সাইফুল মাসুম, ঢাকা
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাদশাহ ফয়সল ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ছিলেন মুজিবল হক (৮১)। ধানমন্ডি এলাকায় নিজস্ব ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। ঘরে আছেন স্ত্রী, তিন মেয়ে, এক ছেলে। সবাই উচ্চশিক্ষিত এবং স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। সবই আছে, অথচ কিছুই নেই। ২৫ বছরে ধরে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের প্রবীণ নিবাসে থাকেন এই তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন নাদিরা বেগম (৭১)। শিক্ষকতা করেছেন মাইলস্টোন স্কুলে। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় যৌবনে সংসার ছেড়ে থাকতে শুরু করেন রাজধানীর রামপুরায় বাবার বাড়িতে। বাবা বিল্ডিংয়ের একটি ফ্ল্যাটও দিয়েছেন। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা তাঁকে বিতাড়িত করে, বঞ্চিত করেছেন সম্পত্তি থেকেও। সেই থেকে (২০১১) বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই হয় তাঁর। এখন ঠিকানা তাঁর প্রবীণ হিতৈষী সংঘের ৪০৭ নম্বর কক্ষ।
সমাজ ও পরিবারের কাছে অবহেলার শিকার এই দুই প্রবীণের সঙ্গে কথা হয় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের প্রবীণ হিতৈষী সংঘের প্রবীণ নিবাসে। পরিবার ছেড়ে প্রবীণ নিবাসের কাটানো জীবন নিয়ে মুজিবল হক বলেন, ‘থাকতে থাকতে সয়ে গেছে, এখন আর খারাপ লাগে না। কষ্টের জীবন খাপ খাইয়ে নিয়েছি।’
অন্যদিকে নাদিরা বেগমের কণ্ঠে এখন কেবলই দীর্ঘশ্বাস। তিনি জানান, যৌবনে তিনি বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। লড়েছেন মেয়েদের অধিকারের জন্য। অনেক মেয়েকে পড়ালেখা শিখিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর অসহায় মুহূর্তে কেউ পাশে নেই। তাঁর আপন ভাইয়েরা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পাগল সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। বাসা ছাড়া করেছেন।
শুধু মুজিবল হক কিংবা নাদিরা বেগম নন, সমাজে এমন প্রবীণ অসহায় মানুষের সংখ্যা এখন অনেক। যৌবনে তাঁরা ছিলেন কর্মক্ষম, পরিবারের আয়ের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু জীবনের শেষ সময়ে হয়ে উঠছেন পরিবারের বোঝা। অনেকে প্রবীণদের করুণা বা দয়া-দাক্ষিণ্যের দৃষ্টিতে দেখে, অধিকারের দৃষ্টিতে দেখেন না। ভালো ব্যবহার ও যত্নের সঙ্গে সেবা পাওয়া যে প্রবীণদের অধিকার, তা ভুলতে বসেছে তরুণেরা।
প্রবীণদের অধিকার সুরক্ষায় আজকে পালিত হচ্ছে বিশ্ব প্রবীণ দিবস। ১৯৯০ সাল থেকে প্রতিবছর ১ অক্টোবর জাতিসংঘ আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালন করে আসছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল সমতা, সকল বয়সের প্রাপ্যতা’।
বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘের তথ্যমতে, বাংলাদেশে বর্তমানে দেড় কোটি প্রবীণ আছেন। এটা ২০২৫ সালে হয়ে যাবে দুই কোটি। ২০৫০ সালে এই সংখ্যাটা দাঁড়াবে সাড়ে চার কোটিতে। তখন দেশে শিশুদের চেয়ে প্রবীণদের সংখ্যা বেড়ে যাবে। ২০১৩ সালে সরকার জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা তৈরি করলেও পরিবার বা সমাজে এই নীতিমালা এখনো তেমন কার্যকর হয়নি। জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা অনুসারে, বাংলাদেশে ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের প্রবীণ বলে অভিহিত করা হয়। তবে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশসমূহে ৫৬ বছর বয়সী ব্যক্তিদের প্রবীণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
যৌথ পরিবার ভেঙে পড়ায় বার্ধক্যের সময় প্রবীণেরা অসহায় হয়ে পড়ছেন বলে মনে করেন বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘের উপপরিচালক বদরুল আহসান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগে সমাজে যৌথ পরিবারের সংখ্যা বেশি ছিল। তখন পরিবারের বয়স্ক মানুষেরাও বেশ যত্নে থাকতেন। এখন যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে যাচ্ছে। কর্মজীবনে সন্তানেরা দূরে থাকছেন, শেষ জীবনে মা বাবাকে দেখার মতো কেউ পাশে থাকে না। তাঁরা চরম অবহেলার শিকার হন।’
২০১৩ সালে জাতীয় সংসদে সাংসদ মুজিবুল হক চুন্নু পিতামাতার ভরণ-পোষণ সংক্রান্ত একটি বেসরকারি বিল উপস্থাপন করেন। তখন বিলটি সর্বসম্মতক্রমে কণ্ঠভোটে পাস হয়। পরে তা পিতামাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
সাংসদ মুজিবুল হক চুন্নু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সন্তানেরা পিতামাতার প্রতি সঠিক দায়িত্ব পালন করার জন্যই এই আইন করা হয়েছে। অনেক সন্তান সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে না। আবার অনেক সময় সন্তানদের সামর্থ্য থাকে না। তবে যেসব প্রবীণের কোনো আশ্রয় নেই, তাঁদের দায়িত্ব রাষ্ট্রের নেওয়া উচিত। আমি বৃদ্ধাশ্রমনীতির সঙ্গে দ্বিমত করি।’
প্রবীণদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি না পাল্টালে সমাজের এই দৃশ্যপট বদলাবে না বলে জানালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এ এস এম আতীকুর রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সামাজিক সাংস্কৃতিক দৃষ্টিতে প্রবীণদের বিষয়টা আমরা দেখি করুণা, অনুকম্পা বা দয়া দাক্ষিণ্যের দৃষ্টিতে। অধিকারের ভিত্তিতে দেখি না। প্রবীণদের নিয়ে সরকারের নীতিমালা ও আইন আমরা যদি সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে গ্রহণ না করি, বাস্তবায়ন না করি, তাহলে সরকার একা কিছু করতে পারে না। প্রবীণদের সম্মানের চোখে দেখুন এবং নিজের সফল বার্ধক্যের প্রস্তুতি নিন। আজকের প্রবীণদের চেয়ে, আগামীদিনের প্রবীণদের চ্যালেঞ্জ আরও অনেক বেশি হবে। সবার মনে রাখা উচিত প্রবীণেরা বাইরের কেউ নন। অথচ এই প্রবীণদের হাত ধরেই সবাই বড় হয়েছে।’
অপুষ্টিতে ভুগছেন এক-চতুর্থাংশ প্রবীণ: দেশে পুষ্টিহীনতার মাত্রা ক্রমেই কমে এলেও প্রবীণদের মধ্যে এখনো সেটি উদ্বেগজনক পর্যায়ে। দেশে বর্তমানে এক-চতুর্থাংশ প্রবীণই ভুগছেন অপুষ্টিতে। একই সঙ্গে পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন অর্ধেকের বেশি প্রবীণ জনগোষ্ঠী। ঢাকার উত্তরখান উপজেলার মুন্ডা, পোলারটেক ও ভাটুলিয়া গ্রামের ১২৫ জন প্রবীণের মধ্যে গবেষণা চালিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিকস বিভাগ এই গবেষণা চালিয়েছে। দেশের প্রবীণরা কী কী কারণে অপুষ্টিতে ভোগেন তা খুঁজতেই মূলত এই গবেষণা চালানো হয়।
গবেষণায় বলা হয় শিক্ষার অভাব, বিষণ্ণতা, মুখ ও দাঁতের খারাপ স্বাস্থ্য, বিশেষ খাদ্য পরিহারে অভ্যাস এবং অসংক্রামক রোগের উপস্থিতি পুষ্টিহীনতায় ভোগার প্রধান কারণ। আর এতে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি ভোগেন। প্রবীণ পুরুষদের অপুষ্টিতে ভোগার হার যেখানে ২২ শতাংশ, সেখানে ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ নারী ভোগেন পুষ্টিহীনতায়।
গবেষণার অন্যতম সদস্য ডাক কে এম তৌহিদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, পুষ্টি ক্ষেত্রে আমাদের প্রবীণদের অবস্থা কোন পর্যায়ে সেটি বের করতেই এই গবেষণাটি চালিয়েছি আমরা। ছোট হলেও এটি সামনে জাতীয় পর্যায়ে গবেষণার পথ খুলে দেবে। শহরেই যদি পুষ্টিহীনতার হার এতটা হয়, তাহলে গ্রাম পর্যায়ে আরও আশঙ্কাজনক হবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাদশাহ ফয়সল ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ছিলেন মুজিবল হক (৮১)। ধানমন্ডি এলাকায় নিজস্ব ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। ঘরে আছেন স্ত্রী, তিন মেয়ে, এক ছেলে। সবাই উচ্চশিক্ষিত এবং স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। সবই আছে, অথচ কিছুই নেই। ২৫ বছরে ধরে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের প্রবীণ নিবাসে থাকেন এই তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন নাদিরা বেগম (৭১)। শিক্ষকতা করেছেন মাইলস্টোন স্কুলে। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় যৌবনে সংসার ছেড়ে থাকতে শুরু করেন রাজধানীর রামপুরায় বাবার বাড়িতে। বাবা বিল্ডিংয়ের একটি ফ্ল্যাটও দিয়েছেন। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা তাঁকে বিতাড়িত করে, বঞ্চিত করেছেন সম্পত্তি থেকেও। সেই থেকে (২০১১) বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই হয় তাঁর। এখন ঠিকানা তাঁর প্রবীণ হিতৈষী সংঘের ৪০৭ নম্বর কক্ষ।
সমাজ ও পরিবারের কাছে অবহেলার শিকার এই দুই প্রবীণের সঙ্গে কথা হয় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের প্রবীণ হিতৈষী সংঘের প্রবীণ নিবাসে। পরিবার ছেড়ে প্রবীণ নিবাসের কাটানো জীবন নিয়ে মুজিবল হক বলেন, ‘থাকতে থাকতে সয়ে গেছে, এখন আর খারাপ লাগে না। কষ্টের জীবন খাপ খাইয়ে নিয়েছি।’
অন্যদিকে নাদিরা বেগমের কণ্ঠে এখন কেবলই দীর্ঘশ্বাস। তিনি জানান, যৌবনে তিনি বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। লড়েছেন মেয়েদের অধিকারের জন্য। অনেক মেয়েকে পড়ালেখা শিখিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর অসহায় মুহূর্তে কেউ পাশে নেই। তাঁর আপন ভাইয়েরা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পাগল সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। বাসা ছাড়া করেছেন।
শুধু মুজিবল হক কিংবা নাদিরা বেগম নন, সমাজে এমন প্রবীণ অসহায় মানুষের সংখ্যা এখন অনেক। যৌবনে তাঁরা ছিলেন কর্মক্ষম, পরিবারের আয়ের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু জীবনের শেষ সময়ে হয়ে উঠছেন পরিবারের বোঝা। অনেকে প্রবীণদের করুণা বা দয়া-দাক্ষিণ্যের দৃষ্টিতে দেখে, অধিকারের দৃষ্টিতে দেখেন না। ভালো ব্যবহার ও যত্নের সঙ্গে সেবা পাওয়া যে প্রবীণদের অধিকার, তা ভুলতে বসেছে তরুণেরা।
প্রবীণদের অধিকার সুরক্ষায় আজকে পালিত হচ্ছে বিশ্ব প্রবীণ দিবস। ১৯৯০ সাল থেকে প্রতিবছর ১ অক্টোবর জাতিসংঘ আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালন করে আসছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল সমতা, সকল বয়সের প্রাপ্যতা’।
বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘের তথ্যমতে, বাংলাদেশে বর্তমানে দেড় কোটি প্রবীণ আছেন। এটা ২০২৫ সালে হয়ে যাবে দুই কোটি। ২০৫০ সালে এই সংখ্যাটা দাঁড়াবে সাড়ে চার কোটিতে। তখন দেশে শিশুদের চেয়ে প্রবীণদের সংখ্যা বেড়ে যাবে। ২০১৩ সালে সরকার জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা তৈরি করলেও পরিবার বা সমাজে এই নীতিমালা এখনো তেমন কার্যকর হয়নি। জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা অনুসারে, বাংলাদেশে ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের প্রবীণ বলে অভিহিত করা হয়। তবে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশসমূহে ৫৬ বছর বয়সী ব্যক্তিদের প্রবীণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
যৌথ পরিবার ভেঙে পড়ায় বার্ধক্যের সময় প্রবীণেরা অসহায় হয়ে পড়ছেন বলে মনে করেন বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘের উপপরিচালক বদরুল আহসান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগে সমাজে যৌথ পরিবারের সংখ্যা বেশি ছিল। তখন পরিবারের বয়স্ক মানুষেরাও বেশ যত্নে থাকতেন। এখন যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে যাচ্ছে। কর্মজীবনে সন্তানেরা দূরে থাকছেন, শেষ জীবনে মা বাবাকে দেখার মতো কেউ পাশে থাকে না। তাঁরা চরম অবহেলার শিকার হন।’
২০১৩ সালে জাতীয় সংসদে সাংসদ মুজিবুল হক চুন্নু পিতামাতার ভরণ-পোষণ সংক্রান্ত একটি বেসরকারি বিল উপস্থাপন করেন। তখন বিলটি সর্বসম্মতক্রমে কণ্ঠভোটে পাস হয়। পরে তা পিতামাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
সাংসদ মুজিবুল হক চুন্নু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সন্তানেরা পিতামাতার প্রতি সঠিক দায়িত্ব পালন করার জন্যই এই আইন করা হয়েছে। অনেক সন্তান সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে না। আবার অনেক সময় সন্তানদের সামর্থ্য থাকে না। তবে যেসব প্রবীণের কোনো আশ্রয় নেই, তাঁদের দায়িত্ব রাষ্ট্রের নেওয়া উচিত। আমি বৃদ্ধাশ্রমনীতির সঙ্গে দ্বিমত করি।’
প্রবীণদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি না পাল্টালে সমাজের এই দৃশ্যপট বদলাবে না বলে জানালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এ এস এম আতীকুর রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সামাজিক সাংস্কৃতিক দৃষ্টিতে প্রবীণদের বিষয়টা আমরা দেখি করুণা, অনুকম্পা বা দয়া দাক্ষিণ্যের দৃষ্টিতে। অধিকারের ভিত্তিতে দেখি না। প্রবীণদের নিয়ে সরকারের নীতিমালা ও আইন আমরা যদি সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে গ্রহণ না করি, বাস্তবায়ন না করি, তাহলে সরকার একা কিছু করতে পারে না। প্রবীণদের সম্মানের চোখে দেখুন এবং নিজের সফল বার্ধক্যের প্রস্তুতি নিন। আজকের প্রবীণদের চেয়ে, আগামীদিনের প্রবীণদের চ্যালেঞ্জ আরও অনেক বেশি হবে। সবার মনে রাখা উচিত প্রবীণেরা বাইরের কেউ নন। অথচ এই প্রবীণদের হাত ধরেই সবাই বড় হয়েছে।’
অপুষ্টিতে ভুগছেন এক-চতুর্থাংশ প্রবীণ: দেশে পুষ্টিহীনতার মাত্রা ক্রমেই কমে এলেও প্রবীণদের মধ্যে এখনো সেটি উদ্বেগজনক পর্যায়ে। দেশে বর্তমানে এক-চতুর্থাংশ প্রবীণই ভুগছেন অপুষ্টিতে। একই সঙ্গে পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন অর্ধেকের বেশি প্রবীণ জনগোষ্ঠী। ঢাকার উত্তরখান উপজেলার মুন্ডা, পোলারটেক ও ভাটুলিয়া গ্রামের ১২৫ জন প্রবীণের মধ্যে গবেষণা চালিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিকস বিভাগ এই গবেষণা চালিয়েছে। দেশের প্রবীণরা কী কী কারণে অপুষ্টিতে ভোগেন তা খুঁজতেই মূলত এই গবেষণা চালানো হয়।
গবেষণায় বলা হয় শিক্ষার অভাব, বিষণ্ণতা, মুখ ও দাঁতের খারাপ স্বাস্থ্য, বিশেষ খাদ্য পরিহারে অভ্যাস এবং অসংক্রামক রোগের উপস্থিতি পুষ্টিহীনতায় ভোগার প্রধান কারণ। আর এতে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি ভোগেন। প্রবীণ পুরুষদের অপুষ্টিতে ভোগার হার যেখানে ২২ শতাংশ, সেখানে ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ নারী ভোগেন পুষ্টিহীনতায়।
গবেষণার অন্যতম সদস্য ডাক কে এম তৌহিদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, পুষ্টি ক্ষেত্রে আমাদের প্রবীণদের অবস্থা কোন পর্যায়ে সেটি বের করতেই এই গবেষণাটি চালিয়েছি আমরা। ছোট হলেও এটি সামনে জাতীয় পর্যায়ে গবেষণার পথ খুলে দেবে। শহরেই যদি পুষ্টিহীনতার হার এতটা হয়, তাহলে গ্রাম পর্যায়ে আরও আশঙ্কাজনক হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের চিকিৎসায় বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনা হচ্ছে। এ জন্য নির্দিষ্ট বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। বরাদ্দের সিংহভাগ অর্থ যাতে চিকিৎসার কাজে ব্যয় করা যায়, তার জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কর মওকুফ চায় সরকার। গত ২৮ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে এ দাবি জানিয়েছে মুক্তি
১৯ মিনিট আগেচলতি বছর বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের তালিকা ঘোষণার পর কয়েকটি নাম নিয়ে ব্যাপার সমালোচনা হয়। পরে তিনজনের নাম বাদ দিয়ে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে আজ শনিবার জাতীয় কবিতা উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
২ ঘণ্টা আগেদুই দিনব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসবের উদ্বোধন হলো। আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে উৎসবের উদ্বোধন করেন শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম। ‘স্বাধীনতা সাম্য সম্প্রীতির জন্য কবিতা’ স্লোগানে শুরু হলো কবিদের এই মিলনমেলা।
৩ ঘণ্টা আগেশনিবার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচার সেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
৩ ঘণ্টা আগে