Ajker Patrika

আওয়ামী লীগ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ করেছে: শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯: ৫৩
আওয়ামী লীগ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ করেছে: শেখ হাসিনা

দেশে গণতন্ত্র নেই—বিএনপি ও কিছু বুদ্ধিজীবীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ করেছে। বৈশ্বিক করোনা ও অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।’ 

আজ শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।

দেশের গণতন্ত্র নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তোলেন, তাঁদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতন্ত্রের অভাবটা কোথায়? নাকি যারা এসব কথা বলেন, তাঁদের জরুরি অবস্থার সরকার, সামরিক শাসক এলে ভালো লাগে? তাঁদের একটু দাম বাড়ে। খোশামোদি-তোষামোদি করে। ওইটুকু পাওয়ার লোভে ব্যক্তিস্বার্থের জন্য তাঁরা দেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিটাই ধ্বংস করতে চায়।’

নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা ব্যক্তিদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা, জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেছে কে? আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা আসার পরে এবং আমাদের দলীয় প্রস্তাবে এগুলো ছিল। খালেদা জিয়া ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা দিয়ে ২০০৬ সালে ভোট করতে চেয়েছিল। এটা কেউ ভুলে যান নাই।’

ভুয়া ভোটার তালিকা দিয়ে ভোট করা মানে হলো ভোট চুরির চেষ্টা করা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় ওটাই তাঁদের কাছে গণতন্ত্র। জনগণের ভোট চুরি, অর্থ চুরি, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ—এগুলো থাকলেই তাঁদের কাছে গণতন্ত্র। না হলে গণতন্ত্র খুঁজতে যাবে কেন তারা।’

এক এগারোর সরকার আন্তর্জাতিক চাপ ও দেশের মানুষের আন্দোলনের কারণে নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সব সময় একই প্যারালালে নিয়ে আসা হতো। কিন্তু আওয়ামী লীগের শক্তি যে দেশের জনগণ, এটা অনেকেই ধারণাই করতে পারেনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ফলাফল কী? বিএনপি পেয়েছিল ৩০টা সিট (আসন)। এটা সবার মনে রাখা উচিত।’

২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি পায়। তাহলে পরবর্তী ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিএনপি কোন মুখে প্রশ্ন তোলে?

আওয়ামী লীগ উন্নয়নকাজের মাধ্যমে জনসমর্থন বাড়িয়েছে, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে বলে দাবি করেন টানা তিনবারের সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই উন্নতি হয়েছে। আমি জানি না, যাঁরা এখনো গণতন্ত্রের খোঁজ করেন, মনে হয় যেন দুরবিন দিয়ে ওনারা গণতন্ত্র দেখতেছেন।’

গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাড়ে তিন বছর ও আওয়ামী লীগের আমল ছাড়া দেশে গণতন্ত্র ছিল নাকি সেই প্রশ্ন করেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। মাঝের বছরগুলো গণতন্ত্র সেনানিবাসে বন্দী ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার আমলে তো সেনানিবাস থেকে চালানো হতো দেশ। তাহলে গণতন্ত্র বা জনগণের শক্তিটা কোথায়? জনগণের শক্তি ছিল না।’

সমালোচকদের বর্তমান সরকারের ১৪ বছর আর আগের বছরগুলোর সময়কালে বাংলাদেশের অবস্থা দেখতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ বাদ দিয়ে সেনাশাসকের পকেট থেকে গঠিত বিএনপি বা জাতীয় পার্টিতে গণতন্ত্রের চর্চা আছে নাকি তা জানতে চান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগই গঠনতন্ত্র মেনে সংগঠন করে। এখন পর্যন্ত গঠনতন্ত্র আমরা অনুসরণ করি। কিন্তু আর কোনো দল, বিশেষ করে সামরিক শাসকদের পকেট থেকে তৈরি হওয়া দলে সেটা পাবেন না।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাদের জন্ম হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, সামরিক শাসনের মধ্য দিয়ে, তারা আবার আমাদের গণতন্ত্রের ছবক দেয়, পরামর্শ দেয়, গণতন্ত্র নাকি আবার প্রতিষ্ঠিত করবে। মার্শাল ল দিয়ে, সারা রাত কারফিউ দিয়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, তারা গণতন্ত্রটা কীভাবে এবং কিসের দেয় সেটা বুঝি না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু মানুষ যারা নিজেদের বুদ্ধিজীবী, জ্ঞানী-গুণী বলে পরিচয় দেয়। তাদের মুখেও শুনি গণতন্ত্র নাকি আনতে হবে দেশে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, সামরিক শাসকেরা মার্শাল ল দিয়ে রাষ্ট্র চালিয়েছিল, সেটাকেই কি তারা গণতন্ত্র বলতে চান নাকি? ওইটাই কি গণতান্ত্রিক ধারা? তারা কি খোলাসা করে সেটা বলতে পারে? সেটা তো করে না।’

জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস বড় শক্তি বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে গড়ে তুলেছি বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নতি করেছে। যে বাংলাদেশ সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্ত, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়নের ছিল; আজকে সেই দেশ গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও বিশ্বে উন্নয়নের বিস্ময়। আওয়ামী লীগ একটানা ১৪ বছর ক্ষমতায় আছে বলেই সেই পরিবর্তন আনতে পেরেছি।’

করোনা মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় তড়িৎ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘অনেক সময় আমি মোবাইল ফোনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বলেছি, ফাইল পরে পাঠাও আগে মানুষ বাঁচাও। আমার কাছে মানুষ বাঁচানোটাই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করে। দুর্নীতি খোঁজে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেখানে মানুষ বাঁচানো, খাবারের ব্যবস্থা করা, যারা হাত পাততে পারে না তাঁদের বাঁচানো। এর থেকে আর কতটুকু বেশি সেবা দেশে আর কোন দলের নেতা-কর্মীরা দিতে পেরেছে? জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার আর কে সংরক্ষিত করতে পেরেছে? সেটাই আমি প্রশ্ন করি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফ্লাইটে অসুস্থ ব্যক্তিকে সহযাত্রীর চড়, তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ

শতকোটি টাকার পাওনা বকেয়া রেখেই ‘দেশ ছাড়লেন’ ফ্লাইট এক্সপার্টের মালিকেরা

‘অনিয়ম হয়নি’ বলায় এলজিইডি কর্মচারীকে পিটুনি

যুক্তরাষ্ট্রের তুলায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কিছুটা শুল্ক ছাড় পাবে বাংলাদেশ: বিজিএমইএ

যেভাবে চীনা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভারতের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাকিস্তান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত