Ajker Patrika

‘ভোক্তা অধিকার বিভাগ’ চায় ক্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‘ভোক্তা অধিকার বিভাগ’ চায় ক্যাব

ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণের জন্য ‘ভোক্তা অধিকার বিভাগ’ দাবি করেছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। আজ সোমবার দুপুরে ‘অতিমুনাফা ও প্রতারণার শিকার ভোক্তারা: আইন মানার তোয়াক্কাই নেই’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে সরকারের উদ্দেশে এ দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এম সামসুল আলম। দাবি না মানলে আন্দোলন করবেন বলেও জানান তিনি।

সামসুল আলম বলেন, ‘আমরা ভোক্তা মন্ত্রণালয় চাচ্ছিলাম। ভোক্তা অধিদপ্তর ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে যথেষ্ট নয়, অন্তত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে আপাতত ‘ভোক্তা অধিকার বিভাগ’ চাই। নিশ্চিতভাবে ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য সরকারের পলিসি বিভাগ উদ্যোগ নেবে এবং সরকারের যথাযথ প্রশাসন তার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করবে।’ 

ওয়েবিনারে ক্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাঠামো অনুযায়ী ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ভোক্তা অধিদপ্তরও যথেষ্ট নয়। এর জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় প্রয়োজন। তবে আপাতত ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে ‘ভোক্তা অধিকার বিভাগ’ জরুরি। 

ওয়েবিনারটি পরিচালনা করেন ক্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। 

নাজের হোসাইন বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা ঠেকাতে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ অভিযান পরিচালনা করছে। অপরাধের জন্য আদায় করা হচ্ছে জরিমানা, করা হচ্ছে সতর্ক। কিন্তু তারপরও অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা বন্ধ হচ্ছে না। 

সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরে ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, এ অসাধু ব্যবসায়ীদের ভিত এতই শক্তিশালী যে, সরকারি প্রশাসন যন্ত্র মনে হয় তাদের কাছে অসহায়। এরা টাকার জোরে সরকারি আমলা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিভিন্ন মিডিয়াকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। এ রকম জলজ্যান্ত মানুষ মেরে কোটিপতি হওয়ার লোকের সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। এরই মধ্যে একই কায়দায় গুড়োদুধে ময়দা মিশ্রিত করার হোতাসহ চিনি, সয়াবিন, চাল কেলেঙ্কারি হোতাদের কোনো শাস্তি হয়নি। তারা পর্দার আড়ালে আবার রেহাই পেয়ে যায়। আর সাধারণ ভোক্তা হিসেবে জনগণ অসচেতন ও অসংগঠিত, ভোক্তার অধিকার সম্পর্কে অজ্ঞতা, ভোক্তা সংগঠনগুলোকে সরকারি উপেক্ষার কারণে প্রকারান্তরে বাংলাদেশকে ভেজাল ও নিম্নমানের খাদ্যের বাজার ও পরীক্ষাগারে পরিণত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ফলে মানুষ যা আয় রোজগার করছে তার সিংহভাগই ওষুধ ও চিকিৎসার খরচ জোগাতে চলে যাচ্ছে। সরকার ও বহুজাতিক দাতা সংস্থাগুলো ব্যবসায়ী ও চেম্বারগুলোকে নানা সুবিধা দিলেও ভোক্তাদের সচেতনের জন্য কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, বর্তমানে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের মধ্যে ভারসাম্যহীন পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যা ব্যবসায় সুস্থ ধারা বিকাশে বড় বাধা। অতিমুনাফা করতে পণ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি এবং প্রাইজ ট্যাগ ঘষামাজা করে নতুন দাম বসানো হচ্ছে, যা ফৌজদারি অপরাধের শামিল। সভায় প্রত্যেক জেলায় এ ধরনের একটি করে সুনির্দিষ্ট ঘটনা শনাক্ত করতে বলা হয়, যেগুলোর বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা করা হবে বলে জানানো হয়। 
 
ক্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, আইন দিয়ে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সব সময় সম্ভব নাও হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজন অতিমুনাফালোভী, প্রতারক, মজুতকারী ও অসাধু ব্যবসায়ীদের সামাজিকভাবে বয়কট করা। তাহলেই হয়তো ব্যবসা-বাণিজ্যে জবাবদিহি ও সুশাসন নিশ্চিত হবে। 

দেশে এমন কোনো খাত নেই যেখানে অসাধু ব্যবসায়ীরা মাথাচাড়া দেয়নি বলে আক্ষেপ প্রকাশ করে ড. এম সামসুল আলম বলেন, ‘আমরা ভোক্তারা অনেকটা বন্দী হয়ে গেছি। এই বন্দিদশা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দেশের আইন, সরকারি প্রতিষ্ঠান কেউ-ই সফল নয়।’ 

ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করলেও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ফৌজদারি মামলা করার এখতিয়ার নেই। কিন্তু ক্যাবের মামলা করার অধিকার রয়েছে বলে সভায় জানানো হয়। তা ছাড়া ভোক্তাকে ঠকানো প্রতারণা শামিল বলে যে কেউ অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা করতে পারে বলেও জানান বক্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত