Ajker Patrika

স্বাধীনতার পথে দেশকে নিয়ে যায় গণ-অভ্যুত্থান

শফি আহমেদ
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯: ৩৭
স্বাধীনতার পথে দেশকে নিয়ে যায় গণ-অভ্যুত্থান

মহান গণ-অভ্যুত্থান দিবস আজ। ১৯৬৯ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক ১১ দফার ভিত্তিতে রচিত হয় মহান গণ-অভ্যুত্থান। আত্মাহুতি দেন মতিউর ও রুস্তম। এর আগে ২০ জানুয়ারি ছাত্রদের মিছিলে গুলি হলে শহীদ হয়েছিলেন ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান। এই হত্যার প্রতিবাদেই ২৪ জানুয়ারি প্রদেশব্যাপী ডাকা হয়েছিল সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। বস্তুত, এই মহান গণ-অভ্যুত্থানের বীজ রোপিত হয়েছিল ১৯৫২ সালের মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে।

২১ জানুয়ারি ঢাকায় ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম কমিটি’ ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি শোক ও হরতাল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। আসাদ হত্যার পরের তিন দিন সরকারের নিয়ন্ত্রণ বলে কিছু ছিল না। শহর থেকে সরকারি বাহিনী অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম কমিটির শোক ও হরতাল কর্মসূচির শেষ দিনে, অর্থাৎ ২৪ জানুয়ারি পুলিশ আবার বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর গুলি চালায়। এর ফলে পরিস্থিতি সরকারের এতই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে ‘লৌহমানব’ আইয়ুবশাহী তাঁর বাকি দুই মাস আয়ুষ্কালে আর কখনোই ১৪৪ ধারা জারি করতে পারেননি। 

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান নামক যে রাষ্ট্রটির গোড়াপত্তন হয়েছিল, তার প্রতি বাঙালির মোহমুক্তি ঘটে ১৯৪৮ সাল থেকেই। মহান ভাষা আন্দোলন বাঙালির জাতিসত্তাকে নতুনভাবে উজ্জীবিত করে। 

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বাঙালির স্বার্থের পক্ষে আপসহীন যুক্তফ্রন্ট জয়ী হলেও সেই রায় মানা হয়নি। ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করেন। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসমাজ, প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তাকে বিকশিত করার পক্ষে নিরলস প্রচেষ্টা চালানো হয়।

১৯৬২ ও ১৯৬৪ সালের শিক্ষা আন্দোলন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালিকে আবারও ঐক্যবদ্ধ করে। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণা করেন। ছয় দফা দাবির ভিত্তিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ দেশব্যাপী প্রচার চালায় ও একে জনপ্রিয় করে তোলে।

নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শফি আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ প্রমাণ করেছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও বাঙালি জাতি কত অসহায়। ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধুসহ অন্য নেতৃবৃন্দের নামে আইয়ুবশাহী আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর মুক্তি ও ছয় দফাকে সামনে নিয়ে নিরন্তর আন্দোলনের সূচনা করে। পাশাপাশি মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর অনুসারীরা এবং পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি সামরিক শাসন প্রত্যাহার ও বিভিন্ন দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলন অব্যাহত রাখে।

১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি মতিউর রহমানের আত্মদানের মধ্য দিয়ে গোটা পূর্ব পাকিস্তান অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। জনগণ রাজপথে নেমে আসে। এর পেছনে ছিল ছাত্রলীগ এবং এ দেশের ছাত্রসমাজ। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আইয়ুবশাহী ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এ দেশের ছাত্রসমাজ স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সুনির্দিষ্টভাবে কর্মপন্থা গ্রহণ করেছিল। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান দেশকে নিয়ে যায় স্বাধীনতার পথে এবং ছাত্রসমাজ থাকে এই আন্দোলনের সামনের সারিতে। 

১৯৬৯ সালের জানুয়ারিতে শেখ মুজিবুর রহমান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ১ নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে ফাঁসির আদেশের ঝুঁকির মুখে। তাঁকে মুক্ত করে আনে ছাত্র-জনতা। মুক্ত বিজয়ী বীর শেখ মুজিবুর রহমানকে বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে ছাত্রসমাজ, ডাকসু ও ছাত্রলীগ ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পশ্চিমাদের ক্ষমতা হস্তান্তরে অনীহা বাঙালিকে এক দফা আন্দোলনের পথে নিয়ে যায়। সাড়ে ৭ কোটি মানুষের তখন একজনই নেতা—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অবশেষে নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আসে আমাদের এই স্বাধীনতা। 

আসাদের শার্ট লাঠির মাথায় বেঁধে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক মিছিলের প্রেক্ষাপটে কবি শামসুর রাহমান লিখেছিলেন তাঁর বিখ্যাত স্বাক্ষরফলক কবিতা—‘আসাদের শার্ট’। আসাদ-হত্যার প্রতিক্রিয়ায় তিনি আরও একটি অমর কবিতা লিখেছিলেন—‘এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়?’ হেলাল হাফিজ লিখেছিলেন তাঁর অন্যতম বা সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ (এখন যৌবন যার মিছিলে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়) কবিতাটি। 

আসাদ-হত্যাই আমাদের দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সামাজিক-রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ একক হত্যাকাণ্ড। এক অতি স্বল্প পরিচিত ছাত্রনেতার হত্যাজনিত স্ফুলিঙ্গ গণ-অভ্যুত্থানের দাবানল সৃষ্টি করেছিল যা আইয়ুবের পরিণতি অমোচনীয় ভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছিল। 

শুধু ক্ষমতাচ্যুতিই নয়, আসাদ হত্যাকাণ্ড নিমেষে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আইয়ুব খানের সমস্ত নাম-নিশানা, স্থাপনাও নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল।

সারা বিশ্ব আজ এক সংকট মোকাবিলা করছে, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। প্রতিদিন নতুন নতুন অনিশ্চয়তা নিয়ে উঠছে ভোরের সূর্য। এমন পরিস্থিতিতে অনেকটাই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা। প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপণ্যের বাজার মূল্য। ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনৈতিক মাঠ। 

আগামী দিনগুলোর পথচলায় পাথেয় হোক নব্বইয়ের আন্দোলনের মূল চেতনা অসাম্প্রদায়িক, শোষণ-বৈষম্যমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের চেতনা। যে চেতনায় আত্মাহুতি দিয়ে উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, হয়েছিল একাত্তরের সশস্ত্র সংগ্রাম। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। 

আসুন আমরা বাংলাদেশে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করি যাতে যুক্তরাষ্ট্রের মতো গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণ করা যায়। আজকের এই দিনে মানুষের সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক মানবাধিকার ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই হোক গণ-অভ্যুত্থান দিবসের অঙ্গীকার। 

লেখক: নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালনা কমিটি গঠনের কার্যক্রম বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালনা কমিটি গঠনের কার্যক্রম বন্ধ

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক) পরিচালনা কমিটি গঠনের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-১) সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলীর সই করা অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

আদেশে বলা হয়, হাইকোর্ট বিভাগে করা রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ অক্টোবরের আদেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ৮ সেপ্টেম্বরের জারি করা পরিপত্রটি তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই পরিপত্রের আলোকে নতুন কোনো কার্যক্রম গ্রহণ না করার নির্দেশ দেওয়া হলো।

এর আগে ২১ অক্টোবর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলতি বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন এবং সব অ্যাডহক কমিটি আগামী ১ ডিসেম্বর বিলুপ্ত হবে—মন্ত্রণালয়ের এমন পরিপত্রের কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাসহ ২৬১ জনকে পলাতক দেখিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৫১
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৬১ জন আসামিকে ‘পলাতক’ দেখিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে আজ শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুটি জাতীয় দৈনিকে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

আজ বিকেলে সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

সিআইডি জানিয়েছে, ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’-এর জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের এই মামলা করা হয়।

সিআইডির ব্যাখ্যা অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আরিফুল ইসলাম ২৬১ জন আসামিকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। মামলাটি করা হয় গত ২৭ মার্চ। বাদী ছিলেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক।

এরপর গত ৩০ জুলাই শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। ১৪ আগস্ট আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে ১১ সেপ্টেম্বর আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রাব্বী আলমের নেতৃত্বে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’-এর একটি জুম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কয়েক শ নেতা-কর্মী অংশ নেন। ওই মিটিংয়ে শেখ হাসিনা বক্তব্য দেন এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উৎখাতের নির্দেশ দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

সিআইডির অভিযোগ অনুযায়ী, তাঁর ওই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা ও উসকানিমূলক কার্যক্রমে পরিণত হয়।

এ মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন খুলনার যুবলীগ নেতা পারভেজ খান ইমন, চট্টগ্রামের জয় বাংলা ব্রিগেডের প্রধান কবিরুল ইসলাম আকাশ, বরিশাল বিভাগের অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সোহানা পারভীন রুনা, হাফিজুর রহমান ইকবাল, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মধু, এলাহী নেওয়াজ মাছুম, সাজ্জাদুল আনামসহ অনেকে।

মামলায় এখন পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্য ২৬১ জনকে পলাতক দেখিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার অর্থ পাচার মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাহাঙ্গীর আলম
জাহাঙ্গীর আলম

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের প্রাথমিক অনুসন্ধানে অর্থ পাচারের উল্লেখযোগ্য প্রমাণ মেলায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় আজ শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মামলা করা হয়েছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ধারা ৪(২)(৪) অনুযায়ী মামলাটি করা হয়।

আজ বিকেলে সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম প্রথমে সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০০৯ সালে বর্তমানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর স্বল্প সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই পদে থেকেই তিনি অস্বাভাবিকভাবে আর্থিকভাবে লাভবান হন বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০১০ সালে তিনি ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসার লাইসেন্স নেন। তবে ওই ব্যবসার আড়ালে তিনি বহুসংখ্যক সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। কোম্পানির নামে খোলা একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।

সিআইডির অনুসন্ধান অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেডের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে। এসব টাকার উৎস অজানা এবং তা হুন্ডি ও মানি লন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

সিআইডি বলছে, অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম তাঁর স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। ২০২৪ সালের জুন মাসে তিনি ও তাঁর স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। তবে বিদেশে সম্পদ ক্রয় বা বিনিয়োগের কোনো সরকারি অনুমোদন তাদের ব্যাপারে পাওয়া যায়নি।

প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তাঁর স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। সিআইডি জানিয়েছে, অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদ্ঘাটন, সংশ্লিষ্ট অন্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য তদন্ত ও অভিযান চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গণভোটের বিষয়ে যে সিদ্ধান্তই হোক, নির্বাচন ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে: প্রেস সচিব

বাসস, ঢাকা  
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) শুক্রবার আয়োজিত অনুষ্ঠানের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: বাসস
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) শুক্রবার আয়োজিত অনুষ্ঠানের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: বাসস

গণভোট ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন। যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক না কেন, নির্বাচন ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে হবে। কোনো শক্তি এটিকে পেছাতে পারবে না। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব কথা বলেছেন।

আজ শুক্রবার দুপুরে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মত জানিয়েছে। আমরা এটিকে হুমকি হিসেবে দেখছি না। যেটা সবচেয়ে উত্তম, প্রধান উপদেষ্টা সেটাই করবেন। আগামী ১৩ নভেম্বর আদালত শেখ হাসিনার বিচারের দিন জানাবেন।’

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে নারীর ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বৈরাচার পতন ও গণ-অভ্যুত্থানে পুরুষ ও নারীরা রাজপথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন করেছেন। এখন নারীরা পিছিয়ে নেই। সব ক্ষেত্রেই তাঁরা প্রতিনিধিত্ব করছেন।

উল্লেখ্য, তরুণদের জ্ঞান ও মেধার বিকাশকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘মাইন্ডব্রিজ ও নলেজ কম্পিটিশন ২০২৫’-এর আয়োজন করা হয়।

নোবিপ্রবি কেন্দ্রীয় অডিটরিয়ামে ফাউন্ডেশনের সভাপতি জান্নাতুল নাঈম প্রমির সভাপতিত্বে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবির উপাচার্য ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। বিশেষ অতিথি ছিলেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ইসমাঈল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত