Ajker Patrika

কমলাপুর থেকে দেড়-দুই ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে ট্রেন, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image
ফাইল ছবি

রেলওয়ে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পর আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে এ দিন সকালে প্রতিটি ট্রেনই এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে স্টেশন ছেড়েছে। এতে করে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও, শিডিউল বিপর্যয়ে বিপাকে যাত্রীরা পড়েছেন।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আজ সকাল ৬টা ৩০ মিনিট থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ঢাকা থেকে প্রথম আন্তনগর ধূমকেতু এক্সপ্রেস রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘রানিং স্টাফদের আন্দোলন থেমে গেলেও রেলের ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) সময়মতো রেডি করা যাচ্ছে না। এগুলোকে ট্র্যাকে এনে রেকে জোড়া দিতে বেশ সময় লাগছে। এতে করে কোনো কোনো ট্রেন এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে।’

কমলাপুর রেলস্টেশনের যাত্রীরা বলছেন, রেলে শিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়ে কথা বলতে গেলে টিকিট কাউন্টার কিংবা তথ্যকেন্দ্র থেকে কোনো তথ্য দিচ্ছে না। যাত্রীদের অহেতুক হয়রানি করছে রেলওয়ে।

বুধবার ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটি সিলেটের উদ্দেশে কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি বেলা ১১টার দিকে ছেড়ে যায়। সাড়ে ৪ ঘণ্টার এ বিলম্বের কারণে সিলেটের অনেক যাত্রী বাসে করে রওনা হয়েছেন।

পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়ি ফিরতে টিকিট করেছিলেন সুনামগঞ্জের একটি স্থানীয় পত্রিকার প্রতিবেদক মো. আসাদ। তাঁর সঙ্গে কথা হরে তিনি বলেন, ‘পারাবত বেলা ২টার মধ্যে সিলেটে চলে যায়। একটা জরুরি আছে আমার। তাই ট্রেনেই যাত্রা করেছিলাম। কিন্তু দুই ঘণ্টা বসে থেকে জানলাম যে ট্রেনটা আরও দেরি করবে। তাই দেরি না করে সকাল সাড়ে ৮টায় বাসের ট্রিপ ধরেছি। নতুবা মিটিংয়ে যোগ দিতে পারব না।’

শুধু পারাবত এক্সপ্রেস নয়; বুধবার সকাল ৭টায় সময় নির্ধারিত থাকলেও প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। অন্যদিকে আড়াই ঘণ্টা পর যাত্রা করে কক্সবাজারগামী পর্যটক এক্সপ্রেস; যেটি ছাড়ার কথা ছিল ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে।

রেলওয়ের টাইম টেবিল অনুযায়ী, সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম অভিমুখী মহানগর প্রভাতী; সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেস; সকাল ৭টা ৩০ মিনিটের দেওয়ানগঞ্জ অভিমুখী তিস্তা এক্সপ্রেস; সকাল ৯টা ১০ মিনিটের রংপুর অভিমুখী রংপুর এক্সপ্রেস; সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটের কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস; সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে কমলাপুর ছেড়েছে।

কমলাপুর স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, আজ সিলেট অভিমুখী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস; লালমনিরহাট অভিমুখী বুড়িমারী এক্সপ্রেসের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। ট্রেন দুটি যথাক্রমে সকাল ১১টা ১৫ মিনিট ও সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। এ দুটি ট্রেনের রেক সিলেট ও লালমনিরহাটে থাকায় সেগুলোর যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।

রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল বিভাগের এক নোটিশে জানা গেছে, ট্রেনের অফ ডে, রেক ব্যালেন্সিং, রানিং স্টাফ সমন্বয়ের জন্য আজ বুধবার খুলনা থেকে ঢাকাগামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর-৮২৫), রাজশাহীগামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর-৭৮৩) এবং ঢাকাগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর-৮০৬) চলাচল করবে না। পাকশী ডিভিশনের আওতাধীন অন্যান্য যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো চলাচল করবে।

উল্লেখ্য, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতির ঘোষণা দেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পর শিডিউলে থাকা ট্রেনগুলোতে ওঠেননি রানিং স্টাফরা। ফলে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। এতে করে সারা দেশে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। রানিং স্টাফের মধ্যে ছিলেন ট্রেন চালক, গার্ড ও টিকিট চেকার পদধারীরা। পরে গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ কর্মবিরতির ঘোষণা প্রত্যাহার করেন তারা।

এ দিন রেলওয়ে রানিং স্টাফ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী শাখার অতিরিক্ত সম্পাদক মো. হানিফ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই আমাদের ন্যায্য অধিকার মাইলেজ পুনর্বহাল হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত