Ajker Patrika

নির্বাচন কমিশনের সংলাপের ফলাফল নিয়ে সংশয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নির্বাচন কমিশনের সংলাপের ফলাফল নিয়ে সংশয়

নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পর-বিরোধী অবস্থানের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন (ইসি) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে। নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে আজ শনিবার নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসি চূড়ান্ত সংলাপে বসতে চাইছে। বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ইসির সংলাপের এই উদ্যোগ কতটুকু সফল হবে, সে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এ ছাড়া ইসি এমন সময়ে এই উদ্যোগ নিয়েছে, যখন বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা কারাগারে কিংবা পালিয়ে আছেন।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, আজ শনিবার দুই দফায় সংলাপের জন্য ৪৪টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে ইসির অমন্ত্রণপত্রই পায়নি বিএনপি। তাই দলটিকে চিঠি দেওয়ার ঘটনাকে ‘লোকদেখানো’ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এ ছাড়া সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা নির্বাচন ও রাজনীতিসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করতে এবং সুপারিশ জানাতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় পাবে।

ইসির সংলাপ আয়োজন প্রসঙ্গে কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, এর মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে একটা আগাম ধারণা পেতে চায় কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য কারা কতটুকু এবং কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, সেই ধারণা পেতেই এই উদ্যোগ। একই সঙ্গে নিজেদের অবস্থানকেও যাচাই করতে চায় ইসি।

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো। এক দফা কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ হয়। এর পর থেকে বন্ধ আছে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। দলটির মহাসচিব এবং জ্যেষ্ঠ অনেক নেতাসহ সারা দেশের অসংখ্য নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। ধরপাকড় ও মামলার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অন্য নেতা-কর্মীরা।

সংলাপের চিঠি প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কিসের সংলাপ, কার জন্য সংলাপ? এটা লোকদেখানোর জন্য তামাশা হচ্ছে? দলের মহাসচিব কারাগারে, গুরুত্বপূর্ণ নেতারা ঘরছাড়া। মিথ্যা মামলা দিয়ে শারীরিক-মানসিকভাবে নাজেহাল করছেন, আর বিএনপিকে চিঠি পাঠাচ্ছেন! সরকারের নির্দেশেই সংলাপের নামে এই তামাশাগুলো করা হচ্ছে।’

বিএনপির কাছে সংলাপের চিঠি পাঠানোর সমালোচনা করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলামও। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি নোটিশ, সমন না। নির্বাচন কমিশন কি বিএনপির বিরুদ্ধে সমন জারি করে দিল নাকি? হাজিরা সমন!’ তিনি বলেন, ‘সংলাপের জন্য সমন জারি করে দেয় না, দাওয়াতপত্র দিতে হয়। দাওয়াতপত্র যাকে আমরা দিলাম তার বাড়িতে কোনো লোক না থাকলে সেই চিঠিটা বিলি হয়নি বলে ফেরত চলে আসবে। এভাবে সমনের মতো করে বাড়ির দরজায় ঝুলিয়ে দিয়ে সমনকে কার্যকর করা হয়। তাহলে কি ধরে নেব যে, বিএনপিকে আসলে ডাকা হয়নি, তাদের বাধ্য করার জন্য চিঠিটি দেওয়া হয়েছিল? এটি কিন্তু অত্যন্ত বাজে একটি উদাহরণ হয়ে থাকল পরবর্তী কালের সবার জন্য।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, বাংলাদেশে একটি ভালো নির্বাচন করতে হলে প্রয়োজন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তদারকি সরকার। তিনি বলেন, ‘এখন একটাই কাজ—কীভাবে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তদারকি সরকার গঠন করা যায়, সেটি নিয়ে আলোচনা করা। এ ছাড়া অন্য কোনো আলোচনা এখন অপ্রয়োজনীয়। তাই এই আলোচনায় যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না।’

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘যখন অনেক দলই দৌড়ে বেড়াচ্ছে, অনেকে জেলে আছেন। সমস্ত দেশেই একটা রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, এই সময়ে তারা কী আলোচনা করবেন, এটা তো আগেই বলতে পারব না। আলোচনা করলে বোঝা যাবে, কাদের সঙ্গে আলোচনা করছে, কী বিষয়ে আলোচনা করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসির এই সংলাপ এমন সময়ে হচ্ছে যখন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কথা বলে গেলেন, তারপরই এই প্রোগ্রাম দেওয়া হলো। প্রোগ্রামটি আগে ছিল বলে আমি শুনিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

মির্জা ফখরুলের কণ্ঠ নকল করে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ বিএনপির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনের আগে বিশ্ব ইজতেমা হচ্ছে না: ধর্ম উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ১২
সচিবালয় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত তাবলিগ জামাতের দুই পন্থীদের সঙ্গে বৈঠক কথা বলছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সচিবালয় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত তাবলিগ জামাতের দুই পন্থীদের সঙ্গে বৈঠক কথা বলছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী বছর তাবলিগ জামাতের মহাসম্মেলন ‘বিশ্ব ইজতেমা’ জাতীয় নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ের ধর্ম মন্ত্রণালয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে এই তথ্য জানান ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষই নির্বাচনের পরে ইজতেমা অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত হয়েছে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করতে হয়। কিন্তু নির্বাচনের আগে এত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে মোতায়েন করা সম্ভব না। এ জন্য উভয় গ্রুপ নির্বাচনের পরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানের বিষয়ে একমত পোষণ করেছে।’

ঈদুল ফিতরের পর উভয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে কোন পক্ষ আগে করবে এবং কোন পক্ষ পরে করবে, সেটিও বৈঠকে নির্ধারণ করা হবে। তবে বিশ্ব ইজতেমা একটি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

উল্লেখ্য, সাধারণত প্রতিবছর শীতকালে রাজধানীর উপকণ্ঠে টঙ্গীর তুরাগতীরে আয়োজন করা হয় বিশ্ব ইজতেমা। এ জন্য জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসকে বেছে নেওয়া হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জোবায়ের ও সাদপন্থী গ্রুপের ১২ জন প্রতিনিধি। তাঁরা হলেন সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলাম, মুনির বিন ইউসুফ, লিয়াকত সিদ্দীকি, হাসানুল হায়দার, আব্দুস সালাম, জুবায়ের, মাহফুজুল হান্নান, শাহরিয়ার মাহমুদ, সাজিদুর রহমান, মাহফুজুল হক, জুনায়েদ আল হাবিব ও মাওলানা মাহফুজ।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

মির্জা ফখরুলের কণ্ঠ নকল করে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ বিএনপির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৫
জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বিশিষ্ট ইসলামি বক্তা ডা. জাকির নায়েকের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফর এবং তাঁকে ভারতে প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতের প্রত্যাশা প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্য বাংলাদেশের নজরে এসেছে এবং ঢাকা জানিয়েছে, কোনো দেশেরই অন্য দেশের অভিযুক্ত বা পলাতক ব্যক্তিকে আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম গতকাল শনিবার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক মন্তব্যে বলেন, ‘ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র একজন বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার বা ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, তা আমাদের নজরে এসেছে।’

তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমরাও বিশ্বাস করি যে কোনো দেশের অন্য দেশের কোনো অভিযুক্ত বা পলাতক ব্যক্তিকে আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।’

ডা. জাকির নায়েক ২৮ ও ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশের একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন বলে জানা গেছে। এই প্রেক্ষাপটে গত ৩০ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘জাকির নায়েক একজন পলাতক আসামি। তিনি ভারতে ওয়ান্টেড। তাই আমরা আশা করি, তিনি যেখানেই যান না কেন, সংশ্লিষ্ট দেশ তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং আমাদের নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখবে।’

৬০ বছর বয়সী ধর্মপ্রচারক ডা. জাকির নায়েক ২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত ভারতেই অবস্থান করছিলেন এবং ইসলামি অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তবে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ক্ষমতার আসার পর তাঁর বিরুদ্ধে ‘ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার’ এবং একাধিক অর্থ পাচারের মামলা দায়ের করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় তাঁর নিয়ন্ত্রিত চ্যানেল পিস টিভির সম্প্রচার। এরপরই তিনি ভারত ছেড়ে মালয়েশিয়ায় চলে যান। সেখানে স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পেয়েছেন।

একই সময়ে, ২০১৬ সালে ঢাকার হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার পর অন্তত দুই হামলাকারী ‘জাকির নায়েকের বক্তৃতা থেকে অনুপ্রাণিত’ ছিল বলে খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশও তাঁর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

তবে সম্প্রতি তাঁর ঢাকায় আসার খবর নিয়ে আলোচনা চলছে। স্পার্ক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের আয়োজনে ডা. জাকির নায়েকের সম্ভাব্য এ অনুষ্ঠানটি রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় হতে পারে বলে জানা গেছে। তবে তাঁকে বাংলাদেশ সফরের অনুমতি দেওয়া হবে কি না, এ ব্যাপারে সরকার এখনো স্পষ্ট করে কিছু বলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

মির্জা ফখরুলের কণ্ঠ নকল করে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ বিএনপির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিলেটে সিপিবি নেতা গ্রেপ্তার, বাসদের ২২ জন আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও সিলেট 
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ১৮
সিপিবি নেতা আনোয়ার হোসেন সুমনকে গ্রেপ্তার এবং ২২ জনকে আটকের প্রতিবাদে গতকাল রাজধানীর পুরানা পল্টনে বিক্ষোভ করে সিপিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিপিবি নেতা আনোয়ার হোসেন সুমনকে গ্রেপ্তার এবং ২২ জনকে আটকের প্রতিবাদে গতকাল রাজধানীর পুরানা পল্টনে বিক্ষোভ করে সিপিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিলেটে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয় থেকে ২২ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। নগরের আম্বরখানা এলাকায় দলটির কার্যালয় থেকে গতকাল শনিবার সকালে তাঁদের আটক করা হয়। তবে বাসদ নেতারা বলছেন, পাঠচক্র চলাকালে বাসদ কার্যালয় ঘেরাও করে ২২ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

এর আগে গত শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ি এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে গ্রেপ্তার এবং বাসদ কার্যালয় থেকে ২২ নেতা-কর্মীকে আটকের প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে সিপিবি।

গতকাল সন্ধ্যায় সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের আন্দোলনের নামে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) গেট এবং সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুরের ঘটনায় সিপিবি নেতা আনোয়ার হোসেন সুমনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এ কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দ্রুত বিচার আইনসহ তিন-চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে। পুলিশ তাঁর ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করবে।’

আনোয়ার হোসেন সুমন সিলেট নগরে ব্যাটারিচালিত রিকশাচলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার আন্দোলন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন। ওই কর্মসূচি চলাকালে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরের চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা।

সিপিবির প্রতিবাদ

সিপিবি নেতা আনোয়ার হোসেন সুমনকে গ্রেপ্তার এবং কয়েক শ্রমিকনেতাসহ বাসদ জেলা কার্যালয় থেকে ২২ জনকে আটকের প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সিপিবি। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন সিপিবির নেতা-কর্মীরা।

সমাবেশে সিপিবি সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী কায়দায় গণগ্রেপ্তার চালিয়ে ন্যায্য শ্রমিক আন্দোলন দমনের এই হীন কাণ্ডের উপযুক্ত জবাব অন্তর্বর্তী সরকারকে দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

মির্জা ফখরুলের কণ্ঠ নকল করে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ বিএনপির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে অভিনন্দন জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৪০
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি

সাফল্যের সঙ্গে ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরামহীন বৈঠক ও ঐকমত্যে পৌঁছে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশে একটি স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু হয় চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি; মেয়াদ শেষ হয় গতকাল, ৩১ অক্টোবর।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ আমাদের ঐতিহাসিক অর্জন। এই সনদ আমাদের জাতির এক মূল্যবান দলিল, যা আগামী জাতীয় নির্বাচনের পথকে কেবল সুগমই করবে না, জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে এবং আমাদের গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জনগণ প্রত্যাশায় আছে জাতীয় জীবনে এমন কিছু পরিবর্তন দেখার জন্য, যা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাবে, এমন কিছু পরিবর্তন—যা এদেশে আর কখনো কোনো স্বৈরাচারের আগমন ঘটতে দেবে না, এমন কিছু পরিবর্তন—যা আমাদের জাতীয় জীবনে সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটাবে, সবার নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে, আমরা নিজেরাই এই সংস্কারপ্রক্রিয়াগুলো নিয়ে কাজ করেছি, একমত হয়েছি। বাইরের কেউ আমাদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে যে সমস্ত রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে, তাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমরা বিদেশিদের আসতে দেখেছি। বন্ধুরাষ্ট্রসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধিবৃন্দ বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে আনার চেষ্টা করেছেন। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে যে আমাদের নিজেদের সংকট নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। এই কারণেই সকল রাজনৈতিক দল এক কাতারে এসেছে, রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নিয়েছে এবং আমাদের সমাধানের পথ দেখিয়েছে। বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আমন্ত্রণ জানানোর পরিবর্তে আমরা নিজেরাই বিশ্ববাসীর দরবারে আমাদের জাতীয় ঐক্যকে তুলে ধরেছি।’

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে এবং তাদের নেতাদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতারা যারা এই সনদ তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তাদের সবাইকে আমি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।’

এই জুলাই সনদ সারা বিশ্বের জন্যই একটি অনন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পৃথিবীর আর কোথাও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ঘটনা হয়ে থাকবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশও সংকটকালীন সময়ে দেশগঠনের পদক্ষেপ হিসেবে ‘ঐকমত্য কমিশন’ গঠনের কথা বিবেচনা করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং বিশেষ সহকারী মনির হায়দারকে ধন্যবাদ জানান। এর পাশাপাশি, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা যাঁরা মাসের পর মাস এই দীর্ঘ আলোচনার সঙ্গে থেকেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সব কার্যকলাপ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে, যে অভূতপূর্ব ঐক্য আমাদের মাঝে রয়েছে রাষ্ট্র সংস্কারে এই জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতেই হবে। কারণ ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী এ জাতিকে বিভক্ত করতে সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে। গত ১৫ মাস আমরা তাদের নানা ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করেছি। ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে হলে, এই দেশকে বাঁচাতে হলে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই।’

এ দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের সামনে মহা চ্যালেঞ্জ আছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কোনো একক ব্যক্তি, একক সংগঠন, একক সংস্থা অথবা একক সরকার দিয়ে সম্ভব হবে না; এ জন্য সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে একতা থাকতে হবে, যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন ঐক্য ধরে রাখতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

মির্জা ফখরুলের কণ্ঠ নকল করে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ বিএনপির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত