Ajker Patrika

ভাসানচরের মতো কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির চায় জাতিসংঘ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
ভাসানচরের মতো কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির চায় জাতিসংঘ

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক কার্যক্রম শুরু করা নিয়ে দেনদরবার করছে জাতিসংঘ। এবারের দেনদরবারে আরও শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ এত দিন ভাসানচরে যাওয়ার বিরোধিতা করলেও এখন কক্সবাজারে ভাসানচরের মতো অবকাঠামোসহ সুবিধা দাবি করছে। এ জন্য অর্থদাতাদের চাহিদাকে কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তবে সরকার এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যাওয়া নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তাতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতা, শিক্ষা, কর্মসংস্থানের সুযোগ, নির্বাচনের সুযোগসহ বিভিন্ন শর্ত দিয়েছে জাতিসংঘ। সেই সঙ্গে ভাসানচরের মতো কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরেরও আবদার জুড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসব শর্তের মধ্যে আরও কিছু শর্ত রয়েছে, যা মানেনি বাংলাদেশ। ফলে ভাসানচর যাওয়ার দর-কষাকষি এখনো শেষ হয়নি। আলোচনা শেষ হলে সরকার ও জাতিসংঘের মধ্যে একটি চুক্তি হওয়ার কথা। তবে সেই চুক্তি এখনো হয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভাসানচর রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে। সেখানে আজীবন থাকার জন্য তৈরি করা হয়নি। আর সে ধরনের সুযোগ-সুবিধা যদি কক্সবাজারে করা হয়, তবে রোহিঙ্গারা কখনোই বাংলাদেশ ছেড়ে যাবে না। বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হলো রোহিঙ্গাদের নিরাপদে, সম্মানের সঙ্গে দ্রুত নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসন করা।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের এক শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ভাসানচরের মতো সুযোগ-সুবিধা কক্সবাজারে রাখার জন্য জাতিসংঘ কোনো দেনদরবার করেনি। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এত দিন তারা ভাসানচর নিয়ে সমালোচনা করেছে। এখন ভাসানচরের মতো অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুবিধা কক্সবাজারে চাইছে। এতে রাজি নয় বাংলাদেশ, তা পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া বাকি শর্তগুলো আংশিকভাবে মেনে নিয়েছে বাংলাদেশ বলেও জানান এই কর্মকর্তা। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, যেমন রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতা চেয়েছে জাতিসংঘ। এখানে শুধু জরুরি ক্ষেত্রে, ধরেন হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ল, সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলোয় বাংলাদেশ ছাড় দেবে।
ভাসানচরের মতো কক্সবাজারে অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা নিয়ে প্রশ্ন করলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে মো. মোহসীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ রকম কোনো শর্ত নেই। সব বিষয়ে মতৈক্য হয়ে গেছে।

তবে শর্তের কথা আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘ বায়না ধরেছে, ভাসানচরে যে রকম সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, অন্য রোহিঙ্গাদের জন্যও একই রকম সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। এগুলো একটু বেশি বাড়াবাড়ি। নিশ্চয়ই আমরা তাদের এ ধরনের প্রস্তাবে রাজি হব না। আমরা যা দিতে পারি তাই দেব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত