জাফর মুহাম্মদ
পৌরাণিক কিংবদন্তি মতে, হিমালয়ের কন্যা পার্বতীকে বিয়ের সময় হাত ধোয়ানোর সময় শিবের হাত বা কর থেকে যে জল পড়ে, তা থেকেই সৃষ্টি হয় করতোয়া নদীর। ‘মহাভারতে’র বন পর্বে তীর্থযাত্রা অধ্যায়ে করতোয়াকে উল্লেখ করা হয় পুণ্যতোয়া হিসেবে। কথিত আছে, করতোয়ায় তিন দিন ভ্রমণ করলে অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান পুণ্যলাভ হয়।
সেই করতোয়া নদীর তীর ঘেঁষেই পত্তন হয় প্রাচীন পুণ্ড্র নগরীর। আবার করতোয়া তীরের অন্যতম শহর পঞ্চগড়। সম্প্রতি পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাওয়ার সংবাদে শহরটি ভ্রমণপিপাসুদের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকলে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা হয় না অনেকেরই। সে ক্ষেত্রে মনে হতে পারে যাত্রাটাই বেকার। সেই সব দর্শনার্থীকে জানিয়ে রাখি, কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়াও পঞ্চগড়ে দেখার মতো অনেক কিছুই রয়েছে। এর মধ্যে প্রসিদ্ধ হলো মির্জাপুর শাহি মসজিদ, মির্জাপুর ইমামবাড়া, মহারাজার দিঘি, বরদেশ্বরী মন্দির ও সমতলভূমির চা-বাগান ইত্যাদি। এর বাইরেও পঞ্চগড়ে আছে বিচিত্র পাখি দেখার ব্যাপক সুযোগ।
পঞ্চগড় শহরের কাছেই মিরগড়, বাগানবাড়ি এলাকায় নদীতীরে গড়ে উঠেছে ছোট নথজিরিয়া পাখিদের কলোনি। অদ্ভুত সুন্দর ছোট্ট এই পাখি নদীর পাশের বিস্তীর্ণ বালুচরে খাবার খুঁজে খায়। ডিমও পাড়ে বালুচরের খোলা জায়গায়। ছোট্ট শরীরে চোখের চারপাশে হলুদ রং আর গলায় কালো মালার মতো আকৃতি এই পাখির সৌন্দর্যকে করেছে অনন্য। সারা দেশের বিভিন্ন জলাশয়ে দেখা মেলে ছোট নথজিরিয়ার। গলায় মালার মতো রং থাকায় স্থানীয়ভাবে পাখিটিকে মালা চ্যাগা নামেও ডাকা হয়।
ছোট নথজিরিয়া ছাড়াও করতোয়ার তীরে দেখা মেলে পরিযায়ী পাখি সবুজ বাটানের। প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সাইবেরিয়াসহ কয়েকটি শীতপ্রধান দেশ থেকে আমাদের দেশে আসে পাখিটি। ছোট নথজিরিয়ার মতো এরাও নদীতীরের বালু ও কাদা থেকে ছোট শামুক, চিংড়িসহ নানান অমেরুদণ্ডী প্রাণী শিকার করে খায়। সবুজ বাটান আমাদের দেশে প্রজনন করে না, এরা প্রজনন করে সাইবেরিয়ায়।
করতোয়ার তীরে আরও দেখা মিলবে ধলা খঞ্জনের। অনেকে মনে করেন, এই ছোট্ট পাখিটি আমাদের আবাসিক পাখি, কিন্তু আদতে তা নয়। ধলা খঞ্জনের মূল আবাস হিমালয়ে। শীতের প্রকোপ বাড়লে তারা নেমে আসে সমতল ভূমিতে। সদা চঞ্চল ছোট্ট এই পাখি দেখতে সুন্দর। রূপের সঙ্গে তার রয়েছে অসাধারণ সুরেলা কণ্ঠ।
জলের পাখি ছাড়াও করতোয়ায় দেখা মিলবে সব সময় উড়তে থাকা আবাবিলের। এই পাখিকে আমি সারা জীবনে একবার বসতে দেখেছি। এরা যেন ক্লান্তিহীন উড়তেই থাকে। খুব খেয়াল করলে নজরে আসে এর অনন্যসুন্দর দেহাবয়ব। এসব পাখি ছাড়াও ফিঙে, বড় বগা, ছোট পানকৌড়ির মতো আমাদের আবাসিক পাখির দেখা মেলে করতোয়ার তীরে। আশপাশের গ্রামগুলোতে দেখা মিলতে পারে ক্যানারি চুটকির। অসাধারণ সুন্দর এ পাখি। সারা দিন গাইতে থাকা ক্যানারি চুটকি খুঁজে পাওয়াটা একটু মুশকিল হতে পারে। এই পাখি
এতই চঞ্চল যে চোখের নিমেষে হাওয়া হয়ে যায়। আবার এতটাই লাজুক যে মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই লুকিয়ে পড়ে।
তাই পঞ্চগড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে এসে তার দেখা না পেলে হতাশ হবেন না মোটেই; বরং একটা বাইনোকুলার নিয়ে নেমে পড়তে পারেন পাখি দেখতে। আশা করি নিরাশ হবেন না।
লেখক: প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা ও আলোকচিত্রী
পৌরাণিক কিংবদন্তি মতে, হিমালয়ের কন্যা পার্বতীকে বিয়ের সময় হাত ধোয়ানোর সময় শিবের হাত বা কর থেকে যে জল পড়ে, তা থেকেই সৃষ্টি হয় করতোয়া নদীর। ‘মহাভারতে’র বন পর্বে তীর্থযাত্রা অধ্যায়ে করতোয়াকে উল্লেখ করা হয় পুণ্যতোয়া হিসেবে। কথিত আছে, করতোয়ায় তিন দিন ভ্রমণ করলে অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান পুণ্যলাভ হয়।
সেই করতোয়া নদীর তীর ঘেঁষেই পত্তন হয় প্রাচীন পুণ্ড্র নগরীর। আবার করতোয়া তীরের অন্যতম শহর পঞ্চগড়। সম্প্রতি পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাওয়ার সংবাদে শহরটি ভ্রমণপিপাসুদের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকলে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা হয় না অনেকেরই। সে ক্ষেত্রে মনে হতে পারে যাত্রাটাই বেকার। সেই সব দর্শনার্থীকে জানিয়ে রাখি, কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়াও পঞ্চগড়ে দেখার মতো অনেক কিছুই রয়েছে। এর মধ্যে প্রসিদ্ধ হলো মির্জাপুর শাহি মসজিদ, মির্জাপুর ইমামবাড়া, মহারাজার দিঘি, বরদেশ্বরী মন্দির ও সমতলভূমির চা-বাগান ইত্যাদি। এর বাইরেও পঞ্চগড়ে আছে বিচিত্র পাখি দেখার ব্যাপক সুযোগ।
পঞ্চগড় শহরের কাছেই মিরগড়, বাগানবাড়ি এলাকায় নদীতীরে গড়ে উঠেছে ছোট নথজিরিয়া পাখিদের কলোনি। অদ্ভুত সুন্দর ছোট্ট এই পাখি নদীর পাশের বিস্তীর্ণ বালুচরে খাবার খুঁজে খায়। ডিমও পাড়ে বালুচরের খোলা জায়গায়। ছোট্ট শরীরে চোখের চারপাশে হলুদ রং আর গলায় কালো মালার মতো আকৃতি এই পাখির সৌন্দর্যকে করেছে অনন্য। সারা দেশের বিভিন্ন জলাশয়ে দেখা মেলে ছোট নথজিরিয়ার। গলায় মালার মতো রং থাকায় স্থানীয়ভাবে পাখিটিকে মালা চ্যাগা নামেও ডাকা হয়।
ছোট নথজিরিয়া ছাড়াও করতোয়ার তীরে দেখা মেলে পরিযায়ী পাখি সবুজ বাটানের। প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সাইবেরিয়াসহ কয়েকটি শীতপ্রধান দেশ থেকে আমাদের দেশে আসে পাখিটি। ছোট নথজিরিয়ার মতো এরাও নদীতীরের বালু ও কাদা থেকে ছোট শামুক, চিংড়িসহ নানান অমেরুদণ্ডী প্রাণী শিকার করে খায়। সবুজ বাটান আমাদের দেশে প্রজনন করে না, এরা প্রজনন করে সাইবেরিয়ায়।
করতোয়ার তীরে আরও দেখা মিলবে ধলা খঞ্জনের। অনেকে মনে করেন, এই ছোট্ট পাখিটি আমাদের আবাসিক পাখি, কিন্তু আদতে তা নয়। ধলা খঞ্জনের মূল আবাস হিমালয়ে। শীতের প্রকোপ বাড়লে তারা নেমে আসে সমতল ভূমিতে। সদা চঞ্চল ছোট্ট এই পাখি দেখতে সুন্দর। রূপের সঙ্গে তার রয়েছে অসাধারণ সুরেলা কণ্ঠ।
জলের পাখি ছাড়াও করতোয়ায় দেখা মিলবে সব সময় উড়তে থাকা আবাবিলের। এই পাখিকে আমি সারা জীবনে একবার বসতে দেখেছি। এরা যেন ক্লান্তিহীন উড়তেই থাকে। খুব খেয়াল করলে নজরে আসে এর অনন্যসুন্দর দেহাবয়ব। এসব পাখি ছাড়াও ফিঙে, বড় বগা, ছোট পানকৌড়ির মতো আমাদের আবাসিক পাখির দেখা মেলে করতোয়ার তীরে। আশপাশের গ্রামগুলোতে দেখা মিলতে পারে ক্যানারি চুটকির। অসাধারণ সুন্দর এ পাখি। সারা দিন গাইতে থাকা ক্যানারি চুটকি খুঁজে পাওয়াটা একটু মুশকিল হতে পারে। এই পাখি
এতই চঞ্চল যে চোখের নিমেষে হাওয়া হয়ে যায়। আবার এতটাই লাজুক যে মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই লুকিয়ে পড়ে।
তাই পঞ্চগড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে এসে তার দেখা না পেলে হতাশ হবেন না মোটেই; বরং একটা বাইনোকুলার নিয়ে নেমে পড়তে পারেন পাখি দেখতে। আশা করি নিরাশ হবেন না।
লেখক: প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা ও আলোকচিত্রী
ঘরদোর পরিষ্কার করার সময় বেশির ভাগই যেদিকে আমাদের নজর যায় না, তা হলো সুইচ বোর্ড। প্রতিদিন ব্যবহারের ফলে হাতের চাপ লেগে এই সুইচ বোর্ডগুলো ময়লা ও কালো হয়ে যেতে শুরু করে। একদিন না হয় সময় নিয়ে শুধু বাড়ির সুইচ বোর্ডগুলো পরিষ্কার করলেন!
২৯ মিনিট আগেবিকেলে হুট করেই বন্ধুরা দল বেঁধে এসেছে? আবদার, ঘন দুধ দিয়ে কড়া লিকারের চা খাবে। কিন্তু শুধু চায়ে কি আর আড্ডা জমে? হালকা স্ন্যাকস তো থাকা চাই। সময় আর শ্রম দুটোই বাঁচাবে এমন স্ন্যাকসের কথা ভাবছেন? আপনাদের জন্য সহজ ও সুস্বাদু দুটি স্ন্যাকসের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
১৫ ঘণ্টা আগেবিশ্বজুড়ে এমন কিছু বিশেষ স্ট্রিট বা রাস্তা রয়েছে, যেগুলো কেবল কেনাকাটার জায়গাই নয়, বরং সংস্কৃতি, বাণিজ্য আর সৃজনশীলতার কেন্দ্র হিসেবে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। সেই সব স্ট্রিটে মানুষের সঙ্গে তাদের ইতিহাসও যেন ঘুরে বেড়ায়। প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষের আনাগোনায় পরিপূর্ণ থাকে সেসব।
১৮ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের বিজ্ঞাপন ও কমিউনিকেশন খাতে পেশাদার দক্ষতা উন্নয়নে স্বীকৃত প্ল্যাটফর্ম কপিশপের উদ্যোগে দেশের প্রথম নিবেদিত বিজ্ঞাপন দক্ষতা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ‘ঢাকা অ্যাডভার্টাইজিং স্কুল’ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রথম কোর্স ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং কপিরাইটিং’-এর ক্লাস কার্যক্রম শুরু করেছে।
২০ ঘণ্টা আগে