Ajker Patrika

পিএসসির পরিকল্পনা: মৌখিক পরীক্ষার নম্বর আরও কমিয়ে ৫০ করার চিন্তা

  • বিসিএসের বিজ্ঞপ্তির এক বছরেই চূড়ান্ত ফল।
  • চলতি বছরে তিনটির ফল প্রকাশে জট কমেছে।
  • ১৭৬০ পদে ৫০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি এ মাসেই।
  • প্রাক্‌-যাচাই বিধিমালার খসড়া এখন মন্ত্রণালয়ে।
রাহুল শর্মা, ঢাকা 
সরকারি কর্ম কমিশন। ছবি: সংগৃহীত
সরকারি কর্ম কমিশন। ছবি: সংগৃহীত

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের এক বছরের মধ্যে একটি বিসিএসের সব ধাপ শেষ করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব করতে চায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। চলতি বছর তিনটি (৪৪, ৪৮ ও ৪৯) বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে জট অনেকটা কাটিয়ে ওঠায় ৫০তম বিসিএস থেকেই এটি কার্যকরের আশা করছে পিএসসি। মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ১০০ থেকে কমিয়ে ৫০ করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

পিএসসি বলছে, বিসিএস-ভিত্তিক রোডম্যাপ তৈরি, সার্কুলার পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন, মৌখিক পরীক্ষায় ইন্সট্যান্ট ওএমআর স্ক্যানিং (আইওএস) পদ্ধতি চালু ইত্যাদি কারণে দীর্ঘদিনের বিসিএস জট কাটছে। এসব উদ্যোগের ফলে চলতি বছর ৪৪, ৪৮ ও ৪৯তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে। আগামী মাসে (ডিসেম্বর) ৪৫তম বিসিএসের চূড়ান্ত ও ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ডিসেম্বরে নাগাদ। ফলে আগামী বছর থেকে বিসিএসে তেমন কোনো জট থাকবে না। এতে প্রতিবছর একটি বিসিএস শেষ করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

৪৪তম বিসিএস পরীক্ষায় ১ হাজার ৬৭৬ জন ক্যাডার পদে, ৪৮তম (বিশেষ) বিসিএসে সহকারী সার্জন পদে ২ হাজার ৮২০ জন এবং সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে ৩০০ জন এবং ৪৯তম (বিশেষ) বিসিএসে ৬৬৮ জন শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পেয়েছেন।

জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সবার আকাঙ্ক্ষা বছরে একটি বিসিএস। কয়েকটি বিসিএস আটকে থাকায় এত দিন তা সম্ভব হয়নি। তবে চলতি বছর আমরা বিসিএস জট অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছি। ৫০তম বিসিএস থেকেই নিয়মিতভাবে বছরে একটি বিসিএস শেষ করা সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, আগামী বছরের ৩০ অক্টোবরের মধ্যেই সব ধাপ (নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা) সম্পন্ন করে ৫০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।

পিএসসি থেকে জানা যায়, চলতি মাসে ৫০তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এই বিসিএসে ক্যাডারে শূন্য পদের সংখ্যা ১ হাজার ৭৬০টি। এই বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের এক বছরের মধ্যেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে চায় পিএসসি।

পিএসসির সূত্র জানায়, মৌখিক পরীক্ষায় আইওএস পদ্ধতি চালুর ফলে প্রতিদিনের মৌখিক পরীক্ষার ওএমআর শিট ওই দিনই স্ক্যানিং করা হয়। ফলে দ্রুত চূড়ান্ত ফলাফল তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। আগে সব প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ওএমআর স্ক্যানিং করা হতো। ৪৬তম বিসিএস থেকে পিএসসিতে বসে সার্কুলার পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এতে মাত্র দুই মাসেই লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখা শেষ করা গেছে। আগে লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখতে ৮ থেকে ১০ মাস লাগত।

সূত্র আরও জানায়, বিসিএসে নিয়োগ সুপারিশ করার পর যেন কোনো প্রার্থীকে অযাচিতভাবে বাদ দেওয়া না হয়, সে জন্য পিএসসি প্রাক্‌-যাচাই বিধিমালার খসড়া তৈরি করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান বলেন, পিএসসি নিজ উদ্যোগে প্রার্থীবান্ধব প্রাক্‌-যাচাই বিধিমালার খসড়া প্রণয়ন করে অন্তত ৬ মাস আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এটি বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের রিভিউ এবং অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এই বিধিমালা জারি হলে কাউকে অযাচিতভাবে বাদ দেওয়া যাবে না। আবার কাউকে যৌক্তিক কারণে বাদ দিলেও তিনি এর বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। এর লক্ষ্য হচ্ছে, কেউ যেন কোনো কারণে অবিচারের শিকার না হন।

মৌখিক পরীক্ষায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেও বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানান পিএসসির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এখন নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে মোট ১১টি ধাপ অনুসরণ করা হয়। প্রতিটি ধাপে আলাদা স্কোর রেঞ্জ নির্ধারণ করা হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডের সদস্যরা যৌথভাবে গ্রেড নির্ধারণ করেন। মৌখিক পরীক্ষার মোট নম্বর ১০০ থেকে কমিয়ে ৫০ করার পরিকল্পনাও রয়েছে।

পিএসসির সূত্র জানায়, বিসিএসের সিলেবাস পরিবর্তনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কাজ শুরু করেছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম বলেন, সিলেবাস পরিবর্তন তাঁরা এমনভাবে করবেন, যাতে চাকরিপ্রার্থীরা সমস্যায় না পড়েন। সিলেবাস পরিবর্তন হবে ধীরে ধীরে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...