অনলাইন ডেস্ক
মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি সবসময়ই অবহেলার শিকার হয়ে থাকে, সে হোক নারীর বা পুরুষের। তবে মনের কথা প্রকাশের ক্ষেত্রে নারীদের চেয়ে পুরুষেরা বরাবরই পিছিয়ে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তও বলছে, ২০২৫ সালে এসে যখন ‘মেন্টাল হেলথ’ গুরুত্ব পাওয়া শুরু করেছে সে সময়ও নারীদের তুলনায় পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনার পরিমাণ কম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২১ সালের এক জরিপে দেখা যায়, বৈশ্বিকভাবে প্রতি ১ লাখ পুরুষে আত্মহত্যার হার ছিল ১২ দশমিক ৩, যা নারীদের ৫ দশমিক ৯-এর দ্বিগুণেরও বেশি। এই বিশাল পার্থক্যটি পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান mentl. space প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা স্কট আর্মস্ট্রং বলেন, ‘অবস্থা বেশ ভয়াবহ। তবুও আমরা এখনো মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পুরুষদের কথা বলাতে রাজি করাতে হিমশিম খাই। এটি আমাদের বলে দেয়, নীরবতা সত্যি সত্যি মানুষের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে।’
‘মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা’ বলতে আসলে কোন অবস্থাকে বুঝায় এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আর্মস্ট্রং বলেন, ‘আমি মনে করি না, সহজে এটিকে সংজ্ঞায়িত করা যায়, কারণ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা অনেক ধরনের অবস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করে—উদ্বেগ, হতাশা, বার্নআউট, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি)। তবে, সবগুলো সমস্যাই আমাদের চিন্তা, অনুভূতি এবং জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার উপায় নিয়ে। মানসিক স্বাস্থ্য শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ এবং যদি একে উপেক্ষা করা হয়, তাহলে তা আরও খারাপ হয়ে যায়।’
সাধারণত চাকরি, পরিবার এবং আর্থিক চাপের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে গিয়ে বেশিরভাগ মধ্যবয়সী পুরুষেরা উচ্চমাত্রার চাপ ও বার্নআউটের মুখোমুখি হন। সিএমবি কোচিং অ্যান্ড ট্রেইনিং-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর কিয়ারান ম্যাকব্রিন বলেন, ‘আগের দিনের মানুষেরা এমন এক পরিবেশে বড় হয়েছেন, যখন দুর্বলতা প্রকাশ করাকে দুর্বল ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক মনে করা হতো। যার ফলে অনেকে নিঃশব্দে কষ্ট পেয়েছেন। যা যেমন, তা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে—এই মানসিকতা এখনো রয়ে গেছে।’
তবে এর মানে এই যে, এ সময়ের যুবকেরা সহজে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলতে পারছে। ম্যাকব্রিন বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে জেনারেশন জেড (জেন জি), মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক বেশি খোলামেলা কথা বলতে পারে। এটি সম্ভব হয়েছে সচেতনতা এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে। তবে কিছু কিছু জায়গায় অবস্থার এখনো পরিবর্তন আসেনি, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রগুলোতে যেখানে অনেক বেশি চাপের মধ্যে থাকতে হয়।’
তবে, আধুনিক যুবকদের এখন নতুন ধরনের চাপের মধ্যে থাকতে হয়—সোশ্যাল মিডিয়া, আর্থিক অনিশ্চয়তা এবং সর্বদা কাজের চাপ। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটি প্রজন্মের ওপর ভিন্ন ভিন্ন ধরনের চাপ থাকে, প্রত্যেকের লড়াইও ভিন্ন। কিন্তু একটা বিষয় সবার ক্ষেত্রে এক—পুরুষেরা এখনো সাহায্য চাইতে সংকোচ বোধ করেন।
কেএসজি ওয়েলনেস কোচিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা কেস স্মিথ-গ্রিন বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার দিকেই তাকান, তরুণ পুরুষেরা ভুগছেন ‘ফিয়ার অব মিসিং আউট’ (FOMO)-এ, পোশাক বাছাই, দেখতে কেমন হওয়া উচিত সেই প্রত্যাশা, একজন নারীর পেছনে কত টাকা খরচ করতে হবে, কত টাকা উপার্জন করা উচিত—এই তালিকা যেন শেষই হয় না। এটি এক ভিন্ন ধরনের প্রত্যাশার তালিকা, কিন্তু এটি এমন একটি তালিকা, যা আমরা পুরনো প্রজন্মের তুলনায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। ”
অনেক পুরুষ মানসিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যাগুলো সবসময় স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে পারেন না। দুঃখ বা মানসিক কষ্ট প্রকাশ করার বদলে তাঁরা প্রায়ই রাগ বা খিটখিটে মেজাজ, একাকীত্ব, এমনকি আত্মবিনাশী আচরণ, যেমন—অতিরিক্ত কাজ করা—এসবের মাধ্যমে নিজেদের কষ্টটি প্রকাশের চেষ্টা করেন।
মেন’স টাইম টু টক নামের এক পডকাস্টে ম্যাকব্রিন বলেন, ‘এই লক্ষণগুলো বুঝতে পারা খুব জরুরি, কারণ অনেক পুরুষ নীরবে লড়াই করছেন।’
দ্রুতগতির জীবনধারা, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা এবং উচ্চ প্রত্যাশা মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বার্নআউটকে আরও তীব্র করে তোলে। অনেক পেশাদার ব্যক্তি সফলতার পেছনে ছুটতে গিয়ে মানসিক সুস্থতাকে গুরুত্ব দিতে ভুলে যান। তাঁদের একাকীত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে।
মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পরামর্শদাতা স্মিথ-গ্রিন বলেন, ‘কেউ কেউ স্ট্রেসে ভালো পারফর্ম করেন, আবার কেউ পারেন না। কেউ জানেন কীভাবে নিজেদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো—যেমন ভালো পুষ্টি, ব্যায়াম, ঘুম ইত্যাদি—সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হয়, আবার কেউ জানেন না। এই জিনিসগুলো মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘ কর্মঘণ্টার চেয়েও বেশি প্রভাব ফেলে।’
পরামর্শকেরা বলছেন, পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মোকাবিলায় সবচেয়ে কার্যকর দুটি পথ হলো—এ সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলা এবং সাহায্য চাওয়া। এটা যেমন বন্ধুবান্ধব বা সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে হতে পারে, তেমনি অনেক সময় এর জন্য পেশাদার সাহায্য নেওয়ারও প্রয়োজন হয়।
স্মিথ গ্রিন বলেন, ‘একজন ওয়েলনেস ও মেন্টাল হেলথ কোচ হিসেবে আমার লক্ষ্য খুবই সাধারণ—ছোট ছোট বিষয় নিয়ে কাজ করা, যেগুলোর প্রভাব মানসিক সুস্থতার ওপর অনেক বড়। এতে জড়িত থাকে আবেগ নিয়ে আলোচনা এবং কেন একজন মানুষ নির্দিষ্ট কিছু আচরণ করে তা বোঝার চেষ্টা করা। আর যদি কেউ সেই আচরণ পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে তারা কী মনে করে সেই জায়গায় কী করা উচিত—তা তারা নিজেরাই খুঁজে বের করে এবং আমি তাদের সেই প্রক্রিয়ায় সহায়তা করি। কোচিং মানে কৌশল শেখানো নয়, বরং আত্ম-আবিষ্কারের পথ দেখানো।’
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা আর্মস্ট্রং বলেন, ‘কথা বলুন। সেটা হোক বন্ধু, কোচ কিংবা কোনো পেশাদারের সঙ্গে—একা একা এসব সামলানোর চেষ্টা করবেন না। কথা বলাটা আপনার পুরুষত্ব কমায় না, বরং আপনাকে আরও সুস্থ করে তোলে।’
কিয়ারান ম্যাকব্রিনের মতে, ‘হোক সেটা কোচিংয়ের মাধ্যমে, সহায়তাকারী গ্রুপের মাধ্যমে বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায়—মিশন একটাই: পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে থাকা বাধাগুলো ভাঙা এবং জানানো যে তাঁরা একা নন। অনেক সময় একটি সৎ আলাপ কারও জীবনে বড় পরিবর্তন এনে দিতে পারে।’
নারী ও পুরুষের মানসিক সংগ্রাম একই ধরনের হলেও এর বিপরীতে তাদের প্রতিক্রিয়ার ধরনে পার্থক্য থাকে। আর্মস্ট্রং বলেন, ‘নারীরা তুলনামূলক বেশি সাহায্য চায়, আর পুরুষরা অনেক সময় সব কিছু চেপে রাখে যতক্ষণ না একেবারে ভেঙে পড়ে। এটা বোঝা জরুরি, পুরুষ ও নারী—উভয়েই সংগ্রাম করছে এবং তাদের উভয়েরই আরও বেশি সহায়তা প্রয়োজন।’
স্মিথ-গ্রিন বলেন, ‘এই বিষয়গুলো নিয়ে সম্প্রতি বেশ আলোচনা হচ্ছে। মাত্র ১৫ বছর আগেও, পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য ছিল উপেক্ষিত একটি বিষয়। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া তখন অনেক কঠিন ছিল, বিশেষ করে যথেষ্ট অর্থ না থাকলে।’
এখন অনেক দেশে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে। এমনকি দেশের সরকার এখন এই দায়িত্ব নিচ্ছে এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের সহায়তা করতে আইন প্রণয়ন করছে।
সূত্র: খালিজ টাইমস।
মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি সবসময়ই অবহেলার শিকার হয়ে থাকে, সে হোক নারীর বা পুরুষের। তবে মনের কথা প্রকাশের ক্ষেত্রে নারীদের চেয়ে পুরুষেরা বরাবরই পিছিয়ে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তও বলছে, ২০২৫ সালে এসে যখন ‘মেন্টাল হেলথ’ গুরুত্ব পাওয়া শুরু করেছে সে সময়ও নারীদের তুলনায় পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনার পরিমাণ কম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২১ সালের এক জরিপে দেখা যায়, বৈশ্বিকভাবে প্রতি ১ লাখ পুরুষে আত্মহত্যার হার ছিল ১২ দশমিক ৩, যা নারীদের ৫ দশমিক ৯-এর দ্বিগুণেরও বেশি। এই বিশাল পার্থক্যটি পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান mentl. space প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা স্কট আর্মস্ট্রং বলেন, ‘অবস্থা বেশ ভয়াবহ। তবুও আমরা এখনো মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পুরুষদের কথা বলাতে রাজি করাতে হিমশিম খাই। এটি আমাদের বলে দেয়, নীরবতা সত্যি সত্যি মানুষের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে।’
‘মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা’ বলতে আসলে কোন অবস্থাকে বুঝায় এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আর্মস্ট্রং বলেন, ‘আমি মনে করি না, সহজে এটিকে সংজ্ঞায়িত করা যায়, কারণ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা অনেক ধরনের অবস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করে—উদ্বেগ, হতাশা, বার্নআউট, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি)। তবে, সবগুলো সমস্যাই আমাদের চিন্তা, অনুভূতি এবং জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার উপায় নিয়ে। মানসিক স্বাস্থ্য শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ এবং যদি একে উপেক্ষা করা হয়, তাহলে তা আরও খারাপ হয়ে যায়।’
সাধারণত চাকরি, পরিবার এবং আর্থিক চাপের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে গিয়ে বেশিরভাগ মধ্যবয়সী পুরুষেরা উচ্চমাত্রার চাপ ও বার্নআউটের মুখোমুখি হন। সিএমবি কোচিং অ্যান্ড ট্রেইনিং-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর কিয়ারান ম্যাকব্রিন বলেন, ‘আগের দিনের মানুষেরা এমন এক পরিবেশে বড় হয়েছেন, যখন দুর্বলতা প্রকাশ করাকে দুর্বল ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক মনে করা হতো। যার ফলে অনেকে নিঃশব্দে কষ্ট পেয়েছেন। যা যেমন, তা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে—এই মানসিকতা এখনো রয়ে গেছে।’
তবে এর মানে এই যে, এ সময়ের যুবকেরা সহজে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলতে পারছে। ম্যাকব্রিন বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে জেনারেশন জেড (জেন জি), মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক বেশি খোলামেলা কথা বলতে পারে। এটি সম্ভব হয়েছে সচেতনতা এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে। তবে কিছু কিছু জায়গায় অবস্থার এখনো পরিবর্তন আসেনি, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রগুলোতে যেখানে অনেক বেশি চাপের মধ্যে থাকতে হয়।’
তবে, আধুনিক যুবকদের এখন নতুন ধরনের চাপের মধ্যে থাকতে হয়—সোশ্যাল মিডিয়া, আর্থিক অনিশ্চয়তা এবং সর্বদা কাজের চাপ। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটি প্রজন্মের ওপর ভিন্ন ভিন্ন ধরনের চাপ থাকে, প্রত্যেকের লড়াইও ভিন্ন। কিন্তু একটা বিষয় সবার ক্ষেত্রে এক—পুরুষেরা এখনো সাহায্য চাইতে সংকোচ বোধ করেন।
কেএসজি ওয়েলনেস কোচিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা কেস স্মিথ-গ্রিন বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার দিকেই তাকান, তরুণ পুরুষেরা ভুগছেন ‘ফিয়ার অব মিসিং আউট’ (FOMO)-এ, পোশাক বাছাই, দেখতে কেমন হওয়া উচিত সেই প্রত্যাশা, একজন নারীর পেছনে কত টাকা খরচ করতে হবে, কত টাকা উপার্জন করা উচিত—এই তালিকা যেন শেষই হয় না। এটি এক ভিন্ন ধরনের প্রত্যাশার তালিকা, কিন্তু এটি এমন একটি তালিকা, যা আমরা পুরনো প্রজন্মের তুলনায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। ”
অনেক পুরুষ মানসিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যাগুলো সবসময় স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে পারেন না। দুঃখ বা মানসিক কষ্ট প্রকাশ করার বদলে তাঁরা প্রায়ই রাগ বা খিটখিটে মেজাজ, একাকীত্ব, এমনকি আত্মবিনাশী আচরণ, যেমন—অতিরিক্ত কাজ করা—এসবের মাধ্যমে নিজেদের কষ্টটি প্রকাশের চেষ্টা করেন।
মেন’স টাইম টু টক নামের এক পডকাস্টে ম্যাকব্রিন বলেন, ‘এই লক্ষণগুলো বুঝতে পারা খুব জরুরি, কারণ অনেক পুরুষ নীরবে লড়াই করছেন।’
দ্রুতগতির জীবনধারা, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা এবং উচ্চ প্রত্যাশা মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বার্নআউটকে আরও তীব্র করে তোলে। অনেক পেশাদার ব্যক্তি সফলতার পেছনে ছুটতে গিয়ে মানসিক সুস্থতাকে গুরুত্ব দিতে ভুলে যান। তাঁদের একাকীত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে।
মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পরামর্শদাতা স্মিথ-গ্রিন বলেন, ‘কেউ কেউ স্ট্রেসে ভালো পারফর্ম করেন, আবার কেউ পারেন না। কেউ জানেন কীভাবে নিজেদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো—যেমন ভালো পুষ্টি, ব্যায়াম, ঘুম ইত্যাদি—সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হয়, আবার কেউ জানেন না। এই জিনিসগুলো মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘ কর্মঘণ্টার চেয়েও বেশি প্রভাব ফেলে।’
পরামর্শকেরা বলছেন, পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মোকাবিলায় সবচেয়ে কার্যকর দুটি পথ হলো—এ সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলা এবং সাহায্য চাওয়া। এটা যেমন বন্ধুবান্ধব বা সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে হতে পারে, তেমনি অনেক সময় এর জন্য পেশাদার সাহায্য নেওয়ারও প্রয়োজন হয়।
স্মিথ গ্রিন বলেন, ‘একজন ওয়েলনেস ও মেন্টাল হেলথ কোচ হিসেবে আমার লক্ষ্য খুবই সাধারণ—ছোট ছোট বিষয় নিয়ে কাজ করা, যেগুলোর প্রভাব মানসিক সুস্থতার ওপর অনেক বড়। এতে জড়িত থাকে আবেগ নিয়ে আলোচনা এবং কেন একজন মানুষ নির্দিষ্ট কিছু আচরণ করে তা বোঝার চেষ্টা করা। আর যদি কেউ সেই আচরণ পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে তারা কী মনে করে সেই জায়গায় কী করা উচিত—তা তারা নিজেরাই খুঁজে বের করে এবং আমি তাদের সেই প্রক্রিয়ায় সহায়তা করি। কোচিং মানে কৌশল শেখানো নয়, বরং আত্ম-আবিষ্কারের পথ দেখানো।’
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা আর্মস্ট্রং বলেন, ‘কথা বলুন। সেটা হোক বন্ধু, কোচ কিংবা কোনো পেশাদারের সঙ্গে—একা একা এসব সামলানোর চেষ্টা করবেন না। কথা বলাটা আপনার পুরুষত্ব কমায় না, বরং আপনাকে আরও সুস্থ করে তোলে।’
কিয়ারান ম্যাকব্রিনের মতে, ‘হোক সেটা কোচিংয়ের মাধ্যমে, সহায়তাকারী গ্রুপের মাধ্যমে বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায়—মিশন একটাই: পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে থাকা বাধাগুলো ভাঙা এবং জানানো যে তাঁরা একা নন। অনেক সময় একটি সৎ আলাপ কারও জীবনে বড় পরিবর্তন এনে দিতে পারে।’
নারী ও পুরুষের মানসিক সংগ্রাম একই ধরনের হলেও এর বিপরীতে তাদের প্রতিক্রিয়ার ধরনে পার্থক্য থাকে। আর্মস্ট্রং বলেন, ‘নারীরা তুলনামূলক বেশি সাহায্য চায়, আর পুরুষরা অনেক সময় সব কিছু চেপে রাখে যতক্ষণ না একেবারে ভেঙে পড়ে। এটা বোঝা জরুরি, পুরুষ ও নারী—উভয়েই সংগ্রাম করছে এবং তাদের উভয়েরই আরও বেশি সহায়তা প্রয়োজন।’
স্মিথ-গ্রিন বলেন, ‘এই বিষয়গুলো নিয়ে সম্প্রতি বেশ আলোচনা হচ্ছে। মাত্র ১৫ বছর আগেও, পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য ছিল উপেক্ষিত একটি বিষয়। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া তখন অনেক কঠিন ছিল, বিশেষ করে যথেষ্ট অর্থ না থাকলে।’
এখন অনেক দেশে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে। এমনকি দেশের সরকার এখন এই দায়িত্ব নিচ্ছে এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের সহায়তা করতে আইন প্রণয়ন করছে।
সূত্র: খালিজ টাইমস।
মানচিত্রে ভারতের দক্ষিণে যেন একফোঁটা জলের টিপ ঝুলে আছে, তার নাম শ্রীলঙ্কা। ক্রিকেটে দেশটির খ্যাতি বিশ্বময়। তবে এর বাইরে পর্যটনের ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা বেশ আকর্ষণীয়। শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় পর্যটকদের পদচারণে এখন মুখর শ্রীলঙ্কা।
১৬ ঘণ্টা আগেথাইল্যান্ড ‘ছয় দেশ, এক গন্তব্য’ নামে একটি নতুন পর্যটন ক্যাম্পেইন চালু করতে যাচ্ছে। এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছয়টি দেশকে একসঙ্গে যুক্ত করে পর্যটকদের জন্য একটি সহজ ও আনন্দদায়ক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা তৈরি করা। থাইল্যান্ড ছাড়া এই প্রকল্পে অংশ
১৬ ঘণ্টা আগেজীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ভ্রমণের সময় সঠিক বিমা নেওয়া আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চিকিৎসাসংক্রান্ত জটিলতা, ফ্লাইট মিস করা কিংবা হারিয়ে যাওয়া ব্যাগেজের খরচ যেন আপনার মাথায় না পড়ে, সে জন্য আগে থেকেই সতর্ক থাকা দরকার।
১৬ ঘণ্টা আগেচ্যাটজিপিটি আসার পর গুগলের সার্চ ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি অ্যাপলের এক নির্বাহী বলেন, আইফোনের গুগল ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ ট্রাফিক কমে যাচ্ছে। ফলে তাদের শেয়ারমূল্য কমেছে। তবে গুগল তো থেমে যাওয়ার পাত্র নয়। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি তাদের হোম পেজে নতুন এআই সার্চ টুল পরীক্ষামূলকভ
১৬ ঘণ্টা আগে