Ajker Patrika

রাজউকের সাবেক চেয়ার‍ম্যান সিদ্দিকুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে দুদক

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা 
রাজউকের সদ্যসাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মো. সিদ্দিকুর রহমান। ফাইল ছবি
রাজউকের সদ্যসাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মো. সিদ্দিকুর রহমান। ফাইল ছবি

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদ্যসাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. সিদ্দিকুর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে পূর্বাচল নতুন শহরে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম, নিজের ও পরিবারের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজউকের বোর্ড সভার তথ্য চেয়েছে সংস্থাটি। কমিশনের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

এরই মধ্যে অভিযোগ অসুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিল করতে দুদকের পরিচালক মো. আবুল হাসনাতকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছ। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন দুদকের সহকারী পরিচালক বিষাণ ঘোষ ও উপসহকারী পরিচালক আফিয়া খাতুন।

দুদক সূত্রটি জানিয়েছে, আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. সিদ্দিকুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী গাজী রেবেকা রওশনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুদক। এ বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশে বিশেষ পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দিয়েছে দুদক।

দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সিদ্দিকুর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎপূর্বক নিজের নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে আসা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। বর্ণিত ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রী গাজী রেবেকা রওশন যেকোনো মুহূর্তে দেশ ছেড়ে বিদেশ গমন করতে পারেন মর্মে গোপন সূত্রে জানা যায়। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাঁদের বিদেশগমন রহিত করা একান্ত প্রয়োজন।

দুদক থেকে রাজউকের সাবেক এই চেয়ারম্যানের দুর্নীতি অনুসন্ধান করতে রাজউকের চেয়ারম্যান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব ও দেশের ৬৪টি তফসিলি ব্যাংকে তাঁর তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে গত মঙ্গলবার একটি চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। দুদকের সেই চিঠিতে বলা হয়, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সিদ্দিকুর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্ণিত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে আপনার মন্ত্রণালয়ে আগে কর্মরত মো. সিদ্দিকুর রহমান সরকারের কর্মকাল, উক্ত কর্মকালে প্রাপ্ত বেতন-ভাতাদি ও অন্য বৈধ সুযোগ–সুবিধাদি, কর্মকালে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে উক্ত পরিপ্রেক্ষিতে হওয়া তদন্ত প্রতিবেদন, বিভাগীয় ব্যবস্থার সংশ্লিষ্ট তথ্য ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। চাহিত রেকর্ডপত্র ১৬ এপ্রিলে সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে দুদক থেকে পাঠানো অন্য একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, মো. সিদ্দিকুর রহমান সরকার রাজউকে চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মকালে এবং ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অনুষ্ঠিত সব বোর্ড সভার কার্যপত্র, আলোচ্যসূচি ও বোর্ড সভার কার্যবিবরণী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে নিম্নস্বাক্ষরকারীর নিকট সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

তবে অভিযোগের বিষয়ে রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. সিদ্দিকুর রহমান সরকারের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত