অরুণ কর্মকার

চারদিক থেকে যেন রাজ্যের এক অস্থিতিশীলতা আমাদের ঘিরে ধরেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কোনোভাবে স্থিতিশীল বলে গণ্য করা যায় না। তার ওপর পূর্ব সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে আছে মিয়ানমারকে ঘিরে। সেখানকার রোহিঙ্গা শরণার্থী; সীমান্তের ওপারের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় নতুন করে বাংলাদেশে তাদের অব্যাহত অনুপ্রবেশ; বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবিত মানবিক করিডর বা হিউম্যান চ্যানেল যা-ই বলা হোক না কেন—এই সবকিছু মিলে পরিস্থিতিটা আমাদের জন্য মোটেই স্বাভাবিক বলা যায় না, বরং বেশ জটিল বলেই মনে হয়। তাই দেশের সব রাজনৈতিক দল বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে।
এগুলোর সঙ্গে সর্বশেষ অনুষঙ্গ হিসেবে যুক্ত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি। এমনিতে তাদের মধ্যকার ওই পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো যোগসূত্র নেই। কিন্তু ওই দুটি দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের সম্পর্ক, সদ্ভাব কিংবা অসদ্ভাব ঐতিহাসিক। তার ওপর ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। বলতে গেলে আমাদের সীমান্তের চারপাশেই ভারতের অবস্থান। তা সত্ত্বেও সেখানকার বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতি রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশের জন্য খুব বেশি মাথাব্যথার কারণ হতো না। কিন্তু তা হয়েছে। কেননা, ভারত যে রাতে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে আক্রমণ শুরু করেছে, সেই রাতেই বাংলাদেশের কয়েকটি সীমান্ত থেকে বেশ কিছু মানুষকে পুশ ইন করার ঘটনা ঘটেছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী কুড়িগ্রামের দুটি, মেহেরপুরের একটি এবং ভূরাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচিত পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ির একটি সীমান্ত এলাকা থেকে ৮ মে সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ১২০ জন মানুষকে পুশ ইন করা হয়েছে। পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে মিসাইল হামলার সঙ্গে একপ্রকার সমন্বয় করে ভারত কেন এই পুশ ইন করল, তা অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন বটে।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছেন, এ ধরনের পুশ ইন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পুশ ইনের ব্যাপারে তাঁরা দিল্লিকে জানিয়েছেন। যাঁদের পুশ ইন করা হয়েছে, তাঁরা যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন, তাহলে তো তাঁদের আইনি প্রক্রিয়াতেই ফেরত পাঠানো যায়। তবে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন দেখেন না। প্রায় একই কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিরল উপজেলার মোকলেছপুর ইউনিয়নের ঢেলপীর ব্লকে বোরো ব্রি ধান-৮৮ কর্তন উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ও নিরাপদ রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় ভীতির কোনো কারণ নেই।’
সীমান্ত নিরাপদ থাকলেও ভারতের তৎপরতা নিয়ে বাংলাদেশে যে শঙ্কা রয়েছে, সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। জুলাই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহর একটি ফেসবুক পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘শুধু এই মাসেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইকমিশন বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি ও সামরিক পর্যায়ে অন্তত তেইশটা মিটিং করেছে। লিখে রাখেন আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের সুযোগ করে দিতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচারের নামে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। একটা পর্যায় গিয়ে বলা হবে একসময়ের জন সমর্থিত রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা আমাদের কাজ নয়। যার এজেন্ডায় আওয়ামী লীগের বিচার নাই, যার এজেন্ডায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নাই, তার সঙ্গে আমরা নাই।’ হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পোস্টের এই বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় যে গভীর অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে, তার স্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়।
একইভাবে জুলাই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে খ্যাত অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের একটি ফেসবুক পোস্টেও দেশের রাজনীতির অনেক গভীরের হালচাল ফুটে উঠেছে। ‘কৈফিয়ত কিংবা বাস্তবতা’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘ক্ষমতার ভরকেন্দ্র অনেকগুলো। ফলে কাজের দায় সরকারের, কিন্তু কাজ করে ক্ষমতার অন্যান্য ভরকেন্দ্র। জোড়াতালি দিয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তর সম্ভব না, সম্ভব নয় নূতন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।’
মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো ডিসেম্বরের পর সহযোগী ভূমিকায় নেই। কিন্তু ঠিকই প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশে তারা স্টেক নিয়ে বসে আছেন। স্টাবলিশমেন্ট দ্বিদলীয় বৃত্তে ফিরতে এবং ছাত্রদের মাইনাস করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রায় তিন ডজন নিয়োগপ্রাপ্তের মধ্যে ছাত্র মাত্র দুজন। ছাত্র প্রতিনিধিদেরও স্টাবলিশমেন্ট রাষ্ট্রপতি অপসারণের ঘটনার পর থেকে কোণঠাসা করে রেখেছে। আমরা দুজন সর্বোচ্চ ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট করতে পারছি, কিন্তু প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে হলে সরকারে সুষম ছাত্র প্রতিনিধিত্ব লাগবে। ছাত্রদের কয়েকটি দল হয়ে যাওয়ায় তারা এখন বিভক্ত, তদুপরি অন্য রাজনৈতিক দলের মতোই তারা ট্রিটেড হচ্ছেন। এ জন্য নাগরিক কমিটিই ছিল দীর্ঘ মেয়াদে অভ্যুত্থানের ফোর্স হিসেবে টেকসই। যাই হোক, এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্ম দেশব্যাপী ছাত্রদের গুছিয়ে উঠতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতা বিভক্ত ও দ্বিধান্বিত।’
মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র কম্প্রোমাইজড। মিডিয়া ও ব্যবসায়ে লীগের আধিপত্য কমেনি। লীগের রাজনৈতিক অর্থনীতিতে হাত দেওয়া যায়নি। পুরোনো দ্বিদলীয় বন্দোবস্ত টিকে গেছে। বিচার বিভাগ এখনো দ্বিদলীয় বৃত্তে বন্দী। বাম-ডানের কালচারাল ক্যাচাল জুলাইকে দুর্বল করেছে এবং শাহবাগ-শাপলাকে চিরন্তন করে তুলেছে। ডানপন্থীরা ভুল রাজনীতি করেছেন এবং নূতন বাস্তবতায় আবেগের বশে প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকা রেখেছেন। বামপন্থীরা প্রথম থেকেই সরকারের প্রতি স্কেপ্টিক্যাল এবং অভ্যুত্থানের পক্ষে জোরদার ভূমিকা রাখতে অসফল। সবচেয়ে ডেডিকেটেড ছাত্রকর্মীরা ক্রেডিট, দলবাজি আর কোরামবাজির খপ্পরে পড়েছেন। আর্থিক অসচ্ছতার অভিযোগ হাতে গোনা কয়েকজনের বিরুদ্ধে, কিন্তু ডিমোরালাইজড হয়েছে সমগ্র ছাত্র-জনতা। ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের পক্ষের প্রতিষ্ঠান ও নূতন সিভিল সোসাইটি গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন। সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, রাজনৈতিক অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক অ্যালায়েন্সের ক্ষেত্রে ছাত্র-জনতার কোনো হিস্যা নেই।’
মাহফুজ লিখেছেন, ‘শহীদ-আহতদের ক্ষেত্রে এবং বিচারের প্রশ্নে সরকারসহ সব অংশীজন অসফল। অভ্যুত্থান শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে বিস্তৃত হয়নি। স্টাবলিশমেন্ট ও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থবাদী চিন্তা ও কর্মের সাথে সাথে ছাত্রদের অনভিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার অভাব এ জন্য দায়ী। সর্বোপরি ছাত্রদের মাইনাস করে (ছাত্রদের ব্যর্থতা অনস্বীকার্য বটে) দ্বিদলীয় বন্দোবস্তে ফেরার জন্য স্টাবলিশমেন্ট অপেক্ষমাণ। ছাত্রদের পরিপূর্ণ অসহযোগিতার মুখে ইতিমধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সমাধান? রাষ্ট্র ও স্টাবলিশমেন্টে ছাত্রদের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করা এবং ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তার দালালদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আঘাত করা। এগুলো করার পূর্বশর্ত হলো, ছাত্রদের মধ্যে সততা, আদর্শ, নিষ্ঠা ও ঐক্য ফিরিয়ে আনা। পুরোনো বন্দোবস্তের সৈনিকদের অকার্যকর করে তোলা।’
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মাহফুজ আলমের এই ভাষ্য দেশের রাজনীতির গভীরে বিদ্যমান অস্থিতিশীলতারই প্রকাশ। তাঁর সমাধানসূত্র কার্যকর না হলে বাংলাদেশের ইতিহাসে যতগুলো অভ্যুত্থান হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে অসফল অভ্যুত্থান হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে জুলাই অভ্যুত্থান।
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও স্থিতিশীল নয়। অতি সম্প্রতি দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ বিষয়ে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, জ্বালানির মূল্যনীতি; আমেরিকার আরোপিত নতুন শুল্কনীতি ও তার প্রভাব; তৃণমূল পর্যায়ে পুরোনো অনুশীলন এবং প্রকল্প সম্পাদন ও বাস্তবায়নের গতিকে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরিতে চ্যালেঞ্জের। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এই চ্যালেঞ্জগুলোর কথা জানা গেছে।
স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য এসব চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার সেই কাজে কতটা সফল হতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

চারদিক থেকে যেন রাজ্যের এক অস্থিতিশীলতা আমাদের ঘিরে ধরেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কোনোভাবে স্থিতিশীল বলে গণ্য করা যায় না। তার ওপর পূর্ব সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে আছে মিয়ানমারকে ঘিরে। সেখানকার রোহিঙ্গা শরণার্থী; সীমান্তের ওপারের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় নতুন করে বাংলাদেশে তাদের অব্যাহত অনুপ্রবেশ; বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবিত মানবিক করিডর বা হিউম্যান চ্যানেল যা-ই বলা হোক না কেন—এই সবকিছু মিলে পরিস্থিতিটা আমাদের জন্য মোটেই স্বাভাবিক বলা যায় না, বরং বেশ জটিল বলেই মনে হয়। তাই দেশের সব রাজনৈতিক দল বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে।
এগুলোর সঙ্গে সর্বশেষ অনুষঙ্গ হিসেবে যুক্ত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি। এমনিতে তাদের মধ্যকার ওই পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো যোগসূত্র নেই। কিন্তু ওই দুটি দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের সম্পর্ক, সদ্ভাব কিংবা অসদ্ভাব ঐতিহাসিক। তার ওপর ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। বলতে গেলে আমাদের সীমান্তের চারপাশেই ভারতের অবস্থান। তা সত্ত্বেও সেখানকার বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতি রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশের জন্য খুব বেশি মাথাব্যথার কারণ হতো না। কিন্তু তা হয়েছে। কেননা, ভারত যে রাতে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে আক্রমণ শুরু করেছে, সেই রাতেই বাংলাদেশের কয়েকটি সীমান্ত থেকে বেশ কিছু মানুষকে পুশ ইন করার ঘটনা ঘটেছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী কুড়িগ্রামের দুটি, মেহেরপুরের একটি এবং ভূরাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচিত পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ির একটি সীমান্ত এলাকা থেকে ৮ মে সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ১২০ জন মানুষকে পুশ ইন করা হয়েছে। পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে মিসাইল হামলার সঙ্গে একপ্রকার সমন্বয় করে ভারত কেন এই পুশ ইন করল, তা অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন বটে।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছেন, এ ধরনের পুশ ইন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পুশ ইনের ব্যাপারে তাঁরা দিল্লিকে জানিয়েছেন। যাঁদের পুশ ইন করা হয়েছে, তাঁরা যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন, তাহলে তো তাঁদের আইনি প্রক্রিয়াতেই ফেরত পাঠানো যায়। তবে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন দেখেন না। প্রায় একই কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিরল উপজেলার মোকলেছপুর ইউনিয়নের ঢেলপীর ব্লকে বোরো ব্রি ধান-৮৮ কর্তন উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ও নিরাপদ রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় ভীতির কোনো কারণ নেই।’
সীমান্ত নিরাপদ থাকলেও ভারতের তৎপরতা নিয়ে বাংলাদেশে যে শঙ্কা রয়েছে, সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। জুলাই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহর একটি ফেসবুক পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘শুধু এই মাসেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইকমিশন বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি ও সামরিক পর্যায়ে অন্তত তেইশটা মিটিং করেছে। লিখে রাখেন আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের সুযোগ করে দিতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচারের নামে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। একটা পর্যায় গিয়ে বলা হবে একসময়ের জন সমর্থিত রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা আমাদের কাজ নয়। যার এজেন্ডায় আওয়ামী লীগের বিচার নাই, যার এজেন্ডায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নাই, তার সঙ্গে আমরা নাই।’ হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পোস্টের এই বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় যে গভীর অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে, তার স্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়।
একইভাবে জুলাই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে খ্যাত অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের একটি ফেসবুক পোস্টেও দেশের রাজনীতির অনেক গভীরের হালচাল ফুটে উঠেছে। ‘কৈফিয়ত কিংবা বাস্তবতা’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘ক্ষমতার ভরকেন্দ্র অনেকগুলো। ফলে কাজের দায় সরকারের, কিন্তু কাজ করে ক্ষমতার অন্যান্য ভরকেন্দ্র। জোড়াতালি দিয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তর সম্ভব না, সম্ভব নয় নূতন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।’
মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো ডিসেম্বরের পর সহযোগী ভূমিকায় নেই। কিন্তু ঠিকই প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশে তারা স্টেক নিয়ে বসে আছেন। স্টাবলিশমেন্ট দ্বিদলীয় বৃত্তে ফিরতে এবং ছাত্রদের মাইনাস করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রায় তিন ডজন নিয়োগপ্রাপ্তের মধ্যে ছাত্র মাত্র দুজন। ছাত্র প্রতিনিধিদেরও স্টাবলিশমেন্ট রাষ্ট্রপতি অপসারণের ঘটনার পর থেকে কোণঠাসা করে রেখেছে। আমরা দুজন সর্বোচ্চ ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট করতে পারছি, কিন্তু প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে হলে সরকারে সুষম ছাত্র প্রতিনিধিত্ব লাগবে। ছাত্রদের কয়েকটি দল হয়ে যাওয়ায় তারা এখন বিভক্ত, তদুপরি অন্য রাজনৈতিক দলের মতোই তারা ট্রিটেড হচ্ছেন। এ জন্য নাগরিক কমিটিই ছিল দীর্ঘ মেয়াদে অভ্যুত্থানের ফোর্স হিসেবে টেকসই। যাই হোক, এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্ম দেশব্যাপী ছাত্রদের গুছিয়ে উঠতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতা বিভক্ত ও দ্বিধান্বিত।’
মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র কম্প্রোমাইজড। মিডিয়া ও ব্যবসায়ে লীগের আধিপত্য কমেনি। লীগের রাজনৈতিক অর্থনীতিতে হাত দেওয়া যায়নি। পুরোনো দ্বিদলীয় বন্দোবস্ত টিকে গেছে। বিচার বিভাগ এখনো দ্বিদলীয় বৃত্তে বন্দী। বাম-ডানের কালচারাল ক্যাচাল জুলাইকে দুর্বল করেছে এবং শাহবাগ-শাপলাকে চিরন্তন করে তুলেছে। ডানপন্থীরা ভুল রাজনীতি করেছেন এবং নূতন বাস্তবতায় আবেগের বশে প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকা রেখেছেন। বামপন্থীরা প্রথম থেকেই সরকারের প্রতি স্কেপ্টিক্যাল এবং অভ্যুত্থানের পক্ষে জোরদার ভূমিকা রাখতে অসফল। সবচেয়ে ডেডিকেটেড ছাত্রকর্মীরা ক্রেডিট, দলবাজি আর কোরামবাজির খপ্পরে পড়েছেন। আর্থিক অসচ্ছতার অভিযোগ হাতে গোনা কয়েকজনের বিরুদ্ধে, কিন্তু ডিমোরালাইজড হয়েছে সমগ্র ছাত্র-জনতা। ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের পক্ষের প্রতিষ্ঠান ও নূতন সিভিল সোসাইটি গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন। সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, রাজনৈতিক অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক অ্যালায়েন্সের ক্ষেত্রে ছাত্র-জনতার কোনো হিস্যা নেই।’
মাহফুজ লিখেছেন, ‘শহীদ-আহতদের ক্ষেত্রে এবং বিচারের প্রশ্নে সরকারসহ সব অংশীজন অসফল। অভ্যুত্থান শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে বিস্তৃত হয়নি। স্টাবলিশমেন্ট ও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থবাদী চিন্তা ও কর্মের সাথে সাথে ছাত্রদের অনভিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার অভাব এ জন্য দায়ী। সর্বোপরি ছাত্রদের মাইনাস করে (ছাত্রদের ব্যর্থতা অনস্বীকার্য বটে) দ্বিদলীয় বন্দোবস্তে ফেরার জন্য স্টাবলিশমেন্ট অপেক্ষমাণ। ছাত্রদের পরিপূর্ণ অসহযোগিতার মুখে ইতিমধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সমাধান? রাষ্ট্র ও স্টাবলিশমেন্টে ছাত্রদের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করা এবং ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তার দালালদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আঘাত করা। এগুলো করার পূর্বশর্ত হলো, ছাত্রদের মধ্যে সততা, আদর্শ, নিষ্ঠা ও ঐক্য ফিরিয়ে আনা। পুরোনো বন্দোবস্তের সৈনিকদের অকার্যকর করে তোলা।’
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মাহফুজ আলমের এই ভাষ্য দেশের রাজনীতির গভীরে বিদ্যমান অস্থিতিশীলতারই প্রকাশ। তাঁর সমাধানসূত্র কার্যকর না হলে বাংলাদেশের ইতিহাসে যতগুলো অভ্যুত্থান হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে অসফল অভ্যুত্থান হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে জুলাই অভ্যুত্থান।
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও স্থিতিশীল নয়। অতি সম্প্রতি দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ বিষয়ে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, জ্বালানির মূল্যনীতি; আমেরিকার আরোপিত নতুন শুল্কনীতি ও তার প্রভাব; তৃণমূল পর্যায়ে পুরোনো অনুশীলন এবং প্রকল্প সম্পাদন ও বাস্তবায়নের গতিকে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরিতে চ্যালেঞ্জের। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এই চ্যালেঞ্জগুলোর কথা জানা গেছে।
স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য এসব চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার সেই কাজে কতটা সফল হতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

প্রায়ই ‘সংস্কৃতি’ শব্দ একটি সীমিত অর্থে ব্যবহৃত হয়। মনে করা হয় যে শিল্প-সাহিত্য-সংগীতই সংস্কৃতির সমার্থক। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে সংস্কৃতি ধারণাটি পুরো জীবনধারা ও জীবনবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, চিন্তা-চেতনা এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত। সংস্কৃতির মতো ‘গণতন্ত্র’ ধারণাকেও সীমাবদ্ধ একটি প্রেক্ষাপট থেকে দেখতে আমর
৮ ঘণ্টা আগে
ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে পাঁচ ঘণ্টা করা হবে—সম্প্রতি এমন এক ঘোষণা এসেছে। কথাটা প্রথমে শুনলে অনেকের কাছে হয়তো ভালোই লাগবে। কিন্তু একটু গভীরে তাকালে বোঝা যায়, এই কথার আড়ালে লুকিয়ে আছে বিপজ্জনক এক চিন্তা—নারীকে আবার ঘরে ফেরানোর, তাঁকে কর্মক্ষেত্র থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দেওয়ার এক
৮ ঘণ্টা আগে
একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি হলো বিদেশি বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে যেকোনো দেশ রপ্তানির পরিমাণ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
৮ ঘণ্টা আগে
‘ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়’ প্রবাদটির যথাযথ উদাহরণ দিয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অবশ্য এক হয়ে কাউকে পাটকেল মারেননি, বরং একে অপরকে দোষারোপ করে পাটকেল ছুড়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগেবৃহত্তর সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তখনই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, যদি অন্য জাতি, সম্প্রদায়, ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল হই, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তা নিয়ে তাদের গ্রহণ এবং কোনো রকমের মানসিক কূপমণ্ডূকতার শিকার না হই।
সেলিম জাহান

প্রায়ই ‘সংস্কৃতি’ শব্দ একটি সীমিত অর্থে ব্যবহৃত হয়। মনে করা হয় যে শিল্প-সাহিত্য-সংগীতই সংস্কৃতির সমার্থক। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে সংস্কৃতি ধারণাটি পুরো জীবনধারা ও জীবনবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, চিন্তা-চেতনা এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত। সংস্কৃতির মতো ‘গণতন্ত্র’ ধারণাকেও সীমাবদ্ধ একটি প্রেক্ষাপট থেকে দেখতে আমরা অভ্যস্ত। মনে করা হয়, এ ধারণা রাষ্ট্রবিজ্ঞান-সম্পৃক্ত। একটি দেশে বহু দলবিশিষ্ট সাধারণ নির্বাচনসহ একটি বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলেই তাকে অনেক সময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলে অভিহিত করা হয়।
একাধিক রাজনৈতিক দল, বেসামরিক সরকার, মুক্ত নির্বাচন, একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার আবশ্যকীয় শর্ত নিঃসন্দেহে, কিন্তু পর্যাপ্ত শর্ত নয়। একই রকমভাবে সর্বজনীন মানবাধিকারও গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত, কিন্তু পর্যাপ্ত শর্ত নয়। আসলে গণতন্ত্র শুধু সর্বজনীন মানবাধিকার, রাষ্ট্রব্যবস্থা কিংবা রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এর প্রকৃত সংজ্ঞা আরও ব্যাপক।
গণতন্ত্রের এ-জাতীয় বৃহত্তর একটি সংজ্ঞা গ্রহণ করলে কয়েকটি বিষয় খুব স্পষ্ট হয়ে পড়ে। প্রথমত, গণতন্ত্র বিষয়টি শুধু সীমাবদ্ধ কিছু রাষ্ট্রবিজ্ঞানসম্মত কাঠামো কিংবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আবদ্ধ নয়, এটি একটি মূল্যবোধ বা সংস্কৃতির অঙ্গ। দ্বিতীয়ত, পুরো বিষয়টি স্থবির কোনো চেতনা নয়, বরং একটি গতিময় প্রক্রিয়া। তৃতীয়ত, গণতন্ত্রের অভীষ্ট লক্ষ্য পুরোপুরিভাবে কখনোই অর্জনীয় নয়; বরং সে লক্ষ্যের নিকটতর হওয়াটাই গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথযাত্রা। চতুর্থত, গণতন্ত্রে সন্তুষ্টির অবকাশ নেই, আছে সংগ্রামের দীর্ঘ পথ। পঞ্চমত, শুধু রাজনৈতিক গণতন্ত্রই নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক গণতন্ত্র, সাংস্কৃতিক গণতন্ত্রের লড়াইও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের অংশ।
যখন গণতন্ত্রকে বৃহত্তর আঙ্গিকের গতিময় একটি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়, তখনই সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে গণতন্ত্রের একটি সংস্কৃতি আছে, যা তাৎক্ষণিকভাবে রাষ্ট্রীয় কিছু নীতিমালা বা ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্জন করা যায় না। গণতন্ত্র একটি মূল্যবোধের বিষয়, যার নিরন্তর চর্চা প্রয়োজন, শুধু রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে নয়, ব্যক্তি এবং সমাজজীবনেও। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অবিরাম চর্চার মাধ্যমেই একটি জাতির গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের পটভূমি গড়ে ওঠে এবং বজায়যোগ্য রূপ গ্রহণ করে।
গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রথম পাদপীঠই হচ্ছে ব্যক্তি-মানুষ। একজন ব্যক্তি হিসেবে আমি কি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, নাকি আমার মাঝে একজন স্বৈরাচারী প্রভু বিরাজ করছে? আমি নিজের কথা বলতে যতটা উৎসাহী, অন্যের কথা শুনতে কি ততটা আগ্রহী? পরিবারের মধ্যে আমার মতামত অন্য সদস্যদের ওপরে চাপিয়ে দিতে চাই? আমার কথাই কি শেষ কথা বলে মনে করি? প্রত্যেক ব্যক্তি-মানুষের চিন্তাধারা এবং কর্মকাণ্ডের একটি বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়ন প্রয়োজন, যাতে বোঝা যায়, সেই ব্যক্তিমানুষ কি গণতান্ত্রিক নাকি স্বেচ্ছাচারী। ব্যক্তি হিসেবে যদি স্বৈরাচারী চিন্তাচেতনার অধিকারী হই, তাহলে কেমন করে আমি প্রত্যাশা করি, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সুসংরক্ষিত থাকবে? রাষ্ট্র তো ব্যক্তিনিরপেক্ষ কোনো নিরঙ্কুশ অস্তিত্ব নয়।
কর্মক্ষেত্রের দিকে তাকিয়ে বুঝতে হবে, কর্মপ্রতিষ্ঠানের নিয়মকানুন, চিন্তাধারা এবং দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ কতটা বিরাজ করে। প্রায়ই চোখে পড়ে, কর্মক্ষেত্রে অধস্তনদের আমরা দাস ভাবতেই অভ্যস্ত, আবার আমাদের ঊর্ধ্বতনদের প্রায়ই ভাবি দেবতা হিসেবে। এ দুটি দৃষ্টিভঙ্গিই অগণতান্ত্রিক। কর্মক্ষেত্রে কেউ যে কাজই করুক না কেন, মানুষ হিসেবে প্রত্যেকেই সমান এবং সম্মান পাওয়ার যোগ্য। বহুক্ষেত্রে চোখে পড়ে যে কর্মক্ষেত্রের বাইরে যখন সহকর্মীদের সঙ্গে সামাজিকভাবে মেলামেশা হয়, তখনো কর্মক্ষেত্রের আমলাতান্ত্রিক বিভাজনটি বজায় থাকে। অগণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চরম পরাকাষ্ঠা।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ক্ষেত্রেও অগণতান্ত্রিক বিবেচনা এবং প্রক্রিয়া প্রবলভাবে কাজ করে। সংগঠন করার মানেই সভাপতির পদটি দখল করা নয়, কিংবা আমার স্বজনদের জন্য সুবিধা আদায় নয়। অন্যের যোগ্যতার মর্যাদা দেওয়াও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অংশ। সামাজিক বিভিন্ন অঙ্গনে ও সংগঠনে সবার অধিকার মান্য করা, অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং নিজের অহংবোধকে অগ্রাধিকার না দিয়ে যৌথভাবে কাজ করার মানসিকতা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পূর্বশর্ত।
রাজনীতির ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের আধার হওয়া উচিত রাজনৈতিক সংগঠনের। অথচ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অনুপস্থিতি সবচেয়ে প্রকট রাজনৈতিক দলগুলোতেই। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমতসহিষ্ণুতার অভাব বড় বেশি। বিপক্ষ দলগুলোর মতপ্রকাশের অধিকার, তাদের কণ্ঠস্বরের স্বাধীনতা অস্বীকার করে ক্ষমতাসীন দল। একটি দলের মধ্যেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও কর্মকাণ্ডের বড় অভাব। সব গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে বিনষ্ট করে সেখানে দলনেতাকেই চূড়ান্ত ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোতে নীতি নয়, ব্যক্তিপূজাই বেশির ভাগ কাজ নিয়ন্ত্রণ করছে। বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, গণতান্ত্রিক একটি প্রক্রিয়া মেনে চলার পরিবর্তে বিভিন্ন সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত ক্ষমতা দলপ্রধানের অগণতান্ত্রিক হওয়ার সুযোগ অত্যন্ত বেশি।
রাজনীতির ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চরম অবমূল্যায়ন তখনই ঘটেছে, যখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তরুণসমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে, ছাত্রসংগঠনগুলোর স্বাধীন সত্তার বিলুপ্তি ঘটিয়ে তাদের রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়ে পরিণত করা হলো। তরুণসমাজের চরিত্র হননে প্রয়াসী হয়ে হত্যা করা হয়েছে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির ভবিষ্যৎকেও।
অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে অর্থনৈতিক সুযোগের ক্ষেত্রে সবার সমান অধিকার, সম্পদে সমান সুযোগ এবং অর্থনৈতিক সমতার নিশ্চিতকরণ। এসবের মাধ্যমেই সামাজিক ন্যায্যতা অর্জন করা সম্ভব। এই পুরো প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রের একটি ভূমিকা আছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চরম এক বিপর্যয় ঘটে, যখন সব অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলা হয় এবং অর্থনৈতিক জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতাকে নস্যাৎ করে দেওয়া হয়।
বৃহত্তর সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তখনই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, যদি অন্য জাতি, সম্প্রদায়, ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল হই, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তা নিয়ে তাদের গ্রহণ এবং কোনো রকমের মানসিক কূপমণ্ডূকতার শিকার না হই। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর স্বকীয়তা এবং স্বাতন্ত্র্যের স্বীকৃতি এবার সবার প্রতি সৌহার্দ্য সাংস্কৃতিক গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আমরা সবাই সমান, কিন্তু সবাই এক নই।
গণতন্ত্রের পথযাত্রা খুব মসৃণ নয়। এর জন্য চাই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের নিরন্তর চর্চা—ব্যক্তিজীবনে, সমাজজীবনে এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য পর্যাপ্ত প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারে গণতন্ত্রের জন্য নিরন্তর সংগ্রাম।
লেখক: অর্থনীতিবিদ

প্রায়ই ‘সংস্কৃতি’ শব্দ একটি সীমিত অর্থে ব্যবহৃত হয়। মনে করা হয় যে শিল্প-সাহিত্য-সংগীতই সংস্কৃতির সমার্থক। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে সংস্কৃতি ধারণাটি পুরো জীবনধারা ও জীবনবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, চিন্তা-চেতনা এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত। সংস্কৃতির মতো ‘গণতন্ত্র’ ধারণাকেও সীমাবদ্ধ একটি প্রেক্ষাপট থেকে দেখতে আমরা অভ্যস্ত। মনে করা হয়, এ ধারণা রাষ্ট্রবিজ্ঞান-সম্পৃক্ত। একটি দেশে বহু দলবিশিষ্ট সাধারণ নির্বাচনসহ একটি বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলেই তাকে অনেক সময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলে অভিহিত করা হয়।
একাধিক রাজনৈতিক দল, বেসামরিক সরকার, মুক্ত নির্বাচন, একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার আবশ্যকীয় শর্ত নিঃসন্দেহে, কিন্তু পর্যাপ্ত শর্ত নয়। একই রকমভাবে সর্বজনীন মানবাধিকারও গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত, কিন্তু পর্যাপ্ত শর্ত নয়। আসলে গণতন্ত্র শুধু সর্বজনীন মানবাধিকার, রাষ্ট্রব্যবস্থা কিংবা রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এর প্রকৃত সংজ্ঞা আরও ব্যাপক।
গণতন্ত্রের এ-জাতীয় বৃহত্তর একটি সংজ্ঞা গ্রহণ করলে কয়েকটি বিষয় খুব স্পষ্ট হয়ে পড়ে। প্রথমত, গণতন্ত্র বিষয়টি শুধু সীমাবদ্ধ কিছু রাষ্ট্রবিজ্ঞানসম্মত কাঠামো কিংবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আবদ্ধ নয়, এটি একটি মূল্যবোধ বা সংস্কৃতির অঙ্গ। দ্বিতীয়ত, পুরো বিষয়টি স্থবির কোনো চেতনা নয়, বরং একটি গতিময় প্রক্রিয়া। তৃতীয়ত, গণতন্ত্রের অভীষ্ট লক্ষ্য পুরোপুরিভাবে কখনোই অর্জনীয় নয়; বরং সে লক্ষ্যের নিকটতর হওয়াটাই গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথযাত্রা। চতুর্থত, গণতন্ত্রে সন্তুষ্টির অবকাশ নেই, আছে সংগ্রামের দীর্ঘ পথ। পঞ্চমত, শুধু রাজনৈতিক গণতন্ত্রই নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক গণতন্ত্র, সাংস্কৃতিক গণতন্ত্রের লড়াইও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের অংশ।
যখন গণতন্ত্রকে বৃহত্তর আঙ্গিকের গতিময় একটি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়, তখনই সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে গণতন্ত্রের একটি সংস্কৃতি আছে, যা তাৎক্ষণিকভাবে রাষ্ট্রীয় কিছু নীতিমালা বা ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্জন করা যায় না। গণতন্ত্র একটি মূল্যবোধের বিষয়, যার নিরন্তর চর্চা প্রয়োজন, শুধু রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে নয়, ব্যক্তি এবং সমাজজীবনেও। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অবিরাম চর্চার মাধ্যমেই একটি জাতির গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের পটভূমি গড়ে ওঠে এবং বজায়যোগ্য রূপ গ্রহণ করে।
গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রথম পাদপীঠই হচ্ছে ব্যক্তি-মানুষ। একজন ব্যক্তি হিসেবে আমি কি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, নাকি আমার মাঝে একজন স্বৈরাচারী প্রভু বিরাজ করছে? আমি নিজের কথা বলতে যতটা উৎসাহী, অন্যের কথা শুনতে কি ততটা আগ্রহী? পরিবারের মধ্যে আমার মতামত অন্য সদস্যদের ওপরে চাপিয়ে দিতে চাই? আমার কথাই কি শেষ কথা বলে মনে করি? প্রত্যেক ব্যক্তি-মানুষের চিন্তাধারা এবং কর্মকাণ্ডের একটি বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়ন প্রয়োজন, যাতে বোঝা যায়, সেই ব্যক্তিমানুষ কি গণতান্ত্রিক নাকি স্বেচ্ছাচারী। ব্যক্তি হিসেবে যদি স্বৈরাচারী চিন্তাচেতনার অধিকারী হই, তাহলে কেমন করে আমি প্রত্যাশা করি, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সুসংরক্ষিত থাকবে? রাষ্ট্র তো ব্যক্তিনিরপেক্ষ কোনো নিরঙ্কুশ অস্তিত্ব নয়।
কর্মক্ষেত্রের দিকে তাকিয়ে বুঝতে হবে, কর্মপ্রতিষ্ঠানের নিয়মকানুন, চিন্তাধারা এবং দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ কতটা বিরাজ করে। প্রায়ই চোখে পড়ে, কর্মক্ষেত্রে অধস্তনদের আমরা দাস ভাবতেই অভ্যস্ত, আবার আমাদের ঊর্ধ্বতনদের প্রায়ই ভাবি দেবতা হিসেবে। এ দুটি দৃষ্টিভঙ্গিই অগণতান্ত্রিক। কর্মক্ষেত্রে কেউ যে কাজই করুক না কেন, মানুষ হিসেবে প্রত্যেকেই সমান এবং সম্মান পাওয়ার যোগ্য। বহুক্ষেত্রে চোখে পড়ে যে কর্মক্ষেত্রের বাইরে যখন সহকর্মীদের সঙ্গে সামাজিকভাবে মেলামেশা হয়, তখনো কর্মক্ষেত্রের আমলাতান্ত্রিক বিভাজনটি বজায় থাকে। অগণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চরম পরাকাষ্ঠা।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ক্ষেত্রেও অগণতান্ত্রিক বিবেচনা এবং প্রক্রিয়া প্রবলভাবে কাজ করে। সংগঠন করার মানেই সভাপতির পদটি দখল করা নয়, কিংবা আমার স্বজনদের জন্য সুবিধা আদায় নয়। অন্যের যোগ্যতার মর্যাদা দেওয়াও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অংশ। সামাজিক বিভিন্ন অঙ্গনে ও সংগঠনে সবার অধিকার মান্য করা, অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং নিজের অহংবোধকে অগ্রাধিকার না দিয়ে যৌথভাবে কাজ করার মানসিকতা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পূর্বশর্ত।
রাজনীতির ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের আধার হওয়া উচিত রাজনৈতিক সংগঠনের। অথচ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অনুপস্থিতি সবচেয়ে প্রকট রাজনৈতিক দলগুলোতেই। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমতসহিষ্ণুতার অভাব বড় বেশি। বিপক্ষ দলগুলোর মতপ্রকাশের অধিকার, তাদের কণ্ঠস্বরের স্বাধীনতা অস্বীকার করে ক্ষমতাসীন দল। একটি দলের মধ্যেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও কর্মকাণ্ডের বড় অভাব। সব গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে বিনষ্ট করে সেখানে দলনেতাকেই চূড়ান্ত ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোতে নীতি নয়, ব্যক্তিপূজাই বেশির ভাগ কাজ নিয়ন্ত্রণ করছে। বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, গণতান্ত্রিক একটি প্রক্রিয়া মেনে চলার পরিবর্তে বিভিন্ন সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত ক্ষমতা দলপ্রধানের অগণতান্ত্রিক হওয়ার সুযোগ অত্যন্ত বেশি।
রাজনীতির ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চরম অবমূল্যায়ন তখনই ঘটেছে, যখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তরুণসমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে, ছাত্রসংগঠনগুলোর স্বাধীন সত্তার বিলুপ্তি ঘটিয়ে তাদের রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়ে পরিণত করা হলো। তরুণসমাজের চরিত্র হননে প্রয়াসী হয়ে হত্যা করা হয়েছে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির ভবিষ্যৎকেও।
অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে অর্থনৈতিক সুযোগের ক্ষেত্রে সবার সমান অধিকার, সম্পদে সমান সুযোগ এবং অর্থনৈতিক সমতার নিশ্চিতকরণ। এসবের মাধ্যমেই সামাজিক ন্যায্যতা অর্জন করা সম্ভব। এই পুরো প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রের একটি ভূমিকা আছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চরম এক বিপর্যয় ঘটে, যখন সব অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলা হয় এবং অর্থনৈতিক জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতাকে নস্যাৎ করে দেওয়া হয়।
বৃহত্তর সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তখনই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, যদি অন্য জাতি, সম্প্রদায়, ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল হই, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তা নিয়ে তাদের গ্রহণ এবং কোনো রকমের মানসিক কূপমণ্ডূকতার শিকার না হই। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর স্বকীয়তা এবং স্বাতন্ত্র্যের স্বীকৃতি এবার সবার প্রতি সৌহার্দ্য সাংস্কৃতিক গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আমরা সবাই সমান, কিন্তু সবাই এক নই।
গণতন্ত্রের পথযাত্রা খুব মসৃণ নয়। এর জন্য চাই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের নিরন্তর চর্চা—ব্যক্তিজীবনে, সমাজজীবনে এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য পর্যাপ্ত প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারে গণতন্ত্রের জন্য নিরন্তর সংগ্রাম।
লেখক: অর্থনীতিবিদ

চারদিক থেকে যেন রাজ্যের এক অস্থিতিশীলতা আমাদের ঘিরে ধরেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কোনোভাবে স্থিতিশীল বলে গণ্য করা যায় না। তার ওপর পূর্ব সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে আছে মিয়ানমারকে ঘিরে।
১০ মে ২০২৫
ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে পাঁচ ঘণ্টা করা হবে—সম্প্রতি এমন এক ঘোষণা এসেছে। কথাটা প্রথমে শুনলে অনেকের কাছে হয়তো ভালোই লাগবে। কিন্তু একটু গভীরে তাকালে বোঝা যায়, এই কথার আড়ালে লুকিয়ে আছে বিপজ্জনক এক চিন্তা—নারীকে আবার ঘরে ফেরানোর, তাঁকে কর্মক্ষেত্র থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দেওয়ার এক
৮ ঘণ্টা আগে
একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি হলো বিদেশি বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে যেকোনো দেশ রপ্তানির পরিমাণ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
৮ ঘণ্টা আগে
‘ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়’ প্রবাদটির যথাযথ উদাহরণ দিয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অবশ্য এক হয়ে কাউকে পাটকেল মারেননি, বরং একে অপরকে দোষারোপ করে পাটকেল ছুড়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগেনুসরাত রুষা

ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে পাঁচ ঘণ্টা করা হবে—সম্প্রতি এমন এক ঘোষণা এসেছে। কথাটা প্রথমে শুনলে অনেকের কাছে হয়তো ভালোই লাগবে। কিন্তু একটু গভীরে তাকালে বোঝা যায়, এই কথার আড়ালে লুকিয়ে আছে বিপজ্জনক এক চিন্তা—নারীকে আবার ঘরে ফেরানোর, তাঁকে কর্মক্ষেত্র থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দেওয়ার এক নরম কৌশল।
প্রথমেই প্রশ্ন আসে, পাঁচ ঘণ্টা কাজ করলে কি নারী আট ঘণ্টার সমান বেতন পাবেন? যদি উত্তর হয় হ্যাঁ, তাহলে শ্রমবাজারের বাস্তব চিত্র কী দাঁড়াবে? বেসরকারি খাতে মালিকেরা কি সমান বেতনে অর্ধেক সময় কাজ করা কর্মীকে রাখতে চাইবেন? তাঁরা সহজেই বলবেন, ‘একই বেতনে পুরুষ আট ঘণ্টা কাজ দিচ্ছেন, তাহলে নারীকে কেন নেব?’ ফলাফল খুব সহজ—নারীদের জন্য চাকরির সুযোগ আরও কমে যাবে, কর্মজীবী নারীর সংখ্যা কমবে, অনেক ক্ষেত্রে নারীকে অদক্ষ কিংবা ‘অর্ধেক সময়ের কর্মী’ হিসেবে দেখবে প্রতিষ্ঠানগুলো। আর যদি বলা হয়, পাঁচ ঘণ্টা কাজের জন্য বেতনও কমবে, তাহলে তো নারী আর্থিকভাবে আরও সমস্যায় পড়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে নারীকে ঘরে ফেরানো, তাঁর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সংকুচিত করা, তাঁর পেশাগত অবস্থান দুর্বল করা—সবই অনিবার্য হয়ে উঠবে।
নারী অফিসে বা কারখানায় কাজ করার পর বাসার পুরো কাজও তাঁকে করতে হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সংসার, সন্তান, বৃদ্ধ বাবা-মা, স্বামীর যত্ন—সবকিছুই তাঁর সময়, পরিশ্রম ও মানসিক শক্তি দিয়ে টিকে থাকে। সেই নারীর জন্য যদি কর্মঘণ্টা কমানোর নামে তাঁর আয় কমিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন পরিবারের ওপর। দিনে পাঁচ ঘণ্টা বাইরে কাজ, বাকি সময় ঘরে বিনা পয়সায় খাটুনি—এটাই কি তবে সেই ‘নারীবান্ধব’ নীতি? নারীকে যেন ঘরে আরও তিন ঘণ্টা বেশি কাজ করানো যায়, অথচ তাঁর শ্রমের আর্থিক মূল্য না দিতে হয়—এই নীতি মূলত তেমন এক কৌশল।
নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন কখনোই কাজের সময় কমিয়ে আনা নয়; তাঁর কাজের পরিবেশকে নিরাপদ ও সহায়ক করা উচিত। কর্মক্ষেত্রে শিশুসন্তানসহ নারীরা যেন নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারেন, সে জন্য চাইল্ড কেয়ার বা ডে-কেয়ার সেন্টার থাকা জরুরি। নারীরা যেন অফিসে বা কারখানায় যাতায়াতের সময় হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে নিরাপদ পরিবহনব্যবস্থার মাধ্যমে। মাতৃত্বকালীন ছুটি, বেতনসহ ছুটি, স্বাস্থ্যবিমা—এসব ন্যূনতম অধিকার হিসেবে স্বীকৃত হওয়া দরকার। আর কর্মক্ষেত্রে নারী যেন শুধু উপস্থিত থাকেন না, সিদ্ধান্ত গ্রহণেও অংশ নেন—এই লক্ষ্যেই নেতৃত্বের জায়গায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।
কিন্তু যেসব দল নারীর স্বাধীনতা ও কর্মজীবনকে বরাবরই সন্দেহের চোখে দেখে, তারা কখনোই এই বাস্তব সমাধানগুলোতে আগ্রহ দেখায় না। তারা নারীকে ঘরে রাখতেই চায়—অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল, সামাজিকভাবে নীরব এবং রাজনৈতিকভাবে অদৃশ্য এক অবস্থায়। তাদের চোখে নারী যেন এক ‘রক্ষা’ করার বস্তু, যার স্বাধীনতা নয়, শাসন দরকার। তাই তারা মাঝে মাঝে এমন ‘সহানুভূতির’ ভাষা ব্যবহার করে, যা আসলে শাসনের অন্য রূপ। কর্মঘণ্টা কমানো তারই উদাহরণ। এর মাধ্যমে বলা হচ্ছে, নারী দুর্বল, নারী দীর্ঘ সময় কাজ করতে পারেন
না, তাঁকে ‘ছাড়’ দিতে হবে। অথচ সত্য হলো—নারী পুরুষের মতোই পরিশ্রমী, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দ্বিগুণ দায়িত্ব পালন করেন।
এই ধরনের নীতির পেছনে রাজনৈতিক অভিপ্রায়ও স্পষ্ট। নারী যদি কর্মজীবন থেকে সরে আসেন, তাহলে তাঁর আর্থিক স্বাধীনতা হারায়। অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল মানুষ রাজনৈতিকভাবে নীরব হয়ে পড়ে। যাঁরা সমাজে প্রশ্ন তোলেন, অন্যায় দেখে প্রতিবাদ করেন, তাঁরা সাধারণত নিজের শ্রমের মূল্য জানেন, নিজের উপার্জনে আত্মমর্যাদা পান। তাই নারীর কণ্ঠ রুদ্ধ করতে হলে, আগে তাঁর আয়ের পথ রুদ্ধ করতে হয়। এই নীতিই সেটি—‘সহানুভূতি’র নামে তাঁকে সমাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পথ তৈরি করে।
বাংলাদেশে গত দুই দশকে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা বেড়েছে, বিশেষত পোশাকশিল্প, ব্যাংক, মিডিয়া, প্রশাসন, এমনকি শিক্ষাক্ষেত্রেও নারীরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন। এই পরিবর্তনই অনেকের চোখে আতঙ্কের কারণ। যারা মনে করে, নারীর জায়গা ঘর, তাঁর জীবন শুধু পরিবার ও সন্তান ঘিরে, তারা এই অগ্রগতি মেনে নিতে পারে না। তাই নারীকে ঘরে ফেরানোর নতুন নতুন যুক্তি খোঁজা হয়। কখনো ধর্মের নামে, কখনো সংস্কৃতির নামে, কখনো আবার ‘নারীর সুরক্ষা’র নামে। বাস্তবে কিন্তু লক্ষ্য একটাই—নারী যেন ঘরে থাকেন, তাঁর স্বাধীনতা যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
নারী যদি কর্মক্ষেত্রে থাকেন, নিজের উপার্জন করেন, সিদ্ধান্ত নিতে শেখেন—তাহলে সমাজের ক্ষমতার ভারসাম্য বদলায়। সেটাই তাদের ভয়। তাই তারা এমন নীতি প্রস্তাব করে, যা নারীকে নরমভাবে প্রান্তে ঠেলে দেয়। কর্মঘণ্টা কমানো সেই প্রান্তিকীকরণের আরেক রূপ।
নারীর জন্য প্রকৃত নীতি হবে সেই নীতি, যা তাঁকে সমান সুযোগ দেয়, তাঁর কাজের মর্যাদা নিশ্চিত করে, তাঁর নিরাপত্তা এবং নেতৃত্বের পথ খুলে দেয়। নারীকে ‘দুর্বল’ হিসেবে নয়, ‘সমান নাগরিক’ হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিই একটি সভ্য সমাজের পরিচায়ক। আজ আমাদের দরকার সেই স্পষ্ট অবস্থান—নারীর নামে প্রতারণা নয়, প্রকৃত সমতা চাই।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে পাঁচ ঘণ্টা করা হবে—সম্প্রতি এমন এক ঘোষণা এসেছে। কথাটা প্রথমে শুনলে অনেকের কাছে হয়তো ভালোই লাগবে। কিন্তু একটু গভীরে তাকালে বোঝা যায়, এই কথার আড়ালে লুকিয়ে আছে বিপজ্জনক এক চিন্তা—নারীকে আবার ঘরে ফেরানোর, তাঁকে কর্মক্ষেত্র থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দেওয়ার এক নরম কৌশল।
প্রথমেই প্রশ্ন আসে, পাঁচ ঘণ্টা কাজ করলে কি নারী আট ঘণ্টার সমান বেতন পাবেন? যদি উত্তর হয় হ্যাঁ, তাহলে শ্রমবাজারের বাস্তব চিত্র কী দাঁড়াবে? বেসরকারি খাতে মালিকেরা কি সমান বেতনে অর্ধেক সময় কাজ করা কর্মীকে রাখতে চাইবেন? তাঁরা সহজেই বলবেন, ‘একই বেতনে পুরুষ আট ঘণ্টা কাজ দিচ্ছেন, তাহলে নারীকে কেন নেব?’ ফলাফল খুব সহজ—নারীদের জন্য চাকরির সুযোগ আরও কমে যাবে, কর্মজীবী নারীর সংখ্যা কমবে, অনেক ক্ষেত্রে নারীকে অদক্ষ কিংবা ‘অর্ধেক সময়ের কর্মী’ হিসেবে দেখবে প্রতিষ্ঠানগুলো। আর যদি বলা হয়, পাঁচ ঘণ্টা কাজের জন্য বেতনও কমবে, তাহলে তো নারী আর্থিকভাবে আরও সমস্যায় পড়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে নারীকে ঘরে ফেরানো, তাঁর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সংকুচিত করা, তাঁর পেশাগত অবস্থান দুর্বল করা—সবই অনিবার্য হয়ে উঠবে।
নারী অফিসে বা কারখানায় কাজ করার পর বাসার পুরো কাজও তাঁকে করতে হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সংসার, সন্তান, বৃদ্ধ বাবা-মা, স্বামীর যত্ন—সবকিছুই তাঁর সময়, পরিশ্রম ও মানসিক শক্তি দিয়ে টিকে থাকে। সেই নারীর জন্য যদি কর্মঘণ্টা কমানোর নামে তাঁর আয় কমিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন পরিবারের ওপর। দিনে পাঁচ ঘণ্টা বাইরে কাজ, বাকি সময় ঘরে বিনা পয়সায় খাটুনি—এটাই কি তবে সেই ‘নারীবান্ধব’ নীতি? নারীকে যেন ঘরে আরও তিন ঘণ্টা বেশি কাজ করানো যায়, অথচ তাঁর শ্রমের আর্থিক মূল্য না দিতে হয়—এই নীতি মূলত তেমন এক কৌশল।
নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন কখনোই কাজের সময় কমিয়ে আনা নয়; তাঁর কাজের পরিবেশকে নিরাপদ ও সহায়ক করা উচিত। কর্মক্ষেত্রে শিশুসন্তানসহ নারীরা যেন নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারেন, সে জন্য চাইল্ড কেয়ার বা ডে-কেয়ার সেন্টার থাকা জরুরি। নারীরা যেন অফিসে বা কারখানায় যাতায়াতের সময় হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে নিরাপদ পরিবহনব্যবস্থার মাধ্যমে। মাতৃত্বকালীন ছুটি, বেতনসহ ছুটি, স্বাস্থ্যবিমা—এসব ন্যূনতম অধিকার হিসেবে স্বীকৃত হওয়া দরকার। আর কর্মক্ষেত্রে নারী যেন শুধু উপস্থিত থাকেন না, সিদ্ধান্ত গ্রহণেও অংশ নেন—এই লক্ষ্যেই নেতৃত্বের জায়গায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।
কিন্তু যেসব দল নারীর স্বাধীনতা ও কর্মজীবনকে বরাবরই সন্দেহের চোখে দেখে, তারা কখনোই এই বাস্তব সমাধানগুলোতে আগ্রহ দেখায় না। তারা নারীকে ঘরে রাখতেই চায়—অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল, সামাজিকভাবে নীরব এবং রাজনৈতিকভাবে অদৃশ্য এক অবস্থায়। তাদের চোখে নারী যেন এক ‘রক্ষা’ করার বস্তু, যার স্বাধীনতা নয়, শাসন দরকার। তাই তারা মাঝে মাঝে এমন ‘সহানুভূতির’ ভাষা ব্যবহার করে, যা আসলে শাসনের অন্য রূপ। কর্মঘণ্টা কমানো তারই উদাহরণ। এর মাধ্যমে বলা হচ্ছে, নারী দুর্বল, নারী দীর্ঘ সময় কাজ করতে পারেন
না, তাঁকে ‘ছাড়’ দিতে হবে। অথচ সত্য হলো—নারী পুরুষের মতোই পরিশ্রমী, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দ্বিগুণ দায়িত্ব পালন করেন।
এই ধরনের নীতির পেছনে রাজনৈতিক অভিপ্রায়ও স্পষ্ট। নারী যদি কর্মজীবন থেকে সরে আসেন, তাহলে তাঁর আর্থিক স্বাধীনতা হারায়। অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল মানুষ রাজনৈতিকভাবে নীরব হয়ে পড়ে। যাঁরা সমাজে প্রশ্ন তোলেন, অন্যায় দেখে প্রতিবাদ করেন, তাঁরা সাধারণত নিজের শ্রমের মূল্য জানেন, নিজের উপার্জনে আত্মমর্যাদা পান। তাই নারীর কণ্ঠ রুদ্ধ করতে হলে, আগে তাঁর আয়ের পথ রুদ্ধ করতে হয়। এই নীতিই সেটি—‘সহানুভূতি’র নামে তাঁকে সমাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পথ তৈরি করে।
বাংলাদেশে গত দুই দশকে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা বেড়েছে, বিশেষত পোশাকশিল্প, ব্যাংক, মিডিয়া, প্রশাসন, এমনকি শিক্ষাক্ষেত্রেও নারীরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন। এই পরিবর্তনই অনেকের চোখে আতঙ্কের কারণ। যারা মনে করে, নারীর জায়গা ঘর, তাঁর জীবন শুধু পরিবার ও সন্তান ঘিরে, তারা এই অগ্রগতি মেনে নিতে পারে না। তাই নারীকে ঘরে ফেরানোর নতুন নতুন যুক্তি খোঁজা হয়। কখনো ধর্মের নামে, কখনো সংস্কৃতির নামে, কখনো আবার ‘নারীর সুরক্ষা’র নামে। বাস্তবে কিন্তু লক্ষ্য একটাই—নারী যেন ঘরে থাকেন, তাঁর স্বাধীনতা যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
নারী যদি কর্মক্ষেত্রে থাকেন, নিজের উপার্জন করেন, সিদ্ধান্ত নিতে শেখেন—তাহলে সমাজের ক্ষমতার ভারসাম্য বদলায়। সেটাই তাদের ভয়। তাই তারা এমন নীতি প্রস্তাব করে, যা নারীকে নরমভাবে প্রান্তে ঠেলে দেয়। কর্মঘণ্টা কমানো সেই প্রান্তিকীকরণের আরেক রূপ।
নারীর জন্য প্রকৃত নীতি হবে সেই নীতি, যা তাঁকে সমান সুযোগ দেয়, তাঁর কাজের মর্যাদা নিশ্চিত করে, তাঁর নিরাপত্তা এবং নেতৃত্বের পথ খুলে দেয়। নারীকে ‘দুর্বল’ হিসেবে নয়, ‘সমান নাগরিক’ হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিই একটি সভ্য সমাজের পরিচায়ক। আজ আমাদের দরকার সেই স্পষ্ট অবস্থান—নারীর নামে প্রতারণা নয়, প্রকৃত সমতা চাই।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

চারদিক থেকে যেন রাজ্যের এক অস্থিতিশীলতা আমাদের ঘিরে ধরেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কোনোভাবে স্থিতিশীল বলে গণ্য করা যায় না। তার ওপর পূর্ব সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে আছে মিয়ানমারকে ঘিরে।
১০ মে ২০২৫
প্রায়ই ‘সংস্কৃতি’ শব্দ একটি সীমিত অর্থে ব্যবহৃত হয়। মনে করা হয় যে শিল্প-সাহিত্য-সংগীতই সংস্কৃতির সমার্থক। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে সংস্কৃতি ধারণাটি পুরো জীবনধারা ও জীবনবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, চিন্তা-চেতনা এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত। সংস্কৃতির মতো ‘গণতন্ত্র’ ধারণাকেও সীমাবদ্ধ একটি প্রেক্ষাপট থেকে দেখতে আমর
৮ ঘণ্টা আগে
একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি হলো বিদেশি বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে যেকোনো দেশ রপ্তানির পরিমাণ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
৮ ঘণ্টা আগে
‘ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়’ প্রবাদটির যথাযথ উদাহরণ দিয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অবশ্য এক হয়ে কাউকে পাটকেল মারেননি, বরং একে অপরকে দোষারোপ করে পাটকেল ছুড়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগেরিয়াদ হোসেন

একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি হলো বিদেশি বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে যেকোনো দেশ রপ্তানির পরিমাণ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
অন্য দেশের কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি যখন আমাদের দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে, তখন দেশের অর্থনীতি আরও সচল হয়ে ওঠে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানে নতুন নতুন পণ্য উৎপাদিত হয়, মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। এতে অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে শুরু করে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন খাতের অবকাঠামো উন্নয়নেও বিদেশি বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর থেকে বিদেশি বিনিয়োগ নেই বললেই চলে। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েছে। তবে আশার কথা, বিদেশি বিনিয়োগে আবারও সুদিন ফিরতে শুরু করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মোট প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রবাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এর পরিমাণ যেন ক্রমাগত বাড়তে থাকে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। তার জন্য দেশের নীতিনির্ধারণী মহলসহ সংশ্লিষ্টদের আরও মনোযোগী হওয়া দরকার। বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এখনো যেসব জায়গায় প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সাধারণত বাইরে থেকে কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি সব সময় লাভজনক ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে চায়। বিদেশিরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহজ উপায়,
নিশ্চিত এবং ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ চায়। কিন্তু যখন তারা দেখে, বিনিয়োগ করলে ব্যবসায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে কিংবা সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য যথেষ্ট অনুকূল পরিবেশ নেই, তখন তারা বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তারা সেসব দেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করে।
বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে যখন বিনিয়োগের একাধিক বিকল্প জায়গা থাকে; তখন তারা পছন্দমতো দেশ নির্বাচন করে সেখানে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। যেহেতু সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আমাদের দেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত হচ্ছে, তাদের এই আস্থার জায়গাটা আমাদের যেকোনো মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে যাতে তারা নিরুৎসাহিত না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা দেখেছি, বিগত বছরগুলোতে
বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে যেসব খাতে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পোশাকশিল্প এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। যে খাতে উৎপাদন বাড়িয়ে রপ্তানি পণ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আমরা বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে পেরেছি।
এ জন্য এসব খাতে তারা যেন পরবর্তী সময়ে আরও বেশি বিনিয়োগ করে, সেই জায়গাগুলোতে আমাদের কাজ করতে হবে।
একটি সূত্র মতে, এ বছর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটের মতো কিছু আয়োজনে পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে নতুন কিছু বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে। ফলে আমাদের উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও এগিয়ে যাব। আন্তর্জাতিকভাবে পোশাকশিল্পের বাজার আরও সমৃদ্ধ হবে। সর্বোপরি আমাদের পোশাকশিল্পের জন্য এমন ঘোষণা দেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, ২০২২ সালে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার, যা পরবর্তী ২০২৩ সালে বেড়ে হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার। তবে ২০২৪ সালে এই বিনিয়োগের পরিমাণ কিছুটা কমে ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। কিন্তু সবশেষ ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে আবার বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে গিয়ে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে। তাহলে নির্দ্বিধায় বলা যায়, ধীরে ধীরে বিদেশি বিনিয়োগে আমাদের সুদিন ফিরতে শুরু করেছে।
এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সরকারি-বেসরকারি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। আমরা জানি, আমাদের দেশে দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিদেশি বিনিয়োগের অন্যতম অন্তরায়। তাই দুর্নীতি ঠেকাতে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বিনিয়োগকারীরা যাতে সহজে এবং দ্রুততম সময়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে, তার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের বিনিয়োগ করা কোনো প্রতিষ্ঠানে সমস্যা অথবা প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে তা দ্রুততার সঙ্গে সমাধান করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকতে হবে। সর্বোপরি আমরা আশা রাখি, আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আরও উৎসাহিত করতে বিনিয়োগবান্ধব আইনি পরিবেশ তৈরিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর আরও বেশি সচেতনতা অবলম্বন করবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ

একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি হলো বিদেশি বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে যেকোনো দেশ রপ্তানির পরিমাণ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
অন্য দেশের কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি যখন আমাদের দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে, তখন দেশের অর্থনীতি আরও সচল হয়ে ওঠে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানে নতুন নতুন পণ্য উৎপাদিত হয়, মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। এতে অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে শুরু করে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন খাতের অবকাঠামো উন্নয়নেও বিদেশি বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর থেকে বিদেশি বিনিয়োগ নেই বললেই চলে। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েছে। তবে আশার কথা, বিদেশি বিনিয়োগে আবারও সুদিন ফিরতে শুরু করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মোট প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রবাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এর পরিমাণ যেন ক্রমাগত বাড়তে থাকে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। তার জন্য দেশের নীতিনির্ধারণী মহলসহ সংশ্লিষ্টদের আরও মনোযোগী হওয়া দরকার। বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এখনো যেসব জায়গায় প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সাধারণত বাইরে থেকে কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি সব সময় লাভজনক ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে চায়। বিদেশিরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহজ উপায়,
নিশ্চিত এবং ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ চায়। কিন্তু যখন তারা দেখে, বিনিয়োগ করলে ব্যবসায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে কিংবা সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য যথেষ্ট অনুকূল পরিবেশ নেই, তখন তারা বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তারা সেসব দেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করে।
বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে যখন বিনিয়োগের একাধিক বিকল্প জায়গা থাকে; তখন তারা পছন্দমতো দেশ নির্বাচন করে সেখানে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। যেহেতু সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আমাদের দেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত হচ্ছে, তাদের এই আস্থার জায়গাটা আমাদের যেকোনো মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে যাতে তারা নিরুৎসাহিত না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা দেখেছি, বিগত বছরগুলোতে
বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে যেসব খাতে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পোশাকশিল্প এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। যে খাতে উৎপাদন বাড়িয়ে রপ্তানি পণ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আমরা বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে পেরেছি।
এ জন্য এসব খাতে তারা যেন পরবর্তী সময়ে আরও বেশি বিনিয়োগ করে, সেই জায়গাগুলোতে আমাদের কাজ করতে হবে।
একটি সূত্র মতে, এ বছর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটের মতো কিছু আয়োজনে পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে নতুন কিছু বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে। ফলে আমাদের উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও এগিয়ে যাব। আন্তর্জাতিকভাবে পোশাকশিল্পের বাজার আরও সমৃদ্ধ হবে। সর্বোপরি আমাদের পোশাকশিল্পের জন্য এমন ঘোষণা দেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, ২০২২ সালে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার, যা পরবর্তী ২০২৩ সালে বেড়ে হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার। তবে ২০২৪ সালে এই বিনিয়োগের পরিমাণ কিছুটা কমে ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। কিন্তু সবশেষ ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে আবার বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে গিয়ে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে। তাহলে নির্দ্বিধায় বলা যায়, ধীরে ধীরে বিদেশি বিনিয়োগে আমাদের সুদিন ফিরতে শুরু করেছে।
এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সরকারি-বেসরকারি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। আমরা জানি, আমাদের দেশে দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিদেশি বিনিয়োগের অন্যতম অন্তরায়। তাই দুর্নীতি ঠেকাতে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বিনিয়োগকারীরা যাতে সহজে এবং দ্রুততম সময়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে, তার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের বিনিয়োগ করা কোনো প্রতিষ্ঠানে সমস্যা অথবা প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে তা দ্রুততার সঙ্গে সমাধান করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকতে হবে। সর্বোপরি আমরা আশা রাখি, আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আরও উৎসাহিত করতে বিনিয়োগবান্ধব আইনি পরিবেশ তৈরিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর আরও বেশি সচেতনতা অবলম্বন করবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ

চারদিক থেকে যেন রাজ্যের এক অস্থিতিশীলতা আমাদের ঘিরে ধরেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কোনোভাবে স্থিতিশীল বলে গণ্য করা যায় না। তার ওপর পূর্ব সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে আছে মিয়ানমারকে ঘিরে।
১০ মে ২০২৫
প্রায়ই ‘সংস্কৃতি’ শব্দ একটি সীমিত অর্থে ব্যবহৃত হয়। মনে করা হয় যে শিল্প-সাহিত্য-সংগীতই সংস্কৃতির সমার্থক। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে সংস্কৃতি ধারণাটি পুরো জীবনধারা ও জীবনবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, চিন্তা-চেতনা এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত। সংস্কৃতির মতো ‘গণতন্ত্র’ ধারণাকেও সীমাবদ্ধ একটি প্রেক্ষাপট থেকে দেখতে আমর
৮ ঘণ্টা আগে
ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে পাঁচ ঘণ্টা করা হবে—সম্প্রতি এমন এক ঘোষণা এসেছে। কথাটা প্রথমে শুনলে অনেকের কাছে হয়তো ভালোই লাগবে। কিন্তু একটু গভীরে তাকালে বোঝা যায়, এই কথার আড়ালে লুকিয়ে আছে বিপজ্জনক এক চিন্তা—নারীকে আবার ঘরে ফেরানোর, তাঁকে কর্মক্ষেত্র থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দেওয়ার এক
৮ ঘণ্টা আগে
‘ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়’ প্রবাদটির যথাযথ উদাহরণ দিয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অবশ্য এক হয়ে কাউকে পাটকেল মারেননি, বরং একে অপরকে দোষারোপ করে পাটকেল ছুড়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগেসম্পাদকীয়

‘ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়’ প্রবাদটির যথাযথ উদাহরণ দিয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অবশ্য এক হয়ে কাউকে পাটকেল মারেননি, বরং একে অপরকে দোষারোপ করে পাটকেল ছুড়েছেন। দুই দিন ধরে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই দুই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আলোচনা চলছে। ২৮ অক্টোবর আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার এ-সংক্রান্ত খবরটি পড়লেই বিস্তারিত জানা যায়।
এরই মধ্যে অসংখ্য পাঠক জেনে গেছেন, থুতুকাণ্ডের জের ধরে সাভারের বিরুলিয়ায় অবস্থিত দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয় ২৬ অক্টোবর, রোববার দিবাগত রাতে। রোববার রাতে খাগান এলাকায় ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’-এর পাশে
বসে ছিলেন সিটির শিক্ষার্থীরা। এমন সময় সিটির এক শিক্ষার্থী অসতর্কতাবশত থুতু ফেললে তা
পাশ দিয়ে যাওয়া ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর গায়ে লাগে। সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।
এই হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষ সিটি ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করার সময় সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। ওই খবর ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিলের কিছু শিক্ষার্থীকে জিম্মি ও মারধর করেন এবং পরে ছেড়ে দেন। পুরো ঘটনায় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
থুতু ফেলার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশী প্রতিষ্ঠানের তরুণ শিক্ষার্থীরা যে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে ফেললেন, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। অসতর্কতাবশত যে শিক্ষার্থী থুতু ফেললেন, তিনি ‘দুঃখিত’ বললে এবং যাঁর গায়ে থুতু লেগেছে, তিনি তাঁকে ক্ষমা করে দিলে তখনই ল্যাঠা চুকে যেত। কিন্তু কী এক অস্থির জাতিতে পরিণত হয়েছি আমরা! ইটপাটকেলের প্রবাদটির উদাহরণ দিতে পারলেও, ‘ক্ষমা মহৎ গুণ’, এই আদর্শ বাক্যকে চর্চা করতে পারি না; শুধু আত্মস্থ করেই মনে করি দায়িত্ব শেষ।
ক্ষমা যেমন একটি গুণ, তেমনি সদ্ব্যবহার এবং ধৈর্যও। উচ্চশিক্ষার দুটি প্রতিষ্ঠানের কোনো কোনো শিক্ষার্থী যখন অসদাচরণ এবং অধৈর্যের পরিচয় দেন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করেন, তখন তা দুঃখজনক। যদি কেউ কারও ওপর অন্যায়ভাবে হামলা করে, তাহলে সেটি ফৌজদারি অপরাধ। ভুক্তভোগী আইনের আশ্রয় নিতে পারে, আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না।
দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যখন সামান্য থুতুকাণ্ডকে লঙ্কাকাণ্ডে পরিণত করতে পারেন, তাহলে সেই থুতু এসে আসলে কার গায়ে পড়ে?
ওই শিক্ষার্থীদের পরিবার, যেখানে আদর্শ শিক্ষা দেওয়া হয়; তাঁদের শিক্ষক, যাঁরা সুশিক্ষা দানে ব্রতী, নাকি নিজেদের ওপর?
আচ্ছা, শৈশব থেকে ‘সদাচার’বিষয়ক পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়া যায় না?

‘ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়’ প্রবাদটির যথাযথ উদাহরণ দিয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অবশ্য এক হয়ে কাউকে পাটকেল মারেননি, বরং একে অপরকে দোষারোপ করে পাটকেল ছুড়েছেন। দুই দিন ধরে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই দুই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আলোচনা চলছে। ২৮ অক্টোবর আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার এ-সংক্রান্ত খবরটি পড়লেই বিস্তারিত জানা যায়।
এরই মধ্যে অসংখ্য পাঠক জেনে গেছেন, থুতুকাণ্ডের জের ধরে সাভারের বিরুলিয়ায় অবস্থিত দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয় ২৬ অক্টোবর, রোববার দিবাগত রাতে। রোববার রাতে খাগান এলাকায় ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’-এর পাশে
বসে ছিলেন সিটির শিক্ষার্থীরা। এমন সময় সিটির এক শিক্ষার্থী অসতর্কতাবশত থুতু ফেললে তা
পাশ দিয়ে যাওয়া ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর গায়ে লাগে। সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।
এই হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষ সিটি ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করার সময় সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। ওই খবর ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিলের কিছু শিক্ষার্থীকে জিম্মি ও মারধর করেন এবং পরে ছেড়ে দেন। পুরো ঘটনায় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
থুতু ফেলার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশী প্রতিষ্ঠানের তরুণ শিক্ষার্থীরা যে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে ফেললেন, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। অসতর্কতাবশত যে শিক্ষার্থী থুতু ফেললেন, তিনি ‘দুঃখিত’ বললে এবং যাঁর গায়ে থুতু লেগেছে, তিনি তাঁকে ক্ষমা করে দিলে তখনই ল্যাঠা চুকে যেত। কিন্তু কী এক অস্থির জাতিতে পরিণত হয়েছি আমরা! ইটপাটকেলের প্রবাদটির উদাহরণ দিতে পারলেও, ‘ক্ষমা মহৎ গুণ’, এই আদর্শ বাক্যকে চর্চা করতে পারি না; শুধু আত্মস্থ করেই মনে করি দায়িত্ব শেষ।
ক্ষমা যেমন একটি গুণ, তেমনি সদ্ব্যবহার এবং ধৈর্যও। উচ্চশিক্ষার দুটি প্রতিষ্ঠানের কোনো কোনো শিক্ষার্থী যখন অসদাচরণ এবং অধৈর্যের পরিচয় দেন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করেন, তখন তা দুঃখজনক। যদি কেউ কারও ওপর অন্যায়ভাবে হামলা করে, তাহলে সেটি ফৌজদারি অপরাধ। ভুক্তভোগী আইনের আশ্রয় নিতে পারে, আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না।
দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যখন সামান্য থুতুকাণ্ডকে লঙ্কাকাণ্ডে পরিণত করতে পারেন, তাহলে সেই থুতু এসে আসলে কার গায়ে পড়ে?
ওই শিক্ষার্থীদের পরিবার, যেখানে আদর্শ শিক্ষা দেওয়া হয়; তাঁদের শিক্ষক, যাঁরা সুশিক্ষা দানে ব্রতী, নাকি নিজেদের ওপর?
আচ্ছা, শৈশব থেকে ‘সদাচার’বিষয়ক পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়া যায় না?

চারদিক থেকে যেন রাজ্যের এক অস্থিতিশীলতা আমাদের ঘিরে ধরেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কোনোভাবে স্থিতিশীল বলে গণ্য করা যায় না। তার ওপর পূর্ব সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে আছে মিয়ানমারকে ঘিরে।
১০ মে ২০২৫
প্রায়ই ‘সংস্কৃতি’ শব্দ একটি সীমিত অর্থে ব্যবহৃত হয়। মনে করা হয় যে শিল্প-সাহিত্য-সংগীতই সংস্কৃতির সমার্থক। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে সংস্কৃতি ধারণাটি পুরো জীবনধারা ও জীবনবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত, চিন্তা-চেতনা এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত। সংস্কৃতির মতো ‘গণতন্ত্র’ ধারণাকেও সীমাবদ্ধ একটি প্রেক্ষাপট থেকে দেখতে আমর
৮ ঘণ্টা আগে
ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে পাঁচ ঘণ্টা করা হবে—সম্প্রতি এমন এক ঘোষণা এসেছে। কথাটা প্রথমে শুনলে অনেকের কাছে হয়তো ভালোই লাগবে। কিন্তু একটু গভীরে তাকালে বোঝা যায়, এই কথার আড়ালে লুকিয়ে আছে বিপজ্জনক এক চিন্তা—নারীকে আবার ঘরে ফেরানোর, তাঁকে কর্মক্ষেত্র থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দেওয়ার এক
৮ ঘণ্টা আগে
একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি হলো বিদেশি বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে যেকোনো দেশ রপ্তানির পরিমাণ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
৮ ঘণ্টা আগে