Ajker Patrika

অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে ডি-৮ দেশের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে ডি-৮ দেশের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ

দেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কগুলোতে বিএড দেশগুলোকে বিনিয়োগে আসা আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। 

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ডি-৮ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডি-৮ সিসিআই) প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত বিজনেস ফোরাম ও এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানও একই আহ্বান জানান। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডি-৮ ভুক্ত দেশগুলোর আন্তঃবাণিজ্য আগামী ১০ বছরের ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করি। যখন ডি-৮ শুরু হয় তখন তা ছিল মাত্র ১৪ বিলিয়ন ডলার। কোনো ধরনের এফটিএ (ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট) ছাড়াই বর্তমানে নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য ১৩০ বিলয়নে দাঁড়িয়েছে। তাই ডি-৮ আরও সামনে এগিয়ে যাবে। 

আব্দুল মোমেন বলেন, নানা সংকটেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ দেশে বিনিয়োগের এক অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ডি–৮ দেশগুলো এ দেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ২৮টি হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করতে পারে। বিনিয়োগ অনুপাতে এ দেশে আয়ও বেশি, প্রায় শতভাগ। সহজ লভ্য, দক্ষ ও পরিশ্রমী শ্রমিক ছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে নানা ছাড় রয়েছে। ডি–৮ দেশগুলো বিনিয়োগ করলে তা বেশ লাভজনক হবে। এরই মধ্যে ভারত, চায়না, সৌদি আরব, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বেশ কিছু দেশ আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়েছে। অন্যরাও সে সুযোগ নিতে পারে।

সালমান এফ রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক সংকট তৈরি করেছে। তবে ডি-৮ ভুক্ত দেশগুলো একে অপরকে সহযোগিতা করলে এই সংকট নিরসন সম্ভব। একসঙ্গে কাজ করলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাই লাভবান হতে পারবে। 

এফ রহমান বলেন, করোনাকালীন সময়ে বাংলাদেশ সরকারের দূরদর্শী সিদ্ধান্তে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চাল, মাছসহ নানাবিধ পণ্য রপ্তানিও করছি আমরা। বাংলাদেশকে একটি বিনিয়োগবান্ধব দেশ, ডি-৮ দেশগুলো নির্দ্বিধায় বিনিয়োগ করতে পারে। 

একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী বলেন, ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অগ্রগতি বিস্তারে বিশেষ জোর দেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ ১০০টি ইকোনমিক জোন আছে। প্রয়োজনে ডি-৮ ভুক্ত দেশগুলোর জন্য বিশেষ ইকোনমিক জোন তৈরি করা হবে। 

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, ডি-৮-এর সেক্রেটারি জেনারেল রাষ্ট্রদূত ইসিয়াকা আব্দুল তাদির ইমাম, এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দীন, ডি-৮ সিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমসহ অন্যরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ডি–৮ সদস্য বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা অর্থনৈতিক খাতের সাইবার সিকিউরিটি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইওটিতে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং টেকসইতা, সার্কুলার ইকোনোমি, শি-ট্রেডস এমএসএমই, স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম, ইনোভেশন, গ্রিন টেকনোলজি, ক্লাইমেট চেঞ্জ এবং ব্লু ইকোনমিকে ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশন বাস্তবায়নের জন্য অগ্রাধিকার ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করার দিকে গুরুত্বারোপ করেন।

দুই দিনের বিজনেস ফোরাম ও এক্সপোতে ডি-৮ সিসিআই একটি কৌশলগত রোডম্যাপ গঠনে কাজ করছে। রোডম্যাপের প্রস্তাবনার অন্যতম হচ্ছে–এ অঞ্চলে সাপ্লাই চেইনে অস্থিরতা কমিয়ে আনা এবং নিরাপদ জীবিকা, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে দীর্ঘ মেয়াদে ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশন নিশ্চিত করা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দুর্বলতা মোকাবিলার জন্য ক্রস কারেন্সি সোয়াপ, বার্টার এবং ব্লক চেইনের মতো বিকল্প বাণিজ্য অর্থ ও বাণিজ্য সুবিধা প্রদান। নন-ট্যারিফ বাধা চিহ্নিত করতে প্রক্রিয়া স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন এবং সমন্বয়। ডি-৮ প্রাইভেট সেক্টরের মধ্যে বৃহত্তর সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করতে উদ্যোক্তাদের জন্য ডি-৮ ভিসা ব্যবস্থা সহজীকরণ। টেকসই, সার্কুলার ইকোনোমি, শি-ট্রেডস, এমএসএমই, স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম, ইনোভেশন, গ্রিন টেকনোলজি, ক্লাইমেট চেঞ্জ এবং ব্লু ইকোনমিকে ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশন বাস্তবায়নের জন্য অগ্রাধিকার ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত