Ajker Patrika

ট্রাভেল এজেন্সি অধ্যাদেশ বাতিল ও সংসদে আইন পর্যালোচনার দাবি

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিল দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিল দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ-২০২৫ কার্যকর হলে প্রায় ৫ হাজার ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে। এমন তথ্য জানিয়ে অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সদস্য কল্যাণ ঐক্যজোট।

মানববন্ধনে সংগঠনের নেতারা বলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালের আইন এবং ২০২১ সালের সংশোধনী আইনের পরিবর্তে যে নতুন অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করেছে, তা বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রায় ৫ হাজার ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে। এতে এই খাতের মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কর্মহীন হয়ে পড়বেন, যা জাতীয় অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্যজোটের আহ্বায়ক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন টিপু বলেন, ‘নতুন অধ্যাদেশে প্রস্তাবিত অনেক সংশোধনী খাতের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিশেষ করে ধারা ৫-এ অন্য এজেন্সির কাছ থেকে টিকিট ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হলে সাধারণ এজেন্সিগুলো আর ব্যবসা চালাতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘দেশে প্রচলিত অধিকাংশ এজেন্সিরই এয়ারলাইনস থেকে সরাসরি টিকিট ইস্যুর সক্ষমতা নেই। অনলাইন ও অফলাইন সেবা পরিচালনায় ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জামানত রাখার প্রস্তাব ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য সম্পূর্ণ অবাস্তব।’

জালাল উদ্দিন টিপু আরও বলেন, ‘ধারা ৯-এ পরিবারের বাইরে ব্যবসা হস্তান্তর নিষিদ্ধ করা, এক ঠিকানায় রিক্রুটিং এজেন্টের কার্যক্রম সীমিত করা এবং বিনা শুনানিতে লাইসেন্স স্থগিত করার বিধানগুলো পুরো খাতকে অকার্যকর করে তুলবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী একই ঠিকানায় একাধিক ব্যবসার লাইসেন্স বৈধ। বহু রিক্রুটিং এবং হজ এজেন্সি দীর্ঘদিন একই অফিস থেকে টিকিট সেবা দিচ্ছে।’

সংগঠনের সদস্যসচিব মোহাম্মদ জুমান চৌধুরী বলেন, ‘এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, পরিবারগুলোর ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে যাবে।’

অনেক ছোট এজেন্সি ব্যাংক গ্যারান্টি সীমিত থাকায় বড় এজেন্সির কাছ থেকে টিকিট সংগ্রহ করে গ্রাহকদের সেবা দেয়। এটিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ ঘোষণা করা হলে তারা পুরোপুরি ব্যবসার বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কার কথা বলেন তিনি।

মোহাম্মদ জুমান চৌধুরী আরও বলেন, ২০২১ সালের আইনে নির্ধারিত শাস্তি সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে পাস হয়েছিল। সেটিকে হঠাৎ করে তিন বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানা পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব অযৌক্তিক ও অসংগত। দেশের প্রচলিত আইনে যেকোনো অপরাধের বিচার সম্ভব, তাই অতিরিক্ত কঠোর শাস্তির প্রয়োজন নেই।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার, সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম বাহার, আটাবের সাবেক মহাসচিব আসলাম খান, চিড়ার সাবেক সভাপতি হাবিব আলী, আটাব সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক গোফরান চৌধুরী, আল মাহমুদ ট্রাভেলসের আব্দুল কবির খান, ব্যবসায়ী এম এন এইচ খাদেম দুলাল ও মেজবাহ উদ্দিন সায়েদ।

বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে কোনো খাতে অধ্যাদেশ জারি করা হলে তা সাধারণত নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে জাতীয় সংসদে আলোচনা করে আইন সংশোধন করাই অধিক গ্রহণযোগ্য ও যৌক্তিক।

মানববন্ধন শেষে মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেয়।

স্মারকলিপিতে এতে অধ্যাদেশের বিভিন্ন ধারা ও উপধারার অসংগতি, অযৌক্তিক আর্থিক শর্ত, অন্য এজেন্সির কাছ থেকে টিকিট ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধকরণ, লাইসেন্স হস্তান্তর সীমাবদ্ধতা, রিক্রুটিং এজেন্টদের অফিস পরিচালনায় বাধা এবং অতিরিক্ত শাস্তির বিধান তুলে ধরা হয়।

প্রতিনিধি দল গেজেট প্রকাশের আগেই অনুমোদিত খসড়া বাতিল করে ট্রাভেল খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি অনুরোধ জানায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ধানের শীষের বাইরে কেউ নির্বাচন করলে কোনো কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারবে না: বিএনপি নেতা স্বপন

আজকের রাশিফল: প্রতিশোধের প্রবল ইচ্ছা জাগবে, আজ কিছু একটা হারাবেই

তিতুমীর কলেজে ছাত্রদল-শিবিরের সংঘর্ষ

মিস ইউনিভার্স বিজয়ীকে যে কারণে ‘ভুয়া’ বললেন পদত্যাগী বিচারক

প্রশাসন আমাদের কথায় উঠবে, বসবে, গ্রেপ্তার করবে: জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ