Ajker Patrika

ফুলের উপত্যকা

দীপারুণ ভট্টাচার্য
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৪: ২৭
ফুলের উপত্যকা

এই অর্ধেক জীবনে অনেক ছোট বড় জায়গায় ঘুরেছি। সবকিছু মাথায় রেখে ভালো লাগা ও সুন্দর জায়গার তালিকা বানালে এই জায়গাটা একেবারে ওপরের দিকে থাকবে।

এই জায়গার নাম ভ্যালি অব ফ্লাওয়ারস, হিন্দিতে বলে ফুলো-কা-ঘাটি আর বাংলায় বলতে পারি ফুলের উপত্যকা। ৫২১ রকম প্রজাতির লতা, গুল্ম ও বৃক্ষের আবাসস্থল এই ফুলের উপত্যকা। প্রায় ৩০০ প্রজাতির ফুল ফোটে এখানে। পার্বত্য আলপাইন ফুল ছাড়াও অন্যান্য বিরল প্রজাতির উদ্ভিদও এখানে দেখা যায়। এখানে আমি ভূর্জ পত্রের গাছ দেখেছি, যা দিয়ে আদিম যুগের পুথি লেখা হতো। আর দেখেছি ব্রহ্ম-কমল। পুরো অঞ্চলটা সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বরফে ঢেকে থাকে। বরফ গলতে শুরু করলেই বিশাল উপত্যকা জুড়ে জন্ম নেয় লতা, গুল্ম আর ফুলের গাছ। গাছে ধীরে ধীরে ফুল আসতে শুরু করে জুলাই থেকে। ফুল দেখতে যাওয়ার সঠিক সময় ১৫ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট। এরপর বৃষ্টি ও ঠান্ডায় ফুল ঝরে যায়। তখন গাছ মাটিতে তার বীজ রেখে এক বছরের জন্য লীন হয় শীত ঘুমে। পরের বছর বরফ গললে আবার শুরু হয় একই সবুজ জীবনের উৎসব। 

প্রায় ৮৭ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে চলতে থাকা এই সুন্দরের উৎসব, তথাকথিত সভ্য মানুষের চোখের আড়ালেই ছিল। ১৯৩১ সালে ব্রিটিশ পর্বতারোহী ফ্রাঙ্ক এস স্মাইথ আরও কয়েকজন ব্রিটিশ পর্বতারোহী এবং ভুটিয়া ও নেপালি শেরপাদের সঙ্গে আসেন কামেট পর্বত আরোহণ করতে। আরোহণ সম্পূর্ণ করার পর নামার সময় তাঁরা পথ ভুল করে এই দিকে চলে আসেন। উপত্যকায় এসে বিশাল বুগিয়াল জুড়ে ফুটে থাকা ফুলের শোভা দেখে তিনি বিমোহিত হয়ে যান। দেশে ফিরে ১৯৩৮ সালে ফ্রাঙ্ক লেখেন তাঁর বিখ্যাত বই ‘দা ভ্যালি অব ফ্ল্যাওয়ারস’। এই বই পড়েই সুন্দরের খোঁজ পায় মানুষ। বইয়ের নাম থেকেই পরে জায়গাটার নামকরণ হয়েছে। যদিও বন বিভাগের খাতায় এই জায়গার নাম নন্দ দেবী ন্যাশনাল পার্ক।

নতুন ও সুন্দর জায়গার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া আমার অনেক দিনের অভ্যাস। সব জায়গায় যেতে পারিনি। তবে ভ্রমণ কাহিনি পড়ে মনে মনে আমি অনেক জায়গা থেকেই ঘুরে এসেছি। যেমন এই লেখা পড়তে পড়তে আপনিও এখন মনে মনে চলেছেন ফুলের উপত্যকায়। ২০১০ সালে একদিন ঠিক করে ফেললাম ভ্যালি অব ফ্ল্যাওয়ারস যাব। তখন আমি কোলকাতায় চাকরি করি। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়াটা বিপজ্জনক হয়ে যাবে ভেবে একাই যাব ঠিক করলাম। একদিন কথা প্রসঙ্গে বসকে বললাম। শুনেই তিনি রাজি হলেন। তবে ডিপার্টমেন্টের দুজনকে একসঙ্গে ছুটি দেওয়া যাবে কিনা ভাবতে ভাবতে অনেকগুলো দিন কাটিয়ে দিলেন বড় সাহেব। শেষে অনেক আলোচনা করে ছুটির ব্যবস্থা হলো বটে, তবে দেরির জন্য বুকিং সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তে হলো। যা হোক, আগস্ট মাসের দ্বিতীয় শনিবার কলকাতা থেকে একটা স্পেশাল ট্রেনে উঠে আমরা রওনা দিলাম হরিদ্বারের উদ্দেশে। হরিদ্বারের কোণার্ক ট্র্যাভেলসের সঙ্গে আমার আগেই আলাপ ছিল। রেল স্টেশন থেকে বেরিয়ে বাঁ দিকে একটু গেলেই শিব মূর্তি চৌরাহাতে এদের অফিস। আগে বদ্রিনাথ যাওয়ার সময় কোণার্ক ট্রাভেল থেকেই আমি গাড়ি ভাড়া করেছিলাম। এবার অবশ্য গাড়ি আর হোটেল দুটোই ওদের সঙ্গে ঠিক করলাম। গাড়ি প্রতিদিন ২ হাজার ২০০টাকা।

রবিবার সন্ধ্যাবেলা হরিদ্বারে পৌঁছে শরীর বড়ই আনচান করতে লাগল। একে আগস্ট মাসের ঘেমো গরম; তার ওপরে এসি কামরায় টিকিট পাইনি। হোটেলের ঘরে তাই ব্যাগ রেখে গেলাম গঙ্গার পাড়ে হাওয়া খেতে—   যদি শরীর-মন একটু ঠান্ডা হয়। ঘাটে গিয়ে আমাদের হলো একটা ছোঁয়াচে রোগ। তখন রাত আটটা হবে। একের পর এক মানুষের দল পবিত্র হর-কি-পউড়ি ঘাটে স্নান করছেন দেখে অলক দা আর লোভ সামলাতে পারলেন না। আমাকে বললেন, ‘স্নান করবি?’ আমি বললাম, ‘দাদা, আমরা তো গামছা আনিনি!’ তাতে কী! গামছা কেনা হলো। তারপর নেমে পড়লাম জলে। জীবনে অনেক বার আমি হরিদ্বার, হৃষীকেশ বা কোউরিয়ালার নির্জন গঙ্গায় স্নান করেছি। তবে নির্দ্বিধায় বলতে পারি, সেদিনের স্নানে যে আনন্দ পেয়েছিলাম তাকে সব থেকে এগিয়ে রাখব। এরপর বিখ্যাত ‘দাদা-বৌদির হোটেলে’ খেয়ে বিছানায় পড়তেই ডুবে গেলাম গভীর ঘুমের দেশে।

 প্রায় ৩০০ প্রজাতির ফুল ফোটে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ারস বা ফুলের উপত্যকায়। ছবি: সংগৃহীতআমাদের হিসাবে একটা ভুল হয়েছিল। পরদিন ছিল শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার। শিবের মাথায় জল ঢালবে বলে লাখ লাখ লোক এসেছেন হরিদ্বারের বিভিন্ন ঘাটে। গত সন্ধ্যায় দেখা শহরটা ভোর রাত থেকে যে এমন ‘নাকা-বন্ধী’ হয়ে পড়বে কে জানত! গাড়িতে উঠে তাই হরিদ্বার ছেড়ে বেরোতে আমাদের বেলা ৯টা হয়ে গেল। উদ্দেশ্য ছিল জশিমঠ পেরিয়ে আরও ১৯ কিলোমিটার গিয়ে গোবিন্দ ঘাটে থাকব। কিন্তু দেরিতে রওনা দেওয়াতে সেটা সম্ভব হলো না। এই পাহাড়ি রাস্তায় সূর্য ডুবে যাওয়ার পরে গাড়ি চালানো নিরাপদ নয়। পিপলকোঠি থেকে জশিমঠ ৩৫-৩৬ কিলোমিটার পথ। সেই পথে কয়েক কিলোমিটার যেতেই দেখলাম বিরাট গাড়ির লাইন পড়েছে। এর অর্থ সামনে কোথাও রাস্তায় ধস নেমেছে। এই সময় রাস্তায় ধস নামাটা খুব সাধারণ বিষয়। বর্ষাকাল বলেই এটা হয়। ড্রাইভার বললেন, ‘ধস সরিয়ে রাস্তা কখন ঠিক হবে কে জানে। তারপর এই রাস্তায় আগে যাওয়া যাবে কিনা বুঝতে পারছি না।’ আগেও রাস্তায় দুটো জায়গাতে আমরা ধস দেখেছি। এক জায়গায় প্রায় দুই ঘণ্টা আটকেও থেকেছি। সন্ধ্যাবেলা আর তেমন আটকে পড়ার ইচ্ছে ছিল না। তার থেকেও বড় চিন্তা, যত লম্বা গাড়ির লাইন দেখা যাচ্ছে এত লোকের থাকার মতো জায়গা পিপলকোঠিতে আছে কিনা বুঝতে পারছিলাম না। আমি বললাম, ‘গাড়ি ঘুরিয়ে নাও, আমরা এখানেই থাকব।’ গাড়ি ঘুরিয়ে প্রথম যে হোটেল পেলাম সেখানেই থেকে গেলাম। ৪০০ টাকায় পরিষ্কার ঘর, গরম জল, আর কি চাই! এই হোটেলে রান্নার ব্যবস্থা নেই। রাতে আমি আর অলক দা অন্ধকার পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে চললাম নিচের বাজারের দিকে, খাবারের সন্ধানে। আর তখনই বুঝলাম, আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সব হোটেলে থিক থিক করছে মানুষ। রাস্তার ওপরে সারি সারি গাড়ি। অর্থাৎ ধস সরানো হয়নি! পরদিন সকালে কী হবে, চিন্তা হতে লাগল।

খুব সকালে উঠে গাড়ি নিয়ে চললাম। তখনো বেশি লোক রাস্তায় নামেনি। ধসের জায়গাটায় গিয়ে দেখলাম, বি.আর.ও কাজ করছে। খানিকটা সময়ের মধ্যেই আমরা এগিয়ে গেলাম। পিপলকোঠি থেকে জশিমঠের রাস্তা বড়ই খাঁড়াই। ৩৫ কিলোমিটার যেতে ১ ঘণ্টা লেগে গেল। জশিমঠ থেকে বদ্রিনাথ ৪৪ কিলোমিটার রাস্তা আরও খাঁড়াই ও সরু। সিঙ্গেল রাস্তাই বলা যায়। তাই গাড়িগুলোকে দল ধরে ছাড়া হয়। একটা দল চলে গেলে আবার রাস্তা আটকে দেওয়ার হয় ঘণ্টা খানিকের জন্য। আমরাও তেমন ভাবে আটকে গেলাম। সময়টা কাটালাম চা খেয়ে আর পাহাড়ি বাজার দোকান দেখতে দেখতে। এক সময় ছাড়া পেয়ে এগিয়ে যেতে থাকলাম। এই পথে ১২ কিলোমিটার গেলে বিষ্ণু প্রয়াগ। অলকানন্দা ও ধউলি গঙ্গার মিলন ভূমি। পঞ্চ প্রয়াগের শেষ প্রয়াগ। এর আগে দেব-প্রয়াগ, রুদ্র-প্রয়াগ, কর্ণ-প্রয়াগ ও নন্দ-প্রয়াগ পেরিয়ে এসেছি আমরা। রাস্তা, আশপাশের গাছপালা, খাঁড়া ন্যাড়া পাথরের পাহাড় সব মিলিয়ে জায়গাটা দারুণ সুন্দর। আরও খানিকটা পথ পেরিয়ে আমরা গোবিন্দ ঘাট বাজারে এসে দাঁড়ালাম। শিখদের দশম গুরু, গোবিন্দ সিং তাঁর জ্ঞান, সাহস এবং আদর্শের জন্য মহান হয়ে আছেন। এখানেই তাঁর আশ্রম। যাকে লোকে গুরুদ্বরা বলে। বাজারের পাশে বিরাট বড় পার্কিং। সেখানে গাড়ি রেখে পিঠে ব্যাগ চাপিয়ে আমরা চললাম ঘাঙ্ঘারিয়ার দিকে। ১৪ কিলোমিটার ঘোড়া কিংবা পায়ে হেঁটে চলতে হবে আমাদের। আমরা তিন দিন পরে ফিরব। ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে থাকবে এখানে। তিনি বললেন, ‘বেশি জিনিস নিয়ে যাবেন না, কষ্ট হবে।’ আমরা তাঁর কথা শুনলাম না। পুরো ব্যাগটাই পিঠে নিয়ে চললাম। শুধু তাই নয়, ঘোড়া ওয়ালাদের অনেক অনুরোধ উপেক্ষা করে নিজের পায়ে হেঁটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। তিন কিলোমিটার পথ চলে ফুলনা গ্রামে এসেই বুঝলাম কী বিরাট ভুল করে ফেলেছি। কিন্তু তখন আর উপায় নেই।

কয়েক বছর আগে আমার এক বন্ধু গিয়েছিল ভ্যালি অব ফ্ল্যাওয়ারসে। তার কাছে শুনেছি, এখন ফুলনা পর্যন্ত অটো চলছে। যা হোক, ফুলনাতে এসে, আমরা ঘোড়া খুঁজতে লাগলাম। মাঝ পথে ঘোড়া পাওয়া গেল না। তখন অলক দা একটা বুদ্ধি দিল। বলল, ‘ব্যাগগুলো ঘোড়াতে পাঠিয়ে খালি হাতে হাঁটা যাক, কী বলিস?’ অন্য মাল নিয়ে যাওয়া একটা ঘোড়ার পিঠে আমাদের ব্যাগ চাপিয়ে একটু এগোতেই দেখলাম, একজন বয়স্ক নারী কী যেন একটা লাল পানীয় বিক্রি করছেন। ১০ টাকায় এক গ্লাস লাল রঙের মিষ্টি পানীয়। গুড়াসের শরবত। গুড়াস, রডডেনড্রনের স্থানীয় নাম। রডডেনড্রনের লাল ফুলের পাপড়ি রোদে শুকিয়ে রাখে এখানকার গ্রামের মানুষ। সেই শুকনো পাপড়ি থেকে চা করার মতো করে তৈরি হয় গুড়াসের শরবত। আজকাল অনেক শপিং মলে পাওয়া যায়। কেউ কেউ বলেন এতে নাকি স্মৃতিশক্তি বেড়ে যায়। তাই শিক্ষার্থীদের জন্য গুড়াস ভালো। আমরা কয়েক গ্লাস খেয়ে নিলাম। শপিং মলের জিনিসে প্রিজারবেটিভ দেওয়া থাকে। ফুলনা গ্রামের এই শরবত সেই তুলনায় অমৃত।

পিঠের ওজন কমে যাওয়াতে আমাদের চলার গতি বাড়ল। ঘাঙ্ঘারিয়া থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে হেমকুন্ড সাহেব। শিখ ধর্মের স্রষ্টা গুরু নানাক এখানেই সাধনা করেছিলেন। ইসলাম ধর্মের মানুষের কাছে যেমন মক্কা তেমনই শিখ ধর্মের মানুষের কাছে হেমকুন্ড। চলার পথে তাদেরই সংখ্যাই ৯৫ শতাংশ। পথের কষ্ট দূর করতে তাঁরা মাঝে মাঝে যেমন গুরুর নাম করছেন তেমনই সহযাত্রীদের গ্লুকোজ ও জল বিতরণ করছেন। পাহাড়ের গা বেয়ে পায়ে হাঁটা পথে উৎসাহী মানুষের ভিড়, পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া লক্ষ্মণ গঙ্গা নদী আর মাঝে মাঝে সুন্দরী ঝরনার ধারা। এক কোথায় রোমান্টিক পরিবেশ। তবে চলার পথে কষ্ট আছে। বৃষ্টি হবে থেকে থেকে। তার মধ্যে দিয়েই চলতে হবে ছাতা কিংবা বর্ষাতি নিয়ে। চলতে চলতে এক সর্দারজির সঙ্গে আলাপ। তিনি বোঝালেন শিখ শব্দের অর্থ, ছাত্র। সে জন্যেই গুরু কথাটা এসেছে। প্রাচীনকালে গুরু শিষ্যরা এমন জঙ্গলেই থাকতেন। লোকালয়ের বিভিন্ন অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে আসতেন মাঝে মধ্যে। তাই ঘোড়া, তরোয়াল ইত্যাদির প্রয়োজন ছিল।

যখন ঘাঙ্ঘারিয়াতে এলাম তখন বিকেল চারটে। চারদিক কালো করে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। জামা জুতো ভিজে গেছে। সেই ঘোড়া ওয়ালা ছেলেটা দেখলাম আমাদের ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কথা বলে একটা হোটেলে ঘর নিলাম। দেরি করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি বলে জিএমভিএন এ ঘর পাইনি। ফ্রেশ হয়ে গেলাম খাবার খেতে। বললাম, দুটো করে আলুর পরোটা দাও। হোটেলের লোকটা বলল, ‘এখানে অক্সিজেন কম। দুটো আপনারা খেতে পারবেন না।’ পরে বুঝলাম ঠিক কথাই বলছে লোকটা। সেই একটা পরোটা রাতে পর্যন্ত আমাদের কিছু খেতে দিল না। ঘাঙ্ঘারিয়াতে তখনো বিদ্যুৎ ছিল না। হোটেল জেনারেটর চালাত দুই ঘণ্টা। সেই সুযোগে ক্যামেরা চার্জ করতে হবে। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক ছিল না। আমরা বিকেলে বেরিয়ে স্যাটেলাইট ফোন থেকে ২০ টাকা মিনিট দরে বাড়িতে ফোন করেছিলাম। তার পাশেই ছিল একটা অডিটোরিয়াম। এলাকার ইতিহাস ভূগোল, মানুষের জীবনযাত্রা বিষয়ে তথ্যচিত্র দেখলাম। জানলাম কী কী ফুলে দেখতে পাব আর কোন ফুলের কী নাম।

পরদিন সকালে উঠে দেখলাম আকাশের মুখ ভার। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। হোটেলের লোকটা বলল, ‘আজ ফুল দেখতে যাবেন না’। ঠিক করলাম হেমকুন্ড যাব। এই ছয় কিলোমিটার পথ আরও খাঁড়াই এবং অক্সিজেন আরও কম। আমরা তাই ঘোড়া নিয়ে নিলাম। এই পথেই চলতে চলতে দেখা পেলাম, ব্রহ্ম-কমলের। এমন বড় মাপের ফুল আমি আগে দেখিনি। রাস্তার পাশে ফুটে আছে—   যেন ফুটলাইট জ্বলছে। ঘোড়া থেকে নেমে ছবি তুললাম। আরও কয়েকবার নামতে হলো। ঘোড়ার পিঠে একটানা বসে থাকা বড় কঠিন কাজ। লক্ষ্য করলাম, শিখ ধর্মের অনেক বয়স্ক মানুষও চলেছেন। কারও কারও সঙ্গে রয়েছে ছোট অক্সিজেন সিলিন্ডার।

 ভ্যালি অব ফ্লাওয়ারস বা ফুলের উপত্যকায় ফুল দেখতে যাওয়ার সঠিক সময় ১৫ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট। ছবি: সংগৃহীতহেমকুন্ড সাহেবে গিয়ে দেখলাম, কুণ্ডের বরফ শীতল জলে স্নান করে পরিষ্কার জামা কাপড় পরে মানুষ চলেছেন গুরুদ্বারে। আমরা কুণ্ডের পাশে দাঁড়িয়ে ঠান্ডায় কাঁপছি দেখে এক সর্দারজী বললেন, ‘ঝাঁপ দাও। ঠান্ডা পালিয়ে যাবে।’ বললাম, ‘মাফ করো গুরু।’ কুণ্ডের চারদিকে বরফের পাহাড়। সেই বরফ জল হেমকুন্ড পরিপূর্ণ করে এক নদীর জন্ম দিয়েছে। শোনা যায়, লক্ষ্মণ নাকি এখানে বসেই সাধনা করেছিলেন। তাই এই নদীর নাম লক্ষ্মণ গঙ্গা। এসব দেখতে দেখতে খানিকটা বেলা হয়ে গেল। দারুণ খিদে লেগেছে। গুরুদ্বারে দেখলাম বিরাট দুটো পাত্রে গরম-গরম কী যেন রান্না হচ্ছে। কাছে গিয়ে দেখলাম, পাতলা খিচুড়ি আর চা। বাটি ও মগ এগিয়ে দিতেই এক এক হাতা পাওয়া গেল। খিদে অনুমান করে লজ্জার মাথা খেয়ে বললাম, ‘আর একটু দিন।’ মানুষটা একটু হেসে বললেন, ‘আবার দেব, খেয়ে আসুন।’ সত্যি বলছি, ওইটুকু খেতেই ক্লান্ত হয়ে গেলাম। একটু হাঁটতেই মনে হচ্ছে শরীরের সব শক্তি শেষ হয়ে যাবে। কঠিন পর্বতের ওপরে যে সেনাবাহিনী দিনরাত লড়াই করে চলেছে, তাদের কথা ভেবে মন ভার হয়ে গেল। ফেরার পথে ঘোড়া চালককে বললাম ব্রহ্মকমল ফুল তুলে দিতে। সে বলল, ‘এই ফুল তোলা নিষেধ। তোমাকে নামিয়ে দিচ্ছি চুপিচুপি তুলে নাও।’ আমি ঘোড়া থেকে নেমে একটা পাহাড়ের বুগিয়ালের দিকে চললাম। আর ঠিক সেই সময়ে, কুয়াশা অনেকটা কমে গেল। দেখলাম পাহাড়ের গায়ে ফুটে আছে হাজার হাজার ব্রহ্মকমল। মনে হলো স্বর্গের বাগানে এসে পড়েছি!

পরদিন সকালে উঠেই চললাম ফুল দেখতে। এ পথে ঘোড়া চলে না। কেন না ঘোড়া ফুল খেয়ে ফেলবে। নন্দাদেবীর গেটে গিয়ে দেখলাম আমাদের আগে আর মাত্র দুজন এসেছেন। গেট থেকে প্রায় চার কিলোমিটার পথ চলার পর ফুলে ভরা পাহাড়ের উপত্যকা, যা দেখতে এসেছি আমরা। জায়গাটা ঠিক কত বড় জানি না। তবে এত সুন্দর জায়গা আমি আগে কোথাও দেখিনি। এবার সত্যি সত্যি যেন মনে হতে লাগল, আমি স্বর্গে এসে গেছি। মালি বিহীন এমন সাজানো বাগান বুঝি স্বর্গেই সম্ভব। আর তার মাঝে মাঝে ছোট ছোট জলের ধারা। খানিকক্ষণ পর পর মেঘেদের হালকা স্রোত এসে ছোঁয়া দিয়ে কোথায় চলে যাচ্ছে। একটা পাথরের ওপর বসে পড়লাম। এই সুন্দরকে কিছুক্ষণ চুপ চাপ উপভোগ করতে হবে। পাশের এক ফলকে দেখলাম লেখা রয়েছে, ‘ন্যাচার ইজ এ বুক অ্যান্ড অথর ইজ গড’—   প্রকৃতি একটা বই ঈশ্বর যার লেখক। মনটা এক অন্য ভাবে ভরে উঠল। আর ঠিক তখনই কানে ভেসে এল অদ্ভুত এক বাঁশির শব্দ। কয়েক মুহূর্তের জন্য ডুবে গেলাম স্বপ্নের মধ্যে। মনে হলো পণ্ডিত হরি প্রসাদ বসেছেন ইন্দ্রের সভায়।

আমার চটকা ভেঙে দিয়ে অলক দা বললেন, ‘এদিকে আয়, দেখে যা।’ গিয়ে দেখি বড় একটা পাথরের ওপর বসে এক বৃদ্ধ বাজাচ্ছেন এই মোহন বাঁশি। পাশে বসে আছেন তাঁর স্ত্রী। বাজনা শেষে আলাপ হলো দক্ষিণ ভারতের এই দম্পতির সঙ্গে। ভদ্রলোক রেল থেকে অবসর নিয়েছেন পাঁচ বছর হলো। বললেন, ‘বহুদিনের ইচ্ছা ছিল এখানে এসে বাঁশি বাজাবার। আজ সে ইচ্ছা পূরণ হলো। এরপর মরে গেলেও দুঃখ থাকবে না।’ অলক দা বললেন, ‘এবার চল ফিরি। নামতে নামতে বিকেল হয়ে যাবে।’ আমি উপত্যকার দিকে তাকিয়ে ব্লটিং পেপারের মতো সৌন্দর্যকে শুষে নিলাম যতটা সম্ভব। তারপর ফেরার পথ ধরলাম ঘোড়ার পিঠে। ফেরার পথে এক জায়গায় দেখলাম পাথরে লেখা, ‘কাক ভুশুণ্ডি ২০ কিলোমিটার।’ ঘোড়াওয়ালা বললেন, ‘কাক ভুশুণ্ডি একটা লেকের নাম। ২০ কিলোমিটার ট্রেকিং পথ।’ পাহাড়ের লেক বাংলার সাহিত্যে কী তবে ভুশুণ্ডির মাঠ হয়েছে! মনে মনে হাসলাম। 

 ভ্যালি অব ফ্লাওয়ারস বা ফুলের উপত্যকার পাহাড়ি পথে লেখক। ছবি: সংগৃহীতকয়েকটি তথ্য: চেষ্টা করুন জিএমভিএন ঘাঙ্ঘারিয়া বুক করতে। সঙ্গে রাখুন হোমিও ওষুধ সিওসিএ–৩০। শ্বাস কষ্ট হলে জিভে কয়েক ফোঁটা ফেলে দিন। সঙ্গে কাজু, কিশমিশ রাখুন। পথে বারবার চা খেয়ে ও বিশ্রাম নিতে নিতে চলুন। সঙ্গে ছাতা কিংবা রেইনকোট অবশ্যই রাখুন। ব্যাটারি ব্যাংক চার্জ দিয়ে আনবেন। অপ্রয়োজনীয়ে জিনিস গাড়িতে রেখে হালকা হয়ে পাহাড়ে উঠুন, অবশ্যই ঘোড়া নিয়ে। দেখবেন সারা জীবন মনে রাখার মতো একটা ভ্রমণ হয়ে থাকবে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ারস।

কীভাবে যাবেন: কলকাতা থেকে ট্রেনে হরিদ্বার আসতে পারেন কিংবা দিল্লি পর্যন্ত রাজধানী এক্সপ্রেস বা বিমানে। সেখান থেকে বিকেলের জন-শতাব্দীতে হরিদ্বার আসুন। পর দিন ভোরে ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। গোবিন্দ ঘাট পর্যন্ত আসতে পারলে খুব ভালো হয়। রাতে ওখানেই থাকুন। ফেরার সময় চাইলে বদ্রিনাথ দর্শন করে নিতেও পারেন।

কখন আসবেন: ১৫ আগস্ট এর আশপাশের সময়টা সব থেকে ভালো। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদি দোকানি সোহেল

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পোষা প্রাণী কি আমাদের শিক্ষক

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২৪
কীভাবে শান্ত থাকতে হয়, কীভাবে ভালোবাসতে হয় এবং কীভাবে দিন উপভোগ করতে হয়—পোষা প্রাণীর দিকে গভীর মনোযোগ দিলে এগুলো শেখা যায়। ছবি: পেক্সেলস
কীভাবে শান্ত থাকতে হয়, কীভাবে ভালোবাসতে হয় এবং কীভাবে দিন উপভোগ করতে হয়—পোষা প্রাণীর দিকে গভীর মনোযোগ দিলে এগুলো শেখা যায়। ছবি: পেক্সেলস

অনেকে শখ করে বাড়িতে বিড়াল, কুকুর, পাখি, মাছ বা খরগোশ পোষেন। যদি আপনি শিখতে চান, তাহলে এই প্রাণীগুলোর সাধারণ দৈনন্দিন অভ্যাসের মাধ্যমে অনেক কিছু শিখতে পারেন। কীভাবে শান্ত থাকতে হয়, কীভাবে ভালোবাসতে হয় এবং কীভাবে দিন উপভোগ করতে হয়—পোষা প্রাণীর দিকে গভীর মনোযোগ দিলে এগুলো শেখা যায়। কিন্তু আপনি কি শিখছেন?

সুস্থ শরীর ও মনের পাঠ

বাড়ির পোষা প্রাণীর কাছ থেকে শরীর ও মন সতেজ রাখা শেখাটা খুব সহজ। তাদের আচরণ দেখলেই বুঝবেন, শরীর ও মন ভালো রাখতে বিশেষ কিছু করার দরকার নেই। এর জন্য প্রয়োজন শুধু ধারাবাহিকতা এবং প্রকৃতির নিয়ম অনুসরণ করা।

খেয়াল করবেন, আপনার বাড়ির পোষা প্রাণীটি দিনের বেলা ঝিমিয়ে নেয়। যাকে বলা হয় পাওয়ার ন্যাপ। এরপর তারা ছোটাছুটি করে বেড়ায় পূর্ণ শক্তি নিয়ে। বিষয়টি আসলে পাওয়ার ন্যাপের শক্তি। ন্যাপ কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং সতর্কতা বৃদ্ধি করে—এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। শহরের রাস্তায় দেখে থাকবেন, অনেকে কুকুর নিয়ে হাঁটতে বের হন। যাঁরা পোষা কুকুরকে নিয়মিত বাইরে হাঁটতে নিয়ে যান, তাঁদের এটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায়। এই অভ্যাসের কারণে সকালে কিংবা বিকেলের দিকে কোনো এক বেলা হাঁটার স্বাস্থ্য উপকারিতা পেয়ে থাকেন। এই হাঁটা মানসিক চাপ কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে দূরে রাখে। এটি প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং মানসিক চাপ কমানোর অন্যতম সেরা উপায়।

ধরুন, আপনার বাড়ির বিড়ালটি মাছ ভালোবাসে। আপনার মাছের প্রতি আকর্ষণ না থাকলেও বিড়ালের তৃপ্তি করে মাছ খাওয়ার দৃশ্য আপনাকে মাছ খাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে পারে। প্রাণীদের আরও একটি চমৎকার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তাদের নির্দিষ্ট রুটিন। এটিও শিক্ষণীয়। কিছু কিছু মানুষ জীবনকে একটা নির্দিষ্ট রুটিনের ভেতরে নিয়ে আসতে অনেক কষ্ট করে। একটি ধারাবাহিক দৈনন্দিন রুটিন ঘুমের মান উন্নত করে। আপনার পোষ্য যেমন ঘুম থেকে উঠেই গা ঝাড়া দিয়ে সতেজ হয়, তেমনি নিয়মিত স্ট্রেচিং শরীরের নমনীয়তা বাড়ায় এবং শক্তি দেয়। পোষা প্রাণীরা সব সময় নিজেদের পরিষ্কার রাখে। এই পরিচ্ছন্নতা আত্মসম্মান বাড়াতে সহায়ক।

মানসিক শান্তি ও ইতিবাচকতার সূত্র

পোষা প্রাণীরা নিজেদের যেকোনো পরিস্থিতিতে সেরাটা খুঁজে নেয়। ছবি: পেক্সেলস
পোষা প্রাণীরা নিজেদের যেকোনো পরিস্থিতিতে সেরাটা খুঁজে নেয়। ছবি: পেক্সেলস

পোষা প্রাণীরা অতীত বা ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে না। তারা কেবল বর্তমানে বাঁচে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া মানসিক শান্তির পাঠগুলো হলো—

ক্ষমা করুন এবং ভুলে যান: আপনার পোষ্যটি হয়তো আপনার ওপর রেগে গেছে। কিন্তু সেই রাগ স্থায়ী নয়। তারা কোনো হিংসা পুষে রাখে না। রাগ ধরে রাখা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। প্রাণীরা এ বিষয়টিই শেখায়।

ইতিবাচক থাকুন: পোষা প্রাণীরা নিজেদের যেকোনো পরিস্থিতিতে সেরাটা খুঁজে নেয়। হতে পারে সেটা একফালি ঘাস বা একঝলক রোদ। তারা নেতিবাচক দিক নিয়ে পড়ে থাকে না। মানুষের ক্ষেত্রেও তাই। নেতিবাচকতা নিয়ে বেশি ভাবলে বিষণ্নতা বাড়ে।

বর্তমান মুহূর্তে বাঁচুন: তারা মাইন্ডফুলনেস বা সচেতন থাকা শিখেছে মানুষের চেয়ে আগে। তারা খেলুক, ঘুমাক—যা-ই করুক না কেন, তাতে পুরোপুরি মনোযোগ দেয়।

সম্পর্ক ও যোগাযোগের পাঠ

ভালোবাসা, আনুগত্য ও মনোযোগ—এগুলো একটি সুস্থ সম্পর্কের ভিত্তি। এসব আমরা প্রাণীদের কাছ থেকে খুব সহজে শিখতে পারি। বলার আগে শুনতে শিখুন। যখন আমাদের মাথায় নতুন ধারণা ঘুরতে থাকে, তখন আমরা প্রায়ই অন্যকে মাঝপথে থামিয়ে দিই। পোষ্যটি কিন্তু আপনার কথা শেষ করার জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে। তাদের এই মনোযোগ দিয়ে শোনা ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। পোষা প্রাণীরা আপনার মনের ভাষা বুঝে শরীরের ভাষা পরখ করে। কিন্তু মানুষ শারীরিক ভাষা প্রায়ই উপেক্ষা করে। আপনার অঙ্গভঙ্গি বা চোখের ভাষা কী বলছে, সেদিকে খেয়াল রাখা ব্যক্তিগত সম্পর্ক উন্নত করে।

নিঃশর্ত ভালোবাসা দেওয়া প্রাণীরাই শেখায়। কুকুর কখনো খুব ঝানু খেলোয়াড় হওয়ার ভান করে না। সব সময় তারা আপনার প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, সম্পর্কে ‘খেলোয়াড়ি মনোভাব’ ভুল মানুষকে আকর্ষণ করে। আমরা অনেক সময় খুব দ্রুত মানুষকে বিচার করে ফেলি। কিন্তু খেয়াল করবেন, আপনার বিড়ালটি আপনার পোশাক বা মেধা দেখে আপনার কোলে এসে বসবে না। প্রাণীরা ভদ্রতার ভাষা বোঝে, কোনো সামাজিক স্তর নয়। প্রাণীরা বন্ধুত্ব ও দীর্ঘ জীবন সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়। যাদের বন্ধু বেশি, তারা অন্যদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে। পোষ্যরা আপনাকে সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্ব শেখায়।

জীবনের উদ্দেশ্য ও মূল্য

জীবনের আসল আনন্দ আসে উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া এবং ছোট ছোট জিনিসে খুশি হওয়ার মধ্য দিয়ে; শুধু পোষা প্রাণীরা নয়, আমাদের চারপাশের যেকোনো প্রাণীই আমাদের বিষয়টি শেখায়।

খেলা শুধু শিশু বা প্রাণীদের জন্য নয়; এটি বুদ্ধিমত্তা, সৃজনশীলতা ও সামাজিক দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খেলার জন্য সময় বের করুন। একটি উদ্দেশ্য পূরণের জন্য বাঁচুন। বিরক্ত হলে প্রাণীরা আক্রমণাত্মক বা উদ্বিগ্ন হতে পারে। মানুষেরও উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য না থাকলে মানসিক সমস্যা তৈরি হয়। কাজ করার সহজাত তাড়না আমাদের সুস্থ রাখে। একটি পোষ্য মেঝেতে একটি টুকরা খাবার পেয়ে বা পুরোনো বল খুঁজে পেয়ে পুরো দিনের আনন্দে কাটিয়ে দিতে পারে। তাদের মতো আপনিও প্রিয় খাবার উপভোগ করা বা পছন্দের সিনেমা দেখার মতো ছোট ছোট আনন্দে বেঁচে থাকা শিখুন।

সূত্র: স্টার্স ইনসাইডার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদি দোকানি সোহেল

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মেডিটেশন শুরু করতে চাচ্ছেন, জেনে নিন টিপসগুলো

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২৯
কাজে মনোযোগ ফেরাতে এবং আত্মিক সুখ পেতে মেডিটেশন খুব কার্যকরী অনুশীলন। ছবি: কোলাজ
কাজে মনোযোগ ফেরাতে এবং আত্মিক সুখ পেতে মেডিটেশন খুব কার্যকরী অনুশীলন। ছবি: কোলাজ

মেডিটেশন বা ধ্যান জীবন স্থিতিশীল করে। কাজে মনোযোগ ফেরাতে এবং আত্মিক সুখ পেতে মেডিটেশন খুব কার্যকরী অনুশীলন। কিন্তু অনেকে কিছুদিন মেডিটেশন করার পর ছেড়ে দেন। বলে বসেন, ‘কোথায়, কাজ হচ্ছে না তো!’ এমন হলে বুঝতে হবে, কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। অথবা আপনি নিজেই বেশ চাপ নিয়ে নিচ্ছেন বলে অস্থিরতাও কাটছে না, মানসিক শান্তিও মিলছে না।

এভারগ্রিন ইয়োগার সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক বাপ্পা শান্তনু বলেন, ‘মেডিটেশন করার জন্য সবার আগে মেরুদণ্ড সোজা করে বসতে শিখতে হবে। যিনি এভাবে বসতে পারেন না, তিনি অতটা উপকার পাবেন না মেডিটেশন থেকে। এভাবে বসার পর নড়াচড়া একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে। হাতের আঙুল ও পায়ের আঙুল নাড়ানো থেকেও বিরত থাকা চাই। এরপর শ্বাসপ্রশ্বাসে মনোযোগ দিন। এককথায় শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরের পরিবর্তনগুলো অনুভব করুন। শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খুব ধীরে ধীরে শ্বাস নিয়ে খুব ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এরপর ১ অনুপাত ২ হিসাবে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। অর্থাৎ যতটা সময় নিয়ে শ্বাস নেবেন, তার দ্বিগুণ সময় নিয়ে ছাড়তে হবে। কিন্তু প্রথম দিনেই এটা করতে যাওয়া ঠিক নয়। ধীরে ধীরে বুঝে ও অনুভব করে এগোতে হবে। এভাবে ৫ দিন সময় লাগিয়ে এ পর্যন্ত আসতে পারলে অনেকটাই ভালো বোধ হবে।’

নতুনেরা যেভাবে মেডিটেশন বা ধ্যান শুরু করতে পারেন

শুরুতে বেশি সময় নেবেন না

মেডিটেশন যাঁরা শুরু করেছেন, তাঁরা প্রথম দিনগুলোয় ৩০ মিনিট বা তার বেশি সময় ধরে নিজেকে ধ্যানে বাধ্য করবেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ধ্যান করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এতে করে আত্মবিশ্বাস দৃঢ় হওয়ার পরিবর্তে কমে যেতে পারে। তাই প্রতিদিন মাত্র ৫ মিনিট দিয়ে শুরু করুন। ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে পারেন। তাতেও মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যা হলে এক মিনিটের শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলন করা দিয়ে শুরু করুন। প্রতিদিন এভাবে চলতে দিন। এক সপ্তাহ পর এটাই নিয়মে আসবে। তখন মনোনিবেশ করা সহজ হবে।

মানসিকভাবে আরোগ্য় লাভের জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত ২ মাস অন্তত ২০ মিনিট মেডিটেশনে নিমগ্ন হতে হবে। এভাবে মেডিটেশন করলে মস্তিষ্কের গঠনের পরিবর্তন হয়। যেটাকে আমরা নিউরোপ্লাস্টিসিটি বলি। মেডিটেশন বা ধ্যানের এটাই সহজ মাধ্যম, যা নিজে নিজেই অনুশীলন করা সম্ভব। বাপ্পা শান্তনু, সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক, এভারগ্রিন ইয়োগা

তবে প্রথম কয়েকটি সেশনে মানসিক স্থিরতা আশা করা উচিত নয়। ধ্যান শুরু করার সময় বিভিন্নভাবে মনঃসংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তবে প্রতিবার যখন আপনি মনকে পুনরায় শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলনে ফিরিয়ে আনবেন, আপনার মনোযোগের বৃত্তটি আরও শক্তিশালী হবে। এটাই অনুশীলন। অনুশীলনকারীদের মতে, মেডিটেশন বা ধ্যান মানে চিন্তামুক্ত থাকা নয়; বরং চিন্তাভাবনা থাকা সত্ত্বেও আপনার সচেতনতাকে নোঙর করতে পারার নামই মেডিটেশন বা ধ্যান।

ধরন বেছে নিন

সব ধরনের ধ্যান বা মেডিটেশন সবার জন্য উপযুক্ত না-ও হতে পারে। ইতিবাচক চিন্তা, ভিজুয়ালাইজেশন থেকে শুরু করে গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ধ্যান রয়েছে। প্রতিটিই অনুশীলন করে দেখতে হবে, কোনটির সঙ্গে আপনার শরীরের সমন্বয় ঘটছে। কয়েকবার চেষ্টা করার পর যদি দেখা যায়, সেগুলোর কোনো একটির সঙ্গে আপনার বেশি সংযোগ তৈরি হচ্ছে, তাহলে সেটিই আপনার মেডিটেশনের সঠিক মাধ্যম।

সংগীত, সুগন্ধি, ফুল ইত্যাদি পাশে রেখে মেডিটেশনের পরিবেশ তৈরি করে নিন। প্রতীকী ছবিটি নেওয়া হয়েছে পেক্সেলস থেকে।
সংগীত, সুগন্ধি, ফুল ইত্যাদি পাশে রেখে মেডিটেশনের পরিবেশ তৈরি করে নিন। প্রতীকী ছবিটি নেওয়া হয়েছে পেক্সেলস থেকে।

পরিবেশ তৈরি

সমুদ্রের ঢেউয়ের আওয়াজ, বৃষ্টির টুপটাপ শব্দ, ঝরনার আওয়াজ ইত্যাদির বিভিন্ন ভিডিও বা সাউন্ডট্র্যাক পাওয়া যায় ইউটিউবে। সেগুলোর কোনো একটা ছেড়ে তারপর ধ্যান শুরু করলে কিছুটা সহজে মনোনিবেশ করতে পারবেন। এতে বাড়তি উদ্বেগ কমে আসবে এবং অনেকটাই আরামবোধ হবে।

শ্বাসপ্রশ্বাসে মনোযোগ

খুব দ্রুত ধ্যানে নিমগ্ন হওয়ার জন্য গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন অনেকে। চোখ বন্ধ করে চোয়াল শিথিল করুন। ধীরে ধীরে আপনার কাঁধ শিথিল করে নিন। তারপর নাক দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নিতে শুরু করুন। শ্বাস নেওয়ার সময় শরীর প্রসারিত হচ্ছে অনুভব করতে থাকুন। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন, যাতে শরীর তার কেন্দ্রে ফিরে আসে। তিন থেকে পাঁচ মিনিটের জন্য এটি পুনরাবৃত্তি করুন।

সূক্ষ্ম বিষয়ে মনোযোগ দিন

মনোযোগ বিক্ষিপ্ত হওয়া এড়াতে শ্বাসের অনুভূতি, হাতের তালুর ওজন ইত্যাদি শারীরিক সংবেদনগুলোয় মনোনিবেশ করুন। এগুলো আপনাকে বাইরের পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ধ্যানে নিমগ্ন হতে সহায়তা করবে।

ধ্যানের নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করুন

ধ্যানের জন্য বাড়িতে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থাকলে ভালো। এতে অনুশীলন আরও বিশেষ হয়ে উঠবে। এ ছাড়া সে জায়গাটি চোখে পড়লে আপনার মস্তিষ্ক সংকেত দেবে, ধ্যান করার সময় হয়েছে। নিয়মিত ধ্যানের জন্য একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ, আরামদায়ক জায়গা বেছে নিন। সেখানে যেন প্রাকৃতিক আলো, সবুজ ও আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা থাকে, সেদিকে নজর দিন। ধ্যান শুরু করার আগে এই পরিবেশ আপনার স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে তুলবে। এই জায়গা আপনার মস্তিষ্ককে বিভ্রান্তি কমানোর নির্দেশ দেবে। এখানে একটি ছোট ট্রেতে সুগন্ধি মোমবাতি, ধূপকাঠি, ফুল থাকতে পারে। সেগুলোর সৌন্দর্য ও গন্ধ মস্তিষ্ক শান্ত করতে সাহায্য করবে।

ধ্যান বা মেডিটেশন মানসিক প্রশান্তি আনে, শরীরের স্থিতিশীলতা ও সহনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করে। এক দিনে বা এক সপ্তাহে অর্থাৎ কম সময়ে এটি আয়ত্ত করতে যাবেন না। ধীরে ধীরে সময় নিয়ে আয়ত্ত করুন এবং দীর্ঘ মেয়াদে সুস্থ থাকুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদি দোকানি সোহেল

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৫
আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

মেষ

আজ আপনার ভেতরের অ্যাড্রেনালিন ডাবল ডোজ নিয়ে নেমেছে। আজ এত দ্রুত কাজ করবেন যে সহকর্মীরা ভাববে আপনি কফি-মেশিনের সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করছেন। কিন্তু সাবধান! সব এনার্জি যেন বেলা ২টার পর শেষ না হয়ে যায়। কোনো মিটিংয়ে আপনার আইডিয়াটা ‘চিৎকার’ করে বলবেন না, সাধারণ স্বরে বলুন। আজকে সাতবার হাই তুলবেন।

বৃষ

আপনার আরামপ্রিয় মন আজ কাজের ডেস্ক থেকে সোজা সোফায় টানতে চাইবে। আজ খাবারের ব্যাপারে কোনো আপস করবেন না। দুপুরের খাবারের মেনু ঠিক করতে গিয়ে যে সময় নষ্ট করবেন, সেটা দিয়ে একটা ছোটখাটো উপন্যাস লেখা যেত। নিজের রূপচর্চা, শরীরের সেবাযত্ন আজ চরম পর্যায়ে নিয়ে যাবেন। স্ন্যাকস হাতে রাখুন, তবে ঘুমিয়ে পড়বেন না। ঘুম কাজের পরে!

মিথুন

আজ মস্তিষ্ক একটি হাইস্পিড ওয়াইফাই রাউটারের মতো কাজ করবে। একাই তিনজনের সঙ্গে চ্যাট করতে পারবেন, একটি ই-মেল ড্রাফট করতে পারবেন এবং একই সঙ্গে গানও গাইতে পারবেন। কিন্তু সতর্ক থাকুন, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভুল গ্রুপ চ্যাটে চলে যেতে পারে! জরুরি মেসেজ পাঠানোর আগে প্রাপকের নামটা তিনবার দেখে নিন। ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না।

কর্কট

আপনার হৃদয়ের নিরাপত্তা দরকার আজ। মনে হতে পারে ঘর ছেড়ে কোথাও যাবেন না। কাঁথা মুড়ি দিয়ে থাকাই আজ আপনার কাছে জীবনের পরম সত্য, পরম প্রাপ্তি। ঘরের চার দেয়ালকে আজ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আশ্রয় মনে হবে। ফ্রিজের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস না ফেলে, নিজেই কিছু রান্না করুন। বাড়িতে আপনার প্রিয়জনের জন্য অপ্রত্যাশিত আরামের ব্যবস্থা করলে সুফল পাবেন।

সিংহ

আলো আকর্ষণকারী হিসেবে আজ আপনার খ্যাতি বাড়বে। আজ আপনি যেখানে যাবেন, সেখানেই আপনার প্রবেশে একটি অদৃশ্য স্পটলাইট জ্বলবে। অতিরিক্ত মনোযোগের জন্য হয়তো অফিসের বাথরুমের আয়নায় সেলফি তুলতে পারেন। আপনার উজ্জ্বলতা এমনিতেই যথেষ্ট। ইনডোরে সানগ্লাস পরা এড়িয়ে চলুন। আজ অযথা একটি দামি জিনিসের জন্য বাজেট নষ্ট হতে পারে, শুধু শুধু লোক দেখানোর জন্য টাকা নষ্ট করার কোনো মানে হয় না!

কন্যা

আজ আপনি জীবনের প্রতিটি সেকেন্ডের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করবেন। ‘টু-ডু’ লিস্টের রং কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে এক ঘণ্টা ব্যয় করবেন, যা আসলে আপনার ‘টু-ডু’ লিস্টে নেই। নিখুঁতভাবে থাকার চাপ আপনার কপালে ভাঁজ ফেলতে পারে। আজ একটি কাজ নিখুঁত না হলেও পৃথিবী থেমে যাবে না। প্লিজ, শ্বাস নিন। পানি পান করতে ভুলে যেতে পারেন। কারণ, আপনি পানির আণবিক গঠন নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন।

তুলা

আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় সংগ্রাম আজ আবার শুরু হবে: সিদ্ধান্তহীনতা। দুপুরে কী খাবেন—ভাত না রুটি? আজ এটা আপনার কাছে জীবনের অর্থ খোঁজার মতোই কঠিন মনে হবে। ভারসাম্য খুঁজতে গিয়ে মাঝখানে আটকে যাবেন। লাঞ্চের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটা কয়েন টস করুন। আর ফল যা-ই হোক, চোখ বন্ধ করে মেনে নিন। সহকর্মীদের সঙ্গে আজ ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’-এর মাঝের শব্দটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।

বৃশ্চিক

আপনার ডিটেকটিভ মোড আজ চালু থাকবে। জানতে পারবেন কে শেষ বিস্কুটটি খেয়েছে এবং তার পরিণাম কী হবে। গভীর এবং তীব্র মনোযোগ আজ সাফল্য এনে দেবে অথবা অপ্রয়োজনীয় ষড়যন্ত্র তত্ত্বে ফেলে দেবে। সবার দুর্বলতা খুঁজে না বের করে, নিজের কাজের ওপর ফোকাস করুন। অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতার কারণে আজ ভালো সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে।

ধনু

আপনার ভেতরে থাকা ভবঘুরে মন আজ বিদ্রোহ ঘোষণা করবে। অফিসে বসেও মনে মনে আন্দিজ পর্বতমালার চূড়ায় অথবা সুন্দরবনের গহিনে ঘুরে বেড়াবেন। ছোটখাটো অ্যাডভেঞ্চার আজ আপনার দরকার। যদি বিদেশে যেতে মন চায়, তবে অন্তত ভিন্ন রাস্তা দিয়ে হেঁটে বাথরুমে যান। এমন কিছু বলবেন না যা পরে প্রত্যাহার করতে হবে! সুতরাং কথাবার্তা ভেবেচিন্তে বলুন। ওভারস্মার্ট হতে যাবেন না।

মকর

কাজ, কাজ আর কাজ—এটাই আপনার জীবনের মন্ত্র। এমনকি একটি শামুককেও তার ধীরগতির জন্য সমালোচনা করতে পারেন। গ্রহরা বলছে, আপনি পাঁচ বছর আগেই বিরতি পাওয়ার যোগ্য হয়ে রয়েছেন। এবার থামুন। একটি ছোট বিরতি নিন। পৃথিবী আপনার অনুপস্থিতিতেও ঘুরতে থাকবে। আজ অতিরিক্ত টাকা সাশ্রয় করতে পেরে গর্বিত হবেন।

কুম্ভ

আপনার মাথা আজ ‘আউট অব দ্য বক্স’ থেকে অনেক দূরে, সম্ভবত অন্য গ্রহের চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত। এমন একটি চমৎকার আইডিয়া নিয়ে আসবেন, যার মধ্যে কবুতর এবং পুলি সিস্টেম জড়িত থাকতে পারে। আইডিয়াটি দুর্দান্ত, কিন্তু সাধারণ মানুষ কি তা বুঝবে? একবার পরীক্ষা করে দেখুন। আজ এমন এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে পারেন, যার কথা ছয় মাস ধরে ভুলে গিয়েছিলেন।

মীন

আজ আপনার বেশির ভাগ সময় কাটবে দিবাস্বপ্নে। হয়তো ট্যাক্সের ফাইল করছেন, কিন্তু মন একই সঙ্গে একটি সিম্ফনি রচনা করছে। বাস্তব জগৎ আজ আপনার কাছে কিছুটা ধূসর লাগতে পারে। কল্পনার জগৎ থেকে একটু বের হয়ে আসুন। টাকা গুনতে গুনতে স্বপ্ন দেখা যায় না। আপনার সৃজনশীলতা আজ চূড়ায় থাকবে। একটি কবিতা লিখুন, কিন্তু অফিসে নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদি দোকানি সোহেল

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চালতার ঝাল-মিষ্টি রসাল আচার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
চালতার আচার। ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা
চালতার আচার। ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা

বাজারে মিলছে চালতা। প্রতিদিনই ডালে কয়েক টুকরা চালতা দিচ্ছেন অনেকে। এবার বানিয়ে ফেলুন আচার। আপনাদের জন্য চালতার ঝাল-মিষ্টি রসাল আচারের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা

উপকরণ

চালতা চারটি, চিনি এক কাপ, শুকনা মরিচ টালা গুঁড়া এক টেবিল চামচ, পাঁচফোড়ন ২ টেবিল চামচ, বিট লবণ এক চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, পানি চার কাপ, হলুদ সামান্য।

প্রণালি

চালতার খোসা ফেলে টুকরা করে কেটে নিয়ে ধুয়ে ৭-৮ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার হাঁড়িতে পানি আর চালতা দিয়ে সেদ্ধ করুন। সেদ্ধ হলে চিনি, বিট লবণ, শুকনা মরিচের গুঁড়া, সামান্য হলুদ দিয়ে রান্না করুন। পরে চামচ দিয়ে থেঁতো করে নিন। ঝোল ঘন হয়ে এলে ঝাল মসলা দেখে নামিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা করে কাচের বয়ামে সংরক্ষণ করুন চালতার ঝাল-মিষ্টি রসাল আচার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদি দোকানি সোহেল

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত