Ajker Patrika

৫ জেলায় দুর্ঘটনায় নিহত ১১

সংঘর্ষে ছাদ উড়ে যাওয়া বাস চলল ৫ কিমি

  • মুন্সিগঞ্জে পরপর দুটি দুর্ঘটনার পরও বাস থামাচ্ছিলেন না চালক।
  • হবিগঞ্জে এক দুর্ঘটনায় চার শ্রমিক নিহত। চার জেলায় নিহত ৭।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ। কিন্তু এরপরও না থামিয়ে বাসটি চালিয়ে নেন চালক। পরে যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের রোষের মুখে বাস থামিয়ে পালিয়ে যান চালক। গতকাল সকালে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার সমষপুরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ। কিন্তু এরপরও না থামিয়ে বাসটি চালিয়ে নেন চালক। পরে যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের রোষের মুখে বাস থামিয়ে পালিয়ে যান চালক। গতকাল সকালে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার সমষপুরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পরপর দুটি দুর্ঘটনায় উড়ে যায় বাসের ছাদ। বাসে যাত্রী ছিলেন ৬০ জন। আহতও হন বেশ কয়েকজন। তবে এরপরও বাস থামাননি চালক। ছাদবিহীন বাস বেপরোয়া গতিতে চালিয়েছেন প্রায় ৫ কিলোমিটার। এরপর যাত্রী ও ওই পথে চলা অন্যদের রোষের মুখ বাস থামিয়ে পালিয়ে যান চালক।

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার সমষপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জের মাধবপুরে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে চার শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চার জেলায় দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছেন।

মুন্সিগঞ্জের ওই দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বরিশালগামী বরিশাল এক্সপ্রেসের বাসটি প্রথমে ধাক্কা দেয় মাইক্রোবাসে। তখন তেমন কিছু হয়নি। এর ২ মিনিট পরে বাসটির সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষ হয়। উড়ে যায় বাসের ছাদ। যাত্রীদের কথা চিন্তা না করে এরপরও বাসটি চালিয়ে যাচ্ছিলেন চালক।

বাসযাত্রী আহমেদ আলী বলেন, ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় বরিশাল এক্সপ্রেসের বাসটি ছেড়ে আসে। বরিশালের উদ্দেশে ছাড়ার ঘণ্টাখানেক পর ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েক যাত্রী আহত হন। এরপরও চালক বাসটি থামাননি। আতঙ্কে বাসের ভেতরে থাকা যাত্রীরা কান্নাকাটি, চিৎকার করছিলেন। ওই অবস্থায় বাসচালক সেখান থেকে আরও ৫ কিলোমিটার পথ চালিয়ে যান।

আহমেদ আলী আরও বলেন, ‘বেপরোয়া চালককে কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে ছাদখোলা অবস্থায় দেখে জনরোষে পড়ে চালক বাসটি থামাতে বাধ্য হন। কিন্তু তিনি বাস থামিয়েই সেখান থেকে সটকে পড়েন। বাসে অন্তত ৬০ জন যাত্রী ছিল। আল্লাহর রহমতে আমরা প্রাণে বেঁচে যাই।’

হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুর্ঘটনায় কয়েকজন যাত্রী আহত হন। যাত্রীদের চিৎকারেও বাস থামাননি চালক। ছাদবিহীন বাস চালিয়ে পদ্মা সেতুতে না উঠে অভ্যন্তরীণ সড়কে ঢুকে যান। যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকার ছিদ্দিকীয়া মাদ্রাসার সামনে পথ রোধ করে বাসটি থামায়।

পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা বাসটি জব্দ করলেও চালক পালিয়ে গেছেন। শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুতর আহত একজনকে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

হবিগঞ্জে নিহত চার শ্রমিক

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বাখরনগর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। আহত হয়েছে শিশুসহ ১২ জন। হতাহত ব্যক্তিরা ইটভাটার শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্য। তাঁরা মুন্সিগঞ্জে একটি ইটভাটায় কাজ শেষে পিকআপ ভ্যানে সিলেটে ফিরছিলেন। পিকআপ ভ্যানটিতে ১৬-১৭ জন যাত্রী ছিল। নিহত ব্যক্তিরা হলেন হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার চমকপুরের ইসমাইল মিয়ার স্ত্রী মোস্তকিমা আক্তার (৩৫), রজব আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান (২৬), জহুর আলীর মেয়ে আয়েশা বেগম (৩০)। ঘটনাস্থল থেকে আরও এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর নাম-পরিচয় শনাক্ত হয়নি।

আরও সাতজন নিহত

ময়মনসিংহের ভালুকায় ভালুকা-গফরগাঁও সড়কের গোয়ারী নন্দিবাড়ী এলাকায় গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাইক্রোবাসের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে দুজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। নিহত দুজন হলেন পূর্ব ভালুকা মণ্ডলপাড়ার সহায়ক লাল মিয়া (৩২) এবং ভালুকা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রোকেয়া আক্তার (৪৮)।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার নয়নগাতী কবরস্থান এলাকায় ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সিমেন্টবোঝাই ট্রাক ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। এ দুজন হলেন পাবনার আমিনপুর থানার হরিনাথপুর গ্রামের মানিক চন্দ্র শীল (৪২) এবং একই গ্রামের আলম বাবুল (৪০)। মানিক মাইক্রোবাসের চালক।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নয়মাইল বাজারের কাছে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ আঞ্চলিক মহাসড়কে গতকাল ভোরে বাসের ধাক্কায় অ্যটোভ্যানের চালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের ভ্যানচালক আব্দুর রাজ্জাক (৭০) ও মোহাম্মদজমা গ্রামের খান্দারপাড়ার সরোয়ার হোসেন (৭৫)।

জামালপুরের জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ সড়কের গোবিন্দগঞ্জ বাজার এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুটি মোটরসাইকেলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে একজন মারা যান। আহত হন চারজন। নিহত আব্দুর রহিম (২৫) মেলান্দহ উপজেলার চর পলিসি গ্রামের বাসিন্দা।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আওয়ামী লীগকেও পথভ্রষ্ট করেছেন শেখ হাসিনা

গণহত্যার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের বিবৃতিতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত