জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
হিন্দি না উর্দু—জাতীয় ভাষা কোনটা হবে, এ নিয়ে বিতর্ক চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। হিন্দু নেতারা চাইছিলেন হিন্দি হোক ভারতের জাতীয় ভাষা, আর মুসলমান নেতারা চাইছিলেন জাতীয় ভাষা হোক উর্দু। ভারত আর পাকিস্তানে দেশটা বাঁটোয়ারা হয়ে যাওয়ার অনেক আগের কথা সেটা। বাংলা প্রসঙ্গটি তখন সেভাবে আসেনি। আসার কথাও না। সমগ্র ভারতবর্ষে হিন্দু ও মুসলমান নেতারা প্রধানত জাতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি ও উর্দু নিয়েই ভেবেছেন। আমরা সব সময় সাধারণ মানুষের কথা না বলে শুধু ‘নেতা’দের কথা বলছি এই কারণে যে আমজনতা এই ভাষা-রাজনীতিতে খুব একটা প্রভাবিত হয়নি। তারা আপন মাতৃভাষাতেই কথা বলত। জীবন পরিচালনায় সেটুকুই যথেষ্ট ছিল।
পাকিস্তান সৃষ্টির পর রাষ্ট্রভাষা প্রসঙ্গটি জোরালো ভিত্তি পায়। কিন্তু তার আগেও যে বাংলা ভাষাকে জাতীয় ভাষা করার ভাবনা নেতাদের কারও মাথায় ছিল না, এমনটা ভাবাও ঠিক নয়। ১৯১১ সালে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী রংপুরে অনুষ্ঠিত এক প্রাদেশিক সম্মেলনে ভারতের অন্যতম ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরেন। ১৯১৮ সালে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষাকে অবিভক্ত ভারতের রাষ্ট্রভাষার মর্যাদাদানের দাবি জানান। সৈয়দ নওয়াব আলীই ১৯২১ সালে ব্রিটিশ সরকারের কাছে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য লিখিত প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।
পাকিস্তান স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়ার আগেই বাংলার পত্রপত্রিকায় বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচনা হয়। ভাষা হিসেবে বাংলার গ্রহণযোগ্যতা কেন বেশি, সে আলোচনায় যোগ দেন বিশিষ্ট পণ্ডিতেরা। করাচিতে ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে কংগ্রেস পার্টির সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত দুটি সংশোধনী প্রস্তাব আনেন। একটি হলো, গণপরিষদের অন্তত একটি অধিবেশন ঢাকায় হোক। অন্যটি হলো, অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দু ও ইংরেজির সঙ্গে বাংলাকেও গণ্য করা হোক। মুসলিম লীগ এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে। বাংলার মুসলিম লীগ নেতারাও সেই বিরোধিতায় যোগ দেয়। এমনকি পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন বলেন, পূর্ব বাংলার অধিকাংশ মানুষই উর্দুর পক্ষে। এতে প্রচণ্ড আলোড়ন ওঠে বঙ্গীয় সমাজে। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাব গণপরিষদে বাতিল হয়ে যায়। দৈনিক আজাদে খাজা নাজিমুদ্দিনের কথার প্রতিবাদ করে বলা হয়, ‘খাওয়াজা সাহেব কবে রাষ্ট্রভাষার ব্যাপারে পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসীদের গণভোট গ্রহণ করেছিলেন, তাহা আমরা জানি না। আমাদের মতে, তাঁর উপরোক্ত উক্তি মোটেও সত্য নয়।’
১৯৪৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা গণপরিষদের সিদ্ধান্ত ও মুসলিম লীগ সদস্যদের আচরণের তীব্র নিন্দা করে। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ, বিভিন্ন ছাত্রাবাস ও তমদ্দুন মজলিসের উদ্যোগে সভা হয় এবং ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ পুনর্গঠিত হয়। ১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলন তখন থেকেই শক্তিশালী হতে থাকে।
হিন্দি না উর্দু—জাতীয় ভাষা কোনটা হবে, এ নিয়ে বিতর্ক চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। হিন্দু নেতারা চাইছিলেন হিন্দি হোক ভারতের জাতীয় ভাষা, আর মুসলমান নেতারা চাইছিলেন জাতীয় ভাষা হোক উর্দু। ভারত আর পাকিস্তানে দেশটা বাঁটোয়ারা হয়ে যাওয়ার অনেক আগের কথা সেটা। বাংলা প্রসঙ্গটি তখন সেভাবে আসেনি। আসার কথাও না। সমগ্র ভারতবর্ষে হিন্দু ও মুসলমান নেতারা প্রধানত জাতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি ও উর্দু নিয়েই ভেবেছেন। আমরা সব সময় সাধারণ মানুষের কথা না বলে শুধু ‘নেতা’দের কথা বলছি এই কারণে যে আমজনতা এই ভাষা-রাজনীতিতে খুব একটা প্রভাবিত হয়নি। তারা আপন মাতৃভাষাতেই কথা বলত। জীবন পরিচালনায় সেটুকুই যথেষ্ট ছিল।
পাকিস্তান সৃষ্টির পর রাষ্ট্রভাষা প্রসঙ্গটি জোরালো ভিত্তি পায়। কিন্তু তার আগেও যে বাংলা ভাষাকে জাতীয় ভাষা করার ভাবনা নেতাদের কারও মাথায় ছিল না, এমনটা ভাবাও ঠিক নয়। ১৯১১ সালে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী রংপুরে অনুষ্ঠিত এক প্রাদেশিক সম্মেলনে ভারতের অন্যতম ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরেন। ১৯১৮ সালে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষাকে অবিভক্ত ভারতের রাষ্ট্রভাষার মর্যাদাদানের দাবি জানান। সৈয়দ নওয়াব আলীই ১৯২১ সালে ব্রিটিশ সরকারের কাছে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য লিখিত প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।
পাকিস্তান স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়ার আগেই বাংলার পত্রপত্রিকায় বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচনা হয়। ভাষা হিসেবে বাংলার গ্রহণযোগ্যতা কেন বেশি, সে আলোচনায় যোগ দেন বিশিষ্ট পণ্ডিতেরা। করাচিতে ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে কংগ্রেস পার্টির সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত দুটি সংশোধনী প্রস্তাব আনেন। একটি হলো, গণপরিষদের অন্তত একটি অধিবেশন ঢাকায় হোক। অন্যটি হলো, অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দু ও ইংরেজির সঙ্গে বাংলাকেও গণ্য করা হোক। মুসলিম লীগ এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে। বাংলার মুসলিম লীগ নেতারাও সেই বিরোধিতায় যোগ দেয়। এমনকি পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন বলেন, পূর্ব বাংলার অধিকাংশ মানুষই উর্দুর পক্ষে। এতে প্রচণ্ড আলোড়ন ওঠে বঙ্গীয় সমাজে। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাব গণপরিষদে বাতিল হয়ে যায়। দৈনিক আজাদে খাজা নাজিমুদ্দিনের কথার প্রতিবাদ করে বলা হয়, ‘খাওয়াজা সাহেব কবে রাষ্ট্রভাষার ব্যাপারে পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসীদের গণভোট গ্রহণ করেছিলেন, তাহা আমরা জানি না। আমাদের মতে, তাঁর উপরোক্ত উক্তি মোটেও সত্য নয়।’
১৯৪৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা গণপরিষদের সিদ্ধান্ত ও মুসলিম লীগ সদস্যদের আচরণের তীব্র নিন্দা করে। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ, বিভিন্ন ছাত্রাবাস ও তমদ্দুন মজলিসের উদ্যোগে সভা হয় এবং ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ পুনর্গঠিত হয়। ১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলন তখন থেকেই শক্তিশালী হতে থাকে।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মওলানা ভাসানীকে সভাপতি এবং শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন শেখ মুজিবুর রহমান জেলে ছিলেন, তাঁকে করা হয়েছিল দলের যুগ্ম সম্পাদক। পরবর্তী সময়ে শামসুল হক অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাওয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানকে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
৯ ঘণ্টা আগেআমাদের দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদসংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট কোনো আইনকানুন কিংবা বিধিবিধান নেই। তাহলে এই সরকারের মেয়াদ কত দিন হবে? একটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, সেই অভ্যুত্থানের চালিকাশক্তির আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী এই সরকার গঠিত ও ক্ষমতায়িত হয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগেভাই, ব্যানার ঠিক আছে? পোস্টার সোজা লাগছে তো? আরে না না, ওই কোনার ছেলেটা একটু ডান দিকে সরো—পোস্টারের অর্ধেক ঢাকা পড়ে গেছে। ক্যামেরায় হাসিটা ভালো আসছে তো? কেউ কি ‘লাইক’ বাড়ানোর মতো ছবি তুলেছে? এইসব কথাবার্তার মধ্য দিয়েই শুরু হয় আজকালকার মিছিল। কেউ আর চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে না—‘কার জন্য এই সংগ্রাম?’
৯ ঘণ্টা আগেকিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি কি জিলাপি খেতে চেয়েই বিপদে পড়লেন? নাকি জিলাপির সঙ্গে আরও কিছু তিনি খেতে চেয়েছিলেন, যে ব্যাপারে টেলিফোনের অন্য পাশের ছাত্রনেতা বলেছিলেন, ‘বিলটিল পাই, একটা অ্যামাউন্ট দেবো নে!’
৯ ঘণ্টা আগে