Ajker Patrika

দুধ খাব না? খাব তো!

সানজিদা সামরিন, ঢাকা
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩: ৫৬
দুধ খাব না? খাব তো!

ওপরে পুরু সর, নিচে হালকা উষ্ণ সাদা দুধ। আহা! দেখলেই মন ভরে যায়, খেলে তো কথাই নেই। দুধ বললেই মনে পড়ে সুষম খাদ্যের কথা। স্কুল জীবনে ডিম–দুধ–কলার কথা শোনেনি এমন কেউ কি আছে? 

সে যাক, এবার একটু থামি। গরু, মহিষ বা ছাগলের দুধ খেলে সবাই ‘সুস্বাস্থ্য’ লাভ করবে, এতটা কি জোর দিয়ে বলা যায়? তাহলে ওই যে কারও কারও অ্যালার্জি হচ্ছে, কারও গ্যাস তো কারও বদহজম হচ্ছে কেন! এসব দেখে বলাই যায়, সবক্ষেত্রে দুধটা ‘সুষম’ খাদ্যের শর্ত পূরণ করে না। 

আরও আছে। এই যে আমরা যেন ভেবেই নিয়েছি, প্রাণীকুলের সৃষ্টিই হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য। হয় তাদের মাংস খাওয়া হবে, নয়তো দুধ। কিন্তু প্রাণীজ মাংস খাওয়া বা দুধ পান করার কারণে প্রাকৃতিক ভারসাম্যও যে নষ্ট হচ্ছে, সে কথাও তো ধীরে ধীরে জানতে পারছে মানুষ। 

কীভাবে সেটা ঘটছে তা নিয়ে গবেষণাও হচ্ছে বিস্তর। এখানে অত গভীরে না গিয়ে আমরা বরং বলতে পারি, প্রাণীর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া দুধের বদলে আমরা যদি উদ্ভিদের কাছে গিয়ে বলি, তোমরা কি আমাদের সাহায্য করতে পার না? উদ্ভিদের কাছে এ প্রশ্নের উত্তর তৈরিই আছে। উদ্ভিজ্জ দুধ খেলে গ্যাস হবে না, বদহজম হবে না, হবে না অ্যালার্জি। আর তা একেবারেই পরিবেশবান্ধব। 

বিশ্বের টেকসই উন্নয়ের পথে হাঁটতে গিয়ে পরিবেশবাদীরা কত কী–ই না করছেন। প্রাকৃতিক সম্পদের পর্যাপ্ত ব্যবহার থেকে শুরু করে পণ্যের পুনর্ব্যবহার করার কথা তো থাকছেই; পাশাপাশি সবুজবান্ধব জীবনযাপনে খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনার পক্ষে কাজ করছেন অনেকেই। 

পরিবেশবান্ধব খাদ্যতালিকায় প্রাণিজ উৎসের পরিবর্তে উদ্ভিজ্জ উপাদানগুলোকে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে পরিবেশবাদীরা। মানে, খাদ্যতালিকা থেকে প্রাণিজ প্রোটিনকে একপ্রকার ছাঁটাই করে যদি উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎসকে খুঁজে নেওয়া যায়, তবেই মঙ্গল। আর সে ভাবনাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে ২০১৭ সাল থেকে আগস্টের ২২ তারিখ পালিত হয়ে আসছে ‘বিশ্ব উদ্ভিজ্জ দুগ্ধ দিবস’। এই দিবস প্রতিষ্ঠার অন্যতম লক্ষ্য ছিল প্রাণিজ খাবারের পরিবর্তে উদ্ভিজ্জ খাবারকে বেছে নেওয়ায় জন্য মানুষকে উৎসাহী করে তোলা। 

দুধের উদ্ভিজ্জ উৎস
কোথায় পাওয়া যাবে এই দুধ? উৎস থাকতে পারে অনেক। তবে সে বিষয়ে কথা বলার আগে জরুরি কথা হলো, দুধের ঘনত্ব ও ঘ্রাণ কেমন হবে তা নির্ভর করে উৎসের ওপর। এবার চেনাজানা কয়েকটি উৎসের কথা বলি। এই যেমন আমন্ড, ওটমিল ও সয়া হয়ে উঠতে পারে সহজলভ্য উদ্ভিজ্জ দুধের উৎস। 

আমন্ড দুধ:  যাঁদের আমন্ডে অ্যালার্জি নেই তাঁরা সহজেই আমন্ড দুধ খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। এতে রয়েছে আঁশ, আমিষ, ভিটামিন এ, ই, ডি, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম। যাঁরা ওজন কমানোর কথা ভাবছেন তাঁরা গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে আমন্ড দুধ খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। এতে ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই কম তাই ওজন কমবে, পাশাপাশি শরীরে শক্তিও বজায় থাকবে। হ্যাঁ, আগে যেখানে প্রাণীজ দুধের সমস্যাগুলোর কথা বলা হচ্ছিল, তখন এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হয়নি। সত্যিই তো গরুর দুধের ফ্যাট বা চর্বি আপনার শরীরকেও করে তুলতে পারে নাদুস–নুদুস এবং তারপর সেই চর্বি হটাতে হলে ব্যায়ামের হুজ্জত পোহাতে হবে! তার চেয়ে চর্বি কম যে দুধে, সে দুধ খাওয়াই তো নিরাপদ। 

ওটসের দুধ:  উদ্ভিজ্জ দুধের মধ্য়ে ওটস থেকে তৈরি করা দুধ অন্যতম। এর ঘনত্ব অনেকটা গরুর দুধের মতোই।  যাঁরা ওজন কমাতে চান তাঁরা সাধারণ গরুর দুধের বদলে ওটসের দুধ পান করতে পারেন। কারণ এতে চর্বি থাকে খুব কম। জেনে রাখা ভালো, গরুর দুধ, সয়া দুধ এমনকি আমন্ড দুধের তুলনায় বেশি আঁশ থাকে ওটস থেকে তৈরি দুধে। তাই এটি দীর্ঘ সময় আপনার পেট ভরা রাখে। 

সয়া দুধ: উদ্ভিজ্জ দুধের মধ্য়ে সয়া দুধ সহজলভ্য। চা, কফি তৈরিতে কিংবা বেকিংয়ে এই দুধ অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। যদিও এই দুধের ঘ্রাণ অনেকেরই ভালো লাগে না। তবে এটি ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস বলে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। 

উদ্ভিজ্জ দুধের উপকারিতা
অনেকেই দুধ হজম করতে পারেন না। এ কারণে খাদ্যতালিকা থেকে গরুর দুধ ছাঁটাই করে ফেলেছেন। কিন্তু দুধ খাওয়ার ইচ্ছে যায়নি। সেদিক থেকে উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে যে দুধ পাওয়া যায় তা সহজপাচ্য হওয়ায় নির্ভাবনায় খেতে পারেন এই দুধ। 

  • উদ্ভিজ্জ দুধে মনো–আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও পলি–আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের মধ্য়ে ভারসাম্য বজায় থাকে। 
  • এই দুধ কোলেস্টেরল মুক্ত। ফলে তা হৃৎস্বাস্থ্য ও শরীর দুটোর জন্যই ভালো। 

সূত্র:  ডে অব দ্য ইয়ার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

সৈয়দ জামিলের অভিযোগের জবাবে যা লিখলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত