Ajker Patrika

কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান পরিপন্থী : টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান পরিপন্থী : টিআইবি

ঢাকা: অর্থবিলে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বহাল করাকে দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতার নামান্তর বলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ সিদ্ধান্তকে সততা, নৈতিকতা ও সংবিধান পরিপন্থী বলেও মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অর্থবিলে ২৫ শতাংশ কর এবং অতিরিক্ত ৫ শতাংশ জরিমানা দিয়ে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবনায় না থাকার পরও এমন ঢালাও সুযোগ দুর্নীতিবাজ ও এর পৃষ্ঠপোষকদের জন্য উপহার হিসেবে বিবেচনা করছে টিআইবি।

বাজেট ঘোষণায় উল্লেখ না থাকার পরও কীভাবে তা পুনরায় অর্থবিলে যুক্ত হলো? সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলে আজ বুধবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা নিয়ে সরকার এবার রীতিমতো অশুভ চালাকির আশ্রয় নিয়েছে। কেননা ন্যায্যতা ও ন্যায়নিষ্ঠতার নামে অর্থমন্ত্রী যে বিষয়টি প্রথমে বিবেচনা করেননি, তা কোন নৈতিকতার বিচারে চূড়ান্তভাবে রেখে দিলেন, সে ব্যাখ্যা তিনি অর্থবিল পাসের সময়ও দেননি।

তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্ক ও সমালোচনা এড়াতেই সুযোগটি প্রাথমিকভাবে বাজেটে কোথাও রাখা হয়নি। যদিও বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় শুরু থেকেই ছিল। এটি শুধু বাজেট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেনি বরং সরকারের মাঝে জবাবদিহির সংস্কৃতিক্রমেই বিলুপ্ত হওয়ার ইঙ্গিতও বহন করে। সরকারের এই পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতার’ অঙ্গীকারকে পদদলিত করছে।’

কর ও জরিমানা ধার্য করে সরকার যে বার্তাই দিতে চাক না কেন, এর ফলে অনৈতিকতা ও দুর্বৃত্তায়নের সুযোগ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করল বলেও মনে করে টিআইবি। এতে সাময়িকভাবে কিঞ্চিৎ বেশি কর পাওয়ার সুযোগ তৈরি হলেও বিপরীতে দুর্নীতিগ্রস্ত স্বার্থান্বেষী শক্তির কাছে সরকারের যে নৈতিক পরাজয় ঘটল, তা সত্যিই শঙ্কিত হওয়ার মতো। সরকারের এই অবস্থান বৈষম্যমূলক, দুর্নীতি সহায়ক ও সংবিধানের ২০ (২) অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যা কখনো কাম্য হতে পারে না।’

নতুন শিল্পকারখানা স্থাপনে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে এমন সুযোগ আগে থেকে রাখা হলেও এর মাধ্যমে কত অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে কিংবা আদৌ হয়েছে কী না তার কোনো হিসাব সরকার কখনো প্রকাশ করেনি। সরকার একদিকে কালো টাকার মালিকদের নতুন করে কালো টাকা তৈরির আইনি গ্যারান্টি দিচ্ছে, অন্যদিকে সৎ নাগরিকদের প্রলোভিত করছে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হতে।’

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ উচ্চমাত্রা পেতে যাচ্ছে এটিকে চরম হতাশার বলে উল্লেখ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। তারপরও টিআইবি আশা করে, আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও শুদ্ধাচার নিশ্চিতে সরকার সদিচ্ছা দেখিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।’

বিষয়:

টিআইবি
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত