ফিচার ডেস্ক
তুরস্কের পূর্বাঞ্চলের ব্ল্যাক সি উপকূল থেকে প্রায় এক ঘণ্টার পথ ঘুরে পন্টিক পর্বতমালার ওপরে পৌঁছালে চোখে পড়ে এক অসাধারণ দৃশ্য—পাহাড়ের প্রাচীরের ওপর ঝুলন্ত সুমেলা মনাস্ট্রি।
মনাস্ট্রির স্থাপনা দেখলে মনে হবে কোনো বিখ্যাত শিল্পী তাঁর ক্যানভাসে ছবি এঁকে রেখেছেন। চ্যাপেল, প্রাঙ্গণ, লাইব্রেরি, সন্ন্যাসীদের কক্ষ, ঘণ্টাঘর ও পাথরে ঘেরা পবিত্র উৎস, সবই ঝুলে আছে পাহাড়ের গায়ে—প্রায় ৩০০ মিটার বা ১ হাজার ফুট ওপরে। এর নিচে ঘন বন ও নদী। ওপর থেকে দেখলে সবকিছুই হালকা কুয়াশার চাদরে ঢাকা মনে হয়।
মনাস্ট্রির ইতিহাস
মনাস্ট্রিটি চতুর্থ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত বলে ধারণা করা হয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, বারনাবাস ও সোফ্রোনিওস নামে দুই গ্রিক সন্ন্যাসী এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই সময়। স্বপ্নে মেরি তাঁদের জানান, পন্টিক পর্বতমালায় লুকানো আছে লুক দ্য অ্যাপোস্টল আঁকা একটি পবিত্র ছবি। বারনাবাস ও সোফ্রোনিওস সেই ছবি খুঁজে পেয়ে নাম দেন ‘প্যানাগিয়া সুমেলা’।
তেরো শ শতাব্দীতে মনাস্ট্রিটি বর্তমান আকার পায়। এই প্রাচীন প্রাচীরের মধ্যে রোমান সাম্রাজ্য থেকে বাইজেন্টাইন, ওসমানি শাসন এবং পরবর্তী সময়ে তুরস্কের স্বাধীনতাসংগ্রামের মতো অনেক ইতিহাস সাক্ষী হয়েছে।
ওসমানি শাসনকালে মুসলিম শাসকেরা খ্রিষ্টানদের ওপর আক্রমণ না করে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থানগুলো রক্ষা করত। কখনো কখনো তারা ছোট ছোট দান বা জমি দিয়ে মনাস্ট্রির সন্ন্যাসীদের সাহায্যও করত। ফলে সুমেলা শুধু একটি ধর্মীয় স্থানই নয়, ভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে সহনশীলতার নিদর্শন হিসেবেও পরিচিত।
স্থাপত্য ও ফ্রেস্কো
সুমেলা মনাস্ট্রি শুধু ইতিহাস নয়। এখানকার চিত্রশিল্প ও স্থাপত্য পর্যটকদের আরও চমকপ্রদ করে তোলে। মনাস্ট্রির বাইরের অংশে চোখে পড়ে বিশাল চিত্রকলা। সেখানে যিশু, মেরি ও দেবদূতদের ছবি আঁকা আছে। প্রতিটি ছবি যেন একেকটি গল্প, যা দর্শকের চোখে ইতিহাসকে জীবন্ত করে তোলে।
গুহার ভেতরে তেরো শ শতাব্দীতে আঁকা আরও রহস্যময় চিত্রশিল্প আছে। তবে জানিয়ে রাখা ভালো, এই মনাস্ট্রিতে শুধু সৌন্দর্য নয়, রোমান যুগের সিংহদের হাতে মানুষ মারা যাওয়ার মতো ভয়ংকর দৃশ্যের ছবিও দেখা যায়।
রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্নির্মাণ
মনাস্ট্রির রক্ষণাবেক্ষণ চলমান। সেখানে ফ্রেস্কো পুনরুদ্ধারের কাজ অত্যন্ত যত্নসহকারে করা হচ্ছে। শিল্পী সেনল আক্তাশ জানান, তাঁরা মূল রং ও শৈলীর সঙ্গে মিল রেখে ফ্রেস্কোগুলো পুনরায় সাজাচ্ছেন। এখানে পর্যটকেরা গোপন চ্যাপেল ও ছোট ছোট কক্ষগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। রক্ষণাবেক্ষণ চলাকালীন অপ্রত্যাশিত অনেক কিছু আবিষ্কারও হয়েছে সে মনাস্ট্রিতে। তার মধ্যে আছে একটি গোপন সুড়ঙ্গ। তার ভেতরেও কিছু চমকপ্রদ ফ্রেস্কো পাওয়া গেছে। সেসব ফ্রেস্কতে ফুটে উঠেছে ইতিহাসের অনেক গল্প।
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
সুমেলা মনাস্ট্রি একসময় ছিল গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ। ওসমানি সাম্রাজ্যের পতনের পর তুরস্কের স্থানীয় গ্রিকরা গ্রিসে চলে যায়। ২০১০ সালের ১৫ আগস্ট ৮৮ বছরে প্রথমবারের মতো পুনরায় অর্থোডক্স উপাসনার আয়োজন হয়েছিল। এখন অবশ্য প্রতিবছর একই দিনে অর্থোডক্স উপাসনার আয়োজন করা হয়।
দর্শক ও ভ্রমণ তথ্য
তুরস্কের আলতিন্দেরে ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত এ মনাস্ট্রি। ব্ল্যাক সি উপকূলের ট্রাবজোন শহর থেকে প্রায় এক ঘণ্টার পথ পারি দিয়ে যেতে হয় সেখানে।
পরিবহন: পার্কিং লট থেকে শাটল বা সিঁড়িপথ দিয়ে ধাপে ধাপে মনাস্ট্রিতে পৌঁছানো।
ব্যয়: ২০ ইউরো।
খোলা থাকার সময়: সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা।
ভ্রমণকাল: সাধারণত ১ থেকে ২ ঘণ্টা।
শীতকালে তুষার ও গ্রীষ্মে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। তাই শক্ত জুতা ও আবহাওয়া অনুযায়ী পোশাক পরা প্রয়োজন সেখানে যেতে চাইলে।
আশপাশে থাকার ব্যবস্থা
সেখানে কোসানদেরে গ্রামে তিন তারকা মানের সুমেলা হলিডে হোটেল রয়েছে। এ ছাড়া ট্রাবজোন শহরে রামাদা প্লাজা ও র্যাডিসন ব্লুর মতো বড় হোটেল আছে।
সুমেলা মনাস্ট্রি শুধু প্রাচীন স্থাপত্যের জন্যই নয়, এটি ভ্রমণ, ইতিহাস, শিল্প ও আধ্যাত্মিকতার মিলনকেন্দ্র হিসেবেও বিখ্যাত। পাহাড়ের প্রাচীরের সঙ্গে ঝুলে থাকা, চোখধাঁধানো ফ্রেস্কো আর সমৃদ্ধ ইতিহাস এই জায়গাকে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
সূত্র: সিএনএন
তুরস্কের পূর্বাঞ্চলের ব্ল্যাক সি উপকূল থেকে প্রায় এক ঘণ্টার পথ ঘুরে পন্টিক পর্বতমালার ওপরে পৌঁছালে চোখে পড়ে এক অসাধারণ দৃশ্য—পাহাড়ের প্রাচীরের ওপর ঝুলন্ত সুমেলা মনাস্ট্রি।
মনাস্ট্রির স্থাপনা দেখলে মনে হবে কোনো বিখ্যাত শিল্পী তাঁর ক্যানভাসে ছবি এঁকে রেখেছেন। চ্যাপেল, প্রাঙ্গণ, লাইব্রেরি, সন্ন্যাসীদের কক্ষ, ঘণ্টাঘর ও পাথরে ঘেরা পবিত্র উৎস, সবই ঝুলে আছে পাহাড়ের গায়ে—প্রায় ৩০০ মিটার বা ১ হাজার ফুট ওপরে। এর নিচে ঘন বন ও নদী। ওপর থেকে দেখলে সবকিছুই হালকা কুয়াশার চাদরে ঢাকা মনে হয়।
মনাস্ট্রির ইতিহাস
মনাস্ট্রিটি চতুর্থ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত বলে ধারণা করা হয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, বারনাবাস ও সোফ্রোনিওস নামে দুই গ্রিক সন্ন্যাসী এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই সময়। স্বপ্নে মেরি তাঁদের জানান, পন্টিক পর্বতমালায় লুকানো আছে লুক দ্য অ্যাপোস্টল আঁকা একটি পবিত্র ছবি। বারনাবাস ও সোফ্রোনিওস সেই ছবি খুঁজে পেয়ে নাম দেন ‘প্যানাগিয়া সুমেলা’।
তেরো শ শতাব্দীতে মনাস্ট্রিটি বর্তমান আকার পায়। এই প্রাচীন প্রাচীরের মধ্যে রোমান সাম্রাজ্য থেকে বাইজেন্টাইন, ওসমানি শাসন এবং পরবর্তী সময়ে তুরস্কের স্বাধীনতাসংগ্রামের মতো অনেক ইতিহাস সাক্ষী হয়েছে।
ওসমানি শাসনকালে মুসলিম শাসকেরা খ্রিষ্টানদের ওপর আক্রমণ না করে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থানগুলো রক্ষা করত। কখনো কখনো তারা ছোট ছোট দান বা জমি দিয়ে মনাস্ট্রির সন্ন্যাসীদের সাহায্যও করত। ফলে সুমেলা শুধু একটি ধর্মীয় স্থানই নয়, ভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে সহনশীলতার নিদর্শন হিসেবেও পরিচিত।
স্থাপত্য ও ফ্রেস্কো
সুমেলা মনাস্ট্রি শুধু ইতিহাস নয়। এখানকার চিত্রশিল্প ও স্থাপত্য পর্যটকদের আরও চমকপ্রদ করে তোলে। মনাস্ট্রির বাইরের অংশে চোখে পড়ে বিশাল চিত্রকলা। সেখানে যিশু, মেরি ও দেবদূতদের ছবি আঁকা আছে। প্রতিটি ছবি যেন একেকটি গল্প, যা দর্শকের চোখে ইতিহাসকে জীবন্ত করে তোলে।
গুহার ভেতরে তেরো শ শতাব্দীতে আঁকা আরও রহস্যময় চিত্রশিল্প আছে। তবে জানিয়ে রাখা ভালো, এই মনাস্ট্রিতে শুধু সৌন্দর্য নয়, রোমান যুগের সিংহদের হাতে মানুষ মারা যাওয়ার মতো ভয়ংকর দৃশ্যের ছবিও দেখা যায়।
রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্নির্মাণ
মনাস্ট্রির রক্ষণাবেক্ষণ চলমান। সেখানে ফ্রেস্কো পুনরুদ্ধারের কাজ অত্যন্ত যত্নসহকারে করা হচ্ছে। শিল্পী সেনল আক্তাশ জানান, তাঁরা মূল রং ও শৈলীর সঙ্গে মিল রেখে ফ্রেস্কোগুলো পুনরায় সাজাচ্ছেন। এখানে পর্যটকেরা গোপন চ্যাপেল ও ছোট ছোট কক্ষগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। রক্ষণাবেক্ষণ চলাকালীন অপ্রত্যাশিত অনেক কিছু আবিষ্কারও হয়েছে সে মনাস্ট্রিতে। তার মধ্যে আছে একটি গোপন সুড়ঙ্গ। তার ভেতরেও কিছু চমকপ্রদ ফ্রেস্কো পাওয়া গেছে। সেসব ফ্রেস্কতে ফুটে উঠেছে ইতিহাসের অনেক গল্প।
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
সুমেলা মনাস্ট্রি একসময় ছিল গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ। ওসমানি সাম্রাজ্যের পতনের পর তুরস্কের স্থানীয় গ্রিকরা গ্রিসে চলে যায়। ২০১০ সালের ১৫ আগস্ট ৮৮ বছরে প্রথমবারের মতো পুনরায় অর্থোডক্স উপাসনার আয়োজন হয়েছিল। এখন অবশ্য প্রতিবছর একই দিনে অর্থোডক্স উপাসনার আয়োজন করা হয়।
দর্শক ও ভ্রমণ তথ্য
তুরস্কের আলতিন্দেরে ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত এ মনাস্ট্রি। ব্ল্যাক সি উপকূলের ট্রাবজোন শহর থেকে প্রায় এক ঘণ্টার পথ পারি দিয়ে যেতে হয় সেখানে।
পরিবহন: পার্কিং লট থেকে শাটল বা সিঁড়িপথ দিয়ে ধাপে ধাপে মনাস্ট্রিতে পৌঁছানো।
ব্যয়: ২০ ইউরো।
খোলা থাকার সময়: সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা।
ভ্রমণকাল: সাধারণত ১ থেকে ২ ঘণ্টা।
শীতকালে তুষার ও গ্রীষ্মে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। তাই শক্ত জুতা ও আবহাওয়া অনুযায়ী পোশাক পরা প্রয়োজন সেখানে যেতে চাইলে।
আশপাশে থাকার ব্যবস্থা
সেখানে কোসানদেরে গ্রামে তিন তারকা মানের সুমেলা হলিডে হোটেল রয়েছে। এ ছাড়া ট্রাবজোন শহরে রামাদা প্লাজা ও র্যাডিসন ব্লুর মতো বড় হোটেল আছে।
সুমেলা মনাস্ট্রি শুধু প্রাচীন স্থাপত্যের জন্যই নয়, এটি ভ্রমণ, ইতিহাস, শিল্প ও আধ্যাত্মিকতার মিলনকেন্দ্র হিসেবেও বিখ্যাত। পাহাড়ের প্রাচীরের সঙ্গে ঝুলে থাকা, চোখধাঁধানো ফ্রেস্কো আর সমৃদ্ধ ইতিহাস এই জায়গাকে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
সূত্র: সিএনএন
কাজের চাপ, অনিদ্রা, ক্লান্তি এখন প্রায় সবার জীবনের অংশ। এমন অবস্থায় অনেকে কফি বা এনার্জি ড্রিংক পান করেন। এর বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক কিছু পানীয় দারুণ কাজ করে। ঘরোয়া উপাদানে তৈরি এসব টনিক শরীরের ক্লান্তি কমায়, মন ভালো রাখে আর উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
১৩ ঘণ্টা আগেঅনুরোধে ঢেঁকি গেলাকে বাঙালি অনেক সময় ‘ভদ্রতা’ বলে মনে করে। ‘না’ বললে কেমন শোনায় বা যার কথায় ‘না’ বলা হবে, সেই ব্যক্তি কী ভাববে; মনে কষ্ট পাবে কি না—এসব ভেবে নিজের অপছন্দের কাজটিও অনেকে করে বসেন। আরেকটু খোলাসা করে বলি? ধরুন, কোনো সহকর্মী আপনাকে চা খেতে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
১৯ ঘণ্টা আগেবিশ্বের ১৭২টি দেশে খাদ্য গ্রহণের মাত্রা অনুসরণ করে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। এটি একটি বিশেষ ভোগ সূচক। এই সূচক অনুযায়ী নির্দিষ্ট হয়েছে বিশ্বে বেশি খাদ্য গ্রহণকারী দেশ কোনটি। অর্থাৎ কোন দেশের মানুষ বেশি খাচ্ছে বা খাবার পাচ্ছে। অবাক হওয়ার কিছু নেই যে তালিকার শীর্ষে রয়েছে...
১ দিন আগেছুটির দিন সকালে আয়েশ করে একটু ভিন্ন ধরনের নাশতা করতে কে না চায়? তবে তার জন্য সময় ব্যয় করতেও মন সায় দেয় না। তাই চটজলদি মজাদার কিছু খেতে চাইলে তৈরি করে ফেলুন লুচি। আর লুচির সঙ্গে খাওয়ার জন্য আলুর ঝোল। লুচি গড়তে তো সবাই পারেন। তবে আলুর ঝোলের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
১ দিন আগে