ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। বর্তমানে তিনি বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার মাসুদ রানা।
মাসুদ রানা
মব জাস্টিসের পর আবার হঠাৎ করে ঢাকাসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কারণ কী?
আমাদের জাতিগত সমস্যা হচ্ছে, আমরা শব্দে আটকে যাই। শব্দ নিয়ে আমরা বেশি পরিমাণে মাতোয়ারা হয়ে যাই এবং তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ি। মব জাস্টিস তেমনি একটা ভুল শব্দ। মব কখনো জাস্টিসকে এনশিউর করে না। এটাকে ‘মব ভায়োলেন্স’ বলাটাই যৌক্তিক। মবের ঘটনা ঘটিয়ে একটা সংঘবদ্ধ গ্রুপ পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। আসলে তাদের আইনি কাঠামোর মধ্যে দেখতে হবে। এ জন্য আমার মতে, এই ধরনের ঘটনাসমূহকে ‘মব জাস্টিস’ না বলে ‘মব ভায়োলেন্স’ বলা অধিকতর শ্রেয়।
‘মব ভায়োলেন্স’ শেষ হতে না হতেই আমরা এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে দেখছি। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য আমাদের যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করার দরকার ছিল তা আমরা করতে পারছি না, সেটা আগে স্বীকার করে নিতে হবে। কেন পারছি না, তার কারণও খুঁজে বের করতে হবে। এরপর একটা সময় উপযোগী সিদ্ধ হস্তে সেসবকে পরিশীলিত করতে হবে।
দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রধান দায়িত্ব পুলিশ বাহিনীর। অন্যদিকে, বহিঃশক্তির আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো সশস্ত্র বাহিনীর। বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ বাহিনী যথাযথ অবস্থায় নেই। নিকট অতীত কৃতকর্মের জন্য পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে নির্লিপ্ত। বাহিনীর অনেক সদস্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেও সময় পার করছেন। কারও কারও বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান। তাই বেশির ভাগ পুলিশ সদস্য পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
আমার নিজের একটা অভিজ্ঞতা বলি, কয়েক দিন আগে আমি একটি পুলিশ ফাঁড়ির সামনে রং সাইডে একটা গাড়ি পার্ক করে থাকতে দেখি। আমি সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর নিকটবর্তী পুলিশকে ব্যাপারটা বলি। তিনি তখন বললেন, ‘স্যার, আমরা এ কাজ সমাধান করতে পারব না।’ কেন পারবেন না—আমার এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘ওই গাড়িওয়ালা তাঁর ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের ধমকাতেও পারেন। কারণ, আমাদের এখন দেখার কেউ নেই।’ অর্থাৎ পুলিশকে আমরা এখন একটা অসহায় অবস্থার মধ্যে রেখে দিয়েছি। পুলিশকে এই অসহায় অবস্থায় রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা সম্ভব নয়। মব ভায়োলেন্সের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা সম্ভব হচ্ছে না, এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে পুলিশের ওপর সাধারণ জনগণের আস্থার চূড়ান্ত ঘাটতি।
সেটা কেন করা সম্ভব হচ্ছে না?
লম্বা সময় ধরে পূর্ববর্তী সরকারের অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অধীনে থাকার ফলে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ক্রমেই অগণতান্ত্রিক হয়ে উঠেছিল। এই ব্যবস্থাপনার সমাপ্তি ঘটলেও বর্তমানে আগের আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করতে পারছেন না। এই আত্মবিশ্বাস না থাকাই দায়িত্ব পালনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারও তাদের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ এবং এ কাজে সরকারের অনাগ্রহ স্পষ্ট। নিরাপত্তাহীন ব্যক্তির পক্ষে অন্যের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই তাকে ভরসার আওতায় আনতে হলে ওপর থেকে প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য নতুন করে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাকে প্রস্তুত করা প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের দাগি সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তারা ছাড়া পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছিল। এখনকার পরিস্থিতির জন্য তারা দায়ী নয় কি?
আমরা যখন কোনো ঘটনাকে কারণ-পরম্পরার ভিত্তিতে দেখি, তখন একটি নির্দিষ্ট মাত্রা (ডাইমেনশন) থেকেই মূল্যায়ন করি, যা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। এসব ঘটনা বহুমাত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা উচিত। আমাদের দেশে দ্বি-দলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার ফলে দুই প্রধান দলেই ভালো ও মন্দ উভয় ধরনের মানুষ রয়েছে। তাই শুধু দাগি আসামিদের মুক্তি পাওয়াকে অপরাধ বৃদ্ধির একমাত্র কারণ হিসেবে দেখাটা সঠিক হবে না।
আমাদের দেশে পুঁজিবাজার অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করে, যার কোনো নির্দিষ্ট ধর্ম নেই। একইভাবে, তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ও মুখ্য হয়ে ওঠে না। বরং আগে যারা চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করত, পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর সেই জায়গাটি এখন বিএনপি-জামায়াতসহ আরও কিছু গোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী জেলে ছিলেন; তাঁরা মুক্তি পেয়েছেন কি না, তা আমাদের জানা নেই। তবে যাঁরা মুক্তি পেয়েছেন, তাঁরাই যে চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী—এমনটি সরাসরি বলা যাবে না। কারণ, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল এবং যারা ছিল না, তাদের মধ্যেও অনেক ক্ষেত্রে একধরনের সমঝোতা ছিল। তাদের মধ্যে গোপন চুক্তি হওয়া অসম্ভব কিছু না, যার মূলমন্ত্র এমন হতে পারে যে, ‘তোমরা এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করো, বিনিময়ে আমাদের নিরাপত্তা কিংবা আশ্রয় দাও।’ মূলত, এই রকম পারস্পরিক বোঝাপড়ার কারণে আমরা সিন্ডিকেটের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না বলেই আমার ব্যক্তিগত ধারণা।
‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে একটি বিশেষ অভিযান চলমান থাকার পরেও কেন এ অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো?
একটা কথা আছে, ‘যতটা গর্জে, ততটা বর্ষে না’। আসলে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ যতটা নামে ততটা কাজের না। পুলিশকে মেইনস্ট্রিমে না আনা পর্যন্ত কোনো কাজই হবে না। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার কাজে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা কোনোকালেই সন্তোষজনক ছিল না।
এখন পুলিশ কেন এত দিন ধরে কার্যকরভাবে কাজ করতে পারছে না? অনেকের অভিযোগ, আগের সরকারের মাত্রাতিরিক্ত দলীয় সম্পৃক্ততার কারণেই পুলিশ স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না। তবে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং অভ্যন্তরীণ পরিবেশ স্বাভাবিক করতে পুলিশের বিকল্প নেই। এ জন্য তাদের জনগণের আস্থার মধ্যে আনতে হবে, যা নির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে করা যেতে পারে। একটি সম্ভাব্য নীতির অংশ হিসেবে পুলিশ বাহিনীকে কয়েকটি ভিন্ন ক্লাস্টারে ভাগ করা যেতে পারে—
১. যারা আগের সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় স্বপ্রণোদিত হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছিল।
২. যারা কেবল সরকারের নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য ছিল।
৩. যারা অপেক্ষাকৃত কম মাত্রায় অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
এরপর, যারা সবচেয়ে বেশি অপরাধে জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। অপেক্ষাকৃত কম সম্পৃক্তদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে পুনরায় কাজে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। বাকিদের পেশাদারত্ব ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে জনগণের আস্থার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এই প্রক্রিয়া পুলিশের কার্যকারিতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে। এ ছাড়া পুলিশ বাহিনীকে কাজের মধ্যে সক্রিয় না করে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। এখন ডেভিল হান্ট বা অন্য কোনো নামে অভিযান করা হোক না কেন, তা কার্যকর করা সম্ভব হবে না।
বিগত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো করে এ সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকার কথা বলেছেন। কিন্তু পরিস্থিতি তো আসলেই স্বাভাবিক না। তাহলে এসব ঘটনার দায় কার?
এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্ম ব্যবহার করা প্রয়োজন, যা হলো ‘আনজাস্ট স্ট্যাটাস কো’। আগের সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ছোটখাটো ঘটনাগুলো এড়িয়ে যেত। যদি বর্তমান সরকারও একই নীতি অনুসরণ করে, তাহলে সেটাকেই ‘আনজাস্ট স্ট্যাটাস কো’ অব্যাহতকরণ বলা যেতে পারে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তবে এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা দরকার—বর্তমান সরকার নির্বাচিত সরকার নয়, বরং এটি একটি আপৎকালীন সরকার (ক্রাইসিস টাইম)। এই সরকারকে ‘কেয়ারটেকার সরকার’ কিংবা অন্তর্বর্তী সরকার না বলে ‘আপৎকালীন সরকার’ বলা অধিকতর উপযুক্ত। ফলে এ সরকারের দায়বদ্ধতা ও ভূমিকা বিগত সরকারের তুলনায় অনেকটাই ভিন্ন হতে হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচালনার জন্য যে ধরনের সক্ষম নেতৃত্ব প্রয়োজন, তা বর্তমানে অনুপস্থিত। আমার মতে, এম সাখাওয়াত হোসেন অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য যথাযথ ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, একটি ছোট ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখানে একজন যোগ্য ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া অতীব জরুরি। পাশাপাশি, পুলিশ বাহিনীকে সক্রিয় ও জনমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামক অভিযান পরিচালনা করেও কোনো ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে না। বর্তমান সরকার যদি চাঁদাবাজি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারাও আগের সরকারের মতো গণধিক্কারের শিকার হবে এবং কখনোই সাধুবাদ পাবে না। কারণ, এই সরকার গঠিত হয়েছে মানুষের রক্তের বিনিময়ে। তাই জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিচারহীনতা এবং দুর্বল আইন প্রয়োগের এসব ঘটনা বারবার ঘটছে। অন্তর্বর্তী সরকার এসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কেন ব্যর্থ হচ্ছে?
আমরা বিচারহীনতার কথা প্রায়ই উল্লেখ করি। তবে বাংলাদেশে বিচারহীনতা নিয়ে প্রচলিত ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। আমাদের মূল সমস্যা হলো আমরা সামাজিক ন্যায়বিচার সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। ধরুন, আপনাকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হলো। সে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আপনি যদি পক্ষপাতদুষ্ট হন, তবে আপনি নিজেই একটি পক্ষপাতমূলক কাঠামো তৈরি করবেন। এটি আমাদের সামাজিক বাস্তবতার প্রতিফলন। শহুরে শিক্ষিত সমাজের মধ্যে যে হীনম্মন্যতা ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করে, তা বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। যদি দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতেন, তাহলে বিচারহীনতা নিয়ে যে অভিযোগ করা হয়, সেটি এত প্রকট হতো না। এ ক্ষেত্রে শিক্ষিত অভিজাত শ্রেণির দায় সবচেয়ে বেশি। আমরা সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক জায়গায় দায়িত্ব দিই না; বরং তথাকথিত জনপ্রিয়তার বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিই। ফলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি রাজনৈতিক, পারিবারিক বা ব্যক্তিগত প্রভাবের কারণে পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে পড়েন। এ কারণেই আমাদের সমাজে কার্যকর কোনো কাঠামো গড়ে উঠছে না। ফলে বিভিন্ন ঘটনার দায় নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
যদি দায়িত্বপ্রাপ্তদের জবাবদিহির আওতায় আনা যেত, তবে আমাদের দেশে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একধরনের বিপ্লব ঘটানো সম্ভব হতো। তবে বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; বরং পুরো সমাজকে একটি কার্যকর কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে।
মব জাস্টিসের পর আবার হঠাৎ করে ঢাকাসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কারণ কী?
আমাদের জাতিগত সমস্যা হচ্ছে, আমরা শব্দে আটকে যাই। শব্দ নিয়ে আমরা বেশি পরিমাণে মাতোয়ারা হয়ে যাই এবং তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ি। মব জাস্টিস তেমনি একটা ভুল শব্দ। মব কখনো জাস্টিসকে এনশিউর করে না। এটাকে ‘মব ভায়োলেন্স’ বলাটাই যৌক্তিক। মবের ঘটনা ঘটিয়ে একটা সংঘবদ্ধ গ্রুপ পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। আসলে তাদের আইনি কাঠামোর মধ্যে দেখতে হবে। এ জন্য আমার মতে, এই ধরনের ঘটনাসমূহকে ‘মব জাস্টিস’ না বলে ‘মব ভায়োলেন্স’ বলা অধিকতর শ্রেয়।
‘মব ভায়োলেন্স’ শেষ হতে না হতেই আমরা এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে দেখছি। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য আমাদের যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করার দরকার ছিল তা আমরা করতে পারছি না, সেটা আগে স্বীকার করে নিতে হবে। কেন পারছি না, তার কারণও খুঁজে বের করতে হবে। এরপর একটা সময় উপযোগী সিদ্ধ হস্তে সেসবকে পরিশীলিত করতে হবে।
দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রধান দায়িত্ব পুলিশ বাহিনীর। অন্যদিকে, বহিঃশক্তির আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো সশস্ত্র বাহিনীর। বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ বাহিনী যথাযথ অবস্থায় নেই। নিকট অতীত কৃতকর্মের জন্য পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে নির্লিপ্ত। বাহিনীর অনেক সদস্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেও সময় পার করছেন। কারও কারও বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান। তাই বেশির ভাগ পুলিশ সদস্য পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
আমার নিজের একটা অভিজ্ঞতা বলি, কয়েক দিন আগে আমি একটি পুলিশ ফাঁড়ির সামনে রং সাইডে একটা গাড়ি পার্ক করে থাকতে দেখি। আমি সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর নিকটবর্তী পুলিশকে ব্যাপারটা বলি। তিনি তখন বললেন, ‘স্যার, আমরা এ কাজ সমাধান করতে পারব না।’ কেন পারবেন না—আমার এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘ওই গাড়িওয়ালা তাঁর ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের ধমকাতেও পারেন। কারণ, আমাদের এখন দেখার কেউ নেই।’ অর্থাৎ পুলিশকে আমরা এখন একটা অসহায় অবস্থার মধ্যে রেখে দিয়েছি। পুলিশকে এই অসহায় অবস্থায় রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা সম্ভব নয়। মব ভায়োলেন্সের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা সম্ভব হচ্ছে না, এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে পুলিশের ওপর সাধারণ জনগণের আস্থার চূড়ান্ত ঘাটতি।
সেটা কেন করা সম্ভব হচ্ছে না?
লম্বা সময় ধরে পূর্ববর্তী সরকারের অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অধীনে থাকার ফলে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ক্রমেই অগণতান্ত্রিক হয়ে উঠেছিল। এই ব্যবস্থাপনার সমাপ্তি ঘটলেও বর্তমানে আগের আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করতে পারছেন না। এই আত্মবিশ্বাস না থাকাই দায়িত্ব পালনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারও তাদের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ এবং এ কাজে সরকারের অনাগ্রহ স্পষ্ট। নিরাপত্তাহীন ব্যক্তির পক্ষে অন্যের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই তাকে ভরসার আওতায় আনতে হলে ওপর থেকে প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য নতুন করে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাকে প্রস্তুত করা প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের দাগি সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তারা ছাড়া পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছিল। এখনকার পরিস্থিতির জন্য তারা দায়ী নয় কি?
আমরা যখন কোনো ঘটনাকে কারণ-পরম্পরার ভিত্তিতে দেখি, তখন একটি নির্দিষ্ট মাত্রা (ডাইমেনশন) থেকেই মূল্যায়ন করি, যা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। এসব ঘটনা বহুমাত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা উচিত। আমাদের দেশে দ্বি-দলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার ফলে দুই প্রধান দলেই ভালো ও মন্দ উভয় ধরনের মানুষ রয়েছে। তাই শুধু দাগি আসামিদের মুক্তি পাওয়াকে অপরাধ বৃদ্ধির একমাত্র কারণ হিসেবে দেখাটা সঠিক হবে না।
আমাদের দেশে পুঁজিবাজার অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করে, যার কোনো নির্দিষ্ট ধর্ম নেই। একইভাবে, তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ও মুখ্য হয়ে ওঠে না। বরং আগে যারা চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করত, পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর সেই জায়গাটি এখন বিএনপি-জামায়াতসহ আরও কিছু গোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী জেলে ছিলেন; তাঁরা মুক্তি পেয়েছেন কি না, তা আমাদের জানা নেই। তবে যাঁরা মুক্তি পেয়েছেন, তাঁরাই যে চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী—এমনটি সরাসরি বলা যাবে না। কারণ, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল এবং যারা ছিল না, তাদের মধ্যেও অনেক ক্ষেত্রে একধরনের সমঝোতা ছিল। তাদের মধ্যে গোপন চুক্তি হওয়া অসম্ভব কিছু না, যার মূলমন্ত্র এমন হতে পারে যে, ‘তোমরা এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করো, বিনিময়ে আমাদের নিরাপত্তা কিংবা আশ্রয় দাও।’ মূলত, এই রকম পারস্পরিক বোঝাপড়ার কারণে আমরা সিন্ডিকেটের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না বলেই আমার ব্যক্তিগত ধারণা।
‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে একটি বিশেষ অভিযান চলমান থাকার পরেও কেন এ অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো?
একটা কথা আছে, ‘যতটা গর্জে, ততটা বর্ষে না’। আসলে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ যতটা নামে ততটা কাজের না। পুলিশকে মেইনস্ট্রিমে না আনা পর্যন্ত কোনো কাজই হবে না। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার কাজে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা কোনোকালেই সন্তোষজনক ছিল না।
এখন পুলিশ কেন এত দিন ধরে কার্যকরভাবে কাজ করতে পারছে না? অনেকের অভিযোগ, আগের সরকারের মাত্রাতিরিক্ত দলীয় সম্পৃক্ততার কারণেই পুলিশ স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না। তবে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং অভ্যন্তরীণ পরিবেশ স্বাভাবিক করতে পুলিশের বিকল্প নেই। এ জন্য তাদের জনগণের আস্থার মধ্যে আনতে হবে, যা নির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে করা যেতে পারে। একটি সম্ভাব্য নীতির অংশ হিসেবে পুলিশ বাহিনীকে কয়েকটি ভিন্ন ক্লাস্টারে ভাগ করা যেতে পারে—
১. যারা আগের সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় স্বপ্রণোদিত হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছিল।
২. যারা কেবল সরকারের নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য ছিল।
৩. যারা অপেক্ষাকৃত কম মাত্রায় অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
এরপর, যারা সবচেয়ে বেশি অপরাধে জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। অপেক্ষাকৃত কম সম্পৃক্তদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে পুনরায় কাজে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। বাকিদের পেশাদারত্ব ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে জনগণের আস্থার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এই প্রক্রিয়া পুলিশের কার্যকারিতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে। এ ছাড়া পুলিশ বাহিনীকে কাজের মধ্যে সক্রিয় না করে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। এখন ডেভিল হান্ট বা অন্য কোনো নামে অভিযান করা হোক না কেন, তা কার্যকর করা সম্ভব হবে না।
বিগত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো করে এ সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকার কথা বলেছেন। কিন্তু পরিস্থিতি তো আসলেই স্বাভাবিক না। তাহলে এসব ঘটনার দায় কার?
এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্ম ব্যবহার করা প্রয়োজন, যা হলো ‘আনজাস্ট স্ট্যাটাস কো’। আগের সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ছোটখাটো ঘটনাগুলো এড়িয়ে যেত। যদি বর্তমান সরকারও একই নীতি অনুসরণ করে, তাহলে সেটাকেই ‘আনজাস্ট স্ট্যাটাস কো’ অব্যাহতকরণ বলা যেতে পারে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তবে এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা দরকার—বর্তমান সরকার নির্বাচিত সরকার নয়, বরং এটি একটি আপৎকালীন সরকার (ক্রাইসিস টাইম)। এই সরকারকে ‘কেয়ারটেকার সরকার’ কিংবা অন্তর্বর্তী সরকার না বলে ‘আপৎকালীন সরকার’ বলা অধিকতর উপযুক্ত। ফলে এ সরকারের দায়বদ্ধতা ও ভূমিকা বিগত সরকারের তুলনায় অনেকটাই ভিন্ন হতে হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচালনার জন্য যে ধরনের সক্ষম নেতৃত্ব প্রয়োজন, তা বর্তমানে অনুপস্থিত। আমার মতে, এম সাখাওয়াত হোসেন অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য যথাযথ ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, একটি ছোট ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখানে একজন যোগ্য ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া অতীব জরুরি। পাশাপাশি, পুলিশ বাহিনীকে সক্রিয় ও জনমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামক অভিযান পরিচালনা করেও কোনো ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে না। বর্তমান সরকার যদি চাঁদাবাজি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারাও আগের সরকারের মতো গণধিক্কারের শিকার হবে এবং কখনোই সাধুবাদ পাবে না। কারণ, এই সরকার গঠিত হয়েছে মানুষের রক্তের বিনিময়ে। তাই জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিচারহীনতা এবং দুর্বল আইন প্রয়োগের এসব ঘটনা বারবার ঘটছে। অন্তর্বর্তী সরকার এসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কেন ব্যর্থ হচ্ছে?
আমরা বিচারহীনতার কথা প্রায়ই উল্লেখ করি। তবে বাংলাদেশে বিচারহীনতা নিয়ে প্রচলিত ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। আমাদের মূল সমস্যা হলো আমরা সামাজিক ন্যায়বিচার সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। ধরুন, আপনাকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হলো। সে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আপনি যদি পক্ষপাতদুষ্ট হন, তবে আপনি নিজেই একটি পক্ষপাতমূলক কাঠামো তৈরি করবেন। এটি আমাদের সামাজিক বাস্তবতার প্রতিফলন। শহুরে শিক্ষিত সমাজের মধ্যে যে হীনম্মন্যতা ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করে, তা বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। যদি দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতেন, তাহলে বিচারহীনতা নিয়ে যে অভিযোগ করা হয়, সেটি এত প্রকট হতো না। এ ক্ষেত্রে শিক্ষিত অভিজাত শ্রেণির দায় সবচেয়ে বেশি। আমরা সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক জায়গায় দায়িত্ব দিই না; বরং তথাকথিত জনপ্রিয়তার বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিই। ফলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি রাজনৈতিক, পারিবারিক বা ব্যক্তিগত প্রভাবের কারণে পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে পড়েন। এ কারণেই আমাদের সমাজে কার্যকর কোনো কাঠামো গড়ে উঠছে না। ফলে বিভিন্ন ঘটনার দায় নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
যদি দায়িত্বপ্রাপ্তদের জবাবদিহির আওতায় আনা যেত, তবে আমাদের দেশে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একধরনের বিপ্লব ঘটানো সম্ভব হতো। তবে বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; বরং পুরো সমাজকে একটি কার্যকর কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি নতুন উদ্যোগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট, ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সংকীর্ণতাকে চ্যালেঞ্জ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই দলটি গঠিত হয়েছে।
১ দিন আগেজুলাই অভ্যুত্থানের নায়কেরা নতুন দল গঠনের মাধ্যমে নবযাত্রার ঘোষণা দেওয়ার আগমুহূর্তে একটি খবর পুরোনো আলোচনাকেই আবার সামনে এনেছে। খবরটি হলো: বাংলাদেশ গণতন্ত্রের সূচকে এক বছরে ২৫ ধাপ পিছিয়েছে।
১ দিন আগেএকাত্তরের যুদ্ধকালের মতো সমষ্টিগত দুঃসময় আমাদের জীবনে আর কখনো আসেনি। যুদ্ধটা ছিল রাজনৈতিক এবং তাতে জাতীয়তাবাদ নানাভাবে ও বিভিন্ন দিক দিয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিল। বাঙালি জাতীয়তাবাদের শক্তি সে সময়ে বিশেষভাবে প্রকাশ পায়, তার দুর্বলতাও যে ধরা পড়েনি এমন নয়। বাঙালির জাতীয়তাবাদের শক্তি ছিল ঐক্যে...
২ দিন আগেনতুন শিল্পকারখানায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর একটি প্রস্তাবের ওপর আয়োজিত এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) এক গণশুনানি সব শ্রেণির গ্রাহক প্রতিনিধিদের তীব্র বিরোধিতা ও প্রতিবাদের মুখে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারেনি। গত বুধবার ইস্কাটনের বিয়াম মিলনায়তনে দিনব্যাপী এই গণশুনানির আয়োজন করেছিল বিইআরসি।
২ দিন আগে