অনলাইন ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এশিয়ার নিয়তি পুনর্লিখনে একসঙ্গে কাজ করতে পারে বাংলাদেশ ও জাপান। আজ বৃহস্পতিবার জাপানে ‘নিক্কেই ফোরাম: ৩০তম ফিউচার অব এশিয়া’—শীর্ষক ফোরামে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ড. ইউনূস তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমার কিছু বিশেষ স্মৃতি মনে পড়ছে। ২০ বছর আগে, ২০০৪ সালে, নিক্কেই আমাকে এশিয়া পুরস্কারে ভূষিত করেছিল। সেটি ছিল আমার জীবনে অত্যন্ত অর্থবহ একটি মুহূর্ত। তখন থেকেই জাপানের সঙ্গে আমার একটি ব্যক্তিগত যোগসূত্র তৈরি হয়েছে। গত কয়েক বছরে আমি বহুবার জাপানে এসেছি। জাপানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করেছি, তরুণদের সঙ্গে দেখা করেছি এবং ধারণা বিনিময় করেছি। জাপানের মানুষ আমার সামাজিক ব্যবসা ও ক্ষুদ্রঋণের ধারণাকে যেভাবে উষ্ণভাবে গ্রহণ করেছে, তাতে আমি গভীরভাবে মুগ্ধ।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা যখন “অশান্ত বিশ্বে এশিয়ার চ্যালেঞ্জ” প্রতিপাদ্য নিয়ে আলোচনা করতে সমবেত হয়েছি, তখন আমাকে বলতেই হচ্ছে যে, বিশ্ব ক্রমবর্ধমান হারে অশান্ত হয়ে উঠছে। আমরা এক দারুণ অনিশ্চয়তার সময় পার করছি। আমরা এমন একটি বিশ্বের সাক্ষী, যেখানে শান্তি ভঙ্গুর, উত্তেজনা বাড়ছে এবং সহযোগিতা সব সময় নিশ্চিত নয়। এশিয়া ও এর বাইরে বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে, শান্তি অধরা হয়ে উঠছে।’
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন, গাজা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যুদ্ধ ও মানবসৃষ্ট সংঘাত হাজার হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা ধ্বংস করছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এবং সাম্প্রতিক ভূমিকম্প একটি গভীর মানবিক সংকটকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। খুব সম্প্রতি, আমাদের দুই প্রতিবেশী একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু ব্যয়বহুল যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। দুঃখজনকভাবে, আমরা যুদ্ধ করার পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ ব্যয় করছি, যা আমাদের লাখ লাখ মানুষকে অনাহারি বা মৌলিক প্রয়োজনে সংগ্রাম করতে বাধ্য করছে। যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় আমি উভয় দেশের নেতাদের ধন্যবাদ জানাই এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ধারাবাহিকতা কামনা করি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ছাড়া, বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অনেক কিছুর প্রতিশ্রুতি দিলেও নতুন নৈতিক সংকট তৈরি করছে। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার বৃদ্ধি মুক্ত বাণিজ্যব্যবস্থার মূল ভিত্তিকেই চ্যালেঞ্জ করে চলেছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ছে, প্রায়শই সমাজের অভ্যন্তরে এবং দেশগুলোর মধ্যেও। বৈশ্বিক আস্থা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জাতিগুলোর মধ্যে, সমাজের অভ্যন্তরে, এমনকি নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও আস্থা কমছে। সম্প্রতি, আমরা বাংলাদেশে, দক্ষিণ কোরিয়ায় এমন বিভেদ, অসন্তোষ ও অস্থিতিশীলতা দেখেছি, যা শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনে পথ খুলে দিয়েছে।’
ভাষণে তিনি বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘বাংলাদেশে গত বছর একটি ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একটি রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গিয়েছি এবং ফলস্বরূপ আমার সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। আমরা আমাদের জনগণের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে, ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা ও মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করতে এবং গণতন্ত্রে মসৃণ উত্তরণের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি। আমরা বিশ্বাস করি, এটি ভুল সংশোধনের, নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ার এবং একটি ন্যায্য সমাজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের একটি সুযোগ। একাধিক অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা ও শান্তিবর্ধন মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তায় অবদান রাখছে এবং মিয়ানমারে নিজ ভূখণ্ডে নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে।’
এ সময় তিনি এশিয়াকে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের আবাস্থল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বজুড়ে যে অনিশ্চয়তা, তার ‘কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এশিয়া। একই সময়ে এটি সম্ভাবনার কেন্দ্রেও রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি, সেগুলো যেমন বিশাল, তেমনি আমাদের সম্মিলিত শক্তিও অদম্য। এই বাস্তবতায়, আমি বিশ্বাস করি এশিয়ার সুযোগ আছে, সম্ভবত একটি দায়িত্বও আছে ভিন্ন পথ দেখানোর। শান্তি, সংলাপ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধির একটি পথ। শুধু সংখ্যার বৃদ্ধি নয়, মানুষের কল্যাণে, আস্থায়, আশায় বৃদ্ধি।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রায়শই বলি: টাকা বানানো সুখ। কিন্তু মানুষকে খুশি করা হলো সুপার সুখ। আমাদের মনোযোগ পরিবর্তন করতে হবে ব্যক্তিগত মুনাফা থেকে সম্মিলিত কল্যাণে। স্বল্পমেয়াদি লাভ থেকে দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গিতে। আমার নিজের যাত্রায়—গ্রামের দরিদ্র নারীদের ছোট ছোট ঋণ দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক শুরু করা থেকে শুরু করে সারা বিশ্বে সামাজিক ব্যবসার ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া পর্যন্ত—আমি একটি বিষয় খুব পরিষ্কারভাবে শিখেছি: মানুষ দুঃখ ভোগ করার জন্য জন্ম নেয়নি। মানুষ সীমাহীন সম্ভাবনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আমাদের শুধু তাদের সঠিক সুযোগ দিতে হবে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আমি বিশ্বাস করি, এশিয়ার দেশগুলো অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এবং সমৃদ্ধির নতুন সুযোগ উন্মোচনে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে পারে। একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং অভিন্ন সমৃদ্ধির দিকে আমাদের একটি স্পষ্ট পথ তৈরি করতে হবে।’ এ সময় তিনি ছয়টি পরামর্শ দেন।
নোবেল বিজয়ী এই নেতা বলেন, ‘এই ফোরাম আশার প্ল্যাটফর্ম। নিক্কেই এমন একটি স্থান তৈরি করেছে, যেখানে সংলাপ সমাধানের দিকে নিয়ে যায় এবং যেখানে আস্থা কেবল একটি শব্দ নয়, বরং একটি লক্ষ্য, যা আমরা একসঙ্গে কাজ করি। এশিয়ার ভবিষ্যৎ কেবল অর্থনীতি বা ভূরাজনীতি নিয়ে নয়—এটি মানুষ নিয়ে, এটি ধারণা নিয়ে এবং এটি সাহস নিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের চারপাশে ঝঞ্ঝা দেখে আমরা ভীত হব না, বরং এটিকে একটি আহ্বান হিসেবে দেখব—পুনর্বিবেচনা করতে, পুনর্গঠন করতে এবং একসঙ্গে উঠে দাঁড়াতে। আসুন আমরা ভয় দ্বারা নয়, সম্ভাবনা দ্বারা পরিচালিত হই—ক্ষমতা দ্বারা নয়, উদ্দেশ্য দ্বারা। আসুন আমরা একটি উন্নত বিশ্বের কল্পনা করার সাহস রাখি। আসুন আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি। আসুন আমরা সহযোগিতা করি। কারণ আমাদের করতে হবে বলে নয়, বরং আমরা চাই বলে। এশিয়ার ভবিষ্যৎ এখনো লেখা হয়নি। আমরা একসঙ্গে এটি লিখব। বাংলাদেশ ও জাপান এশিয়ার এমনকি বিশ্বের নিয়তি পুনর্লিখনে একসঙ্গে কাজ করতে পারে।’
আরও খবর পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এশিয়ার নিয়তি পুনর্লিখনে একসঙ্গে কাজ করতে পারে বাংলাদেশ ও জাপান। আজ বৃহস্পতিবার জাপানে ‘নিক্কেই ফোরাম: ৩০তম ফিউচার অব এশিয়া’—শীর্ষক ফোরামে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ড. ইউনূস তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমার কিছু বিশেষ স্মৃতি মনে পড়ছে। ২০ বছর আগে, ২০০৪ সালে, নিক্কেই আমাকে এশিয়া পুরস্কারে ভূষিত করেছিল। সেটি ছিল আমার জীবনে অত্যন্ত অর্থবহ একটি মুহূর্ত। তখন থেকেই জাপানের সঙ্গে আমার একটি ব্যক্তিগত যোগসূত্র তৈরি হয়েছে। গত কয়েক বছরে আমি বহুবার জাপানে এসেছি। জাপানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করেছি, তরুণদের সঙ্গে দেখা করেছি এবং ধারণা বিনিময় করেছি। জাপানের মানুষ আমার সামাজিক ব্যবসা ও ক্ষুদ্রঋণের ধারণাকে যেভাবে উষ্ণভাবে গ্রহণ করেছে, তাতে আমি গভীরভাবে মুগ্ধ।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা যখন “অশান্ত বিশ্বে এশিয়ার চ্যালেঞ্জ” প্রতিপাদ্য নিয়ে আলোচনা করতে সমবেত হয়েছি, তখন আমাকে বলতেই হচ্ছে যে, বিশ্ব ক্রমবর্ধমান হারে অশান্ত হয়ে উঠছে। আমরা এক দারুণ অনিশ্চয়তার সময় পার করছি। আমরা এমন একটি বিশ্বের সাক্ষী, যেখানে শান্তি ভঙ্গুর, উত্তেজনা বাড়ছে এবং সহযোগিতা সব সময় নিশ্চিত নয়। এশিয়া ও এর বাইরে বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে, শান্তি অধরা হয়ে উঠছে।’
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন, গাজা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যুদ্ধ ও মানবসৃষ্ট সংঘাত হাজার হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা ধ্বংস করছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এবং সাম্প্রতিক ভূমিকম্প একটি গভীর মানবিক সংকটকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। খুব সম্প্রতি, আমাদের দুই প্রতিবেশী একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু ব্যয়বহুল যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। দুঃখজনকভাবে, আমরা যুদ্ধ করার পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ ব্যয় করছি, যা আমাদের লাখ লাখ মানুষকে অনাহারি বা মৌলিক প্রয়োজনে সংগ্রাম করতে বাধ্য করছে। যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় আমি উভয় দেশের নেতাদের ধন্যবাদ জানাই এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ধারাবাহিকতা কামনা করি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ছাড়া, বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অনেক কিছুর প্রতিশ্রুতি দিলেও নতুন নৈতিক সংকট তৈরি করছে। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার বৃদ্ধি মুক্ত বাণিজ্যব্যবস্থার মূল ভিত্তিকেই চ্যালেঞ্জ করে চলেছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ছে, প্রায়শই সমাজের অভ্যন্তরে এবং দেশগুলোর মধ্যেও। বৈশ্বিক আস্থা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জাতিগুলোর মধ্যে, সমাজের অভ্যন্তরে, এমনকি নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও আস্থা কমছে। সম্প্রতি, আমরা বাংলাদেশে, দক্ষিণ কোরিয়ায় এমন বিভেদ, অসন্তোষ ও অস্থিতিশীলতা দেখেছি, যা শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনে পথ খুলে দিয়েছে।’
ভাষণে তিনি বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘বাংলাদেশে গত বছর একটি ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একটি রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গিয়েছি এবং ফলস্বরূপ আমার সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। আমরা আমাদের জনগণের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে, ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা ও মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করতে এবং গণতন্ত্রে মসৃণ উত্তরণের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি। আমরা বিশ্বাস করি, এটি ভুল সংশোধনের, নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ার এবং একটি ন্যায্য সমাজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের একটি সুযোগ। একাধিক অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা ও শান্তিবর্ধন মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তায় অবদান রাখছে এবং মিয়ানমারে নিজ ভূখণ্ডে নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে।’
এ সময় তিনি এশিয়াকে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের আবাস্থল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বজুড়ে যে অনিশ্চয়তা, তার ‘কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এশিয়া। একই সময়ে এটি সম্ভাবনার কেন্দ্রেও রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি, সেগুলো যেমন বিশাল, তেমনি আমাদের সম্মিলিত শক্তিও অদম্য। এই বাস্তবতায়, আমি বিশ্বাস করি এশিয়ার সুযোগ আছে, সম্ভবত একটি দায়িত্বও আছে ভিন্ন পথ দেখানোর। শান্তি, সংলাপ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধির একটি পথ। শুধু সংখ্যার বৃদ্ধি নয়, মানুষের কল্যাণে, আস্থায়, আশায় বৃদ্ধি।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রায়শই বলি: টাকা বানানো সুখ। কিন্তু মানুষকে খুশি করা হলো সুপার সুখ। আমাদের মনোযোগ পরিবর্তন করতে হবে ব্যক্তিগত মুনাফা থেকে সম্মিলিত কল্যাণে। স্বল্পমেয়াদি লাভ থেকে দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গিতে। আমার নিজের যাত্রায়—গ্রামের দরিদ্র নারীদের ছোট ছোট ঋণ দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক শুরু করা থেকে শুরু করে সারা বিশ্বে সামাজিক ব্যবসার ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া পর্যন্ত—আমি একটি বিষয় খুব পরিষ্কারভাবে শিখেছি: মানুষ দুঃখ ভোগ করার জন্য জন্ম নেয়নি। মানুষ সীমাহীন সম্ভাবনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আমাদের শুধু তাদের সঠিক সুযোগ দিতে হবে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আমি বিশ্বাস করি, এশিয়ার দেশগুলো অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এবং সমৃদ্ধির নতুন সুযোগ উন্মোচনে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে পারে। একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং অভিন্ন সমৃদ্ধির দিকে আমাদের একটি স্পষ্ট পথ তৈরি করতে হবে।’ এ সময় তিনি ছয়টি পরামর্শ দেন।
নোবেল বিজয়ী এই নেতা বলেন, ‘এই ফোরাম আশার প্ল্যাটফর্ম। নিক্কেই এমন একটি স্থান তৈরি করেছে, যেখানে সংলাপ সমাধানের দিকে নিয়ে যায় এবং যেখানে আস্থা কেবল একটি শব্দ নয়, বরং একটি লক্ষ্য, যা আমরা একসঙ্গে কাজ করি। এশিয়ার ভবিষ্যৎ কেবল অর্থনীতি বা ভূরাজনীতি নিয়ে নয়—এটি মানুষ নিয়ে, এটি ধারণা নিয়ে এবং এটি সাহস নিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের চারপাশে ঝঞ্ঝা দেখে আমরা ভীত হব না, বরং এটিকে একটি আহ্বান হিসেবে দেখব—পুনর্বিবেচনা করতে, পুনর্গঠন করতে এবং একসঙ্গে উঠে দাঁড়াতে। আসুন আমরা ভয় দ্বারা নয়, সম্ভাবনা দ্বারা পরিচালিত হই—ক্ষমতা দ্বারা নয়, উদ্দেশ্য দ্বারা। আসুন আমরা একটি উন্নত বিশ্বের কল্পনা করার সাহস রাখি। আসুন আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি। আসুন আমরা সহযোগিতা করি। কারণ আমাদের করতে হবে বলে নয়, বরং আমরা চাই বলে। এশিয়ার ভবিষ্যৎ এখনো লেখা হয়নি। আমরা একসঙ্গে এটি লিখব। বাংলাদেশ ও জাপান এশিয়ার এমনকি বিশ্বের নিয়তি পুনর্লিখনে একসঙ্গে কাজ করতে পারে।’
আরও খবর পড়ুন:
গুচ্ছভুক্ত ১৯টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও তালিকাভুক্ত আহত ব্যক্তির পরিবার ‘বিশেষ সুবিধা’ পাবে। সম্প্রতি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি নির
১৭ মিনিট আগেড. মুহাম্মদ ইউনূস টোকিওতে বক্তৃতায় ‘থ্রি জিরো থিওরি’ বাস্তবায়নে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পরিবেশ ধ্বংস, দারিদ্র্য, বেকারত্ব রোধে সৃজনশীল তরুণসমাজকেই নতুন পৃথিবী গড়তে হবে।
৪১ মিনিট আগেসামাজিক উদ্ভাবন এবং বৈশ্বিক উন্নয়নে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অধ্যাপক ইউনূসকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
৫ ঘণ্টা আগেনিম্নচাপ জনিত ঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসে, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে সারা দেশে টেলিযোগাযোগ সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। আজ শুক্রবার সকালে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব ফেসবুকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
৯ ঘণ্টা আগে