Ajker Patrika

এমপি আনোয়ারুলের মরদেহের টুকরার সন্ধানে কলকাতার কাশিপুরে তল্লাশি

কলকাতা সংবাদদাতা
আপডেট : ২৪ মে ২০২৪, ১১: ০১
Thumbnail image

কলকাতার নিউ টাউনে খুন হওয়া বাংলাদেশি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মরদেহ টুকরো টুকরো করার পর তা শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি এলাকায় নিয়ে ফেলা হয়। এ ঘটনায় মুম্বাই থেকে গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদার ও কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার ক্যাবচালক জুবেরকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে সিআইডির একটি সূত্র। সেখান থেকে মরদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধারে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। 

সিআইডি জানিয়েছে, আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এক ক্যাবচালককে গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই চালক অ্যাপের মাধ্যমে তাঁর গাড়ি ভাড়ায় পরিচালনা করেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ওই ক্যাবচালক জানান, মৃতদেহ টুকরো টুকরো করার পরে কলকাতার উপকণ্ঠে অবস্থিত কাশিপুর থানার অন্তর্গত ভাঙরের কৃষ্ণমাটি নামা এলাকায় ফেলা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পরপরই সিআইডির একটি টিম সেখানে পৌঁছে তল্লাশি শুরু করে। 

সিআইডির একটি সূত্র জানিয়েছে, আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার সন্দেহে জিহাদ হাওলাদার (২৪) নামে একজনকে মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুম্বাই থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে জিহাদকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় ডেকে নেওয়া হয় আনার হত্যাকাণ্ডের জন্য। পেশায় কসাই জিহাদ মুম্বাইয়ে বসবাসকারী একজন অবৈধ অভিবাসী। 

জিহাদ হাওলাদার বাংলাদেশের খুলনা জেলার দীঘলিয়া উপজেলার ব্যারাকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। মাস দু-এক আগে তাঁকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় ডেকে নেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এবং এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান বলেও জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি। জিহাদকে আজ বারাসাত আদালতে পেশ করা হবে। 

এদিকে, গতকাল যে ক্যাবচালককে আটক করা হয়েছে, তাঁর নাম জুবের। সিআইডি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, জুবের সংসদ সদস্য আনারের মরদেহ টুকরো টুকরো করে কাটার জন্য সিয়াম নামে একজনকে ডেকে আনে। পুলিশ সিয়ামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। এদিকে, এমপি আনারের খুনের দিনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা নারী শিলাস্তি রহমানকেও খুঁজছে পুলিশি। 

সিআইডির একটি সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্ত আখতারুজ্জামানের নির্দেশেই জিহাদ সব কাজ করেছিলেন। জিহাদ ছাড়া আরও চার বাংলাদেশি এ কাজে তাঁকে সাহায্য করে। আনোয়ারুল আজীমকে তাঁরা প্রথমে শ্বাসরোধে খুন করেন। পরিচয় যাতে বোঝা না যায়, তাই তাঁরা শরীরের হাড় ও মাংস আলাদা করে ফেলেন। এরপর হাড় ও মাংস টুকরো টুকরো করে কেটে সবকিছু পলিথিন ব্যাগে ভরে দূরে নিয়ে ফেলেন। 
 
উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান আজিম। প্রথমে তিনি উঠেছিলেন বরাহনগরে তাঁর বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। সেখান থেকে দুই দিন পর নিখোঁজ হন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে ১৮ মে নিখোঁজ ডায়েরি করেন গোপাল। উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয় ভারত সরকারের সঙ্গে। তারপর সংসদ সদস্যের খোঁজ শুরু হয়। 

সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে, আজিম কলকাতায় আসার অনেক আগেই সেখানে চলে এসেছিল অভিযুক্তরা। শহরে বসেই তাঁরা খুনের পরিকল্পনা করেন। দুই অভিযুক্ত কলকাতার সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলে ছিলেন গত ২ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত