Ajker Patrika

শরতের শুষ্ক আবহাওয়া ও ধুলোবালি থেকে ত্বক সুরক্ষার উপায়

বিভাবরী রায়
শরৎকালে সাবান, বডিওয়াশ, ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করাই যথেষ্ট নয়। ত্বক ভেতর থেকে ধুলাবালুমুক্ত ও পরিষ্কার রাখতে হবে। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি
শরৎকালে সাবান, বডিওয়াশ, ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করাই যথেষ্ট নয়। ত্বক ভেতর থেকে ধুলাবালুমুক্ত ও পরিষ্কার রাখতে হবে। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

কাজ, ক্লাস কিংবা শপিং—যা-ই করে সারা দিন পর বাড়ি ফিরুন না কেন, শরীরে থাকবে একরাশ ধুলোবালি! আসলে শরতের আবহাওয়ায়ই এমন। ভীষণ শুষ্ক তো বটেই, বাতাসে প্রচুর ধুলাবালু ও কাশফুলের রেণু উড়ে বেড়ায়। এগুলো ত্বকে ময়লার আবরণ সৃষ্টি করে। এ ছাড়া ত্বকে চুলকানিসহ নানান সমস্যার জন্ম দেয়। তার ওপর আছে পিছু না ছাড়া সানট্যান। বাড়ি ফিরে সাবান, বডিওয়াশ, ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করাই যথেষ্ট নয়। ত্বক ভেতর থেকে ধুলাবালুমুক্ত ও পরিষ্কার রাখতে হবে। কীভাবে করবেন, তাই ভাবছেন তো? জেনে নিন।

ডাবল ক্লিনজিং সময়সাপেক্ষ, তবে ফল দেয়

বাইরের দূষণ, ধুলাবালু ও ত্বকে ব্যবহৃত ময়শ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন মিলেমিশে রোমকূপে যে ময়লা সৃষ্টি করে, তা শুধু সাবান ও ফেসওয়াশ পরিষ্কার করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়া যায় ডাবল ক্লিনজিংয়ে। এ পদ্ধতিতে প্রথমে একটি তেলসমৃদ্ধ ক্লিনজার নিয়ে মুখে হালকা ম্যাসাজ করুন। তা ক্লিনজিং মিল্ক দিয়েও হতে পারে, আবার নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল কিংবা আমন্ড তেলেও। ৫ থেকে ৭ মিনিট ম্যাসাজ করলে দূষণ, সানস্ক্রিন, মেকআপ ও ত্বকের অতিরিক্ত তেল বেরিয়ে আসবে। এবার তোয়ালে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে মুখটা মুছে নিন। এরপর ফোম-বেসড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালোভাবে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। পুরো শরীরে চাইলে এভাবে ডাবল ক্লিনজিং করা যায়। এতে শরীর আরাম পাবে, ময়লা দূর হবে আর ঘুমও হবে ভালো।

টোনিং ও ময়শ্চারাইজিং

গরম পড়েছে বলে ময়শ্চারাইজার এড়িয়ে চলা যাবে না। তাতে ত্বকের ক্ষতি হবে। ছবি: পেক্সেলস
গরম পড়েছে বলে ময়শ্চারাইজার এড়িয়ে চলা যাবে না। তাতে ত্বকের ক্ষতি হবে। ছবি: পেক্সেলস

শুরুতে যে কথা বলা হয়েছে, এই ঋতুতে বাতাসে যেমন ধুলাবালুর পরিমাণ বেশি থাকে, তেমনি এ সময়টায় ত্বকও অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে ওঠে। পরিষ্কারের পর টোনার ব্যবহার করলে ত্বক সুরক্ষিত থাকে। বাজার চলতি টোনার ব্যবহার করতে না চাইলে তুলার বলে গোলাপজল নিয়ে মুখে বুলিয়ে নিতে পারেন। এতেও তরতাজা ভাব ফিরে পাওয়া যাবে। সবশেষে, ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য একটি ভালো ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। গরম পড়েছে বলে ময়শ্চারাইজার এড়িয়ে চললে ত্বকের ক্ষতিই হবে। কারণ, গরম পড়লেও ত্বক কিন্তু পানি দিয়ে ধোয়ার পর শুষ্ক হয়ে উঠছে। ত্বকের কোমলতা ফিরে পেতে এবং ত্বকে বয়সের ছাপ দেরিতে ফেলতে চাইলে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারে অনীহা থাকলে চলবে না।

রোদে পোড়া দাগ হটাতে

রোদের সংস্পর্শে এলে ত্বকে তামাটে ভাব চলে আসে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি মেলানিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সানট্যান ও পিগমেন্টেশন হালকা করতে কিংবা ত্বকের উজ্জ্বল ভাব ফিরিয়ে আনতে ভিটামিন সি যুক্ত ফল, যেমন লেবু ও কমলার রস মেশানো প্যাক ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।

রোদে পোড়া দাগ হালকা করতে ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার ও স্ক্রাব করার গুরুত্ব রয়েছে। রোদে পোড়া ত্বকে চিনি, গ্লিসারিন ও লেবুর মিশ্রণ বেশ ভালো কাজ করে। এক টেবিল চামচ চিনির সঙ্গে আধা চা-চামচ গ্লিসারিন এবং এক টেবিল চামচ লেবুর রস মেশান। এটি ঘষে ঘষে লাগান স্ক্রাবের মতো। এই মিশ্রণ ত্বকে কিছুক্ষণ রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করুন।

এ ছাড়া এক চা-চামচ গুঁড়া দুধে এক চামচ গোলাপজল মেশান। মিশ্রণটি দিয়ে ভালোভাবে মুখে ম্যাসাজ করুন। রোদে পোড়া ত্বকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন মিশ্রণটি। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সানট্যান কাটাতে আরেকটি উপকারী উপকরণ হচ্ছে মুলতানি মাটি। এতে রয়েছে সিলিকন, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম সিলিকেট। এগুলো দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বক বাঁচায়; পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়ায়। সানট্যান দূর করতে প্যাক হিসেবে কমলার খোসা এবং কাঁচা হলুদবাটার সঙ্গে মুলতানি মাটি ও লেবুর রস মেশান। সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে মুখে ব্যবহার করুন। প্রায় শুকিয়ে এলে তোয়ালে ভিজিয়ে ত্বক রগড়ে রগড়ে ধুয়ে নিন।

ত্বকের যত্নে একটুখানি কষ্ট করতেই হবে। কারণ, এটি শরীরের এমন এক অংশ, যা চোখে পড়ে সবার আগে। ফলে ত্বক ঝকঝকে আর উজ্জ্বল রাখার বিকল্প নেই।

সূত্র: ফেমিনা ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত