জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
এ পি এম সুহেল
সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়া ও অস্থায়ী আবাসনসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের ফলে কর্তৃপক্ষ আন্দোলনের দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ দাবি মেনে নেওয়ার পরও প্রত্যাশিত দাবির বাস্তবায়ন না দেখে আবারও আন্দোলনে নামার কথা ভাবছেন শিক্ষার্থীরা।
ইতিহাস মতে, ব্রাহ্ম স্কুল থেকে এ প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। এরপর কলেজে উন্নীত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার দাবি নিয়ে দীর্ঘ সময় আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর জাতীয় সংসদে আইন পাসের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার পরে অবকাঠামোসহ নানা সমস্যা নিয়ে চলতে থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। হল, পরিবহনব্যবস্থা, মেডিকেল সেন্টার এবং ক্যানটিনের খাবারের মান নিয়ে আন্দোলন করতে হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। এমনকি ক্যানটিনে চেয়ার-টেবিলের সুব্যবস্থা করার জন্যও করতে হয়েছে আন্দোলন। মনে আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাশুক নামে এক শিক্ষার্থী ভার্সিটি আসার পথে বাস থেকে পড়ে মারা যান। পরে আন্দোলন করলে প্রশাসন নতুন বাস কেনে। শিক্ষার্থীরা খুশি হন। কিন্তু পরে দেখা যায়, এই বাস ব্যবহার করছেন শিক্ষকেরা! বিভিন্ন সময় দাবিদাওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করতে গেলেও ফকির, মিসকিনের মতো অপমানজনক শব্দের কটাক্ষ শুনতে হয় শিক্ষার্থীদের ৷ কলেজ থাকা অবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিল অনেকগুলো হল। কিন্তু কালের পরিক্রমায় হলগুলো বেদখল হয়ে যায়। হলের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে গড়ে ওঠে আন্দোলন।
২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি এখানকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী আবাসনের দাবিতে রাজপথ প্রকম্পিত করেছিল। সেই আন্দোলন থেকে প্রতিবছর ২৭ জানুয়ারি জবির প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলো ‘হল আন্দোলন দিবস’ পালনের ঘোষণা দেয়। কিন্তু আন্দোলনের ফলাফল দাঁড়ায় শূন্য। পরবর্তী সময়ে হলের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন হয়েছে। এর মধ্যে জবির বড় দুটি হল আন্দোলন হয় ২০১৪ এবং ২০১৬ সালে।
২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে হল উদ্ধার আন্দোলনে নামলে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের আন্দোলনে পুলিশ হামলা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদের শরীরে ত্রিশের অধিক ছররা গুলি ঢুকেছিল। গুরুতর আহত হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখল হওয়া হলগুলো উদ্ধারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠন করা হয়েছিল হল উদ্ধার কমিটি। বেদখল হওয়া হল বা হলের জমিসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছিল। এ ছাড়া হলের জমি নিয়ে আইনগত জটিলতা সমাধানের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে সভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সেবার। কিন্তু এত বড় আন্দোলনের পরে কোনো সিদ্ধান্ত যখন কার্যকর হচ্ছে না, সেই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের আগস্টে আবারও হলের জন্য আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন শিক্ষার্থীরা।
এই হল আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নে ২০০ একর জমির ওপর নতুন করে ক্যাম্পাস নির্মাণের ঘোষণা দেন। সরকারিভাবে কেরানীগঞ্জে জায়গা পেলেও দীর্ঘ ৮ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ আটকে আছে জমি অধিগ্রহণের মধ্যেই। এখন পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়নি সীমানাপ্রাচীর, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে যে লেক খনন করা হয়েছিল, নিম্নমানের কাজে ভেঙে পড়েছে এর পাড়গুলো। চুরি হয়ে গেছে হল নির্মাণে ব্যবহৃত রডও। সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় হলো, তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান হলের জন্য বরাদ্দ পাওয়া ২ হাজার কোটি টাকার চেক প্রিন্ট করে ক্যানটিনে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। সেই ঝুলে থাকা চেকের মতোই ঝুলে আছে নতুন ক্যাম্পাসের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ! কপালপোড়া বিশ্ববিদ্যালয় যাকে বলে!
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নেমে পড়েন। এবার শিক্ষার্থীদের প্রথম ও প্রধান দাবি হলো সেনাবাহিনীর কাছে অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া। আন্দোলনের একপর্যায়ে গত বছরের ১১ নভেম্বর শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ আন্দোলনের স্লোগান ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’ সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ নিয়ে ১২ নভেম্বর সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছিলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট সহজে সমাধানযোগ্য। তাই আন্দোলন করার প্রয়োজন নেই। একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। কেরানীগঞ্জে পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস করার প্রকল্প পাস হয়েছে। মেগা প্রজেক্ট হবে এটি।’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁরা।
কিন্তু ‘যত আন্দোলন, তত কাঁচকলা’ তত্ত্বে ঝুলে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের ভাগ্য। অতঃপর দুই মাস শেষে আবারও আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা। আমরণ অনশনে ১২ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে হাতে স্যালাইন নিয়েই সচিবালয়ের সামনে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মধ্যে আবারও করা হয়েছে নতুন কমিটি। উল্লেখ্য, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের আশ্বাস পেয়ে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় মন্ত্রণালয়ের সভায় প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয় যে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে হস্তান্তর করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিষয়টি শিক্ষার্থীদের নিশ্চিত করলেও শিক্ষার্থীরা তা মানতে নারাজ। শিক্ষার্থীরা চান লিখিত প্রমাণ। লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ‘শাটডাউনের’ আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
তবে এবারও কি আটকে যাবে শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের ভাগ্য, নাকি খুলবে এ জট?
প্রাক্তন শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সংগঠক, কোটা সংস্কার আন্দোলন
সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়া ও অস্থায়ী আবাসনসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের ফলে কর্তৃপক্ষ আন্দোলনের দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ দাবি মেনে নেওয়ার পরও প্রত্যাশিত দাবির বাস্তবায়ন না দেখে আবারও আন্দোলনে নামার কথা ভাবছেন শিক্ষার্থীরা।
ইতিহাস মতে, ব্রাহ্ম স্কুল থেকে এ প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। এরপর কলেজে উন্নীত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার দাবি নিয়ে দীর্ঘ সময় আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর জাতীয় সংসদে আইন পাসের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার পরে অবকাঠামোসহ নানা সমস্যা নিয়ে চলতে থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। হল, পরিবহনব্যবস্থা, মেডিকেল সেন্টার এবং ক্যানটিনের খাবারের মান নিয়ে আন্দোলন করতে হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। এমনকি ক্যানটিনে চেয়ার-টেবিলের সুব্যবস্থা করার জন্যও করতে হয়েছে আন্দোলন। মনে আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাশুক নামে এক শিক্ষার্থী ভার্সিটি আসার পথে বাস থেকে পড়ে মারা যান। পরে আন্দোলন করলে প্রশাসন নতুন বাস কেনে। শিক্ষার্থীরা খুশি হন। কিন্তু পরে দেখা যায়, এই বাস ব্যবহার করছেন শিক্ষকেরা! বিভিন্ন সময় দাবিদাওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করতে গেলেও ফকির, মিসকিনের মতো অপমানজনক শব্দের কটাক্ষ শুনতে হয় শিক্ষার্থীদের ৷ কলেজ থাকা অবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিল অনেকগুলো হল। কিন্তু কালের পরিক্রমায় হলগুলো বেদখল হয়ে যায়। হলের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে গড়ে ওঠে আন্দোলন।
২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি এখানকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী আবাসনের দাবিতে রাজপথ প্রকম্পিত করেছিল। সেই আন্দোলন থেকে প্রতিবছর ২৭ জানুয়ারি জবির প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলো ‘হল আন্দোলন দিবস’ পালনের ঘোষণা দেয়। কিন্তু আন্দোলনের ফলাফল দাঁড়ায় শূন্য। পরবর্তী সময়ে হলের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন হয়েছে। এর মধ্যে জবির বড় দুটি হল আন্দোলন হয় ২০১৪ এবং ২০১৬ সালে।
২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে হল উদ্ধার আন্দোলনে নামলে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের আন্দোলনে পুলিশ হামলা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদের শরীরে ত্রিশের অধিক ছররা গুলি ঢুকেছিল। গুরুতর আহত হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখল হওয়া হলগুলো উদ্ধারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠন করা হয়েছিল হল উদ্ধার কমিটি। বেদখল হওয়া হল বা হলের জমিসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছিল। এ ছাড়া হলের জমি নিয়ে আইনগত জটিলতা সমাধানের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে সভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সেবার। কিন্তু এত বড় আন্দোলনের পরে কোনো সিদ্ধান্ত যখন কার্যকর হচ্ছে না, সেই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের আগস্টে আবারও হলের জন্য আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন শিক্ষার্থীরা।
এই হল আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নে ২০০ একর জমির ওপর নতুন করে ক্যাম্পাস নির্মাণের ঘোষণা দেন। সরকারিভাবে কেরানীগঞ্জে জায়গা পেলেও দীর্ঘ ৮ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ আটকে আছে জমি অধিগ্রহণের মধ্যেই। এখন পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়নি সীমানাপ্রাচীর, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে যে লেক খনন করা হয়েছিল, নিম্নমানের কাজে ভেঙে পড়েছে এর পাড়গুলো। চুরি হয়ে গেছে হল নির্মাণে ব্যবহৃত রডও। সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় হলো, তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান হলের জন্য বরাদ্দ পাওয়া ২ হাজার কোটি টাকার চেক প্রিন্ট করে ক্যানটিনে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। সেই ঝুলে থাকা চেকের মতোই ঝুলে আছে নতুন ক্যাম্পাসের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ! কপালপোড়া বিশ্ববিদ্যালয় যাকে বলে!
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নেমে পড়েন। এবার শিক্ষার্থীদের প্রথম ও প্রধান দাবি হলো সেনাবাহিনীর কাছে অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া। আন্দোলনের একপর্যায়ে গত বছরের ১১ নভেম্বর শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ আন্দোলনের স্লোগান ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’ সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ নিয়ে ১২ নভেম্বর সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছিলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট সহজে সমাধানযোগ্য। তাই আন্দোলন করার প্রয়োজন নেই। একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। কেরানীগঞ্জে পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস করার প্রকল্প পাস হয়েছে। মেগা প্রজেক্ট হবে এটি।’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁরা।
কিন্তু ‘যত আন্দোলন, তত কাঁচকলা’ তত্ত্বে ঝুলে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের ভাগ্য। অতঃপর দুই মাস শেষে আবারও আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা। আমরণ অনশনে ১২ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে হাতে স্যালাইন নিয়েই সচিবালয়ের সামনে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মধ্যে আবারও করা হয়েছে নতুন কমিটি। উল্লেখ্য, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের আশ্বাস পেয়ে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় মন্ত্রণালয়ের সভায় প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয় যে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে হস্তান্তর করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিষয়টি শিক্ষার্থীদের নিশ্চিত করলেও শিক্ষার্থীরা তা মানতে নারাজ। শিক্ষার্থীরা চান লিখিত প্রমাণ। লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ‘শাটডাউনের’ আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
তবে এবারও কি আটকে যাবে শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের ভাগ্য, নাকি খুলবে এ জট?
প্রাক্তন শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সংগঠক, কোটা সংস্কার আন্দোলন
২০ বছর আগে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে অটিজম শব্দটির অস্তিত্ব প্রায় খুঁজে পাওয়া যেত না। অটিজম বিষয়ে মানুষের ধারণা সীমিত ছিল। ঠিক সেই সময়ে অটিজম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন পরিচালিত বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান ‘কানন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৪ সালের ৪ এপ্রিল, বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটির একটি চারতলা ভাড়া বাড়িতে...
৩ ঘণ্টা আগেমাঝে মাঝে মনে হয় দেশটা বুঝি ট্রায়াল অ্যান্ড এররের ভিত্তিতে চলছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, এমনকি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়েও নানা ধরনের পরীক্ষামূলক তত্ত্ব দেখতে পাচ্ছি। প্রথমে নতুন কিছু একটা বলা হয় বা চালু করা হয়। তারপর দেখা হয়—কতটা বিতর্ক হয় সেটা নিয়ে।
৯ ঘণ্টা আগেআকৃষ্ট করেছিল, সে বাণী যেন কথার কথায় পরিণত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। ভালো একটি ভবিষ্যতের আশা ক্রমেই ধূসরতার দিকে যাচ্ছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীরা রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোড ও নিউমার্কেট এলাকার মধ্যে থাকা ৫৭টি মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এই মার্কেটগুলো থেকে প্রতি মাসে সেবা খাত...
৯ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ যখন সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী তখন যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশে তার ভূমিকা কার্যত পরিত্যাগ করে সে ক্ষেত্রে ঢাকা চীনের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হয়ে উঠতে পারে এবং তাহলে বেইজিং নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশকে আরও বেশি অর্থায়ন ও ঋণ দেবে।
২০ ঘণ্টা আগে