মোজাম্মেল হোসেন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে এখন সাংস্কৃতিক আবেদন মুখ্য। বঙ্গাব্দের মাসগুলো ঋতুচক্রের ও কিছুটা কৃষির তত্ত্বতালাশে কাজে লাগাই। আর আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-শিক্ষাগত সব প্রাতিষ্ঠানিক কাজে দিন-তারিখ ও সময়ের হিসাব রাখতে ব্যবহৃত হয় খ্রিষ্টাব্দের বর্তমানে প্রচলিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। খ্রিষ্টাব্দ সর্বজনীন ও আন্তর্জাতিক হয়ে গেলে ক্রিশ্চিয়ান এরার পরিবর্তে কমন এরা বা সাধারণ সাল বলা হয়।
২০২৩ শেষ হয়ে শুরু হলো ২০২৪ সাল। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
নতুন বছরটি কেমন যাবে? একটি বছর শেষে প্রায় সব মানুষের মনে এ প্রশ্নটি আনাগোনা করে। ব্যক্তি ও পরিবারের আশা-আকাঙ্ক্ষা, সম্পদ-আপদ, সুযোগ-দুর্যোগ প্রভৃতি ছাপিয়ে অবশ্যই প্রশ্নটি স্পর্শ করে সার্বিক জাতীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন থাকবে, সেই বিন্দুকে।
আমরা এমন একটি বছর অতিক্রম করলাম, যে বছরে কী কী ঘটতে পারে তা একরকম আগেই জানা ছিল। নতুন ঘটনা ঘটেছে খুব কম। আর যে বছরটি শুরু হলো, সেই বছর সম্পর্কে অনিশ্চয়তা ও সংশয় বেশি। স্থির করেই বলা যায়, এ বছরটি হবে অস্থিরতার। নিশ্চিত বলা যায়, বছরটি হবে অনিশ্চয়তার।
একনজর দেখে নেওয়া যাক ২০২৩ কেমন গেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে চমকপ্রদ উন্নয়ন অভিযাত্রায় একাধিক মেগা প্রকল্পের সমাপ্তি ও নির্মাণ অগ্রগতিতে বছরটিও নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল। আগের বছর পদ্মা সেতু চালুর পরে এই তালিকায় যুক্ত হলো কর্ণফুলী টানেল, এল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়ামের চালান, চালু হলো ঢাকা-কক্সবাজার নতুন রেলপথ, ঢাকা সিটিতে প্রথম মেট্রোরেলের সব স্টেশন চালু হলো, খুলল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং আংশিক উদ্বোধন হলো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের। এগুলো তো আকস্মিক ঘটনা নয়, জানাই ছিল।
উন্নয়নের পাশে নেতিবাচক ঘটনা হলো নিয়ন্ত্রণহীন বাজারদরে সীমিত আয়ের মানুষের ত্রাহি অবস্থা, হঠাৎ হঠাৎ পেঁয়াজ, ডিম, আলু, মুরগি ও গো-মাংসের দামে অযৌক্তিক উল্লম্ফন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উদ্বেগজনক হ্রাস, ডলারের অভাব ও মূল্য ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলায় আমদানি-বাণিজ্যে সংকট, সারা বছরই সংবাদমাধ্যমে নজিরবিহীন দুর্নীতি এবং পাঁচটি ইসলামি ব্যাংকে স্বাভাবিক লেনদেন বিঘ্নিত হওয়াসহ ব্যাংক প্রশাসনে শৈথিল্য ও বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচারের খবর ইত্যাদি।
এ বছর ডেঙ্গুর সংক্রমণের বিস্তার এবং এই রোগে মৃত্যুতে বাংলাদেশ রেকর্ড করেছে। ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বছরটিতে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৭০১ এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৯৪৫ জন। হাসপাতালে ভর্তির সরকারি তথ্যের বাইরে রোগী ও মৃত্যু আরও বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। এবার গ্রামেও ছড়িয়েছে।
বছরজুড়েই চলেছে দেশের বড় দুই দলের একটি বিএনপি ও সমমনা কিছু দলের ডাকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন। অন্যথায় নির্বাচন বর্জন তাদের ধনুর্ভঙ্গ পণ। একই দাবিতে আন্দোলনে ২০১৩-১৪ সালে জনগণের ওপর জোর খাটানোসহ লাগাতার হরতাল-অবরোধের ব্যর্থ কৌশল বাদ দিয়ে এবার বিএনপি শান্তিপূর্ণ গণজমায়েতের মাধ্যমে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করার কৌশল নিয়ে অনেক অগ্রগতি সাধন করে। বছরব্যাপী ইউনিয়ন-উপজেলা স্তর থেকে কেন্দ্রে রাজধানী পর্যন্ত কর্মসূচিতে দলের কর্মী-সমর্থকদের দৃষ্টি আকর্ষণকারী বড় বড় জমায়েত হয়। কিন্তু তারা কর্মী-সমর্থকের বাইরে ব্যাপক জনতা নয়। বাস্তবে প্রতীয়মান হয়, ব্যাপকসংখ্যক দেশবাসী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোট দিতে চায় কিন্তু সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবির মতো চরম লক্ষ্যকে সমর্থন করে না এবং সে জন্য বিএনপির ঘোষিত লক্ষ্য অনুযায়ী গণ-অভ্যুত্থান ঘটানো সম্ভব নয়। মাঠের এই পাঠ গ্রহণে বিএনপি নেতারা সক্ষম হননি। বছরের শেষভাগে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ বিভিন্ন কৌশল ও পুলিশি শক্তিপ্রয়োগে ভেঙে দিতে সরকারকে খুব বেগ পেতে হয়নি। বিএনপির মূল নেতারা কয়েকজনসহ সারা দেশে হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও ঢালাওভাবে দায়ের করা মামলায় সাজা দিয়ে জেলে পুরতে সরকার সক্ষম হয়েছে।
দেশের সঙ্গে স্বাভাবিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক ও উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক বন্ধনে জড়িত পশ্চিমের গণতান্ত্রিক দেশগুলো আমাদের উপর্যুপরি বিশ্বাসযোগ্যতাহীন নির্বাচন ও মানবাধিকার প্রতিপালন নিয়ে কয়েক বছর ধরে প্রশ্ন তুলছে। বিদায়ী বছরটিতে এ বিষয়ে দৃশ্যমান চাপ দিয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম প্রভৃতি আইন ও মানবাধিকার ইস্যুতে আগের বছরের ডিসেম্বরে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরে ২০২৩-এর মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক নির্বাচন-প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্তকারী ব্যক্তিদের ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার নীতি ঘোষণা করেছে। দফায় দফায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসে অবাধ, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছে। পশ্চিমের এই চাপকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, চীন ও বাংলাদেশের আন্তসম্পর্ক, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, বাংলাদেশের ওপর চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকানোর ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্যের সঙ্গে মিলিয়েও দেখা হচ্ছে।
বিদায়ী বছরের এই পটভূমি অতিক্রম করে ২০২৪ শুরুই হতে যাচ্ছে জাতীয় পরিমণ্ডলে রাজনৈতিক ক্ষেত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা জাতীয় সংসদের নির্বাচন দিয়ে। ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। নির্বাচনী কার্যক্রম যে সুস্থভাবে অগ্রসর হচ্ছে না, তা আমরা সবাই জানি। প্রকৃত নির্বাচনের জন্য যতগুলো উপাদান আবশ্যক তার প্রায় সবই অনুপস্থিত। রাজনৈতিক আদর্শ ও কর্মসূচির প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেশে থাকলেও এই নির্বাচনে নেই। বিএনপিসহ অধিকাংশ দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ তাদের সঙ্গে অধীনতামূলক মিত্রতায় আবদ্ধ কয়েকটি অনুল্লেখ্য দল নির্বাচনে আছে। একতরফা হওয়ার বিপরীতে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক দেখাতে, নিরুৎসাহিত হয়ে পড়া ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে শেখ হাসিনার নির্দেশিত ‘ডামি’ প্রার্থী দেওয়ার বিচিত্র কৌশল অনুযায়ী প্রভাবশালী দল আওয়ামী লীগেরই অনেকে স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগ ডামির মতো আচরণ না করে সর্বশক্তি দিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। ফলে প্রতিনিয়ত হানাহানি, মারামারি হচ্ছে। একদিকে নির্বাচনবিরোধী আন্দোলনে হরতাল-অবরোধের পরিস্থিতিতে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তদের দ্বারা বাস ও রেলে নাশকতা এবং অন্যদিকে নির্বাচনী হানাহানিতে সাধারণ নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে।
দেশে সরকারি প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের যৌথভাবে আপাত একতরফা নিয়ন্ত্রণ থাকায় এই হ-য-ব-র-ল পরিবেশেও ৭ জানুয়ারির ভোট গ্রহণ হয়ে যাবে, কম ভোট পড়লেও। এটা অনুমান করা যায়। তবে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হবে, তারপর কী? নতুন বছরটা কেমন যাবে? এরূপ একটি অগ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্যতাহীন নির্বাচনের ফলাফল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো শুধু প্রত্যাখ্যানই করবে না, অবজ্ঞা করবে। যাঁরা নির্বাচিত হবেন, তাঁদের নৈতিক মনোবল থাকবে না। জনসাধারণ সংসদের প্রতি মনোযোগী ও শ্রদ্ধাশীল হবে না।
সামনের দিনগুলোতে আসছে অর্থনৈতিক সংকট, যা বিদায়ী বছরে আমাদেরও দাঁত দেখিয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যুদ্ধজনিত কারণে অর্থনীতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুর সঙ্গে ইদানীং যুক্ত হওয়া শ্রম অধিকার প্রশ্ন পশ্চিমা দেশগুলোর অসন্তোষের হুমকি তৈরি করেছে, যা থেকে নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা পর্যন্ত প্রকাশ করা হচ্ছে।
যেকোনো দুর্যোগ, দুর্বিপাক মোকাবিলা করতে জাতীয় ঐক্য দরকার, সরকারের পদক্ষেপের প্রতি রাজনৈতিক দল ও জনগণের সমর্থন দরকার। ৭ জানুয়ারির মতো নির্বাচন থেকে কোনো সরকার তা আশা করতে পারে না। তাই এই নির্বাচনের রাজনৈতিক সংশোধনের জন্য আবার আলাপ-আলোচনা, সমঝোতার পথেই সমাধান বের করতে হবে। সে পথে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা এ বছরেই উঠতে পারে। অন্যথায় সংঘাতের পথে সবকিছুই অনিশ্চিত হয়ে যাবে।
২০২৩-এর ঘটনাধারা আমাদের অনেকটা পূর্ব-অনুমিত ছিল। জানা ছিল। সেই জানার মধ্য থেকে ২০২৪-এ অনেক অজানার পথে আমরা পা বাড়াচ্ছি।

বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে এখন সাংস্কৃতিক আবেদন মুখ্য। বঙ্গাব্দের মাসগুলো ঋতুচক্রের ও কিছুটা কৃষির তত্ত্বতালাশে কাজে লাগাই। আর আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-শিক্ষাগত সব প্রাতিষ্ঠানিক কাজে দিন-তারিখ ও সময়ের হিসাব রাখতে ব্যবহৃত হয় খ্রিষ্টাব্দের বর্তমানে প্রচলিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। খ্রিষ্টাব্দ সর্বজনীন ও আন্তর্জাতিক হয়ে গেলে ক্রিশ্চিয়ান এরার পরিবর্তে কমন এরা বা সাধারণ সাল বলা হয়।
২০২৩ শেষ হয়ে শুরু হলো ২০২৪ সাল। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
নতুন বছরটি কেমন যাবে? একটি বছর শেষে প্রায় সব মানুষের মনে এ প্রশ্নটি আনাগোনা করে। ব্যক্তি ও পরিবারের আশা-আকাঙ্ক্ষা, সম্পদ-আপদ, সুযোগ-দুর্যোগ প্রভৃতি ছাপিয়ে অবশ্যই প্রশ্নটি স্পর্শ করে সার্বিক জাতীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন থাকবে, সেই বিন্দুকে।
আমরা এমন একটি বছর অতিক্রম করলাম, যে বছরে কী কী ঘটতে পারে তা একরকম আগেই জানা ছিল। নতুন ঘটনা ঘটেছে খুব কম। আর যে বছরটি শুরু হলো, সেই বছর সম্পর্কে অনিশ্চয়তা ও সংশয় বেশি। স্থির করেই বলা যায়, এ বছরটি হবে অস্থিরতার। নিশ্চিত বলা যায়, বছরটি হবে অনিশ্চয়তার।
একনজর দেখে নেওয়া যাক ২০২৩ কেমন গেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে চমকপ্রদ উন্নয়ন অভিযাত্রায় একাধিক মেগা প্রকল্পের সমাপ্তি ও নির্মাণ অগ্রগতিতে বছরটিও নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল। আগের বছর পদ্মা সেতু চালুর পরে এই তালিকায় যুক্ত হলো কর্ণফুলী টানেল, এল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়ামের চালান, চালু হলো ঢাকা-কক্সবাজার নতুন রেলপথ, ঢাকা সিটিতে প্রথম মেট্রোরেলের সব স্টেশন চালু হলো, খুলল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং আংশিক উদ্বোধন হলো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের। এগুলো তো আকস্মিক ঘটনা নয়, জানাই ছিল।
উন্নয়নের পাশে নেতিবাচক ঘটনা হলো নিয়ন্ত্রণহীন বাজারদরে সীমিত আয়ের মানুষের ত্রাহি অবস্থা, হঠাৎ হঠাৎ পেঁয়াজ, ডিম, আলু, মুরগি ও গো-মাংসের দামে অযৌক্তিক উল্লম্ফন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উদ্বেগজনক হ্রাস, ডলারের অভাব ও মূল্য ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলায় আমদানি-বাণিজ্যে সংকট, সারা বছরই সংবাদমাধ্যমে নজিরবিহীন দুর্নীতি এবং পাঁচটি ইসলামি ব্যাংকে স্বাভাবিক লেনদেন বিঘ্নিত হওয়াসহ ব্যাংক প্রশাসনে শৈথিল্য ও বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচারের খবর ইত্যাদি।
এ বছর ডেঙ্গুর সংক্রমণের বিস্তার এবং এই রোগে মৃত্যুতে বাংলাদেশ রেকর্ড করেছে। ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বছরটিতে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৭০১ এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৯৪৫ জন। হাসপাতালে ভর্তির সরকারি তথ্যের বাইরে রোগী ও মৃত্যু আরও বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। এবার গ্রামেও ছড়িয়েছে।
বছরজুড়েই চলেছে দেশের বড় দুই দলের একটি বিএনপি ও সমমনা কিছু দলের ডাকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন। অন্যথায় নির্বাচন বর্জন তাদের ধনুর্ভঙ্গ পণ। একই দাবিতে আন্দোলনে ২০১৩-১৪ সালে জনগণের ওপর জোর খাটানোসহ লাগাতার হরতাল-অবরোধের ব্যর্থ কৌশল বাদ দিয়ে এবার বিএনপি শান্তিপূর্ণ গণজমায়েতের মাধ্যমে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করার কৌশল নিয়ে অনেক অগ্রগতি সাধন করে। বছরব্যাপী ইউনিয়ন-উপজেলা স্তর থেকে কেন্দ্রে রাজধানী পর্যন্ত কর্মসূচিতে দলের কর্মী-সমর্থকদের দৃষ্টি আকর্ষণকারী বড় বড় জমায়েত হয়। কিন্তু তারা কর্মী-সমর্থকের বাইরে ব্যাপক জনতা নয়। বাস্তবে প্রতীয়মান হয়, ব্যাপকসংখ্যক দেশবাসী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোট দিতে চায় কিন্তু সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবির মতো চরম লক্ষ্যকে সমর্থন করে না এবং সে জন্য বিএনপির ঘোষিত লক্ষ্য অনুযায়ী গণ-অভ্যুত্থান ঘটানো সম্ভব নয়। মাঠের এই পাঠ গ্রহণে বিএনপি নেতারা সক্ষম হননি। বছরের শেষভাগে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ বিভিন্ন কৌশল ও পুলিশি শক্তিপ্রয়োগে ভেঙে দিতে সরকারকে খুব বেগ পেতে হয়নি। বিএনপির মূল নেতারা কয়েকজনসহ সারা দেশে হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও ঢালাওভাবে দায়ের করা মামলায় সাজা দিয়ে জেলে পুরতে সরকার সক্ষম হয়েছে।
দেশের সঙ্গে স্বাভাবিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক ও উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক বন্ধনে জড়িত পশ্চিমের গণতান্ত্রিক দেশগুলো আমাদের উপর্যুপরি বিশ্বাসযোগ্যতাহীন নির্বাচন ও মানবাধিকার প্রতিপালন নিয়ে কয়েক বছর ধরে প্রশ্ন তুলছে। বিদায়ী বছরটিতে এ বিষয়ে দৃশ্যমান চাপ দিয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম প্রভৃতি আইন ও মানবাধিকার ইস্যুতে আগের বছরের ডিসেম্বরে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরে ২০২৩-এর মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক নির্বাচন-প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্তকারী ব্যক্তিদের ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার নীতি ঘোষণা করেছে। দফায় দফায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসে অবাধ, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছে। পশ্চিমের এই চাপকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, চীন ও বাংলাদেশের আন্তসম্পর্ক, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, বাংলাদেশের ওপর চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকানোর ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্যের সঙ্গে মিলিয়েও দেখা হচ্ছে।
বিদায়ী বছরের এই পটভূমি অতিক্রম করে ২০২৪ শুরুই হতে যাচ্ছে জাতীয় পরিমণ্ডলে রাজনৈতিক ক্ষেত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা জাতীয় সংসদের নির্বাচন দিয়ে। ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। নির্বাচনী কার্যক্রম যে সুস্থভাবে অগ্রসর হচ্ছে না, তা আমরা সবাই জানি। প্রকৃত নির্বাচনের জন্য যতগুলো উপাদান আবশ্যক তার প্রায় সবই অনুপস্থিত। রাজনৈতিক আদর্শ ও কর্মসূচির প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেশে থাকলেও এই নির্বাচনে নেই। বিএনপিসহ অধিকাংশ দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ তাদের সঙ্গে অধীনতামূলক মিত্রতায় আবদ্ধ কয়েকটি অনুল্লেখ্য দল নির্বাচনে আছে। একতরফা হওয়ার বিপরীতে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক দেখাতে, নিরুৎসাহিত হয়ে পড়া ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে শেখ হাসিনার নির্দেশিত ‘ডামি’ প্রার্থী দেওয়ার বিচিত্র কৌশল অনুযায়ী প্রভাবশালী দল আওয়ামী লীগেরই অনেকে স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগ ডামির মতো আচরণ না করে সর্বশক্তি দিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। ফলে প্রতিনিয়ত হানাহানি, মারামারি হচ্ছে। একদিকে নির্বাচনবিরোধী আন্দোলনে হরতাল-অবরোধের পরিস্থিতিতে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তদের দ্বারা বাস ও রেলে নাশকতা এবং অন্যদিকে নির্বাচনী হানাহানিতে সাধারণ নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে।
দেশে সরকারি প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের যৌথভাবে আপাত একতরফা নিয়ন্ত্রণ থাকায় এই হ-য-ব-র-ল পরিবেশেও ৭ জানুয়ারির ভোট গ্রহণ হয়ে যাবে, কম ভোট পড়লেও। এটা অনুমান করা যায়। তবে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হবে, তারপর কী? নতুন বছরটা কেমন যাবে? এরূপ একটি অগ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্যতাহীন নির্বাচনের ফলাফল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো শুধু প্রত্যাখ্যানই করবে না, অবজ্ঞা করবে। যাঁরা নির্বাচিত হবেন, তাঁদের নৈতিক মনোবল থাকবে না। জনসাধারণ সংসদের প্রতি মনোযোগী ও শ্রদ্ধাশীল হবে না।
সামনের দিনগুলোতে আসছে অর্থনৈতিক সংকট, যা বিদায়ী বছরে আমাদেরও দাঁত দেখিয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যুদ্ধজনিত কারণে অর্থনীতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুর সঙ্গে ইদানীং যুক্ত হওয়া শ্রম অধিকার প্রশ্ন পশ্চিমা দেশগুলোর অসন্তোষের হুমকি তৈরি করেছে, যা থেকে নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা পর্যন্ত প্রকাশ করা হচ্ছে।
যেকোনো দুর্যোগ, দুর্বিপাক মোকাবিলা করতে জাতীয় ঐক্য দরকার, সরকারের পদক্ষেপের প্রতি রাজনৈতিক দল ও জনগণের সমর্থন দরকার। ৭ জানুয়ারির মতো নির্বাচন থেকে কোনো সরকার তা আশা করতে পারে না। তাই এই নির্বাচনের রাজনৈতিক সংশোধনের জন্য আবার আলাপ-আলোচনা, সমঝোতার পথেই সমাধান বের করতে হবে। সে পথে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা এ বছরেই উঠতে পারে। অন্যথায় সংঘাতের পথে সবকিছুই অনিশ্চিত হয়ে যাবে।
২০২৩-এর ঘটনাধারা আমাদের অনেকটা পূর্ব-অনুমিত ছিল। জানা ছিল। সেই জানার মধ্য থেকে ২০২৪-এ অনেক অজানার পথে আমরা পা বাড়াচ্ছি।

সন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে বৈঠকে বসছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
২ ঘণ্টা আগে
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
৯ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
১২ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে বৈঠকে বসছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
আজ রোববার সকাল ১১টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই বৈঠকের আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতিকারীদের কর্মকাণ্ড রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
২. জুলাই হত্যাকাণ্ডের শহীদদের মামলার রেকর্ড, তদন্ত ও অগ্রগতি বিষয়ক আলোচনা, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
৩. নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
৪. মাদকের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কিত আলোচনা।
৫. শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন পরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও প্রতিরোধ, নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনসমূহের অপতৎপরতা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
৬. গার্মেন্টস বা শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ নিশ্চিত করা।
৭. গার্মেন্টস কারখানা, ঔষধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির তৎপরতা বিষয়ে আলোচনা।
৮. অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা সংক্রান্ত আলোচনা।
৯. সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চল পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা।
১০. রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা।
১১. মা ইলিশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত আলোচনা।
জানা গেছে, বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিল্প-ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, খাদ্য ও ভূমি বিষয়ক উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্ট আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।

সন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে বৈঠকে বসছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
আজ রোববার সকাল ১১টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই বৈঠকের আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতিকারীদের কর্মকাণ্ড রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
২. জুলাই হত্যাকাণ্ডের শহীদদের মামলার রেকর্ড, তদন্ত ও অগ্রগতি বিষয়ক আলোচনা, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
৩. নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
৪. মাদকের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কিত আলোচনা।
৫. শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন পরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও প্রতিরোধ, নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনসমূহের অপতৎপরতা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
৬. গার্মেন্টস বা শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ নিশ্চিত করা।
৭. গার্মেন্টস কারখানা, ঔষধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির তৎপরতা বিষয়ে আলোচনা।
৮. অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা সংক্রান্ত আলোচনা।
৯. সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চল পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা।
১০. রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা।
১১. মা ইলিশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত আলোচনা।
জানা গেছে, বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিল্প-ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, খাদ্য ও ভূমি বিষয়ক উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্ট আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।

বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে এখন সাংস্কৃতিক আবেদন মুখ্য। বঙ্গাব্দের মাসগুলো ঋতুচক্রের ও কিছুটা কৃষির তত্ত্বতালাশে কাজে লাগাই। আর আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-শিক্ষাগত সব প্রাতিষ্ঠানিক কাজে দিন-তারিখ ও সময়ের হিসাব রাখতে ব্যবহৃত হয় খ্রিষ্টাব্দের বর্তমানে প্রচলিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। খ্রিষ্টাব্দ সর্বজনীন ও আন্তর্
০১ জানুয়ারি ২০২৪
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
৯ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
১২ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের পর ঐকমত্য কমিশন গতকালও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করলেও কোনো সমাধান মেলেনি। এমন প্রেক্ষাপটে আজ রোববার কমিশন আবার নিজেরা বৈঠক করবে এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার বসবে।
ঐকমত্য কমিশনের জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকটি বেলা দেড়টার পর শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টার পরে শেষ হয়। প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকেও সংবিধান নিয়ে সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার উপায় বের হয়নি।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো, গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। প্রসঙ্গত, একই সময় এ পরিষদ নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করবে। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায়ই সংবিধান সংস্কার হবে।
গতকালের আলোচনা বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে সনদে থাকা বিষয়গুলো কী হবে—সেখানেই আটকে যাচ্ছে আলোচনা। কারণ আমরা তেমন সমাধান দিতে পারছি না। দেশে অতীতে এ-সংক্রান্ত কোনো উদাহরণ নেই। দেশের বাইরেও এ ধরনের উদাহরণ পাইনি।’
কোনো দল আগামী নির্বাচনে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সংবিধান সংস্কার কীভাবে হবে, এ প্রশ্নও আছে। বিষয়টি তখন মূলত নির্ভর করবে বেশি আসন পাওয়া কয়েকটি দলের সদিচ্ছার ওপর। কিন্তু কমিশন চাইছে এ অনিশ্চয়তার অবকাশ না রেখে এমন কোনো বিধান করা, যা সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেবে।
গতকালের বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা একাধিক মত দিয়ে বলেছেন, সেগুলো আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না তাঁ। একটি মত হলো,নির্ধারিত সময়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটি আইনগতভাবে ঠিক হলেও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সংসদ এভাবে বিলুপ্ত হলে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।
আরও যে কয়েকটি মত গতকাল এসেছে তার মধ্যে রয়েছে, প্রথমত, পরিষদে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত, আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বৈঠকে বসে সনদের সংযুক্তি বাস্তবায়ন করবে এবং তারপর সংসদ বসবে। কিন্তু এগুলোও কার্যকর বা বাস্তবসম্মত মনে করেননি বিশেষজ্ঞদের সবাই।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, সময়সীমার মধ্যে না সম্পন্ন করলে আপনা থেকেই সংবিধানে বিষয়গুলো যুক্ত হওয়ার ধারণা বাস্তবসম্মত না। কারণ বিলগুলোর খসড়া তৈরি করা নেই। এটা করা বিশেষজ্ঞদের কাজ না। সংসদে আলোচনা করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এ সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও বলেন, সনদের একটি বিধান হচ্ছে, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। কিন্তু কোন মৌলিক অধিকারটি সম্প্রসারণ করা হবে, তা বলা নেই। সংসদ সদস্যদের আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এসব কারণে আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি। কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বৈঠক করবেন, প্রয়োজনে আমাদের সহযোগিতা নেবেন।’
গতকালের বৈঠকে আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বসে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করার যে প্রস্তাব আসে তার পক্ষে বলা হয়, এতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত সনদ বাস্তবায়নে কাজ করবেন। কারণ তাঁরা বিলম্ব না করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে চাইবেন। একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হলেও বেশির ভাগের মত, এটিও বাস্তবসম্মত নয়। কারণ জনপ্রতিনিধিদের শপথের মাধ্যমে সংসদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্বে থেকে যেতে হবে। এটা প্রধান উপদেষ্টাই মানবেন না।
এ অবস্থায় সমাধান কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা আদৌ কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি করে দিতে পারব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এমন আইনি ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্য সমাধান পাইনি। তাই বিষয়টি আমাদের সুপারিশে না-ও থাকতে পারে।’
সনদ-বিষয়ক আদেশের খুঁটিনাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গণভোটের দিনক্ষণ সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কমিশন সূত্র জানায়, আজ সকালে নিজেরা বৈঠক করার পর প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আবার বৈঠক করা হবে। ৩১ অক্টোবরের মেয়াদের মধ্যেই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন।
এনসিপির সঙ্গে বৈঠক
গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার আগে কমিশনের সদস্যরা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন। ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হলেও দলটি সই করেনি। এনসিপি বলেছিল, বাস্তবায়নের আদেশের চূড়ান্ত খসড়া না দেখে তারা স্বাক্ষর করবে না।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গতকালের বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিরা ‘স্পষ্টভাবে’ জানিয়েছেন যে তাঁরা স্বাক্ষর করতে চান। তাঁরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন, যা কমিশন আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়েছে। এনসিপির প্রস্তাবে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই দিকই আছে। সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করে কমিশন এগোচ্ছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যেন সবাই স্বাক্ষরের দিকে আসে।
বিশেষজ্ঞ হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন।
আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের পর ঐকমত্য কমিশন গতকালও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করলেও কোনো সমাধান মেলেনি। এমন প্রেক্ষাপটে আজ রোববার কমিশন আবার নিজেরা বৈঠক করবে এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার বসবে।
ঐকমত্য কমিশনের জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকটি বেলা দেড়টার পর শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টার পরে শেষ হয়। প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকেও সংবিধান নিয়ে সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার উপায় বের হয়নি।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো, গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। প্রসঙ্গত, একই সময় এ পরিষদ নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করবে। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায়ই সংবিধান সংস্কার হবে।
গতকালের আলোচনা বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে সনদে থাকা বিষয়গুলো কী হবে—সেখানেই আটকে যাচ্ছে আলোচনা। কারণ আমরা তেমন সমাধান দিতে পারছি না। দেশে অতীতে এ-সংক্রান্ত কোনো উদাহরণ নেই। দেশের বাইরেও এ ধরনের উদাহরণ পাইনি।’
কোনো দল আগামী নির্বাচনে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সংবিধান সংস্কার কীভাবে হবে, এ প্রশ্নও আছে। বিষয়টি তখন মূলত নির্ভর করবে বেশি আসন পাওয়া কয়েকটি দলের সদিচ্ছার ওপর। কিন্তু কমিশন চাইছে এ অনিশ্চয়তার অবকাশ না রেখে এমন কোনো বিধান করা, যা সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেবে।
গতকালের বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা একাধিক মত দিয়ে বলেছেন, সেগুলো আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না তাঁ। একটি মত হলো,নির্ধারিত সময়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটি আইনগতভাবে ঠিক হলেও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সংসদ এভাবে বিলুপ্ত হলে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।
আরও যে কয়েকটি মত গতকাল এসেছে তার মধ্যে রয়েছে, প্রথমত, পরিষদে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত, আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বৈঠকে বসে সনদের সংযুক্তি বাস্তবায়ন করবে এবং তারপর সংসদ বসবে। কিন্তু এগুলোও কার্যকর বা বাস্তবসম্মত মনে করেননি বিশেষজ্ঞদের সবাই।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, সময়সীমার মধ্যে না সম্পন্ন করলে আপনা থেকেই সংবিধানে বিষয়গুলো যুক্ত হওয়ার ধারণা বাস্তবসম্মত না। কারণ বিলগুলোর খসড়া তৈরি করা নেই। এটা করা বিশেষজ্ঞদের কাজ না। সংসদে আলোচনা করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এ সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও বলেন, সনদের একটি বিধান হচ্ছে, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। কিন্তু কোন মৌলিক অধিকারটি সম্প্রসারণ করা হবে, তা বলা নেই। সংসদ সদস্যদের আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এসব কারণে আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি। কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বৈঠক করবেন, প্রয়োজনে আমাদের সহযোগিতা নেবেন।’
গতকালের বৈঠকে আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বসে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করার যে প্রস্তাব আসে তার পক্ষে বলা হয়, এতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত সনদ বাস্তবায়নে কাজ করবেন। কারণ তাঁরা বিলম্ব না করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে চাইবেন। একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হলেও বেশির ভাগের মত, এটিও বাস্তবসম্মত নয়। কারণ জনপ্রতিনিধিদের শপথের মাধ্যমে সংসদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্বে থেকে যেতে হবে। এটা প্রধান উপদেষ্টাই মানবেন না।
এ অবস্থায় সমাধান কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা আদৌ কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি করে দিতে পারব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এমন আইনি ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্য সমাধান পাইনি। তাই বিষয়টি আমাদের সুপারিশে না-ও থাকতে পারে।’
সনদ-বিষয়ক আদেশের খুঁটিনাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গণভোটের দিনক্ষণ সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কমিশন সূত্র জানায়, আজ সকালে নিজেরা বৈঠক করার পর প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আবার বৈঠক করা হবে। ৩১ অক্টোবরের মেয়াদের মধ্যেই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন।
এনসিপির সঙ্গে বৈঠক
গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার আগে কমিশনের সদস্যরা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন। ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হলেও দলটি সই করেনি। এনসিপি বলেছিল, বাস্তবায়নের আদেশের চূড়ান্ত খসড়া না দেখে তারা স্বাক্ষর করবে না।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গতকালের বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিরা ‘স্পষ্টভাবে’ জানিয়েছেন যে তাঁরা স্বাক্ষর করতে চান। তাঁরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন, যা কমিশন আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়েছে। এনসিপির প্রস্তাবে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই দিকই আছে। সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করে কমিশন এগোচ্ছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যেন সবাই স্বাক্ষরের দিকে আসে।
বিশেষজ্ঞ হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন।
আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে এখন সাংস্কৃতিক আবেদন মুখ্য। বঙ্গাব্দের মাসগুলো ঋতুচক্রের ও কিছুটা কৃষির তত্ত্বতালাশে কাজে লাগাই। আর আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-শিক্ষাগত সব প্রাতিষ্ঠানিক কাজে দিন-তারিখ ও সময়ের হিসাব রাখতে ব্যবহৃত হয় খ্রিষ্টাব্দের বর্তমানে প্রচলিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। খ্রিষ্টাব্দ সর্বজনীন ও আন্তর্
০১ জানুয়ারি ২০২৪
সন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে বৈঠকে বসছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
২ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
১২ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিধান, আবার কিছু কিছু বিধান আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।
সংশোধিত আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:
আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে তাঁকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে না ভোট বেশি হলে সেখানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হবে। তবে দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী হলে সেই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে।
আগে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে জোটের যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত। সেটি সংশোধন করা হয়েছে। জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের মার্কায় ভোট করতেন। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।
প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের পাশাপাশি আইনি হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট দিতে পারবেন।
প্রার্থীর জামানত বাড়ানো হয়েছে। আগে ২০ হাজার টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে চাইলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি অনুদান দেবেন, তাঁর ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পুরো আসনের ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা কমিয়েছিল। সংশোধিত আরপিওতে শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে, সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীর হলফনামায় আগে শুধু দেশের সম্পদের হিসাব দেওয়া হতো। সংশোধিত আরপিওতে শুধু দেশের নয়, বিদেশের আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ দিতে হবে।
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-সংক্রান্ত বিধানটি সংশোধিত আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিধান, আবার কিছু কিছু বিধান আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।
সংশোধিত আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:
আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে তাঁকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে না ভোট বেশি হলে সেখানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হবে। তবে দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী হলে সেই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে।
আগে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে জোটের যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত। সেটি সংশোধন করা হয়েছে। জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের মার্কায় ভোট করতেন। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।
প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের পাশাপাশি আইনি হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট দিতে পারবেন।
প্রার্থীর জামানত বাড়ানো হয়েছে। আগে ২০ হাজার টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে চাইলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি অনুদান দেবেন, তাঁর ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পুরো আসনের ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা কমিয়েছিল। সংশোধিত আরপিওতে শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে, সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীর হলফনামায় আগে শুধু দেশের সম্পদের হিসাব দেওয়া হতো। সংশোধিত আরপিওতে শুধু দেশের নয়, বিদেশের আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ দিতে হবে।
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-সংক্রান্ত বিধানটি সংশোধিত আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে এখন সাংস্কৃতিক আবেদন মুখ্য। বঙ্গাব্দের মাসগুলো ঋতুচক্রের ও কিছুটা কৃষির তত্ত্বতালাশে কাজে লাগাই। আর আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-শিক্ষাগত সব প্রাতিষ্ঠানিক কাজে দিন-তারিখ ও সময়ের হিসাব রাখতে ব্যবহৃত হয় খ্রিষ্টাব্দের বর্তমানে প্রচলিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। খ্রিষ্টাব্দ সর্বজনীন ও আন্তর্
০১ জানুয়ারি ২০২৪
সন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে বৈঠকে বসছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
২ ঘণ্টা আগে
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
৯ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে এখন সাংস্কৃতিক আবেদন মুখ্য। বঙ্গাব্দের মাসগুলো ঋতুচক্রের ও কিছুটা কৃষির তত্ত্বতালাশে কাজে লাগাই। আর আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-শিক্ষাগত সব প্রাতিষ্ঠানিক কাজে দিন-তারিখ ও সময়ের হিসাব রাখতে ব্যবহৃত হয় খ্রিষ্টাব্দের বর্তমানে প্রচলিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। খ্রিষ্টাব্দ সর্বজনীন ও আন্তর্
০১ জানুয়ারি ২০২৪
সন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে বৈঠকে বসছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
২ ঘণ্টা আগে
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
৯ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
১২ ঘণ্টা আগে