিয়ে এই অন্যায় ও অনৈতিক কাজটিই করে চলেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন যে নয়া অভিবাসন নীতি করেছে, তাতে বলা হয়েছে, ‘যাঁরা দুই বছরের কম সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন এবং এখনো কোনো বৈধ অভিবাসন অনুমোদন পাননি, তাঁদের পূর্ণাঙ্গ শুনানি ছাড়াই দ্রুত নির্বাসন আইনের আওতায় সরাসরি দেশে ফেরত পাঠানো যাবে।’ এই নীতিমালার আলোকে আদালতে সরকারি আইনজীবীরা বিচারকদের অনুরোধ করছেন দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে আসা ব্যক্তিদের মামলাগুলো বাতিল করে দিতে। মামলা বাতিল হলে নির্বাসন আইনের আওতায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো যাবে।
২. এ তো গেল নিউইয়র্কের কথা। এবার লস অ্যাঞ্জেলেসের কথা বলি।
এ কথা অনেকেরই মনে পড়ে যাবে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসনবিরোধী লড়াইকে একটি প্রধান নীতিগত উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। এ বছরের জানুয়ারিতে যখন তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন, তখন থেকেই তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পালনে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে তখন তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন এবং সে সময় তিনি লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট ৬ জুন ৪৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছিল। এরই প্রতিক্রিয়ায় পুরো শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ সহিংস হতে সময় নেয়নি। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ও পানির বোতল ছুড়ে মারে। তারই প্রতিক্রিয়ায় আইন প্রয়োগকারীরা, পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে। এতে হিতে বিপরীত হয়। জনগণ আরও হিংস্র হয়ে ওঠে।
এরপর যা ঘটে, তা বিস্ময়কর। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নিউসমকে এড়িয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েন করলেন। ১৯৬৫ সালের পর এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোনো রাজ্য সরকারের সম্মতি ছাড়াই ন্যাশনাল গার্ড ব্যবহার করেছেন। এ ঘটনা মার্কিন ফেডারেল ব্যবস্থার ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির বুকে ছুরিকাঘাত করেছে।
ট্রাম্প শুধু ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেই ক্ষান্ত হননি, তিনি ফেডারেল সরকারি সুযোগ-সুবিধা এবং কর্মচারীদের সুরক্ষার জন্য আরও ৭০০ মেরিন সেনা মোতায়েন করেছেন। এর ফলে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করে। স্থানীয় ক্যালিফোর্নিয়ার কর্মকর্তাদের মধ্যেও মতবিরোধ তীব্র হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমনকি গভর্নর নিউসমকে গ্রেপ্তারের হুমকিও দেন। স্থানীয় প্রশাসনকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, তারা যদি লস অ্যাঞ্জেলেসে ফেডারেল পদক্ষেপের বিরোধিতা করতে থাকে, তাহলে ‘অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়া’ বা ‘আইন প্রয়োগে বাধা দেওয়ার’ মতো গুরুতর অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নিউসম ট্রাম্পের এই আচরণে ক্ষুব্ধ হন এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাজ্যের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন। তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করে তাঁকে ফেডারেল আইন ও সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।
এ কথা সত্য, ক্যালিফোর্নিয়া সত্যিকারের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাসও দেশের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সমালোচনা করেন। গোটা রাজ্য প্রশাসন দাঁড়িয়ে যায় ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে। মেয়র বলেছেন, স্থানীয় পুলিশ এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম। এখানে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন নেই।
অবৈধ অভিবাসন দমনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে কারও কাছ থেকে একেবারে সমর্থন পাচ্ছেন না, এমন নয়। তাঁর সমর্থকদের অনেকেই শ্বেতাঙ্গ, মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত আমেরিকান। কেন তাঁরা অবৈধ অভিবাসীদের বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছেন? কারণ আর কিছুই নয়, তাঁরা বিশ্বাস করেন, অবৈধ অভিবাসীরা সরকার-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরির চেয়েও কম মজুরিতে কাজ করে থাকে। ফলে অনেক দক্ষ মানুষই কাজ পাচ্ছেন না। তাঁদের কাজগুলো নিয়ে নিচ্ছেন অবৈধ অভিবাসীরা। লস অ্যাঞ্জেলেসে ১০ লাখের বেশি অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ লাতিনো। তাঁদের বেশির ভাগই খাদ্য পরিষেবা ও নির্মাণের মতো শিল্পে কাজ করেন, যা অদৃশ্য থাকে অথচ শহরকে জীবনীশক্তিতে ভরপুর করে তোলে।
অবৈধ অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান স্থানীয় লাতিনো সম্প্রদায়কে প্রতিরোধের ডাক দিতে বাধ্য করেছে। ডেমোক্রেটিক পার্টি-নিয়ন্ত্রিত ক্যালিফোর্নিয়া এবং ফেডারেল সরকারের মধ্যে তাই সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও ট্রাম্প তো ব্যবসায়ীও থেকে গেছেন। তিনি তাঁর ব্যবসায়ী মতে বিশ্বাস করেন যে, অবৈধ অভিবাসীরা মার্কিন অর্থনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। নিজের কোম্পানির খরচ কমাতে কিছু কোম্পানি অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ করে। এতে রাষ্ট্রও বিপদে পড়ে। কারণ এই কর্মচারীরা রাষ্ট্রীয় কর দেয় না। তাদের ব্যবহার করা যাচ্ছে বলেই শ্রমবাজারে মজুরি হ্রাস পেয়েছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আমেরিকানদের ভোট ধরে রাখার জন্য ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে লড়াইকে তাঁর প্রধান লক্ষ্য করে তুলেছেন।
তবে অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্প তাঁর এই কার্যক্রম কত দিন অব্যাহত রাখতে পারবেন, তা নিয়ে এখনই শেষ কথা বলে দেওয়া যাবে না। অনেকেই মনে করছেন, তিনি দেশকে অখণ্ড রাখতে পারবেন কি না, সেই প্রশ্নও এখন উঠে আসছে। অনেক রাজ্যই এখন নিজেদের মতো করে ভাবতে শুরু করেছে, এতে মার্কিন দেশটি খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যাবে কি না, তা নিয়েও অনেকে ভাবছেন। খোদ যুক্তরাষ্ট্র দেশটিই মূলত অভিবাসীদের নিয়ে গড়ে ওঠা। তাই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়ে কতটা জনপ্রিয়তা ধরে রাখা যাবে, তা নিশ্চিত নয়। আরও একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, অভিবাসীদের মধ্যেই একটা বড় অংশ আছে, যাঁরা মার্কিন নাগরিক হওয়ার পর নতুনদের অভিবাসনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে থাকেন, শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে তাঁরাও ট্রাম্পের পক্ষে অবস্থান নেন। বর্তমানে অভিবাসনবিরোধী ট্রাম্প সরকার এদের সমর্থনে শক্তিশালী হয়ে আরও কঠোর হয়ে উঠবে কি না এবং তার বিপরীতে সহিংসতা আরও বেড়ে যাবে কি না, সেটাও দেখার বিষয়।
নিউইয়র্ক থেকে
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
ঈদের দিনই বুঝি, আগুন লাগল লস অ্যাঞ্জেলেসে। আগুন মানে আক্ষরিক অর্থে আগুন নয়, অবৈধভাবে বসবাসকারী সাধারণ মানুষকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার শুরু করলে সাধারণ মানুষই দাঁড়িয়ে গেল পুলিশের বিরুদ্ধে। ইচ্ছে হলেই যে কাউকে যেকোনো জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করে নেওয়ার যে খেলা শুরু করেছিল সরকার, তার বিরুদ্ধেই এই প্রতিবাদ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুবই খাপ্পা হয়েছেন দেশের জনগণের ওপর। বিশেষ করে লস অ্যাঞ্জেলেসের নাগরিকদের ওপর। কেন তারা পুলিশি তৎপরতায় বাদ সাধছেন, সেটাই ট্রাম্পের রাগের কারণ। ট্রাম্প বুঝতেই চাইছেন না, এত দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে চলছিল, তা অস্বীকার করে হঠাৎ অভিবাসী প্রশ্নে প্রচলিত আইনের খোলনলচে পাল্টে দেওয়ার যে খেলা শুরু করেছেন তিনি, তা ধোপে টিকবে না। গায়ের জোরেই তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিতে চাইছেন অসংখ্য মানুষকে। বৈধ নয়, যাদের ব্যাপারে মামলা চলছে, তাদেরও দেশ থেকে বের করে দিতে পারলে বুঝি খুশি হন তিনি। ফলে, ট্রাম্পের ব্যাপারে অসন্তোষ বাড়ছে তাঁর নিজের দেশেই। যুক্তরাষ্ট্র যে অভিবাসীদের দিয়েই গড়ে তোলা দেশ, সেটা বেমালুম ভুলে গেলে কি চলবে? ট্রাম্প তো এ কথাও মনে রাখেন না, এই ভূখণ্ডের মূল অধিবাসীদের কীভাবে কচুকাটা করেছিল বাইরে থেকে আসা শ্বেতাঙ্গরা। তাদের ভূমিতেই এখন শ্বেতাঙ্গদের শাসন। যদি যুক্তির কথা বলতে হয়, তাহলে শ্বেতাঙ্গরাও তো এখানে অভিবাসী, এ সত্য কি এড়ানো যাবে?
লস অ্যাঞ্জেলেসই কেবল নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্রই বৈধ-অবৈধ প্রশ্নটি নিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। শর্তসাপেক্ষ গ্রিন কার্ডধারীরাও পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে যাঁরা লুকিয়ে এই দেশে প্রবেশ করেন, যাঁরা রাজনৈতিক আশ্রয় চান, তাঁদের অনেককেই এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে ক্ষমতায় আসার ছয় মাসের মধ্যেই ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তার সংকটে পড়ে গেছেন তিনি।
নিউইয়র্ক শহরে সাধারণভাবে চলাচল করতে গেলে এই ভয়াবহতা খুব একটা চোখে পড়ে না। মনে হয়, জীবনযাত্রা বুঝি স্বাভাবিকই আছে। কিন্তু যাঁরা এখনো এ দেশে অবৈধভাবে থাকছেন কিংবা যাঁদের অভিবাসন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে, তাঁরা জানেন, পুলিশ বাহিনীর অভিবাসনবিরোধী তৎপরতা চলছে জোরেশোরে, যেকোনো সময় তাঁরা এদের হাতে আটক হতে পারেন। বৈধ কাগজপত্র সঙ্গে না থাকলে বৈধ নাগরিকও পুলিশি হাঙ্গামায় পড়তে পারেন।
ধরপাকড়ের জন্য এক নতুন তরিকা বের করেছে পুলিশ। এখন ‘আইস’ (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) একটি আতঙ্কের নাম। নিউইয়র্কে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ অবৈধ নাগরিককে গ্রেপ্তারের টার্গেট দেওয়া হয়েছে আইসকে। আইসের সদস্যরা এখন অবৈধ অভিবাসীদের ধরার জন্য ঘাপটি মেরে থাকছেন আদালতে। বিভিন্ন মামলায় যখন তাঁরা হাজিরা দিতে আদালতে যান, তখন আইস সদস্যরা তাঁদের গ্রেপ্তার করেন।
কিছুদিন আগে নিউইয়র্কের ব্রংকস থেকে এক স্কুলছাত্রকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে বেশ হুলুস্থুল হয়েছে। ছেলেটি আদালতে এসেছিল অ্যাসাইলাম-সংক্রান্ত একটি মামলায় হাজিরা দিতে। নিউইয়র্ক সিটি সরকার শিক্ষার্থীটিকে মুক্ত করে দেওয়ার জন্য আইসের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। ডিলান নামে ২০ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থীকে আটক করার সময় কোনো আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেওয়া হয়নি। নিউইয়র্ক শহরের মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেছেন, ‘নিউইয়র্ক সিটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বৈচিত্র্যময় অভিবাসীদের নিয়েই গড়ে উঠেছে। আমরা সেই বৈচিত্র্যময় অভিবাসীদের বলছি, আমরা আপনাদের পাশেই আছি, আপনারা স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার রাখেন।’
সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যাপার হলো, আইস যদি এভাবে আদালত থেকে অবৈধ অধিবাসীদের গ্রেপ্তার করতে থাকে, তাহলে আইনি পথে বৈধ হওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। আদালত থেকে গ্রেপ্তার করার খবর যখন রটে গেছে, তখন অনেকেই এখন লুকিয়ে পড়বেন। এত দিন সবাই জানত, আদালতে অভিবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে চলা মামলায় জয়ী হলে বৈধভাবে এ দেশে থাকা যাবে, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, আদালত থেকেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অভিবাসন আইন মেনে চলা এসব মানুষকে গ্রেপ্তার করা একেবারেই অন্যায় ও অনৈতিক ব্যাপার। কিন্তু বর্তমানের ট্রাম্প সরকার অভিবাসন নিয়ে এই অন্যায় ও অনৈতিক কাজটিই করে চলেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন যে নয়া অভিবাসন নীতি করেছে, তাতে বলা হয়েছে, ‘যাঁরা দুই বছরের কম সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন এবং এখনো কোনো বৈধ অভিবাসন অনুমোদন পাননি, তাঁদের পূর্ণাঙ্গ শুনানি ছাড়াই দ্রুত নির্বাসন আইনের আওতায় সরাসরি দেশে ফেরত পাঠানো যাবে।’ এই নীতিমালার আলোকে আদালতে সরকারি আইনজীবীরা বিচারকদের অনুরোধ করছেন দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে আসা ব্যক্তিদের মামলাগুলো বাতিল করে দিতে। মামলা বাতিল হলে নির্বাসন আইনের আওতায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো যাবে।
২. এ তো গেল নিউইয়র্কের কথা। এবার লস অ্যাঞ্জেলেসের কথা বলি।
এ কথা অনেকেরই মনে পড়ে যাবে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসনবিরোধী লড়াইকে একটি প্রধান নীতিগত উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। এ বছরের জানুয়ারিতে যখন তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন, তখন থেকেই তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পালনে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে তখন তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন এবং সে সময় তিনি লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট ৬ জুন ৪৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছিল। এরই প্রতিক্রিয়ায় পুরো শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ সহিংস হতে সময় নেয়নি। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ও পানির বোতল ছুড়ে মারে। তারই প্রতিক্রিয়ায় আইন প্রয়োগকারীরা, পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে। এতে হিতে বিপরীত হয়। জনগণ আরও হিংস্র হয়ে ওঠে।
এরপর যা ঘটে, তা বিস্ময়কর। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নিউসমকে এড়িয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েন করলেন। ১৯৬৫ সালের পর এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোনো রাজ্য সরকারের সম্মতি ছাড়াই ন্যাশনাল গার্ড ব্যবহার করেছেন। এ ঘটনা মার্কিন ফেডারেল ব্যবস্থার ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির বুকে ছুরিকাঘাত করেছে।
ট্রাম্প শুধু ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেই ক্ষান্ত হননি, তিনি ফেডারেল সরকারি সুযোগ-সুবিধা এবং কর্মচারীদের সুরক্ষার জন্য আরও ৭০০ মেরিন সেনা মোতায়েন করেছেন। এর ফলে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করে। স্থানীয় ক্যালিফোর্নিয়ার কর্মকর্তাদের মধ্যেও মতবিরোধ তীব্র হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমনকি গভর্নর নিউসমকে গ্রেপ্তারের হুমকিও দেন। স্থানীয় প্রশাসনকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, তারা যদি লস অ্যাঞ্জেলেসে ফেডারেল পদক্ষেপের বিরোধিতা করতে থাকে, তাহলে ‘অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়া’ বা ‘আইন প্রয়োগে বাধা দেওয়ার’ মতো গুরুতর অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নিউসম ট্রাম্পের এই আচরণে ক্ষুব্ধ হন এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাজ্যের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন। তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করে তাঁকে ফেডারেল আইন ও সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।
এ কথা সত্য, ক্যালিফোর্নিয়া সত্যিকারের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাসও দেশের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সমালোচনা করেন। গোটা রাজ্য প্রশাসন দাঁড়িয়ে যায় ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে। মেয়র বলেছেন, স্থানীয় পুলিশ এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম। এখানে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন নেই।
অবৈধ অভিবাসন দমনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে কারও কাছ থেকে একেবারে সমর্থন পাচ্ছেন না, এমন নয়। তাঁর সমর্থকদের অনেকেই শ্বেতাঙ্গ, মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত আমেরিকান। কেন তাঁরা অবৈধ অভিবাসীদের বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছেন? কারণ আর কিছুই নয়, তাঁরা বিশ্বাস করেন, অবৈধ অভিবাসীরা সরকার-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরির চেয়েও কম মজুরিতে কাজ করে থাকে। ফলে অনেক দক্ষ মানুষই কাজ পাচ্ছেন না। তাঁদের কাজগুলো নিয়ে নিচ্ছেন অবৈধ অভিবাসীরা। লস অ্যাঞ্জেলেসে ১০ লাখের বেশি অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ লাতিনো। তাঁদের বেশির ভাগই খাদ্য পরিষেবা ও নির্মাণের মতো শিল্পে কাজ করেন, যা অদৃশ্য থাকে অথচ শহরকে জীবনীশক্তিতে ভরপুর করে তোলে।
অবৈধ অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান স্থানীয় লাতিনো সম্প্রদায়কে প্রতিরোধের ডাক দিতে বাধ্য করেছে। ডেমোক্রেটিক পার্টি-নিয়ন্ত্রিত ক্যালিফোর্নিয়া এবং ফেডারেল সরকারের মধ্যে তাই সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও ট্রাম্প তো ব্যবসায়ীও থেকে গেছেন। তিনি তাঁর ব্যবসায়ী মতে বিশ্বাস করেন যে, অবৈধ অভিবাসীরা মার্কিন অর্থনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। নিজের কোম্পানির খরচ কমাতে কিছু কোম্পানি অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ করে। এতে রাষ্ট্রও বিপদে পড়ে। কারণ এই কর্মচারীরা রাষ্ট্রীয় কর দেয় না। তাদের ব্যবহার করা যাচ্ছে বলেই শ্রমবাজারে মজুরি হ্রাস পেয়েছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আমেরিকানদের ভোট ধরে রাখার জন্য ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে লড়াইকে তাঁর প্রধান লক্ষ্য করে তুলেছেন।
তবে অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্প তাঁর এই কার্যক্রম কত দিন অব্যাহত রাখতে পারবেন, তা নিয়ে এখনই শেষ কথা বলে দেওয়া যাবে না। অনেকেই মনে করছেন, তিনি দেশকে অখণ্ড রাখতে পারবেন কি না, সেই প্রশ্নও এখন উঠে আসছে। অনেক রাজ্যই এখন নিজেদের মতো করে ভাবতে শুরু করেছে, এতে মার্কিন দেশটি খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যাবে কি না, তা নিয়েও অনেকে ভাবছেন। খোদ যুক্তরাষ্ট্র দেশটিই মূলত অভিবাসীদের নিয়ে গড়ে ওঠা। তাই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়ে কতটা জনপ্রিয়তা ধরে রাখা যাবে, তা নিশ্চিত নয়। আরও একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, অভিবাসীদের মধ্যেই একটা বড় অংশ আছে, যাঁরা মার্কিন নাগরিক হওয়ার পর নতুনদের অভিবাসনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে থাকেন, শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে তাঁরাও ট্রাম্পের পক্ষে অবস্থান নেন। বর্তমানে অভিবাসনবিরোধী ট্রাম্প সরকার এদের সমর্থনে শক্তিশালী হয়ে আরও কঠোর হয়ে উঠবে কি না এবং তার বিপরীতে সহিংসতা আরও বেড়ে যাবে কি না, সেটাও দেখার বিষয়।
নিউইয়র্ক থেকে
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশে এ বছরের বাজেট মৌসুম শেষ হয়েছে এবং সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উত্তেজনাও বেশ কিছুটা থিতিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের ২০২৫-২৬ সালের বার্ষিক বাজেট পেশ করা হয়েছিল প্রায় দুই সপ্তাহ আগে। তারপর চিরায়ত নিয়মে নানান দৃষ্টিকোণ থেকে বাজেটের চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেকায়েস আহমেদের প্রিয় সাহিত্যিকদের একজন ছিলেন প্রয়াত হাসান আজিজুল হক। শক্তিমান সেই হাসান আজিজুল হক একবার বলেছিলেন, ‘লেখকমাত্রই অনন্য, স্বতন্ত্রভাবে ভোগ্য ও অনুসন্ধানযোগ্য।’ সেই সঙ্গে তিনি এ-ও আমাদের জানিয়েছিলেন, ‘সাহিত্যবিষয়ক সাধারণ নিয়মকানুনের সিদ্ধান্ত নয়, লেখকদের রচনা এবং রচনা বিচার...
১ ঘণ্টা আগেএতটা তর্কিত-বিতর্কিত আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিদেশ সফর বাংলাদেশের আর কোনো সরকারপ্রধান করেছেন কি না সন্দেহ, যেমন সফর করলেন আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১ ঘণ্টা আগেজেলের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে, এতে ইলিশ শিকারিরা খুশি। বড় একটা সময় ধরে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকার পর যখন অনুমতি মিলেছে, তখন জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উঠছে। এটা উপকূলবর্তী মানুষের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে আশা করি।
২ ঘণ্টা আগে