বিএনপি যেকোনো কারণে নির্বাচন পেছানোকেই ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। তাদের অবস্থান হলো সংবিধান-সংক্রান্ত যেকোনো সংস্কার হতে হবে নির্বাচিত সংসদে। কাজেই সেই সংস্কার প্রস্তাবগুলো আগামী সংসদের জন্য থাকবে। অন্য আইনগত বিষয়াদি যেগুলো আছে সেগুলো রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
অরুণ কর্মকার
দেশজুড়ে একটি নির্বাচনী আবহ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ক্রমান্বয়ে স্পষ্ট হচ্ছে। বলা বাহুল্য, রাজনৈতিক দলগুলোই এই আবহ সৃষ্টি করছে। নির্বাচন কমিশনও (ইসি) তাদের যাবতীয় প্রস্তুতি পর্যায়ক্রমে চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ইসি নির্বাচনের একটি পথনকশাও (রোডম্যাপ) ঘোষণা করেছে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণায়ও কোনো অস্পষ্টতা নেই। তারপরও এই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কাটছে না। সেই শঙ্কা আবার প্রকাশ করছে রাজনৈতিক দলগুলোই, যারা দেশে নির্বাচনী আবহ সৃষ্টির প্রধান কারিগর। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে কেন এই শঙ্কা! তাহলে কি আমরা সাধারণ মানুষ সাদা চোখে যা দেখছি, অন্তরালে তার থেকে ভিন্ন রকম কিছু চলছে! অস্বাভাবিক নয়, চলতে পারে। কারণ, রাজনীতির খেলাধুলা খুব জটিল বিষয়।
প্রশ্নটা উঠছে কারণ, এই সেদিনও (২৭ আগস্ট বুধবার) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন বানচাল করার জন্যই নিত্যনতুন দাবি তোলা হচ্ছে। এর আগেও অনেক দলের অনেক নেতা নির্বাচনের বিষয়ে সন্দেহ-সংশয় প্রকাশ করে বক্তব্য রেখেছেন। তাঁদের এই সব সন্দেহ-সংশয়ের পেছনে সরকারের অভ্যন্তরীণ কোনো কর্মকাণ্ডের ভূমিকা আছে কি না, আমরা জানি না। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্ট্রাইকিং ফোর্স ছাত্রদের গড়া রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যের যে ভূমিকা আছে, তা স্পষ্ট। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী দলীয় এক সমাবেশে স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও ওই সময় নির্বাচন হবে না। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী এবং আরও কোনো কোনো ইসলামি দলের অবস্থানেরও ভূমিকা থাকতে পারে।
এনসিপিই-বা কেন এমন কথা বলছে! বলছে কারণ তাদের সুনির্দিষ্ট কিছু দাবি আছে, যেগুলোর বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচন হোক, সেটা তারা চায় না। একইভাবে জামায়াতেরও সুনির্দিষ্ট কিছু দাবি আছে। তারাও চায় সরকার সেই দাবিগুলোর ফয়সালা করেই নির্বাচনের আয়োজন করুক। বিএনপিরও একটা স্বতন্ত্র অবস্থান রয়েছে। সমস্যাটা এখন ঠেকেছে এখানে এসে। এই ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানের কারণেই নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। তাহলে কি তাদের নিজ নিজ দলের অবস্থান অনুযায়ী দাবিগুলোর মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না। যদি হয়, তারা কি সে নির্বাচনে অংশ নেবে না! এই বিষয়গুলোর প্রতি একটু আলোকপাত করা দরকার।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই যে অবস্থানগত বিরোধ বা দূরত্ব, তা সৃষ্টি হয়েছে মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে। এক. সংবিধান সংস্কার। দুই. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি এবং তিন. সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতির নির্বাচন। এই বিষয়গুলোতে এনসিপি এবং জামায়াতের অবস্থান কাছাকাছি। মোটাদাগে এনসিপির চাওয়া হলো জুলাই সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি, সনদটির বাস্তবায়ন এবং ওই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন। প্রথমে গণপরিষদ, পরে সংসদ নির্বাচন। অথবা একটির সঙ্গে দুটি নির্বাচন। নির্বাচিত গণপরিষদ সংবিধান সংস্কার বা নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে। এনসিপির এসব দাবির সঙ্গে জামায়াতের কোনো ভিন্নমত আছে বলে শোনা যায়নি। এর সঙ্গে তাদের আরেকটি দাবি হলো, সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন। যদিও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনের বিষয়টি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে তেমন আলোচিতই হয়নি। তাদের অবস্থান হলো—এই কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন পিছিয়েও যায় তাতে তাদের আপত্তি নেই।
কিন্তু বিএনপির তাতে আপত্তি আছে। তারা যেকোনো কারণে নির্বাচন পেছানোকেই ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। তাদের অবস্থান হলো সংবিধানসংক্রান্ত যেকোনো সংস্কার হতে হবে নির্বাচিত সংসদে। কাজেই সেই সংস্কার প্রস্তাবগুলো আগামী সংসদের জন্য থাকবে। অন্য আইনগত বিষয়াদি যেগুলো আছে সেগুলো রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে স্থান দেওয়া কিংবা জুলাই সনদ কার্যকর করে তার ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারা ঘোর বিরোধী। আর সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি তো তারা মানেই না। সংসদের উচ্চকক্ষেও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সদস্য নিয়োগের বিষয়ে তারা আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) দিয়ে রেখেছে। জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় কিছু পরিবর্তনও বিএনপির দাবি।
এই পটভূমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামা সংশোধন ও বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরেক দফা আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে এর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে যেসব আপত্তি, পরামর্শ ও মতামত এসেছে, সনদে তার প্রতিফলন নিশ্চিত করার জন্যই কমিশন এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জুলাই সনদের সমন্বিত খসড়া তিনটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্বে রয়েছে সনদের পটভূমি। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে সংস্কার কমিশনগুলো থেকে আসা ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব। তৃতীয় পর্বে আছে সনদ বাস্তবায়নের ৮ দফা অঙ্গীকারনামা। এই অঙ্গীকারনামার কিছু কিছু বিষয় নিয়েই বিএনপি এবং তাদের সমমনা অনেক দল আপত্তি জানিয়েছে। বিশেষ করে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর স্থান দেওয়া, জুলাই সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না—এমন বিধান রাখার প্রস্তাবকে অযৌক্তিক বলে মনে করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী মনে করে, এই বিধানগুলো রাখা প্রয়োজন।
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি কী হবে—তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা ও বিভক্তির কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ বিষয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির যে মতভিন্নতা রয়েছে, সে বিষয়ে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তারা একাধিকবার আলোচনায় বসেছে। তাতে এখন পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে সংস্কার প্রশ্নে গণভোট, লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক, রাষ্ট্রপতির প্রোক্লেমেশন জারির মতো কয়েকটি পদ্ধতি আলোচনায় এসেছে। এসব মতামত ও আলোচনার ভিত্তিতে সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কমিশন ও সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সবার কাছে গ্রহণযোগ্য বিকল্প খুঁজে বের করা।
কমিশনের ওই সূত্র বলেছে, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোরও কিছু ছাড় দেওয়া এবং নিজ নিজ অবস্থান পরিবর্তনের মানসিকতা থাকা দরকার বলে মনে করে ঐকমত্য কমিশন। যদি সেটা তারা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর কর্তৃত্ব ব্যবহার করে কোনো একটি পথ নির্ধারণ করতে পারেন, যা তিনি এর আগে কখনোই করেননি।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
দেশজুড়ে একটি নির্বাচনী আবহ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ক্রমান্বয়ে স্পষ্ট হচ্ছে। বলা বাহুল্য, রাজনৈতিক দলগুলোই এই আবহ সৃষ্টি করছে। নির্বাচন কমিশনও (ইসি) তাদের যাবতীয় প্রস্তুতি পর্যায়ক্রমে চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ইসি নির্বাচনের একটি পথনকশাও (রোডম্যাপ) ঘোষণা করেছে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণায়ও কোনো অস্পষ্টতা নেই। তারপরও এই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কাটছে না। সেই শঙ্কা আবার প্রকাশ করছে রাজনৈতিক দলগুলোই, যারা দেশে নির্বাচনী আবহ সৃষ্টির প্রধান কারিগর। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে কেন এই শঙ্কা! তাহলে কি আমরা সাধারণ মানুষ সাদা চোখে যা দেখছি, অন্তরালে তার থেকে ভিন্ন রকম কিছু চলছে! অস্বাভাবিক নয়, চলতে পারে। কারণ, রাজনীতির খেলাধুলা খুব জটিল বিষয়।
প্রশ্নটা উঠছে কারণ, এই সেদিনও (২৭ আগস্ট বুধবার) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন বানচাল করার জন্যই নিত্যনতুন দাবি তোলা হচ্ছে। এর আগেও অনেক দলের অনেক নেতা নির্বাচনের বিষয়ে সন্দেহ-সংশয় প্রকাশ করে বক্তব্য রেখেছেন। তাঁদের এই সব সন্দেহ-সংশয়ের পেছনে সরকারের অভ্যন্তরীণ কোনো কর্মকাণ্ডের ভূমিকা আছে কি না, আমরা জানি না। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্ট্রাইকিং ফোর্স ছাত্রদের গড়া রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যের যে ভূমিকা আছে, তা স্পষ্ট। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী দলীয় এক সমাবেশে স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও ওই সময় নির্বাচন হবে না। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী এবং আরও কোনো কোনো ইসলামি দলের অবস্থানেরও ভূমিকা থাকতে পারে।
এনসিপিই-বা কেন এমন কথা বলছে! বলছে কারণ তাদের সুনির্দিষ্ট কিছু দাবি আছে, যেগুলোর বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচন হোক, সেটা তারা চায় না। একইভাবে জামায়াতেরও সুনির্দিষ্ট কিছু দাবি আছে। তারাও চায় সরকার সেই দাবিগুলোর ফয়সালা করেই নির্বাচনের আয়োজন করুক। বিএনপিরও একটা স্বতন্ত্র অবস্থান রয়েছে। সমস্যাটা এখন ঠেকেছে এখানে এসে। এই ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানের কারণেই নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। তাহলে কি তাদের নিজ নিজ দলের অবস্থান অনুযায়ী দাবিগুলোর মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না। যদি হয়, তারা কি সে নির্বাচনে অংশ নেবে না! এই বিষয়গুলোর প্রতি একটু আলোকপাত করা দরকার।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই যে অবস্থানগত বিরোধ বা দূরত্ব, তা সৃষ্টি হয়েছে মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে। এক. সংবিধান সংস্কার। দুই. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি এবং তিন. সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতির নির্বাচন। এই বিষয়গুলোতে এনসিপি এবং জামায়াতের অবস্থান কাছাকাছি। মোটাদাগে এনসিপির চাওয়া হলো জুলাই সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি, সনদটির বাস্তবায়ন এবং ওই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন। প্রথমে গণপরিষদ, পরে সংসদ নির্বাচন। অথবা একটির সঙ্গে দুটি নির্বাচন। নির্বাচিত গণপরিষদ সংবিধান সংস্কার বা নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে। এনসিপির এসব দাবির সঙ্গে জামায়াতের কোনো ভিন্নমত আছে বলে শোনা যায়নি। এর সঙ্গে তাদের আরেকটি দাবি হলো, সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন। যদিও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনের বিষয়টি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে তেমন আলোচিতই হয়নি। তাদের অবস্থান হলো—এই কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন পিছিয়েও যায় তাতে তাদের আপত্তি নেই।
কিন্তু বিএনপির তাতে আপত্তি আছে। তারা যেকোনো কারণে নির্বাচন পেছানোকেই ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। তাদের অবস্থান হলো সংবিধানসংক্রান্ত যেকোনো সংস্কার হতে হবে নির্বাচিত সংসদে। কাজেই সেই সংস্কার প্রস্তাবগুলো আগামী সংসদের জন্য থাকবে। অন্য আইনগত বিষয়াদি যেগুলো আছে সেগুলো রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে স্থান দেওয়া কিংবা জুলাই সনদ কার্যকর করে তার ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারা ঘোর বিরোধী। আর সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি তো তারা মানেই না। সংসদের উচ্চকক্ষেও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সদস্য নিয়োগের বিষয়ে তারা আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) দিয়ে রেখেছে। জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় কিছু পরিবর্তনও বিএনপির দাবি।
এই পটভূমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামা সংশোধন ও বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরেক দফা আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে এর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে যেসব আপত্তি, পরামর্শ ও মতামত এসেছে, সনদে তার প্রতিফলন নিশ্চিত করার জন্যই কমিশন এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জুলাই সনদের সমন্বিত খসড়া তিনটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্বে রয়েছে সনদের পটভূমি। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে সংস্কার কমিশনগুলো থেকে আসা ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব। তৃতীয় পর্বে আছে সনদ বাস্তবায়নের ৮ দফা অঙ্গীকারনামা। এই অঙ্গীকারনামার কিছু কিছু বিষয় নিয়েই বিএনপি এবং তাদের সমমনা অনেক দল আপত্তি জানিয়েছে। বিশেষ করে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর স্থান দেওয়া, জুলাই সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না—এমন বিধান রাখার প্রস্তাবকে অযৌক্তিক বলে মনে করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী মনে করে, এই বিধানগুলো রাখা প্রয়োজন।
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি কী হবে—তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা ও বিভক্তির কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ বিষয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির যে মতভিন্নতা রয়েছে, সে বিষয়ে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তারা একাধিকবার আলোচনায় বসেছে। তাতে এখন পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে সংস্কার প্রশ্নে গণভোট, লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক, রাষ্ট্রপতির প্রোক্লেমেশন জারির মতো কয়েকটি পদ্ধতি আলোচনায় এসেছে। এসব মতামত ও আলোচনার ভিত্তিতে সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কমিশন ও সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সবার কাছে গ্রহণযোগ্য বিকল্প খুঁজে বের করা।
কমিশনের ওই সূত্র বলেছে, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোরও কিছু ছাড় দেওয়া এবং নিজ নিজ অবস্থান পরিবর্তনের মানসিকতা থাকা দরকার বলে মনে করে ঐকমত্য কমিশন। যদি সেটা তারা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর কর্তৃত্ব ব্যবহার করে কোনো একটি পথ নির্ধারণ করতে পারেন, যা তিনি এর আগে কখনোই করেননি।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
দেশের প্রকৌশল ও কারিগরি কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বিএসসি এবং ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করার কথা। যেকোনো উন্নয়ন কার্যক্রমের সুন্দর, সফল বাস্তবায়নের জন্য তা জরুরিও। যেকোনো দেশ ও জাতি একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সামনে রেখে জনবল তৈরি করে। প্রত্যাশা করে সবার মিলিত প্রয়াসে জনকল্যাণ
২ দিন আগেবিএসসি এবং ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাজের ধরন ও রুটই ভিন্ন। কাজের পরিধিও আলাদা। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চার বছরের সিলেবাসে আসলে ফিল্ডে কাজ করার জন্যই প্রস্তুত করা হয়। ফিল্ডের কাজ ইমপ্লিমেন্ট করতে এবং ফিল্ডের খুঁটিনাটি বিষয়ে তাঁদেরকে তৈরি করা হয়। সুতরাং তাঁরা ফিল্ড লেভেল বিশেষজ্ঞ, এটা অস্বীকার করার সুযোগ
২ দিন আগেআজ ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। এই মহিমান্বিত দিনে মানবজাতির ইতিহাসে এক নতুন সূর্যের উদয় হয়েছিল মক্কার মরু প্রান্তরে। মা আমিনার কোল আলোকিত করেজন্ম নিয়েছিলেন এক মহামানব—যিনি বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাঁর আগমনে অজ্ঞানতা ও বর্বরতার ঘোর আঁধার ভেদ করে সূচনা হয়েছিল
২ দিন আগেখবরটি শুনতে অসম্ভব বলে মনে হলেও, বাস্তবতা এই যে প্রযুক্তির রমরমা বিকাশের সময়ে বাংলাদেশের প্রান্তিক এক জনপদে এখনো বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির ব্যবস্থা নেই। ২ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, রাঙামাটির ভারত সীমান্তবর্তী বরকল ও জুরাছড়ি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ...
৩ দিন আগে