Ajker Patrika

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদারে ইউনূস-রুবিওর যৌথ প্রতিশ্রুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৫, ০০: ২৯
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মার্কো রুবিও। ছবি: সংগৃহীত
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মার্কো রুবিও। ছবি: সংগৃহীত

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদারে যৌথ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এক ফোনালাপে তাঁরা এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ট্যামি ব্রুস জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আজ সোমবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছেন। উভয়ই যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনালাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি এবং আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুই নেতা ১৫ মিনিটের মতো কথা বলেন। এই আলোচনা ছিল উষ্ণ, হৃদ্যতাপূর্ণ ও গঠনমূলক, যা দুই দেশের দৃঢ় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটায় বলে প্রেস উইংয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

আলোচনায় উভয় নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলেন, যার মধ্যে ছিল বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা, চলমান সংস্কারপ্রক্রিয়া, গণতন্ত্রে উত্তরণের পথরেখা, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি এবং আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা জানান।

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি গন্তব্য ও রেমিট্যান্সের শীর্ষ উৎস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা তুলে ধরে উভয় নেতা শিগগিরই শুল্কসংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবে।

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যান্ডাউর সঙ্গে অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটি বৈঠক করেছেন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে উভয় পক্ষের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক ব্যবস্থা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করতে তাঁর অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার জন্য। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে একটি কার্যকর প্রস্তাব প্যাকেজ চূড়ান্ত করার কাজ করছি, যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাণিজ্য কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।’

গণতন্ত্রে উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন কামনা করে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস পুনরায় জানান, আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান সংলাপ দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার বহুল প্রত্যাশিত সংস্কারের পথ তৈরি করবে।

ইউনূস বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে, যা আগের সরকার পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছিল। আমাদের তরুণেরা এবারই প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে।’

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উদার সহায়তা অব্যাহত রাখায় ওয়াশিংটনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় শীর্ষ দাতা দেশ হিসেবে অবদান রাখছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার টেকসই সমাধান ও প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা বর্তমানে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি এবং বাংলাদেশ এই প্রক্রিয়ায় কাজ করে যাচ্ছে।

দুই নেতা ভূরাজনৈতিক বিষয়েও আলোচনা করেন, যার মধ্যে ছিল শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা এবং বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক।

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওকে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, ‘আপনার উপস্থিতি আমাদের তরুণদের অনুপ্রাণিত করবে।’

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে দেওয়া বিবৃতিতে মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আজ (সোমবার) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির প্রতি তাঁদের অভিন্ন প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্বে চাকরির বাজারে কম দামি ১২ ডিগ্রি, কদর বাড়ানোর উপায় কী

পোশাক কারখানায় রাতভর নির্যাতনে ইলেকট্রিশিয়ানের মৃত্যু, সহকর্মী গ্রেপ্তার

চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণ, অভিযোগ শ্রমিক-ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে

হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত রাজশাহীর ৭ বন্দীর সাজা মওকুফ

স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু ‘বিষক্রিয়ায়’, কেয়ারটেকার চাচাকে সন্দেহ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত