Ajker Patrika

এমভি আবদুল্লাহ থেকে নাবিকের ফোন, সবাইকে এক স্থানে রাখা হয়েছে

সবুর শুভ, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৪, ১৯: ০০
Thumbnail image

বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ার ছয় দিন হলো। জাহাজ ও ২৩ নাবিককে উদ্ধারে দস্যু পক্ষ ও জাহাজ মালিকপক্ষের তরফে নতুন কোনো তথ্য নেই। জাহাজের সর্বশেষ অবস্থানেরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। তবে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহর এক নাবিকের সঙ্গে জাহাজ মালিকপক্ষের মোবাইল ফোনে সর্বশেষ কথা বলার তথ্য পাওয়া গেছে। 

গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ) রাত ৮টায় ওই নাবিকের সঙ্গে কথা বলার তথ্য দিয়ে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের মুখপাত্র মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘রাত ৮টায় এমভি আবদুল্লাহর এক নাবিকের সঙ্গে আমাদের সর্বশেষ মোবাইলে কথা হয়েছে। ২৩ নাবিকের সকলে ভালো আছেন। তবে দস্যুরা তাঁদের এক জায়গায় জড়ো করে রেখেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি ওই নাবিকের নাম প্রকাশ করতে চাননি।’ 

এদিকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের সর্বশেষ অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাত ৮টার দিকে সোমালিয়ার গ্যারাকাদ উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল সমান ১ দশমিক ৮৫২ কিলোমিটার) দূরে দস্যুরা প্রথমে জাহাজটি নোঙর করেছিল। দস্যুরা আবার সেখান থেকে নোঙর তুলে শুক্রবার (১৫ মার্চ) গ্যারাকাদ উপকূল থেকে ৪৫ থেকে ৫০ নটিক্যাল মাইলে উত্তর দিকে অবস্থান নেয়। উপকূলবর্তী গদবজিরান নামক স্থান থেকে মাত্র চার নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটির সর্বশেষ অবস্থান ছিল। স্যাটেলাইট ট্রেকিং থেকে কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও উল্লিখিত নাবিকের মোবাইলে ফোনে আলাপনের বরাত দিয়ে মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, জাহাজটির সর্বশেষ অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

এদিকে ভারতীয় নৌবাহিনী নিজেদের জাহাজ ও হেলিকপ্টার দিয়ে দস্যুদের চ্যালেঞ্জ করার পর ঘনঘন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের অবস্থান পরিবর্তন করে তারা। এরই মধ্যে মাল্টার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ভারতীয় নৌবাহিনী দস্যুদের কবজা থেকে মুক্ত করার পর দস্যুদের মাঝে অস্থিরতা বিরাজ করতে পারে বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন। এ কারণে দস্যুদের স্থির হতে আরও কিছুটা সময় নেবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। 

ফলে মুক্তিপণের কোনো দেনদরবারের কথা এখনো সামনে আসছে না। এদিকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক লবিস্টদের সঙ্গে মুক্তিপণের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা সেরে ফেলেছে বলে জানিয়েছেন এসআর শিপিংয়ের মুখপাত্র মো. মিজানুল ইসলাম। যাতে ওই জাহাজে থাকা ২৩ নাবিককে উদ্ধারে সময়ক্ষেপণ না হয়। তিনি বলেন, ‘রোববার (১৭ মার্চ) পুরো দিন দস্যুদের কাছ থেকে কোনো সাড়া আসেনি। আমরা অপেক্ষায় আছি।’ 

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) থেকে সোমালি দস্যুদের কবজায় যায় এসআর শিপিংয়ের কয়লাবোঝাই এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি। এর পর থেকে এ জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের আত্মীয়স্বজনদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়ে যায়। কখন কী খবর আসে, তা নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে দিন যাচ্ছে তাদের। কবে তাঁরা নিরাপদে উদ্ধার হবেন, তা নিয়েও চিন্তিত পরিবারের লোকজন। 

এ বিষয়ে ওই জাহাজের চিফ অফিসার মো. আতিক উল্লাহ খানের চাচাতো ভাই মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছি।’ জিম্মি ২৩ নাবিককে দ্রুত উদ্ধারে সবাইকে আন্তরিকভাবে তৎপর হওয়ার ওপর জোর দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত