Ajker Patrika

শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের আরও বেশি সহায়তা চাইলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২২, ১০: ৪৬
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের আরও বেশি সহায়তা চাইলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ আরও অধিক হারে শান্তিরক্ষী সরবরাহ অব্যাহত রাখবে বলে প্রত্যাশা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। পয়লা মার্চ বিকেলে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। এ সময় মহাসচিব শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

আজ বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতিসংঘ মহাসচিব ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট ও এর সম্ভাব্য উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের এসব নাগরিকের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মহাসচিবকে অবহিত করেন এবং সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেন। ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার যে উদারতার পরিচয় দিয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিব তার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থনের কথা আবারও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন জাতিসংঘের মহাসচিব। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সামনের বছরগুলোতে, বিশেষ করে এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে আরও সাফল্য অর্জন করবে বাংলাদেশ। 

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের উচ্চপর্যায়ের পদে এবং বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের বিভিন্ন রাজনৈতিক মিশনে মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি (এসআরএসজি) পদে আরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক নিয়োগের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিবকে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

ইউক্রেন সংকটজনিত কারণে ব্যস্ত সময়সূচি থাকা সত্ত্বেও এ বৈঠকের সুযোগ দেওয়ার জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমানে নিউইয়র্কে সফররত মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের নবনিযুক্ত বিশেষ দূত ড. নোলিন হাইজারের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে আঞ্চলিক দেশগুলোসহ সব অংশীজনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য বিশেষ দূতকে অনুরোধ জানান। বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাখাইন রাজ্যে এমন একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে রোহিঙ্গারা নিরাপদে, নিরাপত্তার সঙ্গে এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে তাঁদের নিজ ভূমিতে ফিরে যেতে পারে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনার বিস্তার রোধ এবং রোহিঙ্গা শিশুদের মিয়ানমারের কারিকুলামভিত্তিক শিক্ষা প্রদান বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহের কথা বিশেষ দূতকে অবহিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ভাসানচরে ১ লাখ রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন আবাসন তৈরির কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেখানে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গারা জীবিকা নির্বাহের কাজে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ পাবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, স্বদেশে ফেরার তেমন কোনো আশা নেই দেখে রোহিঙ্গারা ক্রমশ অবৈধ ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তিনি হাইজারকে যতটা দ্রুত সম্ভব কক্সবাজার ক্যাম্প ও ভাসানচর পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান। 

বিশেষ দূত মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তাঁর সহানুভূতি ও নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। বিশেষ দূত বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি তাঁর সর্বোচ্চ এজেন্ডা এবং যত দ্রুত সম্ভব এই সংকটের একটি টেকসই সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তিনি আঞ্চলিক দেশসমূহ, আন্তর্জাতিক সংস্থা, রোহিঙ্গা নেতা এবং মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষসহ সব অংশীজনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত থাকবেন। 

উভয় বৈঠকে অন্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মো. মনোয়ার হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল পুনর্বিন্যাস আনছে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলে

জাপায় নতুন মোড়: আনিসুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, বহিষ্কৃতদের পুনর্বহাল

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে কক্সবাজার ভ্রমণ: ৫ নেতাকে শোকজ করল এনসিপি

‘বাবার অসুস্থতায় পরামর্শ নিতে’ চিকিৎসকের বাসায় নারী, দুজনকে পুলিশে দিল স্থানীয়রা

১৪৬ যাত্রী নিয়ে ব্যাংককের পথে এক ঘণ্টা উড়ে মিয়ানমার থেকে ফিরে এল বিমানের সেই ফ্লাইট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত