Ajker Patrika

বৈদেশিক সম্পর্ক /নির্বাচিত সরকারের জন্য অপেক্ষায় ভারত-চীন

  • ভারত সম্পর্ক ভালো করার কথা বললেও কাজে উল্টো।
  • দিচ্ছে নিষেধাজ্ঞা, অব্যাহত রেখেছে পুশ ইন।
  • চীনও নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজে আগ্রহী বলে সফর শেষে জানাল বিএনপি।
কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৫, ০৯: ৪৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন মাস আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কথা হয়েছিল চীন ও ভারতের দুই শীর্ষ নেতার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত বরফ গলতে শুরু করবে, এমন আশাবাদ ছিল সরকারের। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের সুযোগে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের পালে জোর হাওয়া লাগার আশা জাগে সরকারের অনেকের ভেতর। কিন্তু বাস্তবে দুই আঞ্চলিক পরাশক্তির কারও সঙ্গেই সম্পর্ক তেমন এগোচ্ছে না।

তিন দেশের কূটনীতিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত শুরু থেকেই খুব প্রয়োজন না হলে দূরত্ব বজায় রাখার কৌশল নেয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা আসার পর বাংলাদেশে সরকারের ভেতরে-বাইরে ধীরে হলেও নির্বাচনের হাওয়া বইছে। কয়েকটি দল এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী প্রচারও শুরু করে দিয়েছে। এখন ভারতের পাশাপাশি চীনও নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তার সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা মনে করছেন, দিল্লি থেকে একের পর এক বিভ্রান্তিকর সংকেত আসছে। ভারতের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে ‘সম্পর্ক মেরামতের’ পরামর্শ দিচ্ছেন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মাঝেমধ্যে ভালো ভালো কথা বলে। কিন্তু বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তার উল্টো। পুশ ইন ও সীমান্ত হত্যা চলছে। নিয়মিত কিছু বৈঠক চেয়েও কোনো সাড়া মেলে না। এমন অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্পর্কের বরফ গলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

সরকারের বাইরের বিশ্লেষকেরা অবশ্য মনে করছেন, বাংলাদেশের চারদিকে ভারত থাকায় দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও সমালোচনার ভয়ে সরকার সেদিকে যাচ্ছে না। এর বাইরে চীনসহ অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কেও বাস্তবে তেমন অগ্রগতি নেই।

বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারও সঙ্গেই সম্পর্ক খুব একটা এগোচ্ছে না। সরকারের নামই যখন অন্তর্বর্তী সরকার, তখন সবাই বোঝে, এ সরকার সীমিত সময়ের জন্য। এ কারণে দেশগুলো নিয়মিত সরকারের মতো এ সরকারকে গণ্য করে না; এটাই স্বাভাবিক।

চীনে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা এই কূটনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এ সরকার এলেও তারা কতটা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে, সে বিষয়েও বিদেশিদের মধ্যে প্রশ্ন আছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। এ কারণে প্রায় সব দেশ নির্বাচিত নিয়মিত সরকার দায়িত্বে আসার জন্য অপেক্ষা করছে।

মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি গত ৪ এপ্রিল ব্যাংককের বৈঠকে গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন।

এমন প্রেক্ষাপটে দিল্লি থেকে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর সংকেত আসার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এক কূটনীতিক বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গত ২৬ জুন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ‘ভালো করার’ চেষ্টার কথা ঢাকায় সাংবাদিকদের জানান। পরদিন (২৭ জুন) দিল্লি থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিন ধরনের সংকেত এসেছে।

তৌহিদ হোসেনের মন্তব্যকে সূত্র করে দিল্লিতে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ২৭ জুন বলেন, অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে ভারত সরকার প্রস্তুত। বাংলাদেশের সঙ্গে ঝুলে থাকা বিভিন্ন ইস্যু সমাধানেও ভারত সরকার অপেক্ষা করছে।

একই দিন (২৭ জুন) দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে কথা বলেন দেশটির সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, বাংলাদেশে সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস, অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ আতা হাসনাইন ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অমিতাভ মাতো।

কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী কংগ্রেস নেতা ও এমপি শশী থারুর বৈঠকের পর দিল্লির গণমাধ্যমকে জানান, বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তাঁদের অভিমত দিয়েছেন। তাঁরা ভারতে যাওয়া বাংলাদেশের নাগরিকের সংখ্যা কমে আসার কথা জানান।

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান ক্ষমতাকাঠামোর নতুন বাস্তবতা বুঝে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মেরামত করা দরকার। বেসরকারি খাতের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে হলেও ইউনূসের সরকারের সঙ্গে ভারতকে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ তৈরি করতে হবে।

ভারতীয় বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ‘চীন-পাকিস্তান চক্র’ অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন উপায়ে যেভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা বাড়াচ্ছে, তার প্রভাব বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বর্তমান টানাপোড়েনের সম্পর্কের ওপর পড়বে। পাকিস্তানকে ভারত যেভাবে দেখে, বাংলাদেশকে একই দৃষ্টিতে না দেখার ওপরও তাঁরা জোর দেন। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা নেতিবাচক।

সেদিনই (২৭ জুন) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। যেসব পণ্যের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা এসেছে, সেগুলো হলো কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড়। তবে শুধু মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য ভারতে যেতে পারবে। অথচ এসব পণ্য সাধারণত স্থলবন্দর হয়েই রপ্তানি হয়ে থাকে।

সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, এই ৯ বাংলাদেশি পণ্য ভারতের স্থলবন্দর হয়ে নেপাল ও ভুটানে রপ্তানির ক্ষেত্রে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এসব পণ্য ব্যবহার করে তৈরি হওয়া পণ্য দেশ দুটি অন্য দেশে রপ্তানি করতে পারবে না।

এই নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে ভারত তিন মাসে তিন দফা বিধিনিষেধ আরোপ করল। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা, সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় বাংলাদেশ থেকে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আর গত ৭ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা ভারত সরকার প্রত্যাহার করে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশটি থেকে স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে রপ্তানির ওপর আসা বিধিনিষেধের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত।

বাংলাভাষী ভারতীয়দের বাংলাদেশে পুশ ইন করার বিপক্ষে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সার্বিকভাবে পুশ ইন বন্ধ হয়নি। পুশ ইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার জন্য কনস্যুলার সংলাপ চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এ বিষয়ে ভারতের দিক থেকে কোনো সাড়া নেই। এর বাইরে অনেকগুলো নিয়মিত বৈঠকও আটকে আছে ভারতের অনাগ্রহে।

বাংলাদেশে ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর বিষয়ে ভারত সরকারের মন্তব্য করাকেও এখানে সরকার ভালোভাবে নিচ্ছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নীতিগত অবস্থান হিসেবেই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা হয় না। কিন্তু ভারতের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ সেটাই করে চলেছে।

১৯৯৬ সালে ৩০ বছরের জন্য সই হওয়া গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগি চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর (২০২৬) শেষ হচ্ছে। ২০২৪ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতে শেখ হাসিনার সর্বশেষ সফরে চুক্তিটি পর্যালোচনার বিষয়টি আসে। দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের এ বিষয়ে কাজ করার কথা। কিন্তু হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর বিষয়টি আর এগোয়নি।

ভারতে অথবা ভারত হয়ে অন্য দেশে রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি ভারত থেকে মানুষের পুশ ইন, সীমান্ত হত্যাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপকে স্থানীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশের ওপর চাপ তৈরির কৌশল হিসেবে গণ্য করছেন।

মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করার আশাবাদের কথা জানান।

এর তিন মাসের মাথায় গত সপ্তাহে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটি সফর করে এলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল ঢাকায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর আশাবাদের কথা চীনা নেতারা তাঁদের জানিয়েছেন।

ফখরুল বলেন, ‘চীন আশা করছে, একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তারা আরও গভীর, আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে পারবে।’

বিএনপি নেতার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বজায় রাখার দিকটিতেও চীনাদের আগ্রহ আছে।

চীনের এক কূটনীতিক বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক বজায় থাকা তিন দেশের জন্যই প্রয়োজন। এতে চীনেরও স্বার্থ আছে। সেটা হলো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকা। এ ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংশোধিত আরপিও নিয়ে বিতর্ক, এল যেসব পরিবর্তন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিধান, আবার কিছু কিছু বিধান আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।

সংশোধিত আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:

আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে তাঁকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে না ভোট বেশি হলে সেখানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হবে। তবে দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী হলে সেই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।

ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে।

আগে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে জোটের যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত। সেটি সংশোধন করা হয়েছে। জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের মার্কায় ভোট করতেন। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।

প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের পাশাপাশি আইনি হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট দিতে পারবেন।

প্রার্থীর জামানত বাড়ানো হয়েছে। আগে ২০ হাজার টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে চাইলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি অনুদান দেবেন, তাঁর ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পুরো আসনের ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা কমিয়েছিল। সংশোধিত আরপিওতে শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে, সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রার্থীর হলফনামায় আগে শুধু দেশের সম্পদের হিসাব দেওয়া হতো। সংশোধিত আরপিওতে শুধু দেশের নয়, বিদেশের আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ দিতে হবে।

এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-সংক্রান্ত বিধানটি সংশোধিত আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত নয়, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও দরকার: আসিফ নজরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।

আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’

বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।

তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।

কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।

কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিনেটে শুনানিতে ট্রাম্প–মনোনীত রাষ্ট্রদূত

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন। ছবি: সংগৃহীত
গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন ক্রিস্টেনসেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মমোনীত এই কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে সামরিক সহযোগিতা, সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে সম্পৃক্ততাসহ চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবনে। পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করার জন্য কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন ক্রিস্টেনসেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। সিনেট কমিটির অনুমোদনের পরই তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এই মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে চার রাষ্ট্রদূত প্রার্থী লিখিত বিবৃতি তুলে ধরেন। পরে তাঁরা সিনেট সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস শুনানিতে বলেন, ‘আমরা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মুখে। বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন রাখার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি কৌশলগত সাবমেরিন ঘাঁটি আধুনিকায়ন করেছে চীন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নতুন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও দূরপাল্লার রাডার কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পেলে চীনা সামরিক সরঞ্জামের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রিস্টেনসেন কীভাবে কাজ করবেন, তা জানতে চান সিনেটর রিকেটস।

নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস। ছবি: সংগৃহীত
নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস। ছবি: সংগৃহীত

জবাবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে আপনাদের মতো উদ্বেগ আমারও। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে চীনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা তুলে ধরব, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।’

এ সময় সিনেটর রিকেটস বলেন, ‘এই শুনানির আগের দিনই সিনেট পররাষ্ট্র কমিটি সর্বসম্মতভাবে ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ পাস করেছে। এই আইন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণাঙ্গ কৌশল নিতে বাধ্য করবে, যাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে চীনা অস্ত্র কেনা থেকে বিরত রাখা যায়। আমরা আশা করি, আপনিও এই আইনের সহায়তা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’

তাঁর এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘সামরিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জামের বিকল্প হিসেবে মিত্রদেশগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশকে জানাতে পারি। পাশাপাশি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মগুলোকে অন্যান্য মিত্র বাহিনীর সঙ্গে আরও সমন্বিত ও কার্যকর করতে পারি।’

শুনানির শুরুতে লিখিত বিবৃতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন হয়েছিল, তা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে পতন ঘটায়। আগামী বছর বাংলাদেশের জনগণ ভোটে যাবে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় পাশে থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক সময় তাঁর প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, বড় প্রতিবেশীদের আড়ালে গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসেবায় আমার দুই দশকের অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে ঢাকার কর্মকালও রয়েছে। তাই, আমি বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ড তদন্তে চার দেশের বিশেষজ্ঞ আনা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫৩
বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের তিনি এই তথ্য জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার বিষয়টি তদন্তের জন্য আমরা চারটি দেশকে ইনভাইট করেছি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্ককে আসতে বলেছি। তাদের স্পেশালিস্ট আমরা আনতে চাচ্ছি। তারা তদন্ত করে কারণটা কী এবং কে দায়ী বের করবে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দরের ভেতরে চারটি ইউনিট আছে। চারটি ইউনিটই কাজ করছে। আমরা আশা করছিলাম তাড়াতাড়ি কন্ট্রোলে আসবে। কন্ট্রোলে আসতে একটু সময় লাগছে। যেহেতু বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিন্তা করতে হয়। যেহেতু দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। অনেক সময় বাতাস থাকলে নেভাতে সময় লাগে।’

কার্গো ভিলেজে বিশেষায়িত ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কেন ছিল না—এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আগুন নেভানোর জন্য বিমানে যে ইউনিট থাকে, সেটা কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে পারে। এটিতে কোনো অসুবিধা নাই।’

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আগুন নেভাতে কেউ ফেল করেনি। কিন্তু সময় লাগছে। ফেল করলে সব জ্বলে যেত। ওই দিন রাত ৯টার সময় বিমানবন্দর চালু করে দিয়েছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দর অথরিটির চারটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট আছে। সেগুলো ৩০ সেকেন্ডের ভেতরে চলে আসছিল। ফায়ার সার্ভিসের যে ইউনিটগুলো আছে, তার একটি দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ওখানে, আরেকটি কুর্মিটোলায়। সেগুলো ২০ মিনিটের ভেতরে চলে আসছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যেখানে আগুন ধরেছে, সেখানে কেমিক্যাল ও গার্মেন্টস ম্যাটেরিয়াল ছিল। দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। যার কারণে আগুনটা ছড়িয়ে গেছে তাড়াতাড়ি। কন্ট্রোল করতে সময় নিয়েছে।’

১৮ অক্টোবর বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট-সংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টায় রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পুরোপুরি নির্বাপণ হয় ২৬ ঘণ্টা পর ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টার দিকে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত