Ajker Patrika

জুলাই আন্দোলনে সহিংসতা: পুলিশের অস্ত্র–গুলির বয়ানে গরমিল

  • রেজিস্টারে অস্ত্র বরাদ্দ একজনের নামে, গুলি খরচের দায় চেপেছে অন্য পুলিশ সদস্যের ওপর
  • যেসব থানা এলাকায় বেশি সহিংসতা হয়েছে, সেসব থানার গুলি খরচের হিসাবেও বেশি অমিল
  • গুলিবর্ষণকারী হিসেবে নাম থাকায় বিভিন্ন থানায় জিডি করেছেন কয়েকজন উপপরিদর্শক
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩: ৩৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় পুলিশ সদস্যদের বরাদ্দ করা আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলির হিসাবে গরমিল পাওয়া গেছে। থানার নিবন্ধন খাতার তথ্যের সঙ্গে মামলার এজাহারে বর্ণিত অস্ত্র ও গুলির তথ্যে এই অমিল রয়েছে। এমনকি অস্ত্র বরাদ্দ করা এবং ব্যবহারকারী সদস্যের নামও ভিন্ন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অস্ত্র-গুলি বরাদ্দ ও খরচের হিসাবের এই গরমিলে হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের অপরাধ প্রমাণ করা জটিল হবে। কে কোন অস্ত্র ব্যবহার করেছেন, কার অস্ত্রের গুলিতে প্রাণহানি হয়েছে, এসব প্রমাণ করা সহজ হবে না।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ছয়টি থানায় অস্ত্র ও গুলি ব্যবহারের তথ্যে এ গরমিল পাওয়া গেছে। এগুলো হলো যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, রামপুরা, বাড্ডা, মোহাম্মদপুর এবং ভাটারা। জুলাই-আগস্টে যেসব থানা এলাকায় সহিংসতা ও হতাহতের হার বেশি ছিল, সেসব থানার হিসাবেও অমিল বেশি দেখা গেছে।

জানতে চাইলে ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মো. তালেবুর রহমান বলেন, প্রতিটি ঘটনার আলাদা তদন্ত চলছে। গুলি যৌক্তিক ছিল কি না, তা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে অস্ত্র বরাদ্দ ও গুলি খরচের অমিল সম্পর্কে তিনি অবগত নন।

অবশ্য ডিএমপির সদর দপ্তরের একটি সূত্র বলেছে, জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে গুলি ও অস্ত্র ব্যবহারের তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে এবং কোনো অনিয়ম বা অসংগতি প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিএমপি জানিয়েছে, থানার একজন পুলিশ সদস্যের নামে যেদিন যে অস্ত্র ও গুলি বরাদ্দ থাকে, তিনি সেদিন সেই অস্ত্র ও গুলি নেন। দায়িত্ব পালন শেষে সেই অস্ত্র ও গুলি থানার অস্ত্রাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দেন। ওই কর্মকর্তা বুঝে পাওয়া অস্ত্র ও গুলির সংখ্যা অস্ত্রাগারের নিবন্ধন (রেজিস্টার) খাতায় লিখে রাখেন। তবে ডিএমপির ছয় থানায় এ নিয়মের বেশি ব্যত্যয় হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে। ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলির তথ্য থানার অস্ত্রাগারের রেজিস্টারে সঠিকভাবে রাখা হয়নি। এমনকি একজনকে একধরনের অস্ত্র বরাদ্দ দেওয়া হলেও তাঁর নামে সেদিন গুলি খরচ বা খারিজ দেখানো হয়েছে অন্য ধরনের অস্ত্রের।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ প্রথম গুলি চালায় ১৭ জুলাই। ৫ আগস্ট পর্যন্ত যাত্রাবাড়ীতে মোট নিহত হন ৫৮ বিক্ষোভকারী, যা রাজধানীর থানাগুলোর মধ্যে সর্বাধিক।

সূত্র জানায়, ১৯ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাদ্দাম মার্কেট থেকে কুতুবখালী এবং যাত্রাবাড়ী থানার প্রধান ফটক পর্যন্ত ব্যাপক সহিংসতা হয়। ওই ঘটনায় ২০ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তন্ময় মণ্ডল বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে ১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানার কয়েকজন এসআই ও এএসআইয়ের নামে চায়নিজ রাইফেলের ৩৩৭টি গুলিসহ বিভিন্ন অস্ত্রের গুলি করার কথা উল্লেখ করা হয়। তবে নিবন্ধন খাতায় সেদিন যাঁদের নামে চায়নিজ রাইফেল ও গুলি বরাদ্দের তথ্য রয়েছে, এজাহারে তাঁদের নাম নেই। আবার নিবন্ধন খাতা অনুযায়ী অস্ত্র বরাদ্দ ছিল একজনের নামে, এজাহারে গুলি খরচ দেখানো হয়েছে আরেকজনের নামে। যেমন এজাহারে এসআই নাদিম মুন্সীর চায়নিজ রাইফেল দিয়ে ৩০টি গুলি করার কথা উল্লেখ আছে। অথচ সেদিন অস্ত্রাগারের নিবন্ধন খাতায় তাঁর নামে শটগান (বাঁট নম্বর ১০২৪৪) বরাদ্দ থাকার তথ্য রয়েছে। একই দিন এএসআই তানভীর হোসেনের নামে ৩০টি চায়নিজ রাইফেলের গুলি খরচ দেখানো হলেও নিবন্ধন খাতা বলছে, সেদিন তিনি পিস্তল (বাঁট নম্বর এ-৭৯৭০০৫) ও ৮টি গুলি বরাদ্দ পেয়েছেন। এসআই নুর মোহাম্মদ, ভবতোষ, কামরুজ্জামান, এএসআই সাফায়েত ও হাসান রিয়াজসহ কয়েকজনের নামে চায়নিজ রাইফেল বরাদ্দ ছিল, এজাহারে গুলি খরচে তাঁদের নাম নেই।

তন্ময় মণ্ডলের নামে নিবন্ধন খাতায় সেদিন কোনো অস্ত্র বরাদ্দের তথ্য না থাকলেও এজাহারে তিনি চায়নিজ রাইফেলের ৩০টি গুলি করার দাবি করেন। জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি আজকের পত্রিকা'কে বলেন, তখন (ডিএমপির) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, সেভাবেই মামলা করা হয়েছে।

জানা যায়, ডিএমপির সহকারী কমিশনার (এসি) মধুসূদন দাসের নামে ২০ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানার অস্ত্রাগারের নিবন্ধন খাতায় একটি শটগান (বাঁট নম্বর ১৬৪৯৬৭) ও ৫০টি গুলি, একটি চায়নিজ রাইফেল (বাঁট নম্বর ৫৮০৫) ও ৫০টি গুলি এবং ২০টি সাউন্ড গ্রেনেড বরাদ্দের উল্লেখ আছে। তবে তাঁর নামে গুলি খরচ নেই। অবশ্য মধুসূদন দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি তখন সচিবালয়ে ছিলাম।’

১৮ থেকে ২১ জুলাইয়ের সহিংসতায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা পাঁচটি মামলার বাদী এসআই নাদিম মুন্সি, এসআই তন্ময়, এসআই নওশের, এসআই সাইফুল এবং এসআই এহসানুল হক মোল্লা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাদী আলাপকালে বলেন, ডিএমপির তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে বিভিন্ন মামলায় গুলি খারিজ দেখানো হয়। পরে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এগুলো আবার খারিজ করা হবে বলে তাঁরা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা) জানিয়েছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এসআই অভিযোগ করেন, গুলিবর্ষণকারী পুলিশ সদস্যদের আড়াল করতে অন্যদের নামে গুলি খরচ দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে তখন কয়েকজন এসআই প্রতিবাদ করলেও ঊর্ধ্বতনদের চাপে তা টিকেনি। তবে এ বিষয়ে কয়েকজন যাত্রাবাড়ী থানায় জিডি করেন। তাঁদের একজন এসআই নাদিম মুন্সী। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর করা মামলায় যাঁদের নামে গুলি খরচ দেখানো হয়েছে, তাঁদের নামে সেদিন অস্ত্রাগারের নিবন্ধন খাতায় ওসব অস্ত্র ও গুলি ইস্যু ছিল না। তাঁরা গুলিও করেননি।

এসআই শামীম রেজা ২৭ জুলাই করা জিডিতে উল্লেখ করেন, ১৯ ও ২০ জুলাই তাঁর নামে শটগানের ১০টি ও চায়নিজ রাইফেলের ২০টি গুলি খরচ দেখানো হলেও ১৯ জুলাই তাঁর ডিউটি ছিল না, ওই দিন তিনি বাসায় ছিলেন। ২০ জুলাই একটি শটগান (বাঁট নম্বর ৮২১০) ও ৩০টি গুলি বরাদ্দ ছিল। তবে তিনি থানায় ডিউটি করেন। ডিউটি শেষে অস্ত্রাগারে অস্ত্র ও গুলি জমা দেন। কোনো গুলি করেননি।

সূত্র জানায়, বাড্ডা থানা থেকে ভাটারা থানায় গুলি ও অস্ত্র দেওয়া হলেও সেই গুলি খরচ দেখানো হয়েছে বাড্ডা থানার পুলিশ সদস্যদের নামে। এ বিষয়ে বাড্ডা থানার এসআই শাহ আলমসহ অন্তত ছয়জন পুলিশ সদস্য জিডি করেছেন। জিডিতে তাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাঁরা গুলি না করলেও তাঁদের নামে খরচ দেখানো হয়েছে।

ওই সময় বাড্ডা থানার অস্ত্রাগারের দায়িত্বে থাকা এসআই জাহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কথামতো গুলি খরচ দেখানো হয়েছে। ভাটারা থানায় গুলি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এক থানায় ঘাটতি হলে আরেক থানা থেকে অফিস আদেশে নিয়েছে। এগুলো তদন্তে বের হবে।

মোহাম্মদপুর থানাও যেসব পুলিশ সদস্যের নামে গুলি খরচ দেখিয়েছে, তার সঙ্গে অস্ত্র বরাদ্দের তথ্যের মিল নেই। ১৮ জুলাই মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় করা মামলার এজাহারে সেদিন শটগানের ২ হাজারটি ও চায়নিজ রাইফেলের ১২০টি গুলির খরচ দেখানো হয়েছে। থানার ৪০ জন পুলিশ সদস্যের প্রত্যেকের বিপরীতে সমান শটগানের ৫০টি গুলি খরচ দেখানো হয়েছে। এসআই চয়ন সাহার নামে নাইন এমএম পিস্তল ইস্যু থাকলেও চায়নিজ রাইফেলের গুলি খরচ দেখানো হয়েছে। এই মামলার বাদী এসআই আদনান বিন আজাদ।

পুলিশ সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ডিএমপির অপরাধ ও ট্রাফিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও থানার অস্ত্রাগার থেকে চায়নিজ রাইফেলের গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড এবং শটগানের গুলি নেন। তবে সেগুলো কারা, কোথায় খরচ করেছেন, সেই হিসাব তাঁরা না দেওয়ায় থানাগুলোতেও কোনো তথ্য নেই।

ডিএমপির সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, ওই আন্দোলনের সময় পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের সদস্যরা বিভিন্ন থানা এলাকায় মোতায়েন ছিলেন এবং গুলি শেষ হলে তাঁরা থানার অস্ত্র ও গুলি ব্যবহার করেন। কিন্তু গুলি খরচে তাঁদের নাম নেই, খরচ দেখানো হয় থানায় কর্মরত সদস্যদের নামে। কিছু পুলিশ সদস্য নিজেকে সরকারের আস্থাভাজন দেখাতে এবং ব্যক্তিগত সুবিধা পেতে নিজের নামে গুলি খরচ দেখানোর চেষ্টা করেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গুলিবর্ষণকারীদের আড়াল করতে অন্যদের নামে গুলি খরচ দেখানো হয়েছে। এসব কারণে গুলি খরচের হিসাবে এই গরমিল।

আইনজীবীরা বলছেন, গুলিবর্ষণকারী ব্যক্তির নাম, অস্ত্রের নম্বর এবং গুলির প্রমাণ ছাড়া হত্যার অভিযোগ প্রমাণ করা কঠিন হবে। আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, যেহেতু অস্ত্র বরাদ্দ এবং গুলি খরচের তথ্য সঠিকভাবে রাখা হয়নি; সুতরাং ব্ল্যাস্টিক পরীক্ষার মাধ্যমে হত্যার প্রমাণ পাওয়া সম্ভব হবে না।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগ জানিয়েছে, গুলি কোথা থেকে এসেছে, তা শনাক্ত করা কঠিন হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

  • নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে কমিশনকে ৩৬ করণীয় প্রস্তাব বিএনপির
  • ‘দলীয় প্রতিষ্ঠান’ থেকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়ার দাবি
  • বিগত তিন নির্বাচনের বিতর্কিত কর্মকর্তাদের ভোটের প্রক্রিয়ায় না রাখা
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার আগে-পরে করণীয় ৩৬টি প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে তফসিল ঘোষণার আগেই আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া ‘মিথ্যা ও গায়েবি মামলা’ প্রত্যাহার এবং মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে দলটি। আর ভোটের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে থেকে ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করতে হবে।

এ ছাড়া বিগত তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা বিতর্কিত ব্যক্তিদের আগামী নির্বাচনে ভোটের প্রক্রিয়ায় না রাখা এবং দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়ার কথাও কমিশনকে বলেছে বিএনপি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক তাদের প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করেছে। দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং সাবেক সচিব মোহাম্মদ জকরিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, ‘আমরা কোনো প্রস্তাব জমা দেইনি। আলোচনার টকিং পয়েন্ট হিসেবে বেশ কিছু বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে।’ যদিও বিএনপির একটি সূত্র জানায়, লিখিতভাবে ৩৬ দফা প্রস্তাব সামনে রেখে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির প্রতিনিধিদল।

সূত্র জানায়, সিইসির সঙ্গে বৈঠকে তফসিল ঘোষণার আগে স্বৈরাচারী সরকারের আমলে হওয়া মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার এবং মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা বিতর্কিত ব্যক্তিদের এবারের ভোটের প্রক্রিয়ায় রাখা যাবে না। এ ছাড়া নির্বাচনের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে থেকে ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

আর ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনাসহ দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত প্রতিষ্ঠান থেকে যেন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়া হয়।

ভোটে অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এখনই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে এই সরকারের ও ইসির দৃঢ় ভূমিকা চেয়েছে বিএনপি। এ ছাড়া, রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ইসির কর্মকর্তাদের নিয়োগ; নির্বাচনকালীন সব প্রক্রিয়ায় জড়িত বেসামরিক প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব কর্মকর্তার বদলি, পদায়ন, অবস্থান, দায়িত্ব ও তাঁদের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ ইসির এখতিয়ারে নেওয়া; নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন এবং নির্বাচনকে জনগণের কাছে দৃশ্যমান বিশ্বাসযোগ্য করতে বিচার বিভাগীয় ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের পাশাপাশি ইসি কর্মকর্তাদেরও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া; ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষের কার্যক্রম ছাড়া ভোটকেন্দ্রের অন্যান্য অভ্যন্তরীণ দৃশ্য বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ রাখতে সিসি ক্যামেরা রাখা; প্রতি জেলা, উপজেলা, থানা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ নিরসন কেন্দ্র চালুর দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

নির্বাচনসংশ্লিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে বা যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করে অভিযোগকারীকে লিখিতভাবে জানানো; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি গঠনের নির্দেশনা স্থগিত করা; গণ-অভ্যুত্থান ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নামে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে করা মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলা তফসিল ঘোষণার আগেই প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তফসিল ঘোষণার আগে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় বিবেচনায় দেওয়া সব অস্ত্র সরকারের কাছে জমা দেওয়া নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

এ ছাড়া নির্বাচনে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ায়—এমন অপপ্রচার রোধ; ভোটারদের প্রভাবিত করে এমন ধর্মীয় প্রলোভন বা ধর্মীয় দণ্ড দেওয়ার ভীতি প্রদর্শন রোধ; যতদূর সম্ভব কমসংখ্যক ভোটার নিয়ে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ; নির্বাচনী আইন ও বিধি পালনে গাফিলতি করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে বিএনপি।

সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির নেতা আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচন হয়েছিল প্রহসনের নির্বাচন। কাদের দ্বারা হয়েছিল? যারা সরকারি কর্মকর্তা হয়েও নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করেছিল, তাদের কারণে হয়েছিল।

১৫ বছর যাদের চরিত্র হনন করেছিল আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী, তারা ১৫ মাসে শোধিত হয়ে যাবে এতটা আশা করা বাস্তবতা নয়—এ মন্তব্য করে মঈন খান আরও বলেন, ‘কাজেই নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকতে হবে। বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধরা যেন আগামী নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় কোনোভাবে অংশগ্রহণ করতে না পারে, কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে। এটা ছিল আমাদের আলোচনার একটি মূল বিষয়।’

বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। তবে বিএনপির দাবির বিষয়গুলো নিয়ে কমিশন সভায় আলোচনা হতে পারে বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ৫৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সব ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয় থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যস্ত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভা হয়। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

আসিফ নজরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ-২০২৫ নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। অধ্যাদেশটি যখন চূড়ান্ত অনুমোদন হয়ে যাবে, তখন অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সবকিছু সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব বাজেট ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা থাকবে; আর্থিক স্বাধীনতা থাকবে।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, তাঁদের কাছে মনে হয়েছে, কিছু বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। যেহেতু আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে, তাই অর্থ উপদেষ্টার মতামতের প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজন রয়েছে। সেই আলোচনার পর আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হবে।

উপদেষ্টা পরিষদ দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়াও অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এটি হলে বাংলাদেশে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা বিদেশি হোন আর দেশি হোন, বাংলাদেশে অবস্থানকালে ভিন্ন দেশে দুর্নীতি করলেও এর তদন্ত দুদকের মাধ্যমে করা যাবে। সংশোধনীতে ‘জ্ঞাত আয়’ বলতে ‘বৈধ আয়’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণভবনে জাদুঘর নির্মাণের জন্য জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন হয়েছে।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট শহরে বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেট জেনারেল অফিস করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই আন্দোলনে রামপুরায় ভবনের ছাদের রডে ঝুলে থাকার সময় ৬টি গুলি করে পুলিশ, তরুণের সাক্ষ্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের ছাদের রডে ঝুলন্ত অবস্থায় এক তরুণকে গুলি করে পুলিশ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের ছাদের রডে ঝুলন্ত অবস্থায় এক তরুণকে গুলি করে পুলিশ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদের রডে ঝুলে থাকা অবস্থায় পুলিশ পায়ে ছয়টি গুলি করে বলে জানিয়েছেন আমির হোসেন নামে এক তরুণ।

আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাক্ষ্য দেন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রামপুরায় চালানো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষ্য দেন ১৮ বছরের এই তরুণ।

এই মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক এডিসি মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান, রামপুরা থানার সাবেক এসআই তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে আসামি করা হয়েছে।

এর মধ্যে চঞ্চল চন্দ্র সরকার গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা পলাতক।

আমির হোসেন তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, আন্দোলনের সময় আফতাবনগরে মামা কফিশপ নামের একটি খাবারের দোকানে চাকরি করতেন তিনি। ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর দোকান থেকে বাসায় যাওয়ার পথে রামপুরা খালের সাঁকো পার হয়ে প্রধান সড়কে গেলে দেখতে পান পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি চালাচ্ছে। ভয়ে তিনি পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনের চারতলার ছাদে উঠে যান। তিনজন পুলিশ সদস্য তখন তাঁর পিছু নিলে তিনি ছাদের একটি রড ধরে ঝুলতে থাকেন।

আমির হোসেন বলেন, সে সময় পুলিশের এক সদস্য তাঁকে নিচে ঝাঁপ দিতে বলেন। তা না করলে তিনি পিস্তল দিয়ে পরপর তিনটি গুলি করেন। তিনটি গুলিই পায়ে বিদ্ধ হয়। এরপর আরেকজন পুলিশ পিস্তল দিয়ে তাঁর দিকে আরও তিনটি গুলি ছোড়েন। সেই গুলিও তাঁর পায়ে লাগে। এরপর জ্ঞান হারান তিনি। জ্ঞান ফিরলে নিজেকে ফেমাস হাসপাতালে পান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গৃহকর্মীরা পাবেন শ্রমিকের মর্যাদা, শ্রম অধ্যাদেশ সংশোধন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা হয়। ছবি: পিআইডি
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা হয়। ছবি: পিআইডি

গৃহকর্মী ও নাবিকদের শ্রমিকের মর্যাদা দিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সুপারিশে সংশোধিত শ্রম অধ্যাদেশ-২০২৫ পাস করা হয়েছে।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের আজকের বৈঠকে এই অধ্যাদেশ পাস হয়।

আসিফ নজরুল বলেন, শ্রম আইনের ৯০ সেকশনে সংশোধন আনা হয়েছে। আইএলও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিষয়ে শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রসূতিদের ওয়েলফেয়ার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, আগে কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে বেতন বৈষম্য ছিল। সেটি তুলে দেওয়া হয়েছে। একই কাজের জন্য আগে নারীরা কম বেতন পেতেন। সেটিও তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁরা সমহারে বেতন পাবেন। কর্মক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি হলে সেখানে ফান্ড গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ফান্ডের সহায়তায় পুনর্বাসন ও চিকিৎসা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত