Ajker Patrika

নিজ স্বার্থে বিদেশিরা বিভিন্ন ফন্দিফিকির করে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ জুন ২০২২, ২১: ২৪
Thumbnail image

পদ্মা সেতু ইস্যুতে বিশ্বব্যাংককে ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘বিদেশিরা কিছু বললেই আমরা মনে করি সেটি সত্যি। বিদেশিরা নিজেদের স্বার্থে বিভিন্ন ধরনের ফন্দিফিকির করে।’ 

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘পদ্মা সেতুর স্বপ্নপূরণ—শেখ হাসিনার অবদান বিশ্বজুড়ে গর্বিত আজ বাংলাদেশের কোটি প্রাণ’ শীর্ষক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী পরবর্তী আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। 

বর্তমানে রাষ্ট্রীয় সফরে বিদেশ অবস্থান করায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশিরা কিছু বললেই সেটা সত্য নয়। বিদেশিরা অনেক সময় অনেক ফন্দিফিকির করে। অনেক কিছু স্বার্থের জন্য তারা করে। তারা নিষেধাজ্ঞা দেয়। ভেতরে এবং বাইরে বিদেশিদের রূপের ভিন্নতা রয়েছে। আমাদের বহু পণ্ডিত বিদেশিদের কথায় বহু লাফালাফি করেছেন। তাঁদের বোধ হয় সেটা ভাববার সময় এসেছে। বিদেশিদের কথায় শুধু লাফালাফি করা ঠিক নয়।’ 

মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে যারা আমাদের প্যাঁচে ফেলা এবং পেছনে টানার চেষ্টা করেছেন সেটা থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। যারা আমাদের অপমান করেছে, যারা আমাদের অপবাদ দিয়েছে তাদের উচিত ক্ষমা চাওয়া। স্বেচ্ছায় তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। ক্ষমা চেয়ে গ্লানিটা দূর করা উচিত। সেই সঙ্গে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত।’ 

এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের দেশের জন্য যেটা মঙ্গল হয়, আমাদের জনগণের জন্য যেটা শুভ হয় সেটাই আমরা করি। বিদেশিদের কথায় অনেকে লাফালাফি করেন। আমাদের বহু পণ্ডিত এসব করেন। পদ্মা সেতু আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছে, আমরা আমাদের মানুষের কথা চিন্তা করি। আমাদের দেশের অবস্থান বিবেচনা করি।’ 

অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতুর নিয়ে বিশ্বব্যাংকের কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মসিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘যেকোনো বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজন সাহস ও জনকল্যাণ। প্রধানমন্ত্রীর সাহস ও জনকল্যাণ প্রচেষ্টা ছিল। এটা না থাকলে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হতো না।’ 

এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেই পদ্মা সেতু তৈরি সম্ভব হয়েছে। এলডিসিভুক্ত অনেক দেশই বিদেশি সংস্থার ঋণের বেড়াজালে পড়েছে। পদ্মা সেতু তৈরির জন্য আমাদেরও এ বেড়াজালে পড়তে হয়েছিল। তবে সকল বেড়াজাল ভেদ করে সেতু তৈরি সম্ভব হয়েছে।’ 

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন ছিল লিটমাস টেস্ট। বাংলাদেশ সেটাই পাস করেছে। পদ্মা সেতু এখন নতুন বাংলাদেশের পরিচয়। পদ্মা সেতু এখন নতুন ব্র্যান্ডিংয়ের নাম।’ 

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘পদ্মা সেতু ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সেই সময়ে টক শোতে সঠিক তথ্য না জেনে শুনে অনেকেই কথা বলেছেন। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান উড়ো চিঠিও বিশ্বাস করেছে। তারা অর্থ সহায়তা থেকে সরে গেছে। অনেক ঘটনাই ঘটেছে। তবে এই সেতু নিয়ে যারা বিরোধিতা করেছিলেন, তারাও এখন খুশি।’ 

সেলিম রায়হান বলেন, ‘পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তের ফসল। এটা একটি মেগা ফিজিক্যাল স্ট্রাকচার। এখন আমাদের প্রয়োজন মেগা সোশ্যাল স্ট্রাকচার বাস্তবায়ন। সেটা সম্ভব হলে দেশের মানুষ আরও সুফল পাবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত