Ajker Patrika

রাজধানীর সবাই ডেঙ্গুর ভয়াবহ ঝুঁকিতে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর 

আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৩, ২১: ৫৪
রাজধানীর সবাই ডেঙ্গুর ভয়াবহ ঝুঁকিতে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর 

ডেঙ্গু ঝুঁকিতে রয়েছেন রাজধানীর সব মানুষ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৮টি ওয়ার্ডের মানুষ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। ঝুঁকির পরিমাণ বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। 

আজ মঙ্গলবার বিকেলে মহাখালীর স্বাস্থ্য ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রোগ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় এডিসের মৌসুম-পূর্ব জরিপ প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

এ বছর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৩ হাজার ১৪৯টি বাড়ি পরিদর্শন করে, তার মধ্যে ৫৪৯টি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। উত্তরে ১৮ দশমিক ২১ শতাংশ এবং দক্ষিণে ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এর আগে নির্মাণাধীন বাড়িতে লার্ভা বেশি পাওয়া গেলেও এবার বেশি পাওয়া গেছে বহুতল ভবনে। 

নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষ যেসব জায়গায় বসবাস করেন সেখানে আমরা ১২ শতাংশ এবং শূন্য জমি যেখানে কোনো স্থাপনা নেই সেখানে আমরা ৫ শতাংশতে পজিটিভ পেয়েছি।’ 

উত্তরে ৪০টি এবং দক্ষিণে ৫৮টি ওয়ার্ডে পরিদর্শন করার কথা জানিয়ে নাজমুল ইসলাম বলেন, প্রাক মৌসুম বা মৌসুম চলাকালীন যদি ব্লুটো ইনডেক্স ২০ ছাড়িয়ে যায়, তাহলে সামনে বিপদ হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা মনে করিয়ে দেয়। উত্তরে আমরা ৪০টির মধ্যে ২৭টি ওয়ার্ডে ব্লুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি পেয়েছি। দক্ষিণে ৫৮টি ওয়ার্ডের মাঝে বেশি পেয়েছি ২৮ টিতে। পরিসংখ্যান বলে গোটা ঢাকা সিটিই ঝুঁকির মধ্যে আছে। হাউস ইনডেক্স ১০-এর নিচে থাকার কথা কিন্তু সেটি আমরা উত্তরে ৩৫টি ওয়ার্ডে পেয়েছি ১০-এর বেশি এবং দক্ষিণে ৪৫টি ওয়ার্ডে ১০-এর বেশি। কাজেই উত্তর-দক্ষিণ যেভাবেই আমরা বিবেচনা করি না কেন পুরো ঢাকা মেট্রোপলিটন সিটিতেই এডিসের ব্যাপক উপস্থিতি। আমার সবাই কিন্তু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি।’ 
 
ঢাকা উত্তরের মধ্যে—২,৩, ৫,৬, ১০,১৩, ১৪,১৫, ১৬,১৭, ১৮,১৯, ২০,২১, ২২,২৩, ২৫,২৬, ২৭,২৮, ২৯,৩০, ৩১,৩৩, ৩৫,৩৭ ও ৩৮ নং ওয়ার্ড বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এসব ওয়ার্ডে ব্লুটো ইনডেক্স ২০ এর বেশি। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণে—২,৩, ৪,৫, ৬,৯, ১১,১২, ১৩,১৫, ১৬,১৮, ১৯,২২, ২৩,২৬, ৩৩,৩৪, ৩৬,৪১, ৪৪,৪৬, ৪৮,৫০, ৫১,৫৪, ৫৫ ও ৫৬ নং ওয়ার্ড বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।  

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘যেসব এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে সেসব জায়গাগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি। আমাদের হাসপাতালগুলোতে দেখতে পাচ্ছি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। যেসব হাসপাতালে সমস্যা আছে আমরা চেষ্টা করছি জনবল এবং কারিগরি সহায়তা দেওয়ার। সারা দেশের মধ্যে চট্টগ্রামে বেশি রোগী দেখতে পাচ্ছি।’ 
 
আইইডিসিআর–এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘গত বছর ছিল ডেন থ্রি এবং ডেন ফোর। এ বছর ডেন টু আর ডেন থ্রি। চারটি সেরোটাইপ গত বছর ছিল না। কক্সবাজারে ডেন ওয়ানের একটা কেইস পাওয়া গিয়েছিল। ব্যাপারটা হচ্ছে যে পুরো বাংলাদেশের যদি চিত্র চিন্তা করি তাহলে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম থাকতে পারে। যেহেতু আমরা বিভিন্ন হসপিটাল থেকে স্যাম্পেল যেগুলো পাই সেটার ওপরে সেরোটাইপ করে থাকি। ওইটার ভিত্তিতেই আমরা এবারে বলতে পারছি যে ডেন টু ৬২ শতাংশ এবং ডেন থ্রি ৩৮ শতাংশ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত