Ajker Patrika

দুই দিনের বিরতির পর ফের বসছে সংস্কারের সংলাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গত রোববার দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের সপ্তম দিনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। ফাইল ছবি
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গত রোববার দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের সপ্তম দিনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। ফাইল ছবি

দুই দিনের বিরতির পর আগামীকাল বুধবার ফের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এই সংলাপ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র বলছে, দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের অষ্টম দিন তথা বুধবারের কার্যতালিকায় নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধানের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) নয় সদস্যের সাত সদস্যের সিদ্ধান্তে এনসিসি সদস্য ব্যতীত নাগরিকদের মধ্য থেকে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের কথা বলা হয়। প্রস্তাবটি সংশোধন করে এনসিসির স্থলে সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির সাত সদস্যের পাঁচ বা ছয় সদস্যের সিদ্ধান্তে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করা হতে পারে। এ ছাড়া এনসিসি সদস্যদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ার বিকল্প প্রস্তাব রাখা আছে। তা না হলে সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। তিনি সম্মত না হলে তাঁর আগের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। তিনি রাজি না হলে তাঁর আগের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করবেন।

অবসরপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টারা রাজি না হলে আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্যে সর্বশেষ অবসরে যাওয়া বিচারপতি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে পারেন।

আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্যে সর্বশেষ অবসরে যাওয়া বিচারপতি না হলে তাঁর আগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

নির্বাচন সংস্কার ব্যবস্থা কমিশনের প্রস্তাবে এনসিসির মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও ২০ উপদেষ্টা নিয়োগের কথা প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটা না হলে রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজ ও সমাজের অন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা প্রণয়ন করা এবং ক্ষমতাসীন দলের মাধ্যমে বাস্তবায়নের কথা প্রস্তাব করা হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ৯০ দিনের কথা বলা হয়েছে। আর নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে চার মাসের কথা বলা হয়েছে। মেয়াদকালে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন শেষ করার প্রস্তাব আছে।

রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয়ে কমিশন থেকে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতার অপব্যবহার সর্বজনবিদিত। রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচারকাজ শেষের আগেই ক্ষমা প্রদর্শন, একই অপরাধে দুবার ক্ষমা প্রদর্শনের ঘটনাও ঘটেছে, যা দেশের আইনের শাসনের ধারণাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

এ বিষয়ে কমিশনের সুপারিশে ক্ষমা প্রদর্শন নামে আইন প্রণয়ন করতে বলা হয়। রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন ক্ষমতাসহ অন্য সব নির্বাহী ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা এই আইনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হবে।

ক্ষমা প্রদর্শন আইনের মাধ্যমে একটি ক্ষমা প্রদর্শন বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে, যে বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেলকে রাখার প্রস্তাব করা হয়।

সদস্য হিসেবে জাতীয় সংসদের মনোনীত সরকারদলীয় একজন সংসদ সদস্য, একজন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য, কারা পরিদর্শক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মনোনীত একজন সিভিল সার্জন ও একজন মনোবিদকে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

কমিটিকে সুপারিশ দেওয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা অনুসরণের কথা বলা হয়। সেগুলো হলো—অনুকম্পা প্রদর্শন একটি বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা; তাই অত্যন্ত বিরল এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রেই এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে; অপরাধের মাত্রা ও ধরন; ভুক্তভোগী এবং সার্বিকভাবে সমাজের ওপর সংশ্লিষ্ট অপরাধের প্রভাব; দণ্ড দেওয়ার পর অপরাধীর আচরণ আমলে নিতে হবে; অপরাধী আদালতে দোষ স্বীকার করছে কি না দেখতে হবে; অপরাধী তার অপরাধের জন্য অনুতপ্ত কি না জানতে হবে (আচার-আচরণ থেকে); যেখানে শাস্তি হিসেবে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, সেখানে অপরাধী কারাদণ্ডের কতটুকু খেটেছে এবং কতটুকু বাকি আছে; অপরাধীর বয়স এবং সার্বিক বিবেচনায় তার সম্ভাব্য আয়ুষ্কাল; অপরাধীর শারীরিক বা মানসিক রোগাক্রান্ত হলে তার ধরন; জনমত; ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে বা না করা হলে তার কারণ জানাতে হবে; ক্ষমা প্রার্থনার জন্য আবেদনকারী নির্ধারিত ফরমে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করতে হবে।

প্রস্তাবে আরও বলা আছে, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে ক্ষমা প্রদর্শন বোর্ডের বিষয়টি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং রাষ্ট্রপতি শুধু এ উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন ও বিধি অনুসরণ করেই ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাকিব খানের নামের সঙ্গে ‘মেগাস্টার’ শব্দ নিয়ে জাহিদ হাসানের আপত্তি

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তির পরই অস্ত্রের লাইসেন্স পান উপদেষ্টা আসিফ

১৬ জুলাই নিয়ে নাটক করা হয়েছে: শহীদ আবু সাঈদের ভাই

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এনপিবি পিস্তল কী ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র

গায়ের জোরে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি মামলা বসিয়ে দেওয়া হয়: দুদক চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত